📘 আকাবিরদের জ্ঞান সাধনার গল্প > 📄 বয়োজ্যেষ্ঠ হাফেজে হাদিস ইবনুশ শিহনাহ হাজার রহ. একশ বছর বয়সে তাঁর মৃত্যুর একটু আগেও ছাত্ররা তাঁর কাছে পড়েছে

📄 বয়োজ্যেষ্ঠ হাফেজে হাদিস ইবনুশ শিহনাহ হাজার রহ. একশ বছর বয়সে তাঁর মৃত্যুর একটু আগেও ছাত্ররা তাঁর কাছে পড়েছে


হাফেজ ইবনে হাজার রহ. 'আদদুরারুল কামিনাহ' গ্রন্থে বলেছেন, হাফেজ শিহাবুদ্দিন আবুল আব্বাস আহমদ ইবনে আবু তালেব-যিনি ইবনুশ শিহনাহ হাজ্জার দামেশকি সালিহি হানাফি নামে বিখ্যাত; ৬২২ হি. সনে জন্মগ্রহণ করেন-তিনি একশরও বেশি বয়স প্রাপ্ত হন। ফলে নাতিকে দাদার সাথে মিলিয়ে দেন। (অর্থাৎ, দাদা ও নাতি উভয়ই তার কাছে পড়ার সুযোগ পায়) তিনি দামেশক ও প্রভৃতি শহরে সত্তরেরও অধিকবার সহিহ বুখারি পাঠদান করেন।

হাফেজে হাদিসগণ তাকে নির্বাচন করে। পৃথিবীর বিভিন্ন শহর থেকে এসে তারা তার কাছে ভিড় করে। তিনি একশ বছর বয়সেও রমজানের রোজা রেখেছেন। এবং শাওয়ালের ছয় রোজা রেখেছেন। তার মৃত্যুর একদিন আগে মুহিব্বুদ্দিন ইবনে মুহিব্ব রহ. তার কাছে সহিহ বুখারি শরিফ পড়তে শুরু করেন। তার মৃত্যুর দিন দ্বিতীয় বৈঠকে চাশতের সময় পর্যন্ত পড়েছেন। ওই দিনেই জোহরের একটু আগে তিনি ৭৩০ হি. সনে মৃত্যুবরণ করেন।

📘 আকাবিরদের জ্ঞান সাধনার গল্প > 📄 সুলতানুল উলামার পৌত্রী মৃত্যুর দিনও হাদিস পড়িয়েছেন

📄 সুলতানুল উলামার পৌত্রী মৃত্যুর দিনও হাদিস পড়িয়েছেন


হাফেজ ইবনে হাজার রহ. 'আদদুরারুল কামিনাহ' গ্রন্থে বয়োজ্যেষ্ঠা আলেমা মুহাদ্দিসা জয়নব বিনতে ইয়াহইয়া সুলামিয়্যাহ, (জন্ম: ৬৪৮ হি., মৃত্যু: ৭৩৫ হি.)-এর আলোচনায় নিম্নোক্ত বক্তব্য তুলে ধরেছেন:
সুলতানুল উলামা ইজজুদ্দিন ইবনে আব্দুস সালাম সুলামির ছেলে ইয়াহইয়া তনয়া জয়নব ৬৪৮ হি. সনে জন্মগ্রহণ করেন। সিলাফির পৌত্র আব্দুর রহমান ইবনে মক্কি এস্কান্দারানি (মৃত্যু: ৬৬১ হি.) তাকে ৬৫০ হি. সনে বর্ণনার ইজাজত প্রদান করেন। তিনি পাঁচ বছর বয়সে কারাফায় উসমান ইবনে খতিবের নিকট উপস্থিত হন। তার সাথে আরও উপস্থিত হন উমর ইবনে আউয়াহ, ইবরাহিম ইবনে খলিল প্রমুখ আলেমগণ। তিনি তাবরানির 'মুজামে সগির' কিতাবটি অবিচ্ছিন্ন সূত্রে এককভাবে বর্ণনা করেন।
জাহাবি রহ. বলেছেন, তিনি একজন কল্যাণকামিণী, আবেদা ও রেওয়ায়েতে আগ্রহী নারী ছিলেন। এমনকি তাঁর মৃত্যুর দিনেও তার কাছে কয়েকটি জুজ পঠিত হয়।

📘 আকাবিরদের জ্ঞান সাধনার গল্প > 📄 শামসুদ্দিন আসবাহানি কম খেতেন, যেন বাথরুমে যাতায়াতের কারণে সময় নষ্ট না হয়

📄 শামসুদ্দিন আসবাহানি কম খেতেন, যেন বাথরুমে যাতায়াতের কারণে সময় নষ্ট না হয়


হাফেজ ইবনে হাজার রহ. লিখিত 'আদদুরারুল কামিনাহ' গ্রন্থে ও শাওকানি লিখিত রহ. 'আল-বদরুত তালে' গ্রন্থে বিখ্যাত উসুলবিদ, ফকিহ, মুফাসসির ইমাম আল্লাম শামসুদ্দিন আবুস সানা আসবাহানি মাহমুদ ইবনে আব্দুর রহমান ইবনে আহমদ শাফেয়ি রহ.-এর জীবনী আলোচনায় নিম্নোক্ত বিবরণ রয়েছে : তিনি মাতৃভূমিতে ইলম অর্জন শুরু করেন। পর্যায়ক্রমে তিনি দক্ষতা অর্জন করেন ও বিভিন্ন বিষয়ে অগ্রসর হন। ৭২৫ হি. সনের সফর মাসে কুদস পরিদর্শন করার পর তিনি দামেশকে আগমন করেন। তার গুণাবলি দামেশকবাসীকে চরমভাবে মুগ্ধ করে। শায়খ তাকিউদ্দিন ইবনে তাইমিয়া রহ. তার কথা শুনে তাকে অত্যন্ত সম্মান করেন। তিনি একদা বলেন, চুপ করো, আমাদেরকে এই মহান জ্ঞানী মনীষীর বক্তব্য শুনতে দাও! তার মতো আলেম ইতিপূর্বে আমাদের এই এলাকায় আসেনি। এরপর তিনি কায়রোতে চলে যান। সেখানেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

ইলমের প্রতি তার আগ্রহ ও সময় ব্যয়ে তার কৃপণতা সম্পর্কে বর্ণিত আছে যে, তার একজন ছাত্র বর্ণনা করতেন যে, তিনি খুব কম খেতেন, যেন পানি পানের প্রয়োজন না হয়। কারণ, তাহলে বাথরুমে বেশি যেতে হবে আর তাতে তার সময় নষ্ট হবে। লেখক বলেন, পাঠক! দেখুন, এই মহান ইমামের নিকট সময়ের মূল্য কত বেশি ছিল! আর সময়ের মূল্য বেশি হওয়ার কারণ হলো ইলমের মূল্যায়ন। কি আশ্চর্য! তিনি কত দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ছিলেন!

📘 আকাবিরদের জ্ঞান সাধনার গল্প > 📄 ইবনে রজব হাম্বলি রহ.-এর ইলম চর্চায় চরম তন্ময়তা

📄 ইবনে রজব হাম্বলি রহ.-এর ইলম চর্চায় চরম তন্ময়তা


'জাইলু ইউসুফ ইবনে আব্দুল হাদি হাম্বলি আলা তাবাকাতি ইবনে রজব' নামক গ্রন্থে হাফেজ ইবনে রজব (আব্দুর রহমান ইবনে আহমদ ইবনে রজব) বাগদাদি অতঃপর দামেশকি হাম্বলি রহ.-এর জীবনী আলোচনায় আছে, তিনি দুনিয়ার কোনো কিছুই জানতেন না। তিনি নেতৃত্বমুক্ত ছিলেন। ইলম চর্চা ছাড়া তার কোনো ব্যস্ততা ছিল না। আমাদের শায়খ শিহাবুদ্দিন ইবনে জাইদ আমাদেরকে বলেছেন, একদা তার স্ত্রী গোসলখানায় গোসল করে সেজেগুজে তার কাছে এলো। কিন্তু তিনি তার প্রতি কোনো ভ্রুক্ষেপ করলেন না। স্ত্রী তখন বলল, তোমাদের কেউ কেবল এমন লোক চায় যে তাকে কুকুরের মতো ছেড়ে দেয়। এ কথা বলে স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যায়।

লেখক বলেন, আমার মনে হয় তখন তিনি কেবল ইলম, গবেষণা ও তথ্যানুসন্ধানের মজা উপভোগ করছিলেন। তাই অন্য কোনো উপভোগ্য জিনিসের প্রতি ভ্রুক্ষেপ করেননি। সাজগোজ ও পরিচ্ছন্নতার সুরভিও তাকে আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়নি। তিরস্কারবাণ, হুলফুটানো বাক্যের কোনো পরোয়া তিনি করেননি।

এ ধরনের বিষয়েই কবি বলেছেন—
আমি যখন কিতাব অধ্যয়ন করি তার গণ্ডদ্বয় ছেড়ে
সে তখন কিতাবের প্রতি যারপরনাই অভিমান বোধ করে।

আরেক কবি বলেছেন—
গায়িকার সাথে কোলাকুলি ও দৈহিক মিলন করা যেমন প্রিয়
ইলম চর্চার জন্য বিনিদ্র রজনি আমার তদপেক্ষা অধিক প্রিয়।

লিঙ্ক শেয়ার করুন
close

লিঙ্ক কপি করুন