📄 হিংসা ও কৃপণতার মাঝে
কৃপণতার মতো একটি অসুস্থতা হল লোভ-লালসা, আর হিংসা হল কৃপণতার থেকেও অধিক মন্দ, যেমনটি আবু দাউদে ৪৭ বর্ণিত হাদিসে বলা হয়েছে যে রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, "হিংসা সৎ কর্মসমূহকে ক্ষয় করে যেমনটি আগুন জ্বালানী কাঠকে ক্ষয় করে, আর সাদকা করা পাপসমূহকে নিভিয়ে দেয় যেমনটি পানি নিভিয়ে দেয় আগুনকে।”
কারন কৃপণ ব্যক্তি তো কেবল কল্যাণ পাওয়া থেকে নিজেকে নিবৃত্ত করে, কিন্তু হিংসুক ব্যক্তি তো আল্লাহ'র অনুগ্রহ তার গোলামকে প্রদান করাটা অপছন্দ করে। এটি সম্ভব যে একজন ব্যক্তি তার থেকে কম সম্পদ থাকা একজনকে সম্পদ দান করে, যে তাকে সাহায্য করবে তার উদ্দেশ্য অর্জন করার জন্য আর তা সত্ত্বেও তার মত অনুরূপ স্তরের ব্যক্তিদের প্রতি হিংসা প্রদর্শন করবে, যেমনভাবে তার জন্য এটি সম্ভব যে সে কৃপণতা করবে অন্যদের প্রতি হিংসা না দেখিয়েই। লোভই হল এর ভিত্তি যেমনটা আল্লাহ বলেছেন –
وَمَن يُوقَ شُحَّ نَفْسِهِ فَأُولَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ (۹) "যারা কার্পণ্য থেকে নিজেদেরকে মুক্ত করেছে তারাই সফলকাম।” (সূরা হাশর, ৫৯ : ৯)
সাহিহ বুখারি ও সাহিহ মুসলিমে ৪৮ বর্ণিত আছে যে রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “তোমরা লোভ করা থেকে সতর্ক হও, কারন এটি তোমাদের পূর্ববর্তীদের ধ্বংস করে দিয়েছে। এটি তাদেরকে আদেশ করেছিল কৃপণ হওয়ার আর তারা তা হয়েছিলো, এটি তাদেরকে আদেশ করেছিলো যালিম হওয়ার জন্য আর তারা তা হয়েছিলো আর এটি তাদেরকে আদেশ করেছিলো আত্মীয়তার বন্ধন ভেঙে দেওয়ার আর তারা তা করেছিলো।”
'আব্দুর রহমান বিন আওফ (রাঃ) ৪৯ 'তাওয়াফ করার সময় তার দুয়ায় বারবার বলতেন "হে আল্লাহ, আমার আত্মাকে লোভ লালসা থেকে রক্ষা করুন।” এক ব্যক্তি তাকে বললো, "আপনার এই দুয়াটি বারবার পড়ার কারন কি?” তিনি বললেন, "যখন আমি নিজেকে লোভ লালসা থেকে রক্ষা করি, তখন আমি নিজেকে রক্ষা করি লোভ, কার্পণ্য আর আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করা থেকে।”
আর হিংসা তো অবধারিতভাবেই জুলুমের দিকে পরিচালিত করে।
টিকাঃ
(৪৭) এখানে ইবনে তাইমিয়্যাহ'র একটি ভুল হয়েছে, এই পূর্ণ হাদিসটি বর্ণিত হয়েছে ইবনে মাজাহতে (৪২১০), আবু দাউদে বর্ণনাটির কেবল প্রথম বাক্যটি রয়েছে আর এই হাদিসটির ইসনাদে অপরিচিত রাবি রয়েছে।
(৪৮) এটিও ইবনে তাইমিয়্যাহ'র আর একটি ভুল, হাদিসটি বুখারি ও মুসলিমে বর্ণিত হয়নি, বরং এটি আবু দাউদ (২/৪৪৫, হাদিস ১৬৯৪) আর মুসতাদরাক হাকিমে (১/১১) বর্ণিত হয়েছে, এর ইসনাদ সাহিহ।
(৪৯) সংরক্ষিত উৎস থেকে আমি যতদূর জানি, ইনি ছিলেন সা'দ ইবন আবি ওয়াক্কাস।