📄 নিদ্রা জাগরণের পর জীবনের হিসাব
৮۰. ইবরাহিম ইবনে আদহাম রাহিমাহুল্লাহ বলেন, আতা সুলামি রাহিমাহুল্লাহ নিদ্রা থেকে জাগ্রত হওয়ার পর বলতেন, হে আতা! তুমি ধ্বংসের প্রান্তরে। তুমি ধ্বংসের প্রান্তরে। তোমাকে জন্মদাতা পিতাও ধ্বংসের প্রান্তরে এবং তোমার মাতাও ধ্বংসের প্রান্তরে। অর্থাৎ নিদ্রাগমন করা মৃত্যুর সমতুল্য। সুতরাং কেমন যেন নতুন জীবন লাভ করা হয় নিদ্রার পর। আর মৃত্যুর পর মানুষ নতুন জীবন লাভ ও অধিকহারে নেك আমল করার বাসনা করে। তাই তিনি জাগ্রত হওয়ার পর নিজেকে মৃতদের কাতারের একজন শামিল করে ভর্ৎসনা ও তিরস্কার করতেন।
📄 কোনো মানুষই দুনিয়ায় নিশ্চিত নয়
৮۱. আবু আইয়ুব রাহিমাহুল্লাহ বলেন, একদিন আমাকে মালেক রাহিমাহুল্লাহ বললেন, হে আবু আইয়ুব! তুমি তোমার আত্মাকে ভয় করো, তাকে নিয়ন্ত্রণ করো। কেননা আমি দুনিয়ায় মুমিনের দুশ্চিন্তার পরিসমাপ্তি দেখি না। আল্লাহর কসম! কোনো মুমিন পরকালে হাসিখুশি নিয়ে উঠতে পারবে না। মুমিনের জীবনে দুটি বিষয় উপস্থিত। দুনিয়ার পেরেশানি ও পরকালের হতভাগ্যতা।
আমি তখন বললাম, আব্বাজান! মুমিন কেন হাসিমুখে নিয়ে পরকালে উঠতে পারবে না?
তিনি আমার প্রশ্নে অবাক হয়ে বললেন, কত মানুষ এমন হবে, যে মনে করবে যে, সে ভালো আমল নিয়ে উঠেছে, সে নৈকট্যের অধিকারী হয়েছে, সৎকর্ম করে জান্নাতের অধিকারী হয়েছে। কিন্তু আল্লাহ তাআলা তাকে অধোমুখী করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন।
সুতরাং আত্মতৃপ্তি অনেক ক্ষেত্রেই নিজের ধ্বংস ডেকে আনে, পক্ষান্তরে আত্মসমালোচনা ও আত্মবিচার মঙ্গলের দিকে পরিচালিত করে এবং নেককাজে অনুপ্রাণিত করে।
📄 আমল কবুল না হওয়ার ভয় ও আশঙ্কা
৮۲. আব্দুল আযিয রাহিমাহুল্লাহ বলতেন, আমি বুজুর্গানে কেরামকে দেখেছি, তারা নেك আমলে সর্বাত্মক চেষ্টা অব্যাহত রাখতেন। যখন সর্বাত্মক চেষ্টা অব্যাহত রেখে আমলের সর্বোচ্চ মাকামে পৌঁছতেন, তখন তাদের অন্তরে এমন ভয় ও দুশ্চিন্তা সওয়ার হতো যে, না জানি তা কবুল হবে, না প্রত্যাখ্যাত হবে। এভাবে তারা সদা নিজের আমলকে পর্যবেক্ষণে রাখতেন এবং সদা আত্ম-অনুশোচনায় ভুগতেন।
আর এটাই সুপথে পরিচালিত হওয়ার উত্তম মাধ্যম। নিজেকে এভাবে পর্যবেক্ষণ করা ছাড়া জীবন পরিচালিত করলে এই জীবন হবে কেবলই গ্লানিকর ও ব্যর্থতায় ঘেরা।
📄 ঈমান, আমল ও নফসের দৃষ্টান্ত
৮۳. ওয়াহাব ইবনে মুনাব্বিহ রাহিমাহুল্লাহ বলেন, ঈমান হলো সেনাপতির মতো, আর আমল ড্রাইভারের মতো। আর মানুষের আত্মা এই দুয়ের মাঝে পলায়নপর। যদি সেনাপতি নেতৃত্ব দেয় কিন্তু ড্রাইভার বাহন না চালায় তবে কোনো কাজে আসবে না। আর যদি ড্রাইভার বাহন চালায় কিন্তু সেনাপতি নেতৃত্ব না দেয় তবু কোনো কাজে আসবে না। আর যদি উভয়ে যার যার কাজ করে তবে আত্মা তখন ইচ্ছায় হোক অনিচ্ছায় হোক আনুগত্য করবে এবং তখন আমল পবিত্র হবে।