📘 আল্লাহ তাআলার নান্দনিক নাম ও গুণসমগ্র > 📄 দ্বিতীয় উদাহরণ: বান্দাদের অন্তরসমূহ দয়াময়ের আঙ্গুলসমূহের মধ্যে দু'আঙ্গুলের মাঝখানে

📄 দ্বিতীয় উদাহরণ: বান্দাদের অন্তরসমূহ দয়াময়ের আঙ্গুলসমূহের মধ্যে দু'আঙ্গুলের মাঝখানে


দ্বিতীয় উদাহরণ: 'বান্দাদের অন্তরসমূহ দয়াময়ের আঙ্গুলসমূহের মধ্য থেকে দু'আঙ্গুলের মাঝখানে'।
এর উত্তর: এ হাদীসটি সহীহ। ইমাম মুসলিম উক্ত হাদীসটি তার গ্রন্থে আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবন আস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন:
«إن قلوب بني آدم كلها بين إصبعين من أصابع الرحمن كقلب واحد يصرفه حيث يشاء»
নিশ্চয় আদম সন্তানের সকল অন্তর দয়াময়ের আঙ্গুলসমূহের মধ্যে দু'আঙ্গুলের মাঝখানে, এক অন্তরের মতো যা তিনি তার ইচ্ছানুযায়ী নিয়ন্ত্রণ করেন।
এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«اللهم مصرف القلوب، صرف قلوبنا على طاعتك»
হে আল্লাহ, অন্তরসমূহের নিয়ন্ত্রণকারী! আপনি আমাদের অন্তরসমূহ আপনার আনুগত্যের ওপর স্থির করুন।
আহলে সুন্নাত এবং সালাফগণ হাদীসটিকে বাহ্যিক অর্থেই নিয়েছেন। তারা বলেছেন, প্রকৃত অর্থে আল্লাহ তা'আলার আঙ্গুল আছে একথা আমরা আল্লাহর জন্য সাব্যস্ত করি, যেভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর জন্য সাব্যস্ত করেছেন। আর আল্লাহ তা'আলার দু'আঙ্গুলের মাঝখানে বান্দাদের অন্তর থাকে একথার দাবি এটা নয় যে আল্লাহ তা'আলার আঙ্গুল বান্দাদের অন্তরসমূহ স্পর্শ করে আছে। হাদীসের শব্দমালা থেকে স্পর্শ করে থাকার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে না। অতএব বাহ্যিক অর্থ থেকে সরিয়ে অন্য অর্থ নেয়ার আদৌ কোনো প্রয়োজন নেই।
এর উদাহরণ, যদি কেউ বলে যে মেঘমালা জমিন ও আসমানের মাঝখানে, তাহলে এ বক্তব্যের অর্থ এটা নয় যে মেঘমালা জমীন ও আসমানকে স্পর্শ করে আছে। অনুরূপভাবে যদি বলা হয় যে বদরপ্রান্তর মক্কা ও মদীনার মাঝখানে, তাহলে এর অর্থ এটা নয় যে বদরপ্রান্তর মক্কা ও মদীনাকে স্পর্শ করে আছে। অতএব বান্দাদের সকল অন্তর প্রকৃত অর্থেই আল্লাহ তা'আলার আঙ্গুলসমূহের মধ্যে দু'আঙ্গুলের মাঝখানে, তবে এ মাঝখানে থাকাটা স্পর্শকে আবশ্যক করে না। না আবশ্যক করে সত্তাগতভাবে বান্দাদের সঙ্গে আল্লাহ তা'আলা সংমিশ্রণকে যাকে আরবীতে 'হুলুল' বলা হয়।

📘 আল্লাহ তাআলার নান্দনিক নাম ও গুণসমগ্র > 📄 তৃতীয় উদাহরণ: নিশ্চয় আমি আল্লাহ কর্তৃক বান্দাদের বিপদমুক্তি ইয়ামেনবাসীদের পক্ষ থেকে পাই

📄 তৃতীয় উদাহরণ: নিশ্চয় আমি আল্লাহ কর্তৃক বান্দাদের বিপদমুক্তি ইয়ামেনবাসীদের পক্ষ থেকে পাই


তৃতীয় উদাহরণ: 'নিশ্চয় আমি আল্লাহর (বান্দাদের) নাফস (বিপদমুক্তি) ইয়েমেনবাসীদের পক্ষ থেকে পাই।'
এর উত্তর: এ হাদীসটি ইমাম আহমদ তার মুসনাদ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন (খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ৫৪১)। হাদীসটি আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু 'আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: 'ঈমান হলো ইয়েমেনি এবং প্রজ্ঞাও হলো ইয়েমেনি। আর নিশ্চয় আমি আল্লাহর (বান্দাদের) নাফস (বিপদমুক্তি) ইয়েমেনবাসীদের পক্ষ থেকে পাই।' (হাইসামী) মাজমাউয যাওয়ায়িদ গ্রন্থে এসেছে, এ হাদীসটির বর্ণনাকারীগণ সহীহ হাদীস বর্ণনাকারীদের অন্তর্ভুক্ত। তবে শাবীব ছাড়া; তিনিও হলেন ছিকাহ অর্থাৎ বিশ্বস্ত। 'তাকরীব' গ্রন্থে এসেছে, শাবীব হলেন তৃতীয় তাবাকার বিশ্বস্ত বর্ণনাকারী। ইমাম বুখারী 'আত-তারীখুল কাবীর' গ্রন্থে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
ইমাম গাযালীর কথা অনুযায়ী ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল এ হাদীসটিকে বাহ্যিক অর্থ থেকে সরিয়ে এর অন্য অর্থ করেছেন। কিন্তু মূল বিষয় সে রকম নয়। কেননা হাদীসটিতে যে نفس শব্দটি এসেছে তার উচ্চারণ হবে 'নাফাস' 'নাক্স' নয়। নাক্স শব্দের অর্থ অন্তর। অতএব নাক্স বললে হাদীসটির অর্থ দাঁড়াত: 'আমি দয়াময়ের অন্তরকে ইয়েমেনের দিকে পাই'। কিন্তু এখানে নাক্স উদ্দেশ্য নয় বরং উদ্দেশ্য হলো নাফাস। নির্ভরযোগ্য আরবী আভিধানগ্রন্থ 'মাকাইসুল্লগাহ' - তে নাফাস শব্দের অর্থ করা হয়েছে, 'এমন জিনিস যার মাধ্যমে বিপদ থেকে মুক্তিলাভ করা যায়।' সে হিসেবে হাদীসটি অর্থ দাঁড়াবে, 'আল্লাহ তা'আলা ইয়েমেনবাসীদের মাধ্যমে বান্দাদের বিপদমুক্ত করবেন।'
শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়া বলেছেন: 'এই ইয়েমেনবাসীরাই মুরতাদদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে এবং বিভিন্ন শহর জয় করেছে। অতঃপর আল্লাহ তা'আলা তাদের মাধ্যমেই নানা সমস্যা থেকে মুমিনদের উদ্ধার করেছেন। (মাজমুউল ফাতাওয়া: খণ্ড ৬, পৃষ্ঠা ৩৯৮)

📘 আল্লাহ তাআলার নান্দনিক নাম ও গুণসমগ্র > 📄 চতুর্থ উদাহরণ: (ইস্তাওয়া এর অর্থ) “তারপর তিনি আকাশের দিকে মনোনিবেশ করলেন”

📄 চতুর্থ উদাহরণ: (ইস্তাওয়া এর অর্থ) “তারপর তিনি আকাশের দিকে মনোনিবেশ করলেন”


চতুর্থ উদাহরণ: আল্লাহ তা'আলার বাণী:
﴿ثُمَّ اسْتَوَى إِلَى السَّمَاءِ﴾ [البقرة: ٢٩]
অতঃপর তিনি আসমানের প্রতি মনোযোগী হলেন। (আল বাকারা: ২: ২৯)
উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় আহলে সুন্নাতের দুটি বক্তব্য রয়েছে:
প্রথম বক্তব্য: এখানে 'ইস্তাওয়া' শব্দের অর্থ ঊর্ধ্বে উঠেছেন। অর্থাৎ আল্লাহ তা'আলা উপরের দিকে উঠেছেন। এ অর্থটিকেই ইমাম তাবারী তার তাফসীর গ্রন্থে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। তিনি উক্ত আয়াতের তাফসীরে বলেছেন:
علا عليهن وارتفع، فدبرهن بقدرته، وخلقهن سبع سماوات
তিনি আকাশসমূহের ওপরে উঠলেন, ঊর্ধ্বে উঠলেন, তিনি তার কুদরত দ্বারা আকাশসমূহ নিয়ন্ত্রণ করলেন, এবং তা সাত আসমান হিসেবে সৃষ্টি করলেন।
ইমাম বাগাবী তার তাফসীরে অভিন্ন বক্তব্য উল্লেখ করেছেন যা তিনি ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা ও অধিকাংশ সালাফ তাফসীরকারীদের উদ্ধৃতি দিয়ে উল্লেখ করেছেন। ইস্তাওয়া শব্দের বাহ্যিক অর্থকে ধরে রাখতে গিয়েই তারা এরূপ তাফসীর করেছেন এবং ওপরে ওঠার আকার-প্রকৃতি-ধরণ কি তা তারা আল্লাহ তা'আলার ইলমের কাছে সমর্পন করেছেন।
দ্বিতীয় বক্তব্য: ইস্তিওয়া শব্দের অর্থ এখানে পরিপূর্ণ মনোযোগ আরোপ করা। ইমাম ইবনে কাছীর সূরা আল বাকারার তাফসীরে এবং ইমাম বাগাবী সূরা ফুসসিলাত এর তাফসীরে এ ব্যাখ্যাই দিয়েছেন। ইমাম ইবনে কাছীর বলেছেন: 'অর্থাৎ আল্লাহ তা'আলা আকাশের প্রতি মনোযোগী হলেন। আর ইস্তিওয়া এখানে ইচ্ছা করা ও মনোযোগী হওয়ার অর্থকে শামিল করছে; কেননা এখানে ইস্তাওয়া ক্রিয়াপদেও পর إلى যুক্ত করা হয়েছে। ইমাম বাগাবী বলেছেন, 'অর্থাৎ আল্লাহ তা'আলা আকাশ সৃষ্টির দৃঢ় মনোযোগ পোষণ করলেন।'
বলার অপেক্ষা রাখে না যে উক্ত ব্যাখ্যায় বাণীকে তার বাহ্যিক অর্থ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়নি; কেননা ইস্তাওয়া ক্রিয়াপদটি এমন একটি অব্যয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে যা শেষ প্রান্ত বা সীমানা বুঝায়। অতএব তা এমন অর্থ বুঝাচ্ছে যা উক্ত অব্যয়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।

📘 আল্লাহ তাআলার নান্দনিক নাম ও গুণসমগ্র > 📄 সপ্তম ও অষ্টম উদাহরণ

📄 সপ্তম ও অষ্টম উদাহরণ


ষষ্ঠ ও অষ্টম উদাহরণ
আল্লাহ তা'আলা বলেন: ﴿وَنَحْنُ أَقْرَبُ إِلَيْهِ مِنْ حَبْلِ الْوَرِيدِ ) [ق: ١٦]
আর আমি তার গলার ধমনী হতেও অধিক কাছে। (সূরা কাফ: ৫০: ১৬)
অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে: ﴿وَنَحْنُ أَقْرَبُ إِلَيْهِ مِنكُمْ﴾ [الواقعة: ٨٥]
আর তোমাদের চাইতে আমি তার অধিক কাছে। (সূরা আল ওয়াকিয়াহ: ৫৬: ৮৫)
তাফসীর গ্রন্থসমূহে উল্লিখিত দু' আয়াতে 'অধিক কাছে' বলতে ফেরেশতাদের বুঝানো হয়েছে।
জওয়াব
উল্লিখিত দু' আয়াতে অধিক কাছে বলতে ফেরেশতারা অধিক কাছে বলে যে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, তাতে বাণীকে তার বাহ্যিক অর্থ থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে না। গভীরভাবে চিন্তা করলে এ বিষয়টি আমাদের বুঝে আসে।
প্রথম আয়াত
এখানে 'কাছে থাকা'র বিষয়টি এমন কিছুর সঙ্গে বন্ধনযুক্ত করে উল্লেখ করা হয়েছে যার দ্বারা ফেরেশতাদের নিকটতাকেই বুঝা যায়। যেহেতু আল্লাহ তা'আলা বলেন:
﴿ وَنَحْنُ أَقْرَبُ إِلَيْهِ مِنْ حَبْلِ الْوَرِيدِ إِذْ يَتَلَقَّى الْمُتَلَقِّيَانِ عَنِ الْيَمِينِ وَعَنِ الشِّمَالِ قَعِيدٌ مَّا يَلْفِظُ مِن قَوْلٍ إِلَّا لَدَيْهِ رَقِيبٌ عَتِيدٌ ﴾ [ق:
[۱۸ ،۱۶
আর অবশ্যই আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি এবং তার প্রবৃত্তি তাকে যে কুমন্ত্রণা দেয় তাও আমি জানি। আর আমি তার গলার ধমনী হতেও অধিক কাছে। যখন ডানে ও বামে বসা দু'জন লিপিবদ্ধকারী লিখতে থাকবে তার প্রত্যেক কর্ম ও কাজ সে যে কথাই উচ্চারণ করে তার কাছে সদা উপস্থিত সংরক্ষণকারী রয়েছে। (সূরা কাফ: ৫০: ১৬-১৭)
এখানে إِذْ يَتَلَقَّى (যখন... গ্রহণ করবে) দ্বারা এটা বুঝা যাচ্ছে যে এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো লিপিবদ্ধকারী দুই ফেরেশতার নিকটতা।
দ্বিতীয় আয়াত
দ্বিতীয় আয়াতে যে 'নিকটতা'র কথা বলা হয়েছে, তা বান্দার মৃত্যুকালীন অবস্থার সঙ্গে সম্পৃক্ত। আর মৃত্যুকালে বান্দার কাছে যারা উপস্থিত হন তারা হলেন ফেরেশতা। আল্লাহ তা'আলা বলেন: حَتَّى إِذَا جَاءَ أَحَدَكُمُ الْمَوْتُ تَوَفَّتْهُ رُسُلُنَا وَهُمْ لَا يُفَرِّطُونَ ﴾ [الانعام: ٦١]
অবশেষে যখন তোমাদের কারো কাছে মৃত্যু আসে, আমার প্রেরিত দূতগণ তার মৃত্যু ঘটায়। আর তারা কোনো ত্রুটি করে না। (সূরা আল আন'আম: ৬: ৬১)
মানুষের মৃত্যুকালে ফেরেশতাই যে বান্দার নিকটে আসেন, এর আরেকটি প্রমাণ হলো আল্লাহ তা'আলার কথা:
﴿ وَلَكِن لَّا تُبْصِرُونَ ﴾ [الواقعة: ٨٥]
কিন্তু তোমরা দেখতে পাও না। (আল ওয়াকিয়া: ৫৬: ৮৫)
কেননা এ আয়াত থেকে বুঝা যাচ্ছে যে যিনি নিকটবর্তী হন তিনি ঠিক ওই জায়গাতেই নিকটবর্তী হন যে জায়গাতে মৃত্যুগামী ব্যক্তি রয়েছে। অথচ আমরা তাকে প্রত্যক্ষ করতে পারি না। এ বিষয়টি ফেরেশতা কর্তৃক নিকটতাকে নির্ধারণ করে দিচ্ছে; কেননা আল্লাহ তা'আলার ক্ষেত্রে এ প্রকৃতির নিকটতা অসম্ভব।
একটি প্রশ্ন
এখানে একটি প্রশ্ন এভাবে উত্থাপিত হতে পারে যে, যদি ফেরেশতাই নিকটবর্তী হবেন তাহলে আল্লাহ তা'আলা কেন বললেন যে, 'আমি তার নিকটে'? অর্থাৎ 'নিকটতা'-কে আল্লাহ তা'আলা নিজের সঙ্গে সম্পৃক্ত করে কেন উল্লেখ করলেন? এ প্রকৃতির অভিব্যক্তির উদাহরণ কি অন্য কোথাও পাওয়া যায়?
উত্তর
আল্লাহ তা'আলা ফেরেশতার নিকটতাকে তাঁর নিজের নিকটতা বলে উল্লেখ করেছেন; কারণ ফেরেশতার নিকটতা আল্লাহ তা'আলার নির্দেশেই ঘটে থাকে। ফেরেশতারা হলেন সৈন্য ও দূত।
ফেরেশতার নিকটতাকে আল্লাহ তা'আলা নিজের নিকটতা বলে ব্যক্ত করার উদাহরণ আল কুরআনের বিভিন্ন জায়গায় এসেছে, যেমন: ﴿فَإِذَا قَرَأْنَهُ فَاتَّبِعْ قُرْءَانَهُ ﴾ [القيامة: ١٨]
অতঃপর যখন আমরা তা পাঠ করি (জিবরাঈলের মাধ্যমে) তখন তুমি তার পাঠের অনুসরণ কর। (সূরা আল কিয়ামাহ: ৭৫: ১৮)
উক্ত আয়াতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি কুরআন পাঠ মূলত ফেরেশতা জিব্রীল আ. এর মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু আল্লাহ তা'আলা এ পাঠকে নিজের সঙ্গে সম্পৃক্ত করে বলেছেন, 'যখন আমি তা পাঠ করি'। এটা এ হিসেবে যে, জিব্রীল আ. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি আল্লাহর নির্দেশেই কুরআন পাঠ করেছেন।
অনুরূপভাবে আল্লাহ তা'আলার বাণী-
﴿ فَلَمَّا ذَهَبَ عَنْ إِبْرَاهِيمَ الرَّوْعُ وَجَاءَتْهُ الْبُشْرَى يُجَادِلُنَا فِي قَوْمِ لُوطٍ ﴾ [هود: [٧٤
অতঃপর যখন ইবরাহীম থেকে ভয় দূর হল এবং তার কাছে সুসংবাদ এল, তখন সে লূতের কওম সম্পর্কে আমাদের সাথে বাদানুবাদ করতে লাগল। (সূরা হুদ: ১১: ৭৪)
এ আয়াতে বলা হয়েছে যে, ইবরাহীম আ. লূত আ. কওম সম্পর্কে আল্লাহর সঙ্গে বাদানুবাদ করতে লাগলেন। অথচ আমরা জানি যে তিনি ফেরেশতাদের সঙ্গে বাদানুবাদ করতে লাগলেন। কিন্তু যেহেতু ফেরেশতারা আল্লাহর দূত হিসেবে এসেছিলেন সে হিসেবে তাদের সঙ্গে বাদানুবাদ করা এক অর্থে আল্লাহর সঙ্গেই বাদানুবাদ করা।

টিকাঃ
২৯ ইবনে কাসীর বলেন, এখানে নুহ্ন বলে আল্লাহর ফেরেশতাদেরকে বুঝানো হয়েছে。
৩০ ইবনে কাসীর বলেন, এখানে এ বলে আল্লাহর ফেরেশতাদেরকে বুঝানো হয়েছে。

লিঙ্ক শেয়ার করুন
close

লিঙ্ক কপি করুন