📄 নবি ইয়াকুব ﷺ
ইয়াকুব-এর ঘটনা। পুত্র ইউসুফ যখন তাঁর হাতছাড়া হয়ে যান, তিনি যখন বুঝতে পারেন তাঁর পুত্রকে বাঘে খাওয়ার ঘটনা সাজানো হবে, তখন তিনি বলেছিলেন, 'রক্ষণাবেক্ষণে আল্লাহই শ্রেষ্ঠ। তিনিই দয়ালুদের সেরা দয়ালু।'
যখন তিনি কল্পনা করতেন, তাঁর প্রিয় পুত্র তাঁকে দেখছেনা, তখনও তিনি বিচ্ছেদ ব্যথায় কুঁকড়ে উঠে বলতেন, 'রক্ষণাবেক্ষণে তিনিই শ্রেষ্ঠ। তিনিই দয়ালুদের সেরা দয়ালু।'
যখন তিনি বুঝতে পেরেছেন, প্রিয় পুত্রের বিচ্ছেদ অচিরেই ঘুচবে, তখনও তিনি বলেছিলেন, 'রক্ষণাবেক্ষণে তিনিই শ্রেষ্ঠ। তিনিই দয়ালুদের সেরা দয়ালু।'
হাসান বসরি বর্ণনা করেন, 'পুত্র ইউসুফের সাথে বিচ্ছেদকালীন সুদীর্ঘ আশি বছর ইয়াকুব তাঁকে এক মুহূর্তের জন্যও ভুলতে পারেননি। সুদীর্ঘ আশি বছর ইয়াকুবের কপোল বেয়ে গড়িয়েছিল তপ্ত নোনাজল।' [জামিউল বায়ান]
সুদীর্ঘকাল পর আল্লাহ ইউসুফকে আবার ইয়াকুবের বুকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। এটি আল্লাহই করেছেন। আল্লাহই রক্ষণাবেক্ষণে শ্রেষ্ঠ। তিনিই দয়ালুদের সেরা দয়ালু।
📄 পিতৃহীন দুই কিশোর
মুসা এবং খিজির -এর ঘটনা। মুসা যখন খিজিরের সাথে শিক্ষাসফর করছিলেন, এক পর্যায়ে উভয়ে এক গ্রামে পৌঁছলেন। সেখানে পৌঁছে খিজির গ্রামবাসীদের কাছে কিছু খাদ্য চাইলেন। কিন্তু তারা মুসা এবং খিজিরকে আতিথেয়তা করতে অস্বীকার করলো। মুসা এবং খিজির সেখান থেকে চলে আসার সময় দেখলেন, পুরাতন একটি প্রাচীর পতনোন্মুখ হয়ে পড়ে আছে। খিজির পতনোन्মুখ প্রাচীরটি পুনঃস্থাপন করে দিলেন। পরবর্তীতে খিজির মুসা-কে প্রাচীর পুনঃস্থাপনের রহস্য জানিয়ে বলেন-
ঐ প্রাচীরটি ছিলো নগরবাসী দুই পিতৃহীন কিশোরের। প্রাচীরের নিম্নদেশে তাদের গুপ্তধন ছিলো। তাদের পিতা ছিলেন সৎকর্মপরায়ণ ব্যক্তি। সুতরাং তোমার প্রতিপালক দয়াপরবশ হয়ে ইচ্ছা করলেন যে তারা বয়োপ্রাপ্ত হোক এবং তাদের ধনভাণ্ডার উদ্ধার করুক।' [সূরা কাহাফ: ৮২]
পিতৃহীন দুই কিশোরের গুপ্তধন আল্লাহই সংরক্ষণ করেছেন। পিতার সৎকর্মের প্রতিদানে আল্লাহ এতিম সন্তানের অভিভাবকত্ব নির্বাহ করেছেন। আল্লাহই রক্ষণাবেক্ষণে শ্রেষ্ঠ। তিনিই দয়ালুদের সেরা দয়ালু।
📄 ওমর ইবনে আব্দুল আযিযের চৌদ্দ সন্তান
ওমর ইবনে আব্দুল আযিয । কে না চিনে তাঁকে! তিনি ছিলেন উমাইয়া খেলাফতের একজন খলীফা। সাত ছেলে এবং সাত মেয়ের জনক ছিলেন তিনি। কিন্তু জীবনের উপার্জিত সব ধনসম্পদ তিনি আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করেছিলেন। সন্তানদের জন্য কিছু রেখে যেতে পারলেননা। মৃত্যুর সময় রিক্তহস্তে কেঁদে ফেললেন। কেঁদে কেঁদে সন্তানদের বললেন, "আমি তোমাদের জন্য কিছু রেখে যেতে পারিনি। তোমাদের জন্য এক আল্লাহকে রেখে গেলাম।
﴿إِنَّ وَلِيِّيَ اللَّهُ الَّذِي نَزَّلَ الْكِتَبَ وَهُوَ يَتَوَلَّى الصَّلِحِينَ﴾
আমার অভিভাবক তো আল্লাহ যিনি কিতাব অবতীর্ণ করেছেন এবং তিনিই সৎকর্মপরায়ণদের অভিভাবকত্ব করে থাকেন। [সূরা আরাফ: ১৯৬]
তোমরা যদি আল্লাহর আনুগত্য করো, তাহলে আল্লাহই তোমাদের হেফাযত করবেন। আর যদি অবাধ্য হয়ে পড়ো, তাহলে আল্লাহর অবাধ্যতায় আমি তোমাদের কোন সাহায্য করতে পারলামনা।"
এরপর তিনি মৃত্যুবরণ করলেন। কিন্তু তাঁর মৃত্যুর পর সন্তানদের কোন পিছুটান ছিলোনা। বরং তাঁর সন্তানরা প্রাচুর্যময় জীবনযাপন করেছিলো। তৎকালীন লেখকদের বইপুস্তকে পাওয়া যায়, খলিফা ওমর ইবনে আব্দুল আযিযের সন্তানগণ তৎকালে উল্লেখযোগ্য ঐশ্বর্যশীল ছিলেন।