সুনানে আবু দাউদ > রক্তমূল্য > সম্মিলিত কসম সম্পর্কে

৪৫২০

থেকে বর্নিতঃ

মুহাইয়াসা ইবনু মাস’ঊদ ও ‘আবদুল্লাহ ইবনু সাহল (রাঃ) দুজনেই খায়বারে উপনীত হয়ে খেজুর বাগানের মধ্যে পৃথক হয়ে গেলেন। ‘আবদুল্লাহ ইবনু সাহল নিহত হলে তারা এজন্য ইয়াহুদী গোত্রকে দায়ী করলো। অতঃপর তার ভাই ‘আবদুর রহমান ইবনু সাহল ও তার দু’জন চাচাত ভাই হুওয়াইয়াসা ও মুহাইয়াসা একত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট উপস্থিত হলেন এবং ভাইয়ের ব্যাপারে আলাপ শুরু করলো। বস্তুত সে তাদের মধ্যে বয়েসে ছোট ছিল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন; যে বড়ো, অর্থাৎ যে বয়েসে বড়ো তাকে আগে কথা বলতে দাও। অথবা তিনি বললেন, তোমাদের মধ্যে যে বয়সে বড়ো তারই শুরু করা উচিৎ। অতঃপর তারা দু’জনে তাদের সাথীর (নিহতের) বিষয়ে আলাপ করলো। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তাদের মধ্য হতে কোন ব্যাক্তির দায়ী হওয়ার ব্যাপারে তোমাদের মধ্য হতে পঞ্চাশজনকে কসম করতে হবে; অতঃপর কিসাস নেয়ার জন্য আসামীকে সোপর্দ করা হবে। তারা বললো, আমরা কি করে কসম করবো, আমরা তো উপস্থিত ছিলাম না! তিনি বললেন, তাহলে তাদের মধ্য হতে পঞ্চাশ ব্যাক্তির কসম গ্রহণের মাধ্যমে ইয়াহুদীরা তোমাদের হতে অভিযোগমুক্ত হবে। তারা বললো, হে আল্লাহর রাসূল! এরা তো কাফির সম্প্রদায়ের। বর্ণনাকারী বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজের পক্ষ থেকে দিয়াত পরিশোধ করলেন। সাহ্‌ল (রাঃ) বলেন, আমি একদিন তাদের উটের বাথানে গিয়েছিলাম, ঐ উটগুলোর মধ্যকার একটা মাদী উট আমাকে পা দিয়ে সজোরে লাথি মেরেছিল। হাম্মাদ (রহঃ)-ও একইরূপ বর্ণনা করেন। ইমাম আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন, এ হাদীস বিশ্র ইবনু মুফাদ্দাল ও মালিক ইবনু ইয়াহয়া ইবনু সাঈদ হতে বর্ণনা করেছেন। সেখানে রয়েছেঃ তোমরা কি পঞ্চাশটি কসম খেয়ে তোমাদের হত্যাকারীর রক্তের অধিকারী হবে? কিন্তু বিশ্র (রহঃ) তার বর্ণনায় রক্ত শব্দটি বলেননি।


৪৫২১

থেকে বর্নিতঃ

আবু হাস্‌মার পুত্র সাহ্‌ল (রাঃ) বর্ণনা করেন, সে, (সাহ্‌ল) ও তার গোত্রের কতিপয় গণ্যমান্য লোক তাকে সংবাদ দিয়েছে যে, ‘আবদুল্লাহ ইবনু সাহ্‌ল ও মুহাইয়াসা উভয়ে দুর্ভিক্ষে পড়ে খায়বারে যায়। মুহাইয়াসা তাদের নিকট ফিরে এসে সংবাদ দিলেন যে, ‘আবদুল্লাহ ইবনু সাহ্‌ল (রাঃ)-কে হত্যা করে গর্তে বা কূপে নিক্ষেপ করা হয়েছে। তিনি ইয়াহুদীদের নিকট গিয়ে বললেন, আল্লাহর কসম! তোমরাই তাকে মেরেছো। তারা বললো, আল্লাহর কসম! আমরা তাকে হত্যা করিনি। অতঃপর সে ফিরে এসে গোত্রের লোকজনকে ঘটনা জানালো। অতঃপর সে, তার ভাই হুওয়াইয়াসা এবং ‘আবদুর রহমান ইবনু সাহ্‌ল এগিয়ে এলেন। মুহাইয়াসা কথা বলতে উদ্যোগী হলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেন, যে বয়সে বড়ো তাকে সন্মান করো এবং কথা বলার জন্য প্রাধান্য দাও। অতঃপর পর্যায়ক্রমে হুওয়াইয়াসা ও মুহাইয়াসা আলাপ করলেন। তারপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হয় তারা তোমাদের সাথীর দিয়াত দিবে, না হয় তাদেরকে যুদ্ধের ঘোষণা শুনাবে। এরপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একথা তাদেরকে লিখে জানালেন এবং তারাও উত্তরে লিখলো, আল্লাহর কসম! আমরা তাকে হত্যা করিনি। এবার রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হুওয়াইয়াসা, মুহাইয়াসা ও ‘আবদুর রহমানকে প্রশ্ন করলেন, তোমরা কি কসম করে তোমাদের সাথীর দিয়াত নিতে পারবে? তারা বললো, না। তিনি বললেন, তাহলে ইয়াহুদীরা তোমাদের জন্য কসম করবে? তারা বললেন, ওরা তো মুসলিম নয়। শেষ পর্যন্ত রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজ পক্ষ হতে তার দিয়াত পরিশোধ করলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের বাড়িতে একশো উট পাঠিয়ে দিলেন। সাহ্‌ল (রাঃ) বলেন, ঐ উটগুলোর মধ্যকার একটি লাল রঙের মাদী উট আমাকে লাথি মেরেছিল।


৪৫২২

আমর ইবনু শু‘আয়ব (রহঃ) থেকে বর্নিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কতিপয় ব্যাক্তির সম্মিলিত শপথের ভিত্তিতে বাহুরাতুল রুগাত নামক স্থানের বনী নাস্র ইবনু মালিক গোত্রের এক ব্যাক্তিকে বাহরার শহর হতে কিছু দূরে অবস্থিত লিয়্যা উপত্যকায় মৃত্যুদন্ড প্রদান করেছিলেন। বর্ণনাকারী বলেন, হত্যাকারী নিহত ব্যাক্তি উভয়ে তাদের (নাসর গোত্রের) লোক ছিল। [৪৫২১]

[৪৫২১] বায়হাক্বী। সানাদে ‘আমর ইবনু শু’আইব ও নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মাঝে তিন ব্যাক্তি বাদ পড়েছে।

লিঙ্ক শেয়ার করুন
close

লিঙ্ক কপি করুন