📄 কবি হাসান বিন সাবেত ﷺ
যবান বা জিহ্বা মানবদেহের অতি ও রহস্যময় একটি অঙ্গ। অসংখ্য মন্দকাজ, ছোটবড় গোনাহ সম্পাদিত হয় মানুষের জিহ্বা দ্বারা। জিহ্বা দ্বারা পরস্পরের সম্পর্ক ছিন্ন হয়। পরিবারের শৃঙ্খলা বিনষ্ট হয়। মানুষের যশ-খ্যাতি কলুষিত হয়।
আল্লাহ হেফাযত করুন! গোনাহের ক্ষেত্রে কত প্রভাববিস্তারী মানুষের জিহ্বা! তবে আল্লাহ যাঁকে ভালবাসেন, পছন্দ করেন, তাঁকে জিহ্বার গোনাহ থেকেও মুক্ত রাখেন।
মুয়ায ইবনে জাবাল এর প্রসিদ্ধ হাদিস, যে হাদিসে রাসুল জান্নাত লাভ ও জাহান্নাম থেকে মুক্তির আমল, সকল কল্যাণের রাজতোরণ, দীনের প্রকৃত বিষয়, মূলস্তম্ভ ও উচ্চশিখরের বর্ণনা দিয়েছেন। অতপর রাসুল মুয়ায-কে জিজ্ঞেস করেছেন, 'হে মুয়ায, এসব কাজের মূলভিত্তি বলবো'? মুয়ায রাযি. বললেন, 'হ্যাঁ বলে দিন'। তখন রাসুল নিজের জিহ্বা ধরে দেখালেন এবং বললেন, 'তোমার জিহ্বাকে সংযত রাখবে'। মুয়ায বললেন, 'হে আল্লাহর নবি, আমরা এ জিহ্বা দ্বারা যেসব কথাবার্তা বলি, কেয়ামতের দিন সেসব কথাবার্তার ব্যাপারেও জিজ্ঞাসিত হবো'? রাসুল বললেন, 'কী সর্বনাশা কথা বললে মুয়ায! একমাত্র মানুষের মুখের অসংযত কথাবার্তাই কেয়ামতের দিন তাকে মুখের উপর কিংবা নাকের উপর উপুড় করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবে'। [আহমাদ: ২১৫৬৩]
আল্লাহ কোরআন কারিমে তাঁর সৎকর্মপরায়ণ বন্ধুদের প্রশংসাগাঁথা গিয়েছেন। তাঁদের সফলতার নিদর্শন বর্ণনা করেছেন-
যারা অসার ক্রিয়াকলাপ থেকে বিরত থাকে। [সূরা মুমিনূন: ০৩]
অসার ক্রিয়াকলাপ, অর্থাৎ যেসব কথাবার্তা বা কাজকর্ম পরকালের জন্য উপকারী নয়। বরং তা পরকালে ক্ষতিকর হবে।
আল্লাহ তাঁর সৎকর্মপরায়ণ বন্ধুদের সফলতার নিদর্শন বর্ণনামূলক প্রশংসামালা অবতীর্ণ করে আরো বলেছেন-
হে মুমিনগণ, আল্লাহকে ভয় কর এবং সঠিক কথা বল। তাহলে তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের কর্ম ত্রুটিমুক্ত করবেন। তোমদের পাপ ক্ষমা করবেন। যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করে তারা অবশ্যই মহাসাফাল্য অর্জন করবে। [সূরা আহযাব: ৭০, ৭১]
রাসুল ইরশাদ করেন-
مَنْ يُضْمَنْ لِي مَا بَيْنَ لَحْيَيْهِ وَمَا بَيْنَ رِجْلَيْهِ أَضْمَنْ لَهُ الْجَنَّةَ
যে আমাকে জিহ্বা ও লজ্জাস্থান পবিত্র রাখার নিশ্চয়তা দিবে, আমি তাঁর জান্নাতপ্রাপ্তির দায়িত্ব গ্রহণ করবো। [বুখারি: ৬৪৭৪]
সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হল, মানুষ তার সকল অঙ্গের গোনাহের ব্যাপারে যতটা সচেতন থাকে, জিহ্বার স্খলন ও বিপদগামীতার ব্যাপারে ততটা সতর্ক থাকেনা। অথচ সকল অঙ্গের গোনাহের একটা স্বাদ ইন্দ্রানুভূত হয়, কিন্তু জিহ্বার গোনাহের কোন স্বাদ ইন্দ্রানুভূত হয়না। জিহ্বা গোনাহের পথে অনবরত চলতেই থাকে, ফেরেশতাগণও জিহ্বার সকল গোনাহ অনবরত লিখতে থাকেন। কেয়ামতের দিন মানুষ যখন আমলনামায় জিহ্বার স্খলন এবং নিষিদ্ধ কথাবার্তার কাসুন্দি দেখবে, তখন তার মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়বে। ভয়ানক আশ্চর্য হবে। লজ্জায় সঙ্কোচনে অযথাই অনুতপ্ত হবে। সেদিনের অনুতপ্ততা কোন কাজে আসবেনা।
مَا يَلْفِظُ مِنْ قَوْلٍ إِلَّا لَدَيْهِ رَقِيبٌ عَتِيدٌ
মানুষ যে কথাই উচ্চারণ করে, তার জন্য তৎপর প্রহরী তার কাছেই রয়েছে। [সূরা কফ: ১৮]
মানুষ কত কথা বলে থাকে, কিন্তু পরিণতির কথা কল্পনায় থাকেনা। কত নিষিদ্ধ কথাবার্তা গোপনে বলে থাকে, অথচ সেসব কথায় মুখ নিঃসৃত দুর্ঘন্ধময় বায়ু দোযখের অগ্নিকে সত্তরস্তরে তেজ দিচ্ছে। আবার কত ভাল কথাবার্তা মানুষ করে থাকে, যেসব কথাবার্তার প্রতিদানে আল্লাহর অভাবনীয় সন্তুষ্টি ও প্রতিদান প্রস্তুত হচ্ছে।
মানুষ একবার যদি হিসাব কষতো, তার জিহ্বা দ্বারা কত পরনিন্দা, কুৎসা, চুগলি, বিশ্বাসঘাতকতা, ঠাট্টা-বিদ্রূপ, মিথ্যা, প্রতারণা নিজের অজান্তে অনবরত করে চলছে! এজন্যই আবু বকর রাযি. প্রায়ই কান্না করতেন। জিহ্বার উপর আফসোস করে বলতেন, 'না জানি এই জিহ্বা আমাকে মন্দ ঠিকানায় পৌঁছে দেয়!'
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ বলেন, 'সুদীর্ঘ সময় নিস্ক্রিয় রাখার সর্বাধিক উপযুক্ত অঙ্গ হল মানুষের জিহ্বা।'
কবির ভাষায়-
মানুষের জিহ্বা অজগরসম, মানুষ তার দংশন থেকে অবশ্যই সতর্ক থাকুক। কবরদেশে অসংখ্য মানুষ জিহ্বার কারণে ভূপাতিত হবে, যে ভূপতন কল্পনা করে ভয়ার্ত হয় বীরপুরুষও।
কবি হাসসান বিন সাবেত
জিহ্বাকে গোনাহমুক্ত রাখার একটি ধাপ হল দীনের কথাবার্তা বলা। যেমন হাসসান বিন সাবেত। তিনি তাঁর কবিতায় ছন্দে দীনের কথামালা আবৃত্তি করে স্বীয় জিহ্বাকে গোনাহমুক্ত রেখেছিলেন। অসাধারণ পঙক্তিমালায় মুক্তোর মালা বেঁধে আল্লাহর বিধান রক্ষা করেছিলেন। রাসুলের প্রশংসাগাঁথা, ইসলামের প্রশংসাগাঁথা প্রচার করেছিলেন কবিতার মাধ্যমে। সমুচিত জবাব দিয়েছিলেন কোরাইশ মুশরিকদের দুর্মুখ গালমন্দের।
কবিতা-
সাখিনা কোরাইশ ভাবছে প্রভুকে পরাস্ত করব!
পারলে অবশ্যই মহাবীরের মত পরাস্ত করুক।
রাসুল হাসসান বিন সাবেত -কে ভালবাসতেন। কাছে ডাকতেন। মিম্বরে বসিয়ে বলতেন, 'কোরাইশরা গালমন্দ করছে। তাদের প্রতিউত্তর কর। জিবরাইল তোমার সাথে আছেন।' [বুখারি: ৬১৫৩]
তখন হাসসান তাদের উত্তর করতেন-
কবিতা-
আমার বাবা, দাদা, আমার মান-মর্যাদা
তোমাদের হাত থেকে মুহাম্মদের মর্যাদা রক্ষার জন্য ঢালস্বরূপ।
তোমরা মুহাম্মদকে গালমন্দ করছ, আমি সে গালমন্দের প্রতিউত্তর করছি। এতে আল্লাহর কাছে আমার জন্য প্রতিদান রয়েছে।
তোমরা তাঁকে গালমন্দ করছ, অথচ তোমরা তাঁর সমতুল্য নও। তোমাদের সকল কল্যাণ অকল্যাণে পরিণত হোক।
হাসসান এর বদর যুদ্ধের কবিতা পাঠ করে আরবগণ আজও গর্ববোধ করে। হাসসান বদরের কবিতা গেঁথেছিলেন-
বদর প্রান্তে কাফেরদের চেহারা কলঙ্কিত হচ্ছে;
মুহাম্মদ ও জিবরাইল তখন আমাদের পতাকাতলে।
অর্থাৎ আমাদের নেতৃত্বে রয়েছেন মুহাম্মদ ও জিবরাইল। সুতরাং তোমরা কিভাবে আমাদের পরাজিত করার স্বপ্ন দেখ!
হাসসান বিন সাবেত কেয়ামতের দিন জান্নাতবাসী কবিগণের সর্দার হবেন। কারণ তিনি তাঁর কবিতার গাঁথুনিতে আল্লাহ -র দীনের হেফাযত করেছিলেন।
📄 বীরমুজাহিদ কবি আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা ﷺ
রাসুলের একনিষ্ঠ সাহাবি আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা । তিনিও ছিলেন একজন শক্তিমান কবি। কাব্যের সুষমায় সাজিয়ে তুলতেন দীনের বাণী।
মুতার যুদ্ধের ঘটনা। সবেমাত্র যুদ্ধের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াহাকে রাসুল বাহিনীর তৃতীয় সেনাপতি নির্ধারণ করে দিলেন। বিদায় নেয়ার জন্য তিনি যখন রাসুলের সাথে দেখা করতে এলেন, এসে কবিতা আবৃত্তি করলেন,
কবিতা-
আল্লাহ আপনাকে সাহায্য করুন পূর্ববর্তী নবিদের ন্যায়।
আল্লাহ আপনার সৌন্দর্য স্থায়ী রাখুন মুসার স্থায়ীত্বের ন্যায়।
তিনি যখন স্ত্রী সন্তান সহচরদের রেখে মুতার যুদ্ধে রওয়ানা হন, তখন তাঁর বন্ধুগণ তাঁকে শুভকামনা জানালেন। বললেন, 'আল্লাহ তোমাকে নিরাপদে কৃতকার্য করে ফিরিয়ে আনুন।' তিনি বললেন, 'না, না...'
তিনি রাসুলের দিকে তাকিয়ে কবিতাপাঠ শুরু করলেন-
আল্লাহ তোমার মাগফিরাতের যাঞ্চা করি, চাইনা আমি আসবো ফিরে যুদ্ধ শেষে।
চাই গো আল্লাহ কাফেরদের হামলা করি, আঘাত খেয়ে ছুটবে তারা উর্ধ্বশ্বাসে।
আল্লাহ তোমার দীনের পথে গাজী হবো, শহিদ হবো; ছিড়বে আমার কলজে-নাড়ি।
কবরপাড়ের পথিক থেকে সালাম লবো, জান্নাতী লাশ বলবে তারা ঈর্ষা করি।
মুতার মুজাহিদগণ মদিনা থেকে বের হচ্ছেন, সমবেত সাহাবায়ে কেরام তাঁকে দোয়া করলেন, 'আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা, আল্লাহ তোমাকে সুস্থ রাখুন। নিরাপদে রাখুন।' তিনি কী এক অপ্রাপ্তি থেকে বলে উঠলেন, 'না, না...'
একটুপর রাসুল ﷺ এলেন। চোখের জলে সিক্ত বিদায় জানালেন আব্দুল্লাহকে। এবার আব্দুল্লাহ প্রশান্ত চিত্তে মদিনা ছেড়ে অশ্ব চালালেন। আব্দুল্লাহ মদিনা ছাড়ছেন আর ফিরে ফিরে তাকাচ্ছেন মদিনার দিকে, মদিনার রাসুলের দিকে। বিগলিত কণ্ঠে আবৃত্তি করছেন-
খেজুর বীথিকায় বিদায় ক্ষণিকায় সম্ভোষিত প্রিয়, তব উয় আহ্লাদে বিগলিত শত সালাম...
আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা ﷺ মুতার যুদ্ধে অংশগ্রহণ করলেন। যুদ্ধক্ষেত্রে দ্বিতীয় সেনাপতি জাফর রাযি. শাহাদাত বরণ করলেন। পর রাসুলের নির্দেশনা অনুযায়ী তৃতীয় সেনাপতি হিসেবে আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা যুদ্ধের পতাকা হাতে তুলে নিলেন। নবরূপে বীরভূমে অবতীর্ণ হলেন যুদ্ধক্ষেত্রে। অসম সাহসিকতায় পরিহিত বর্ম খুলে ফেলেন। তলোয়ার হাতে তুলে তেজোদ্দীপ্ত কণ্ঠে কবিতা আবৃত্তি শুরু করলেন-
নফস আমার করছি শপথ; অশ্ব ছেড়ে ক্ষেত্রে নেমে
অস্ত্র ধরো রণপথে, সকল মানুষ সিটকে পড়ুক,
বিলাপ ধরুক কান্নাতে, ইচ্ছে তোমার হোক বা না হোক,
সরবো নাকো পণ হতে।
বলছ কী সব আহাম্মকি মন চলেনা জান্নাতে!
দীর্ঘ জীবন করলে যাপন এই দুনিয়ায় শান্তিতে,
স্খলিত বীর্য তুমি লাজ লাগেনা কুষ্ঠিতে!
আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা মুতার যুদ্ধেই শাহাদাত বরণ করেছিলেন। শাহাদাতের পর সাহাবায়ে কেরام তাঁর কবরের পাশ দিয়ে অতিক্রম করলে তাঁরই কবিতার এই ছত্র পাঠ করতেন- 'কবরপাড়ের পথিক থেকে সালাম লবো, জান্নাতী লাশ বলবে তারা ঈর্ষা করি।' [আহমাদ: ৭০৮৭]
আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা রাসুলের প্রশংসাগাঁথায় অনেক কবিতা গেঁথেছিলেন। তাঁর সেরা একটি কবিতা হলো-
নবুওয়তের প্রমাণ যদি না থাকত প্রকাশমান,
স্বমহিমায় প্রমাণ হতো তিনি আল্লাহর বার্তাবাহক।
ইবনুল কায়্যিম বলেন, আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা লাইলাতুল আকাবায় রাসুলের হাতে বাইয়াত গ্রহণ করেছিলেন। নিজেকে বিক্রয় করেছিলেন দীনের জন্য। সাধারণ ক্রয়বিক্রয়ে যেমন ক্রেতা-বিক্রেতা যখন চুক্তি সম্পন্ন করে পৃথক হয়ে যায় এবং এর দ্বারা তাদের ক্রয়বিক্রয় অনিবার্য হয়ে পড়ে, রাসুলের হাতে আব্দুল্লাহর বাইয়াতও তেমনই অনিবার্য হয়ে গিয়েছিল। এই বাইয়াত, এই বিক্রয়চুক্তি আমৃত্যু ভঙ্গ হয়নি।
এভাবেই তাঁদের যবানে দীনের কথা ছড়াতো। মানুষের অন্তরে জান্নাতের আলোড়ন সাড়া ফেলতো। তাঁদের কবিতায় জিহাদের চেতনা ও স্পৃহা জাগতো। তাঁদের যবানে দুর্মুখদের সমুচিত জবাব উচ্চকিত হতো।
তাঁদের বিপরীতে কত কবি আছে, যাদের কবিতায় প্রচার পেয়েছে অধর্ম। প্রসার পেয়েছে গোনাহ, অশ্লীলতা। যেমন ইমরুল কায়েস, জাহান্নামের ঝান্ডাবাহী এক কবি। সে তার যৌবন ধ্বংস করেছে পাপের পথে। জীবন ধ্বংস করেছে মদ্যপান আর নারীভোগে। ধিকৃত হয়েছে পৃথিবীতে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আখিরাতে।
📄 কবি ইবনে হানি আন্দালুসি
ইবনে হানি আন্দালুসি। সীমালঙ্ঘনকারী পাপিষ্ঠ এক কবি। একবার সে খলিফার দরবারে গমন করলো। মনতুষ্টির জন্য খলিফার স্তুতি গেয়ে কবিতা পাঠ করলো-
আমি আস্থা রাখি অদৃষ্টে, পরাক্রান্ত পরাক্রমশালী,
যা করার তাই করুন হে!
আল্লাহ -র সাথে ধৃষ্টতা! আল্লাহ বিনে আর কাউকে পরাক্রমশালী ঘোষণা করা! আল্লাহ তাকে পাকড়াও করলেন। মরণ পর্যন্ত বুঝিয়ে দিলেন, কে একচ্ছত্র পরাক্রমশালী! কে পরাক্রান্ত মহাপ্রতাপশালী! ইবনে হানি আন্দালুসি খলিফার ভবন থেকে বের হতেই অজ্ঞাত এক রোগে আক্রান্ত হলো। বিছানায় কাৎরাতে লাগলো কুকুরের ন্যায়। আক্ষেপের ক্রন্দনে বলতে লাগলো, আল্লাহ, তুমিই পরাক্রান্ত। তুমিই পরাক্রমশালী। তখন সে নতুন করে কবিতা গাঁথলো-
ঐ চোখ আশ্রিত তোমার কাছে,
যে চোখের কৃপাডোর চেয়েছি আমি;
তুচ্ছ পরিণামে করেছো আমায়
প্রভুর রহম বঞ্চিত।
লাঞ্ছিত আমি, আমি লাঞ্ছিত,
জীবনের লাগি অপ্রভুরে মানি
পরাক্রমশালী পরাক্রান্ত।
📄 কবি কুরাযি
কুরাবি। লেবাননের বিকৃত পাপাচারী নামধেয় এক কবি। একবার সে দামেস্ক ভ্রমণ করেছিলো। দামেস্কবাসী তাকে সম্মানের শিখরে চড়িয়ে সাদরে গ্রহণ করলো। চারদিকে বেজে উঠলো তুমুল করতালি। কুরাবি তখন আনন্দে ডগমগ হয়ে কবিতা পাঠ করলো-
ঐক্যআরব গড়বো সবাই নবধর্মের আশ্রয়ে,
চলো সমর্থনে, পরিভ্রমণে, বারহাম ধর্মের ঐকতানে,
সাবাস বারহাম! সাবাস বারহাম! লঙ্ঘিলে চলো জাহান্নামে।
আজি ঐক্যআরব গড়বো সবাই নবধর্মের আশ্রয়ে।