📘 অন্তরের ব্যাধি সমূহ ও তার চিকিৎসা > 📄 অসুস্থতা ও মৃত্যুর মাঝে

📄 অসুস্থতা ও মৃত্যুর মাঝে


অন্তরের অসুস্থতা হল এর মৃত্যুর থেকেও নিকৃষ্টতর স্তর। অন্তর মারা যায় সম্পূর্ণ অজ্ঞতার কারনে, কিন্তু তা অসুস্থ হয়ে পড়ে খণ্ড খণ্ড অজ্ঞতার কারনে। এক্ষেত্রে অন্তর মারা যেতে পারে, অসুস্থ হতে পারে অথবা চিকিৎসার দ্বারা রোগমুক্তিও লাভ করতে পারে।

অন্তরের জীবন, মৃত্যু, অসুস্থতা ও চিকিৎসা হল শারীরিক জীবন, মৃত্যু, অসুস্থতা ও চিকিৎসা থেকে অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ। এ কারনেই সংশয়-সন্দেহ আর কামনা-বাসনার উপস্থিতির ফলে অন্তর অসুস্থ হয়ে পড়ে অথবা অসুস্থতা তীব্রতর হয়। যদি অন্তরে হিকমত ও সদুপদেশ ঘটে তবে এগুলো অন্তরকে এর সংশোধন ও চিকিৎসার পথে পরিচালিত করে। মহান আল্লাহ বলেন,

لِّيَجْعَلَ مَا يُلْقِي الشَّيْطَانُ فِتْنَةً لِّلَّذِينَ فِي قُلُوبِهِم مَّرَضٌ وَالْقَاسِيَةِ قُلُوبُهُمْ وَإِنَّ الظَّالِمِينَ لَفِي شِقَاقَ بَعِيدٍ (٥৩)
"এটি এই জন্য যে, শয়তান যা প্রক্ষিপ্ত করে সেটা তিনি তাদের জন্য পরীক্ষাস্বরূপ করেন, যাদের অন্তরে একটি ব্যাধি রয়েছে আর যাদের অন্তর কঠিন।” (সূরা হাজ্জ, ২২ : ৫৩)

কারন এটি তাদের মধ্যে সন্দেহ জন্ম দেয় ও তাদের অসারতার কারনে তাদের অন্তরগুলো কঠিন হয়ে যায় আর সন্দেহ দ্বারা দুর্বল হয়ে পড়ে এবং ঈমান থেকে দূরে সরে যায়। এ কারনে শয়তান তাদের প্রতি যা নিক্ষেপ করে তা তাদের জন্য ফিতনায় পরিণত হয়। মহান আল্লাহ বলেন,

لَّئِن لَّمْ يَنتَهِ الْمُنَافِقُونَ وَالَّذِينَ فِي قُلُوبِهِم مَّرَضٌ وَالْمُرْجِفُونَ فِي الْمَدِينَةِ لَنُغْرِيَنَّكَ بِهِمْ ثُمَّ لَا يُجَاوِرُونَكَ فِيهَا إِلَّا قَلِيلًا (৬০)
"মুনাফিকেরা আর যাদের অন্তরে একটি ব্যাধি আছে আর যারা নগরে গুজব রটনা করে, তারা বিরত না হলে আমি নিশ্চয়ই তাদের বিরুদ্ধে তোমাকে প্রবল করবো। এরপর এই নগরীতে তোমার প্রতিবেশী রূপে তারা অল্প সময়ই থাকবে।” (সূরা আহযাব, ৩৩ : ৬০)

وَلَا يَرْتَابَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ وَالْمُؤْمِنُونَ وَلِيَقُولَ الَّذِينَ فِي قُلُوبِهِم مَّرَضٌ وَالْكَافِرُونَ مَاذَا أَرَادَ اللَّهُ بِهَذَا مَثَلًا
"... এবং বিশ্বাসীরা আর কিতাবীরা সন্দেহ পোষণ না করে। এর ফলে যাদের অন্তরে একটি ব্যাধি আছে তারা ও কাফিররা বলবে, 'আল্লাহ এই অভিনব উক্তি দিয়ে কি বুঝাতে চেয়েছেন?' " (সূরা আল-মুদ্দাসসির, ৭৪ : ৩১)

এই লোকগুলোর (কঠিন হয়ে যাওয়া) অন্তর মারা যায় নি, যেমনটি কাফির ও মুনাফিকদের ক্ষেত্রে ঘটেছিলো; আর তাদের অন্তরগুলো মুমিনদের পবিত্র অন্তরের ন্যায় বিশুদ্ধ ও পবিত্র নয়, বরং তাদের অন্তরগুলোতে সংশয়- সন্দেহ আর কামনা-বাসনার অসুস্থতা রয়েছে। অনুরূপ তার ক্ষেত্রেও, যার ব্যাপারে আল্লাহ বলেন,

فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَّعْرُوفًا (۳۲)
"... যাতে যার অন্তরে একটি ব্যাধি আছে সে প্রলুব্ধ হয়..." (সূরা আহযাব, ৩৩: ৩২)

এখানে কামনা-বাসনার অসুস্থতাকে নির্দেশ করা হয়েছে, কারন বিশুদ্ধ অন্তর যদি কোন নারী কর্তৃক প্রলুব্ধ হয় তবে তার প্রতি নত হবে না। অপরদিকে, কামনা-বাসনার ব্যাধি দ্বারা আক্রান্ত অন্তর তার দুর্বলতার কারনে তার অসুস্থতার প্রবলতা বা দুর্বলতা অনুযায়ী সেটি যা দ্বারা প্রলুব্ধ হয়েছে তার প্রতি নত হয়ে যাবে, আর এটি যখন প্রলোভনের প্রতি আত্মসমর্পণ করবে তখন অন্তরের ব্যাধি সম্পূর্ণ পরিতৃপ্ত হবে।

অন্তরের অসুস্থতা হল এর মৃত্যুর থেকেও নিকৃষ্টতর স্তর। অন্তর মারা যায় সম্পূর্ণ অজ্ঞতার কারনে, কিন্তু তা অসুস্থ হয়ে পড়ে খণ্ড খণ্ড অজ্ঞতার কারনে। এক্ষেত্রে অন্তর মারা যেতে পারে, অসুস্থ হতে পারে অথবা চিকিৎসার দ্বারা রোগমুক্তিও লাভ করতে পারে।

অন্তরের জীবন, মৃত্যু, অসুস্থতা ও চিকিৎসা হল শারীরিক জীবন, মৃত্যু, অসুস্থতা ও চিকিৎসা থেকে অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ। এ কারনেই সংশয়-সন্দেহ আর কামনা-বাসনার উপস্থিতির ফলে অন্তর অসুস্থ হয়ে পড়ে অথবা অসুস্থতা তীব্রতর হয়। যদি অন্তরে হিকমত ও সদুপদেশ ঘটে তবে এগুলো অন্তরকে এর সংশোধন ও চিকিৎসার পথে পরিচালিত করে। মহান আল্লাহ বলেন,

لِّيَجْعَلَ مَا يُلْقِي الشَّيْطَانُ فِتْنَةً لِّلَّذِينَ فِي قُلُوبِهِم مَّرَضٌ وَالْقَاسِيَةِ قُلُوبُهُمْ وَإِنَّ الظَّالِمِينَ لَفِي شِقَاقَ بَعِيدٍ (٥৩)
"এটি এই জন্য যে, শয়তান যা প্রক্ষিপ্ত করে সেটা তিনি তাদের জন্য পরীক্ষাস্বরূপ করেন, যাদের অন্তরে একটি ব্যাধি রয়েছে আর যাদের অন্তর কঠিন।” (সূরা হাজ্জ, ২২ : ৫৩)

কারন এটি তাদের মধ্যে সন্দেহ জন্ম দেয় ও তাদের অসারতার কারনে তাদের অন্তরগুলো কঠিন হয়ে যায় আর সন্দেহ দ্বারা দুর্বল হয়ে পড়ে এবং ঈমান থেকে দূরে সরে যায়। এ কারনে শয়তান তাদের প্রতি যা নিক্ষেপ করে তা তাদের জন্য ফিতনায় পরিণত হয়। মহান আল্লাহ বলেন,

لَّئِن لَّمْ يَنتَهِ الْمُنَافِقُونَ وَالَّذِينَ فِي قُلُوبِهِم مَّرَضٌ وَالْمُرْجِفُونَ فِي الْمَدِينَةِ لَنُغْرِيَنَّكَ بِهِمْ ثُمَّ لَا يُجَاوِرُونَكَ فِيهَا إِلَّا قَلِيلًا (৬০)
"মুনাফিকেরা আর যাদের অন্তরে একটি ব্যাধি আছে আর যারা নগরে গুজব রটনা করে, তারা বিরত না হলে আমি নিশ্চয়ই তাদের বিরুদ্ধে তোমাকে প্রবল করবো। এরপর এই নগরীতে তোমার প্রতিবেশী রূপে তারা অল্প সময়ই থাকবে।” (সূরা আহযাব, ৩৩ : ৬০)

وَلَا يَرْتَابَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ وَالْمُؤْمِنُونَ وَلِيَقُولَ الَّذِينَ فِي قُلُوبِهِم مَّرَضٌ وَالْكَافِرُونَ مَاذَا أَرَادَ اللَّهُ بِهَذَا مَثَلًا
"... এবং বিশ্বাসীরা আর কিতাবীরা সন্দেহ পোষণ না করে। এর ফলে যাদের অন্তরে একটি ব্যাধি আছে তারা ও কাফিররা বলবে, 'আল্লাহ এই অভিনব উক্তি দিয়ে কি বুঝাতে চেয়েছেন?' " (সূরা আল-মুদ্দাসসির, ৭৪ : ৩১)

এই লোকগুলোর (কঠিন হয়ে যাওয়া) অন্তর মারা যায় নি, যেমনটি কাফির ও মুনাফিকদের ক্ষেত্রে ঘটেছিলো; আর তাদের অন্তরগুলো মুমিনদের পবিত্র অন্তরের ন্যায় বিশুদ্ধ ও পবিত্র নয়, বরং তাদের অন্তরগুলোতে সংশয়- সন্দেহ আর কামনা-বাসনার অসুস্থতা রয়েছে। অনুরূপ তার ক্ষেত্রেও, যার ব্যাপারে আল্লাহ বলেন,

فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَّعْرُوفًا (۳۲)
"... যাতে যার অন্তরে একটি ব্যাধি আছে সে প্রলুব্ধ হয়..." (সূরা আহযাব, ৩৩: ৩২)

এখানে কামনা-বাসনার অসুস্থতাকে নির্দেশ করা হয়েছে, কারন বিশুদ্ধ অন্তর যদি কোন নারী কর্তৃক প্রলুব্ধ হয় তবে তার প্রতি নত হবে না। অপরদিকে, কামনা-বাসনার ব্যাধি দ্বারা আক্রান্ত অন্তর তার দুর্বলতার কারনে তার অসুস্থতার প্রবলতা বা দুর্বলতা অনুযায়ী সেটি যা দ্বারা প্রলুব্ধ হয়েছে তার প্রতি নত হয়ে যাবে, আর এটি যখন প্রলোভনের প্রতি আত্মসমর্পণ করবে তখন অন্তরের ব্যাধি সম্পূর্ণ পরিতৃপ্ত হবে।

📘 অন্তরের ব্যাধি সমূহ ও তার চিকিৎসা > 📄 অন্তরের একটি চিকিৎসা হল আল-কুরআন

📄 অন্তরের একটি চিকিৎসা হল আল-কুরআন


অন্তরে যা রয়েছে তার চিকিৎসা হল আল-কুরআন। যে ব্যক্তির অন্তরে সন্দেহ ও কামনা-বাসনার অসুস্থতা রয়েছে কুরআন তার জন্যও চিকিৎসা, কারন এতে রয়েছে পরিস্কার প্রমাণাদি যা বাতিল থেকে হকের পার্থক্য নির্দেশ করে আর মিথ্যা সংশয়-সন্দেহের অসুস্থতাকে অন্তর থেকে দূর করে দিয়ে সুনিশ্চিত জ্ঞান, সঠিক উপলব্ধি ও বোধশক্তিকে এমনভাবে অন্তরে স্থান করে দেয় যে অন্তর কোন বিষয় বা ঘটনাকে তাদের বাস্তবতা অনুযায়ী প্রত্যক্ষ করে।

কুরআনে রয়েছে হিকমত, রয়েছে চমৎকার উপদেশ যা সৎ কাজ করার ও মন্দ কাজ থেকে দূরে থাকার উৎসাহ প্রদান করে, আরও রয়েছে বিভিন্ন শিক্ষামূলক কাহিনী যেগুলো জানার মাধ্যমে অন্তর তার জন্য যেটি কল্যাণকর সেটি কামনা করবে আর যেটি তার জন্য ক্ষতিকর সেটিকে ঘৃণা করবে – আর এগুলো দ্বারা অন্তর অবধারিতভাবে সংশোধনের দিকে পরিচালিত হবে। সুতরাং পূর্বে যে অন্তর তাকে পথভ্রষ্ট করা কোন বিষয়ের প্রতি কামনা রাখতো আর তাকে পথপ্রদর্শনকারী কোন কিছুকে ঘৃণা করতো, সেই অন্তরই কুরআনের কারনে যা তাকে পথপ্রদর্শন করবে তার ব্যাপারে কামনা রাখবে আর যা তাকে পথভ্রষ্ট করবে তাকে ঘৃণা করবে।

মিথ্যা কামনা-বাসনাকে আহবানকারী সকল অসুস্থতাকে কুরআন দূর করে দেয় যতক্ষণ পর্যন্ত না অন্তর পবিত্র হয়ে যায়, যার ফলে এর কামনা-বাসনাও পবিত্র হয় আর এটি স্বাভাবিক অবস্থায় (ফিতরাত) ফিরে যায় – যে ফিতরাতের উপর তাকে সৃষ্টি করা হয়েছিল; ঠিক যেমনটি চিকিৎসাপ্রাপ্ত হওয়ার পর শরীর তার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যায়। অন্তর ঈমান ও কুরআন দ্বারা এমনভাবে প্রতিপালিত হবে যে তা শক্তিশালী হয়ে পড়বে, কারন নিশ্চয়ই অন্তরের পরিশুদ্ধির ব্যাপারটি শরীরের বেড়ে উঠার মতই।

অন্তরে যা রয়েছে তার চিকিৎসা হল আল-কুরআন। যে ব্যক্তির অন্তরে সন্দেহ ও কামনা-বাসনার অসুস্থতা রয়েছে কুরআন তার জন্যও চিকিৎসা, কারন এতে রয়েছে পরিস্কার প্রমাণাদি যা বাতিল থেকে হকের পার্থক্য নির্দেশ করে আর মিথ্যা সংশয়-সন্দেহের অসুস্থতাকে অন্তর থেকে দূর করে দিয়ে সুনিশ্চিত জ্ঞান, সঠিক উপলব্ধি ও বোধশক্তিকে এমনভাবে অন্তরে স্থান করে দেয় যে অন্তর কোন বিষয় বা ঘটনাকে তাদের বাস্তবতা অনুযায়ী প্রত্যক্ষ করে।

কুরআনে রয়েছে হিকমত, রয়েছে চমৎকার উপদেশ যা সৎ কাজ করার ও মন্দ কাজ থেকে দূরে থাকার উৎসাহ প্রদান করে, আরও রয়েছে বিভিন্ন শিক্ষামূলক কাহিনী যেগুলো জানার মাধ্যমে অন্তর তার জন্য যেটি কল্যাণকর সেটি কামনা করবে আর যেটি তার জন্য ক্ষতিকর সেটিকে ঘৃণা করবে – আর এগুলো দ্বারা অন্তর অবধারিতভাবে সংশোধনের দিকে পরিচালিত হবে। সুতরাং পূর্বে যে অন্তর তাকে পথভ্রষ্ট করা কোন বিষয়ের প্রতি কামনা রাখতো আর তাকে পথপ্রদর্শনকারী কোন কিছুকে ঘৃণা করতো, সেই অন্তরই কুরআনের কারনে যা তাকে পথপ্রদর্শন করবে তার ব্যাপারে কামনা রাখবে আর যা তাকে পথভ্রষ্ট করবে তাকে ঘৃণা করবে।

মিথ্যা কামনা-বাসনাকে আহবানকারী সকল অসুস্থতাকে কুরআন দূর করে দেয় যতক্ষণ পর্যন্ত না অন্তর পবিত্র হয়ে যায়, যার ফলে এর কামনা-বাসনাও পবিত্র হয় আর এটি স্বাভাবিক অবস্থায় (ফিতরাত) ফিরে যায় – যে ফিতরাতের উপর তাকে সৃষ্টি করা হয়েছিল; ঠিক যেমনটি চিকিৎসাপ্রাপ্ত হওয়ার পর শরীর তার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যায়। অন্তর ঈমান ও কুরআন দ্বারা এমনভাবে প্রতিপালিত হবে যে তা শক্তিশালী হয়ে পড়বে, কারন নিশ্চয়ই অন্তরের পরিশুদ্ধির ব্যাপারটি শরীরের বেড়ে উঠার মতই।

📘 অন্তরের ব্যাধি সমূহ ও তার চিকিৎসা > 📄 অন্তরের একটি চিকিৎসা হল সৎ কাজ করা

📄 অন্তরের একটি চিকিৎসা হল সৎ কাজ করা


যাকাহ (পরিশোধন) এর ভাষাগত অর্থ হল পরিশুদ্ধতা বৃদ্ধি পাওয়া। যখন কোন কিছুর পরিশুদ্ধতা বৃদ্ধি পায় তখন বলা হয়, “কোন কিছুর যাকাহ হয়েছে।” অন্তরকে লালনপালন করার প্রয়োজন রয়েছেন যাতে করে এটি পূর্ণতাপ্রাপ্ত হয় এবং পরিপূর্ণ ও পরিশুদ্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়; যেমনটি শরীরকে লালনপালনের প্রয়োজন রয়েছে যা এর জন্য কল্যাণকর, কিন্তু এর পাশাপাশি এর ক্ষতি করা থেকে যেকোন কিছুকে প্রতিরোধ করারও প্রয়োজন রয়েছে। সুতরাং শরীর বৃদ্ধি পাবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না এটি কল্যাণকর বিষয়াদি লাভ করবে আর এর ক্ষতিকর কিছু থেকে বিরত থাকবে। অনুরূপভাবে, যতক্ষণ পর্যন্ত না অন্তর এর উপকারী বিষয়গুলো অর্জন করবে আর এর ক্ষতিকারক বিষয়গুলোকে দমন করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত এটি এমনভাবে পরিশুদ্ধ হবে না যে এটি উন্নতিলাভ করবে আর এর পরিশুদ্ধতার ব্যাপারে পূর্ণতাপ্রাপ্ত হবে; যেমনিভাবে এই দুটো ফ্যাক্টর ছাড়া ফুল বৃদ্ধি পায় না।

সাদাকাহ (দান করা) করার কারনে অন্তর পরিশুদ্ধতা লাভ করে কারন সাদাকাহ পাপসমূহকে প্রশমিত করে, যেমনটা পানি প্রশমিত করে আগুনকে। এর যাকাহ বলতে বুঝায় এর অতিরিক্ত কিছু, যা হল কেবলই পাপ থেকে মুক্তি। মহিমান্বিত আল্লাহ বলেন,

خُذْ مِنْ أَمْوَالِهِمْ صَدَقَةً تُطَهِّرُهُمْ وَتُزَكِّيهِم بِهَا وَصَلِّ عَلَيْهِمْ إِنَّ صَلَاتَكَ سَكَنٌ لَّهُمْ وَاللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ (۱۰۳)
"তাদের কাছ থেকে সাদাকাহ গ্রহণ করো তাদেরকে পবিত্র করার জন্য আর এটির মাধ্যমে তাদের পরিশুদ্ধ করো।” (সূরা তাওবাহ, ৯ : ১০৩)

যাকাহ (পরিশোধন) এর ভাষাগত অর্থ হল পরিশুদ্ধতা বৃদ্ধি পাওয়া। যখন কোন কিছুর পরিশুদ্ধতা বৃদ্ধি পায় তখন বলা হয়, “কোন কিছুর যাকাহ হয়েছে।” অন্তরকে লালনপালন করার প্রয়োজন রয়েছেন যাতে করে এটি পূর্ণতাপ্রাপ্ত হয় এবং পরিপূর্ণ ও পরিশুদ্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়; যেমনটি শরীরকে লালনপালনের প্রয়োজন রয়েছে যা এর জন্য কল্যাণকর, কিন্তু এর পাশাপাশি এর ক্ষতি করা থেকে যেকোন কিছুকে প্রতিরোধ করারও প্রয়োজন রয়েছে। সুতরাং শরীর বৃদ্ধি পাবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না এটি কল্যাণকর বিষয়াদি লাভ করবে আর এর ক্ষতিকর কিছু থেকে বিরত থাকবে। অনুরূপভাবে, যতক্ষণ পর্যন্ত না অন্তর এর উপকারী বিষয়গুলো অর্জন করবে আর এর ক্ষতিকারক বিষয়গুলোকে দমন করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত এটি এমনভাবে পরিশুদ্ধ হবে না যে এটি উন্নতিলাভ করবে আর এর পরিশুদ্ধতার ব্যাপারে পূর্ণতাপ্রাপ্ত হবে; যেমনিভাবে এই দুটো ফ্যাক্টর ছাড়া ফুল বৃদ্ধি পায় না।

সাদাকাহ (দান করা) করার কারনে অন্তর পরিশুদ্ধতা লাভ করে কারন সাদাকাহ পাপসমূহকে প্রশমিত করে, যেমনটা পানি প্রশমিত করে আগুনকে। এর যাকাহ বলতে বুঝায় এর অতিরিক্ত কিছু, যা হল কেবলই পাপ থেকে মুক্তি। মহিমান্বিত আল্লাহ বলেন,

خُذْ مِنْ أَمْوَالِهِمْ صَدَقَةً تُطَهِّرُهُمْ وَتُزَكِّيهِم بِهَا وَصَلِّ عَلَيْهِمْ إِنَّ صَلَاتَكَ سَكَنٌ لَّهُمْ وَاللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ (۱۰۳)
"তাদের কাছ থেকে সাদাকাহ গ্রহণ করো তাদেরকে পবিত্র করার জন্য আর এটির মাধ্যমে তাদের পরিশুদ্ধ করো।” (সূরা তাওবাহ, ৯ : ১০৩)

📘 অন্তরের ব্যাধি সমূহ ও তার চিকিৎসা > 📄 অন্তরের একটি চিকিৎসা হল অশালীন কাজ বর্জন করা

📄 অন্তরের একটি চিকিৎসা হল অশালীন কাজ বর্জন করা


একইভাবে, অশালীন কাজ আর পাপ থেকে বিরত থাকা অন্তরকে এর পরিশুদ্ধির দিকে পরিচালিত করে, কারন এগুলো শরীরের কুষ্ঠরোগ বা ফুলের কাঁটার ন্যায় একই স্তরের। সুতরাং উদাহারনস্বরূপ বলা যায়, শরীর থেকে যখন অতিরিক্ত রক্ত কমিয়ে ফেলার মাধ্যমে একে কুষ্ঠরোগমুক্ত করা হয়, তখন শরীরের স্বাভাবিক শক্তি প্রকাশিত হয় আর এটি রোগ থেকে মুক্তি পেয়ে উন্নতিলাভ করে।

অনুরূপভাবে, যখন কেউ পাপ থেকে তাওবা করে তখন অন্তর অপবিত্রতা থেকে মুক্ত হয়, যা দ্বারা এটি পাপগুলোর সাথে সৎ কাজগুলোকে মিশ্রিত করে দেয়। সুতরাং যখন কেউ পাপ থেকে তাওবা করে তখন অন্তরের শক্তি এমনভাবে উত্থিত হয় যে এটি সৎ কাজ করার ব্যাপারে কামনা করে এবং যে বাতিল ও বিকৃত ব্যাপারগুলোতে সে একসময় নিমজ্জিত ছিল তা থেকে মুক্তি লাভ করে।

সুতরাং অন্তরের যাকাহ বলতে এর উন্নতিলাভ আর পরিপূর্ণ হওয়াকে বুঝায়। গৌরবান্বিত আল্লাহ বলেন,

وَلَوْلَا فَضْلُ اللَّهِ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَتُهُ مَا زَكَى مِنكُم مِّنْ أَحَدٍ أَبَدًا وَلَكِنَّ اللَّهَ يُزَكِّي مَن يَشَاءُ
"আল্লাহ'র দয়া ও অনুগ্রহ না থাকলে তোমাদের কেউই কখনো পরিশুদ্ধ হতে পারতে না...।" (সূরা নূর, ২৪: ২১)

فَإِن لَّمْ تَجِدُوا فِيهَا أَحَدًا فَلَا تَدْخُلُوهَا حَتَّى يُؤْذَنَ لَكُمْ ۖ وَإِن قِيلَ لَكُمُ ارْجِعُوا فَارْجِعُوا هُوَ أَزْكَى لَكُمْ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ (۲۸)
"...আর যদি তোমাদেরকে বলা হয়ঃ ফিরে যাও, তবে তোমরা ফিরে যাবে, এটিই তোমাদের জন্য অধিকতর বিশুদ্ধ ..।" (সূরা নূর, ২৪: ২৮)

قُل لِّلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ذَلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ (۳۰)
"মুমিনদেরকে তাদের দৃষ্টি অবনত করতে আর তাদের গোপন অঙ্গের হিফাযত করতে বল। এটিই তাদের জন্য অধিকতর বিশুদ্ধ...।” (সূরা নূর, ২৪ : ৩০)

قَدْ أَفْلَحَ مَن تَزَكَّى (١٤) وَذَكَرَ اسْمَ رَبِّهِ فَصَلَّى (١٥)
"নিশ্চয়ই যে নিজেকে পরিশুদ্ধ করে, সে সফলতা অর্জন করলো, এবং তার রবের নাম স্মরণ করলো অতঃপর সালাত আদায় করলো।” (সূরা 'আলা, ৮৭: ১৪-১৫)

قَدْ أَفْلَحَ مَن زَكَّاهَا (۹) وَقَدْ خَابَ مَن دَسَّاهَا (۱۰)
"নিশ্চয়ই যে এটিকে পরিশুদ্ধ করে সে সফল, আর যে এটিকে কলুষিত করে সে ব্যর্থ।” (সূরা আশ-শামস, ৯১ : ৯-১০)

وَمَا يُدْرِيكَ لَعَلَّهُ يَزَّكَّى (۳)
"তুমি কেমন করে জানবে সে হয়তো নিজেকে পরিশুদ্ধ করতো?” (সূরা 'আবাসা, ৮০: ৩)

فَقُلْ هَل لَّكَ إِلَىٰ أَن تَزَكَّى (۱۸) وَأَهْدِيَكَ إِلَىٰ رَبِّكَ فَتَخْشَىٰ (۱۹)
"আর তাকে বলা হলঃ তুমি কি তোমাকে পরিশুদ্ধ করতে চাও? আর (এটি চাও যে) আমি তোমাকে তোমার রবের পথে পরিচালিত করি যাতে তুমি তাকে ভয় করো?” (সূরা নাযি'আত, ৭৯ : ১৮-১৯)

সুতরাং, যদিও তাযকিয়্যাহ (পরিশুদ্ধি) এর মৌলিক অর্থ হল উন্নতি হওয়া, দয়া এবং ধার্মিকতা বৃদ্ধি হওয়া, এটি কেবলমাত্র মন্দকে অপসারণের মাধ্যমেই অর্জন করা যাবে আর এ কারনেই আত্মার পরিশুদ্ধি উভয় বিষয়ের (সৎ কাজ করা আর পাপ কাজ এড়িয়ে চলা) সমন্বয়ে গঠিত। মহান আল্লাহ বলেন,

وَوَيْلٌ لِّلْمُشْرِكِينَ (٦) الَّذِينَ لَا يُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَهُم بِالْآخِرَةِ هُمْ كَافِرُونَ (۷)
"দুর্ভোগ মুশরিকদের জন্য, যারা যাকাত প্রদান করে না আর তারা আখিরাতেও অবিশ্বাসী।” (সূরা ফুসসিলাت, ৪১ : ৬-৭)

যাকাত, তাওহীদ আর ঈমান – এগুলো দ্বারা অন্তর পরিশুদ্ধ হয়। কারন, নিঃসন্দেহে তাওহীদ অন্তর্ভুক্ত করে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কতৃত্ব অস্বীকার করাকে এবং অন্তরে আল্লাহ'র কতৃত্বের সত্যতা সমর্থন করাকে, এটি হল "লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” (আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই) এর বাস্তবতা এবং এটিই হল সেই মূল ভিত্তি যেটি দ্বারা অন্তর পরিশুদ্ধ হয়।

তাযকিয়্যাহ (পরিশুদ্ধি) হল কেবলমাত্র কোন কিছুকে বা বিশ্বাসে বা বিবরণীতে বিশুদ্ধ করার একটি ক্রিয়া। অনুরূপভাবে বলা হয় "আদালতুহু” যখন আপনি ন্যায়সঙ্গত হবেন বা লোকদের বিশ্বাসে ন্যায়পরায়ণ হবেন। মহান আল্লাহ বলেন,

فَلَا تُزَكُّوا أَنفُسَكُمْ
"সুতরাং তোমাদের পরিশুদ্ধতা আছে বলে মনে করো না..." (সূরা নাযম, ৫৩: ৩২)

অর্থাৎ, তোমরা ঘোষণা করো না যে তোমরা পরিশুদ্ধ, আর এটি আল্লাহ'র সেই আয়াতের অনুরূপ নয় যেখানে তিনি বলেন-

قَدْ أَفْلَحَ مَن زَكَّاهَا (৯)
"নিশ্চয়ই যে এটিকে পরিশুদ্ধ করে সে সফল।” (সূরা আশ-শামস, ৯১ : ৯)

এ কারনে মহান আল্লাহ বলেন,

هُوَ أَعْلَمُ بِمَنِ اتَّقَى (৩২)
"তিনিই সবচেয়ে ভালো জানেন যে কে তার ব্যাপারে তাকওয়া অবলম্বন করে।” (সূরা নাযম, ৫৩: ৩২)

যায়নাব প্রথমে বুররা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। বলা হয়ে থাকে যে তিনি নিজেকে পরিশুদ্ধ করলেন, তাই রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে যায়নাব বলে ডাকলেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন,

أَلَمْ تَرَ إِلَى الَّذِينَ يُزَكُّونَ أَنفُسَهُم بَلِ اللَّهُ يُزَكِّي مَن يَشَاءُ
"তুমি কি তাদের প্রতি লক্ষ্য করো নি যারা নিজের পরিশুদ্ধতার দাবী করে? বরং আল্লাহ, যাকে ইচ্ছা তিনি পবিত্র করেন...।" (সূরা নিসা', ৪ : ৪৯)

এর অর্থ হল, তিনি যাকে খুশী তাকে পরিশুদ্ধ করেন আর তার পরিশুদ্ধতা পরিচিত করে দেন, যেমনটা একজন সংশোধনকারী কেবল তাদের পরিশুদ্ধতার ব্যাপারে ঘোষণা করেন, যাদের ন্যায়বিচারের প্রতি তিনি সাক্ষ্য বহন করতে পারেন।

একইভাবে, অশালীন কাজ আর পাপ থেকে বিরত থাকা অন্তরকে এর পরিশুদ্ধির দিকে পরিচালিত করে, কারন এগুলো শরীরের কুষ্ঠরোগ বা ফুলের কাঁটার ন্যায় একই স্তরের। সুতরাং উদাহারনস্বরূপ বলা যায়, শরীর থেকে যখন অতিরিক্ত রক্ত কমিয়ে ফেলার মাধ্যমে একে কুষ্ঠরোগমুক্ত করা হয়, তখন শরীরের স্বাভাবিক শক্তি প্রকাশিত হয় আর এটি রোগ থেকে মুক্তি পেয়ে উন্নতিলাভ করে।

অনুরূপভাবে, যখন কেউ পাপ থেকে তাওবা করে তখন অন্তর অপবিত্রতা থেকে মুক্ত হয়, যা দ্বারা এটি পাপগুলোর সাথে সৎ কাজগুলোকে মিশ্রিত করে দেয়। সুতরাং যখন কেউ পাপ থেকে তাওবা করে তখন অন্তরের শক্তি এমনভাবে উত্থিত হয় যে এটি সৎ কাজ করার ব্যাপারে কামনা করে এবং যে বাতিল ও বিকৃত ব্যাপারগুলোতে সে একসময় নিমজ্জিত ছিল তা থেকে মুক্তি লাভ করে।

সুতরাং অন্তরের যাকাহ বলতে এর উন্নতিলাভ আর পরিপূর্ণ হওয়াকে বুঝায়। গৌরবান্বিত আল্লাহ বলেন,

وَلَوْلَا فَضْلُ اللَّهِ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَتُهُ مَا زَكَى مِنكُم مِّنْ أَحَدٍ أَبَدًا وَلَكِنَّ اللَّهَ يُزَكِّي مَن يَشَاءُ
"আল্লাহ'র দয়া ও অনুগ্রহ না থাকলে তোমাদের কেউই কখনো পরিশুদ্ধ হতে পারতে না...।" (সূরা নূর, ২৪: ২১)

فَإِن لَّمْ تَجِدُوا فِيهَا أَحَدًا فَلَا تَدْخُلُوهَا حَتَّى يُؤْذَنَ لَكُمْ ۖ وَإِن قِيلَ لَكُمُ ارْجِعُوا فَارْجِعُوا هُوَ أَزْكَى لَكُمْ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ (۲۸)
"...আর যদি তোমাদেরকে বলা হয়ঃ ফিরে যাও, তবে তোমরা ফিরে যাবে, এটিই তোমাদের জন্য অধিকতর বিশুদ্ধ ..।" (সূরা নূর, ২৪: ২৮)

قُل لِّلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ذَلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ (۳۰)
"মুমিনদেরকে তাদের দৃষ্টি অবনত করতে আর তাদের গোপন অঙ্গের হিফাযত করতে বল। এটিই তাদের জন্য অধিকতর বিশুদ্ধ...।” (সূরা নূর, ২৪ : ৩০)

قَدْ أَفْلَحَ مَن تَزَكَّى (١٤) وَذَكَرَ اسْمَ رَبِّهِ فَصَلَّى (١٥)
"নিশ্চয়ই যে নিজেকে পরিশুদ্ধ করে, সে সফলতা অর্জন করলো, এবং তার রবের নাম স্মরণ করলো অতঃপর সালাত আদায় করলো।” (সূরা 'আলা, ৮৭: ১৪-১৫)

قَدْ أَفْلَحَ مَن زَكَّاهَا (۹) وَقَدْ خَابَ مَن دَسَّاهَا (۱۰)
"নিশ্চয়ই যে এটিকে পরিশুদ্ধ করে সে সফল, আর যে এটিকে কলুষিত করে সে ব্যর্থ।” (সূরা আশ-শামস, ৯১ : ৯-১০)

وَمَا يُدْرِيكَ لَعَلَّهُ يَزَّكَّى (۳)
"তুমি কেমন করে জানবে সে হয়তো নিজেকে পরিশুদ্ধ করতো?” (সূরা 'আবাসা, ৮০: ৩)

فَقُلْ هَل لَّكَ إِلَىٰ أَن تَزَكَّى (۱۸) وَأَهْدِيَكَ إِلَىٰ رَبِّكَ فَتَخْشَىٰ (۱۹)
"আর তাকে বলা হলঃ তুমি কি তোমাকে পরিশুদ্ধ করতে চাও? আর (এটি চাও যে) আমি তোমাকে তোমার রবের পথে পরিচালিত করি যাতে তুমি তাকে ভয় করো?” (সূরা নাযি'আত, ৭৯ : ১৮-১৯)

সুতরাং, যদিও তাযকিয়্যাহ (পরিশুদ্ধি) এর মৌলিক অর্থ হল উন্নতি হওয়া, দয়া এবং ধার্মিকতা বৃদ্ধি হওয়া, এটি কেবলমাত্র মন্দকে অপসারণের মাধ্যমেই অর্জন করা যাবে আর এ কারনেই আত্মার পরিশুদ্ধি উভয় বিষয়ের (সৎ কাজ করা আর পাপ কাজ এড়িয়ে চলা) সমন্বয়ে গঠিত। মহান আল্লাহ বলেন,

وَوَيْلٌ لِّلْمُشْرِكِينَ (٦) الَّذِينَ لَا يُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَهُم بِالْآخِرَةِ هُمْ كَافِرُونَ (۷)
"দুর্ভোগ মুশরিকদের জন্য, যারা যাকাত প্রদান করে না আর তারা আখিরাতেও অবিশ্বাসী।” (সূরা ফুসসিলাت, ৪১ : ৬-৭)

যাকাত, তাওহীদ আর ঈমান – এগুলো দ্বারা অন্তর পরিশুদ্ধ হয়। কারন, নিঃসন্দেহে তাওহীদ অন্তর্ভুক্ত করে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কতৃত্ব অস্বীকার করাকে এবং অন্তরে আল্লাহ'র কতৃত্বের সত্যতা সমর্থন করাকে, এটি হল "লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” (আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই) এর বাস্তবতা এবং এটিই হল সেই মূল ভিত্তি যেটি দ্বারা অন্তর পরিশুদ্ধ হয়।

তাযকিয়্যাহ (পরিশুদ্ধি) হল কেবলমাত্র কোন কিছুকে বা বিশ্বাসে বা বিবরণীতে বিশুদ্ধ করার একটি ক্রিয়া। অনুরূপভাবে বলা হয় "আদালতুহু” যখন আপনি ন্যায়সঙ্গত হবেন বা লোকদের বিশ্বাসে ন্যায়পরায়ণ হবেন। মহান আল্লাহ বলেন,

فَلَا تُزَكُّوا أَنفُسَكُمْ
"সুতরাং তোমাদের পরিশুদ্ধতা আছে বলে মনে করো না..." (সূরা নাযম, ৫৩: ৩২)

অর্থাৎ, তোমরা ঘোষণা করো না যে তোমরা পরিশুদ্ধ, আর এটি আল্লাহ'র সেই আয়াতের অনুরূপ নয় যেখানে তিনি বলেন-

قَدْ أَفْلَحَ مَن زَكَّاهَا (৯)
"নিশ্চয়ই যে এটিকে পরিশুদ্ধ করে সে সফল।” (সূরা আশ-শামস, ৯১ : ৯)

এ কারনে মহান আল্লাহ বলেন,

هُوَ أَعْلَمُ بِمَنِ اتَّقَى (৩২)
"তিনিই সবচেয়ে ভালো জানেন যে কে তার ব্যাপারে তাকওয়া অবলম্বন করে।” (সূরা নাযম, ৫৩: ৩২)

যায়নাব প্রথমে বুররা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। বলা হয়ে থাকে যে তিনি নিজেকে পরিশুদ্ধ করলেন, তাই রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে যায়নাব বলে ডাকলেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন,

أَلَمْ تَرَ إِلَى الَّذِينَ يُزَكُّونَ أَنفُسَهُم بَلِ اللَّهُ يُزَكِّي مَن يَشَاءُ
"তুমি কি তাদের প্রতি লক্ষ্য করো নি যারা নিজের পরিশুদ্ধতার দাবী করে? বরং আল্লাহ, যাকে ইচ্ছা তিনি পবিত্র করেন...।" (সূরা নিসা', ৪ : ৪৯)

এর অর্থ হল, তিনি যাকে খুশী তাকে পরিশুদ্ধ করেন আর তার পরিশুদ্ধতা পরিচিত করে দেন, যেমনটা একজন সংশোধনকারী কেবল তাদের পরিশুদ্ধতার ব্যাপারে ঘোষণা করেন, যাদের ন্যায়বিচারের প্রতি তিনি সাক্ষ্য বহন করতে পারেন।

লিঙ্ক শেয়ার করুন
close

লিঙ্ক কপি করুন