📘 আকাবিরদের জ্ঞান সাধনার গল্প > 📄 এক হাদিস থেকে ৪০টি মাসআলা ইসতিম্বাত

📄 এক হাদিস থেকে ৪০টি মাসআলা ইসতিম্বাত


একবার ইমাম শাফি রহ. হজরত ইমাম মালেক রহ.-এর কাছে গেলেন। কিন্তু সেখানে গিয়ে তিনি সারা রাত জাগ্রত অবস্থায় কাটিয়ে দিলেন। সকালে ইমাম মালেক রহ. বললেন, আপনি রাতে ঘুমাননি কেন? তিনি বললেন, আমার মাথায় একটি বিষয় ঘুরপাক খাচ্ছিল।

একবার হজরত আনাস রাদি.-এর ছোটো ভাইকে উদ্দেশ্যে করে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন :
يَا أَبَا عُمَيْرِ مَا فَعَلَ النُّغَيْرِ
'হে আবু উমায়ের! তোমার পাখি কী করছে?'

বাচ্চাটির একটি পাখি ছিল। পাখিটি মরে গিয়েছিল। তারপর থেকে যখনই ছেলেটির সঙ্গে নবিজির দেখা হতো, তখনই তাকে খুশি করার জন্য নবিজি এ বাক্যটি বলতেন।

ইমাম শাফি রহ. বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ বাক্য—
يَا أَبَا عُمَيْر مَا فَعَلَ النُّغَيْرِ
থেকে চিন্তা-গবেষণা করে ৪০টি মাসআলা উদ্ভাবন করেছি। যেমন: ছোটো বাচ্চাদের স্নেহের সাথে উপনামের ডাকা যাবে।
সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! এ জন্যই তো ইমাম শাফি রহ. বলতেন, হে আল্লাহ! তোমার স্মরণ ছাড়া দিন অতিবাহিত হয় না। আর রাতে তোমার সাথে গোপনে কথা বলা ছাড়া রাত কাটে না।

📘 আকাবিরদের জ্ঞান সাধনার গল্প > 📄 শায়খুল হিন্দ রহ.-এর মুখস্থশক্তি

📄 শায়খুল হিন্দ রহ.-এর মুখস্থশক্তি


আমাদের পূর্বসূরি ওলামায়ে কেরামদেরকে আল্লাহ তাআলা অনেক ইলম দান করেছিলেন। একবার শায়খুল হিন্দ মাহমুদুল হাসান রহ. তার ছাত্রকে বললেন, বৃষ্টির মৌসুম শেষ হয়ে গেছে। বর্ষাকালে কিতাবাদি নরম থাকার কারণে তাতে পোকা ধরার সম্ভাবনা থাকে। তাই এখন আমার সব কিতাবগুলো ভালো করে রোদে দিয়ে শুকিয়ে ফেলো। কোনো পৃষ্ঠা ছেঁড়া-ফাটা থাকলে তাও ঠিক করে নাও। ছাত্র কিতাব রোদে দিতে গিয়ে দেখল একটি কিতাবের পাঁচ/ছয় পৃষ্ঠা পোকায় কেটে ফেলেছে। ছাত্র বলল, হজরত! এ কিতাবটির পাঁচ/ছয় পৃষ্ঠা পোকায় কেটে দিয়েছে। শায়খুল হিন্দ রহ. বললেন, এখানে পাঁচ/ছয় পৃষ্ঠা সাদা কাগজ লাগিয়ে দাও। ছাত্র হজরতের কথা অনুযায়ী পাঁচ/ছয় পৃষ্ঠা সাদা কাগজ লাগিয়ে কিতাব রোদে দিলো। কিতাব শুকিয়ে গেলে বলল, হজরত! এখন কী করব? তিনি বললেন, যে ইবারতটুকু নেই সেটুকু লিখে রাখো। ছাত্র বলল, হজরত! আমি এ কিতাবটি গত বছর পড়েছি, এখন আমার ভালো করে মনে নেই। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, এটি কোন কিতাব? ছাত্র বলল, মাইবুজি। এটি একটি অত্যন্ত কঠিন কিতাব। শায়খুল হিন্দ রহ. বললেন, কোন জায়গা থেকে ইবারত নেই? ছাত্র বলার পর তিনি কলম হাতে নিয়ে সেখান থেকে পাঁচ/ছয় পৃষ্ঠা ইবারত লিখে ফেললেন। এ হলো তাদের ইলমের বরকত। কিতাব পড়ার পর বছরের পর বছর অতিবাহিত হয়ে যায়, তারপরও তাদের হুবহু মনে থাকে।

📘 আকাবিরদের জ্ঞান সাধনার গল্প > 📄 বিরল মুখস্থশক্তি

📄 বিরল মুখস্থশক্তি


হজরত মাওলানা আনোয়ার শাহ কাশ্মিরি রহ. ছিলেন মুখস্থশক্তির দৃষ্টান্তহীন ব্যক্তিত্ব। একবার তিনি মিশর গিয়েছিলেন। সেখানের একটি লাইব্রেরিতে 'নুরুল ইজাহ' নামের একটি কিতাব দেখতে পেলেন। তিনি সেখানকার দায়িত্বশীলদের বললেন, এ কিতাবটি কি নেওয়া যাবে? কারণ, আমাদের সংগ্রহে এ কিতাবটি নেই। তারা বলল, না। এরপর তিনি সেখান থেকে কিতাবটি ভালোভাবে মুতালাআ করলেন এবং দেশে ফিরে হুবহু ওই কিতাবটি লিপিবদ্ধ করলেন। এরপর আসল ও নকল একত্র করা হলে দুটির মাঝে কোনো পরিবর্তন দৃষ্টিগোচর হলো না। যা বর্তমান দরসে নেজামির সিলেবাসভুক্ত।

📘 আকাবিরদের জ্ঞান সাধনার গল্প > 📄 মুখস্থশক্তির পূর্ণতা

📄 মুখস্থশক্তির পূর্ণতা


যখন ভাওয়ালপুরে খতমে নবুওয়াত সম্পর্কে একটি মামলা চলছিল, বিরোধীপক্ষ তাদের দাবির স্বপক্ষে প্রমাণ হিসেবে মুসলমানদের আকিদা-পরিপন্থি একটি কিতাব পেশ করল। তখন জজ সাহেব বললেন, দেখেন! তারা তো আপনাদের কিতাব দ্বারাই দলিল পেশ করছে। হজরত আনোয়ার শাহ কাশ্মিরি রহ. বললেন, কিতাবটি কি আমি একবার দেখতে পারি? জজ সাহেব কিতাবটি দেখার অনুমতি দিলেন। তিনি কিতাবটি দেখে বললেন, এ কিতাব হাতে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। আর লেখার সময় একটি লাইন বাদ পড়েছে। যার দরুন এখানে অর্থ পরিবর্তন হয়ে গেছে। সুতরাং এ কিতাবের অন্য একটি কপি আনা হোক। পরে অন্য একটি কিতাব আনা হলে দেখা গেল আসলেই একটি লাইন বাদ পড়েছে। অবশেষে বিরোধী পক্ষের কৌশলে ভাটা পড়ল।

পরবর্তী সময়ে হজরত আনোয়ার শাহ কাশ্মিরি রহ. বললেন, আজ থেকে সাতাশ বছর আগে আমি একবার এ কিতাবটি দেখেছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ! আজও আমার তা মনে আছে। সুবহানাল্লাহ।

লিঙ্ক শেয়ার করুন
close

লিঙ্ক কপি করুন