📄 ৭. ইবনুল জাওযী (রহঃ)
ইবনুল জাওযী (রহঃ) নিজের সম্পর্কে বলেন, একদিন আমি একজন অনুসন্ধানী গবেষকের ভঙ্গিতে আমার নফসকে নিয়ে চিন্তা করলাম। ফলে (আল্লাহ্র দরবারে) তার হিসাব হওয়ার আগে আমি নিজে তার হিসাব নিলাম এবং (আল্লাহ্র দরবারে) তার ওযন হওয়ার আগে আমি তাকে ওযন করলাম। আমি দেখলাম, সেই শৈশব থেকে আজ অবধি আল্লাহ্র অনুগ্রহ আমার উপর একের পর এক হয়ে চলেছে। আমার মন্দ কার্যাবলী তিনি গোপন রেখেছেন এবং যে ক্ষেত্রে (দুনিয়াতেই) শাস্তি দেওয়া আবশ্যক ছিল সেক্ষেত্রে আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। অথচ সেজন্য একটু মৌখিক শুকরিয়া ছাড়া আমি আর কিছুই করিনি।
আমি পাপগুলো নিয়ে ভেবে দেখলাম যে, তার কয়েকটার জন্যও যদি আমাকে শাস্তি দেওয়া হ'ত তবে দ্রুতই আমি ধ্বংস হয়ে যেতাম। যদি মানুষের সামনে তার কিছু প্রকাশ পেত তবে আমি লজ্জায় অধোবদন হয়ে যেতাম। এসব কবীরা গুনাহের কথা শুনে একজন বিশ্বাস পোষণকারী আমার বেলায়ও ঠিক তাই বিশ্বাস করত যা ফাসেক-ফাজেরদের বেলায় বিশ্বাস করা হয়। (অর্থাৎ আমাকেও একজন পাপাচারী ফাসেক ঠাওরানো হ'ত।) বরং আমার বেলায় তা আরও কদর্য বিবেচনা করা হ'ত, আর আমি (আত্মপক্ষ সমর্থনে) তার ভ্রান্ত ব্যাখ্যা দাঁড় করাতে চেষ্টা করতাম। এরপর আমি এই বলে দো'আ করি যে, 'হে আল্লাহ! তোমার প্রশংসার খাতিরে এবং আমার গুনাহের উপর তোমার গোপনীয়তার আচ্ছাদনের বদৌলতে তুমি আমাকে মাফ করে দাও'। তারপর আমি আমার নফসকে আল্লাহ্র এত বড় ও বেশী অনুগ্রহের জন্য তার শুকরিয়া আদায় করতে আহ্বান জানালাম। কিন্তু সে ক্ষেত্রেও যেমন শুকরিয়া আদায় করা উচিত ছিল তেমনটা হ'ল না। ফলে আমি আমার ত্রুটি-বিচ্যুতি ও গুনাহ-খাতার জন্য মাতম করতে শুরু করি এবং বড়দের আসন লাভের প্রত্যাশা করতে থাকি। কিন্তু আমার আয়ুষ্কাল শেষ হয়ে গেল, অথচ সে প্রত্যাশা পূরণ হ'ল না।
টিকাঃ
৬৬. ছায়দুল খাতির, পৃ. ৪৭১।