📘 আল্লাহকে মানুন নিরাপদ থাকুন > 📄 আল্লাহ নমরুদকে শাস্তি দিয়েছেন

📄 আল্লাহ নমরুদকে শাস্তি দিয়েছেন


মজার ব্যাপার হল- সে শাস্তিটি কী ছিল?
ওলামায়ে কেরাম উল্লেখ করেছেন, একদিন একটি মশা তার নাকে প্রবেশ করল। মশাটি মাথায় পৌঁছে মগজ খেতে শুরু করল। খেতে খেতে মশাটি চড়ুই পাখির মতো হয়ে গেল। এবার চড়ুই পাখির মতো ডানা ঝাপটাতে শুরু করল নমরূদের মাথার ভিতর। নমরূদের মাথায় শুরু হয়ে গেল ধড়ক। অসহনীয় শাস্তি, দুঃসহনীয় কষ্ট। এই কষ্ট আর প্রশমিত হচ্ছে না। স্থির হতে পারছে না নমরুদ। একপর্যায়ে একটু স্বস্তির জন্য চাবুক বা জুতা দিয়ে তার মাথায় আঘাত শুরু হল। আঘাত পেতে পেতে তার মাথার মগজ শেষ হয়ে গেল।
আল্লাহ বলেন-
আর পরকালের আযাব তো আরও লাঞ্চনাকর এমতাবস্থায় যে, তারা সাহায্যপ্রাপ্ত হবে না। [ফুসসিলাত: ১৬]
এবং যে আমার স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে তার জীবিকা সংকীর্ণ হবে। আমি তাকে কেয়ামতের দিন অন্ধ অবস্থায় উত্থিত করবো।
সে বলবে, হে আমার পালনকর্তা, আমাকে কেন অন্ধ অবস্থায় উত্থিত করলেন? আমি তো চক্ষুমান ছিলাম। আল্লাহ বলবেন, এমনিভাবে তোমার কাছে আমার আয়াতসমূহ এসেছিল, অতঃপর তুমি সেগুলো ভুলে গিয়েছিলে। তেমনিভাবে আজ তোমাকে ভুলে যাবো। [সূরা ত্বাহা: ১২৪-১২৬]
আজ যারা ঈমানহীন হয়ে আকাশচুম্বি ভবনে আড়ম্বরে জীবন কাটাচ্ছে, প্রাণোচ্ছল অভিযাত্রীর মতো স্বাধীন দিন কাটাচ্ছে বাড়িঘরে, তারা সেদিন এসব আর পাবে না। তাদের জন্য থাকবে সংকীর্ণ জীবিকা।
তাই বলা হয়, প্রকৃত অন্ধত্ব বাহ্যচোখের অন্ধত্ব নয়, যদিও সে বাহ্যচোখে অন্ধ থাকে। বরং প্রকৃত অন্ধ হলো যার অন্তর অন্ধ। আল্লাহ বলেন-
বস্তুত চক্ষু তো অন্ধ হয় না, কিন্তু বক্ষস্থিত অন্তরই অন্ধ হয়। [হাজ্জ: ৪৬]
অনেকেরই ষাঁড়ের মতো বড় বড় চোখ আছে, কিন্তু সে দেখে না। তার আল্লাহ -র ভয়ে কম্পিত অন্তর নেই। তার উদাহরণ আবু জাহেলের মতো। আবু জাহল সব দেখতো। সব অনিষ্ট সে দেখতো, শুধু মঙ্গলজনক কিছু দেখতো না। অথচ উম্মে মাকতুম এর চোখ অন্ধ ছিল। কিছু দেখতেন না। কিন্তু তার অন্তঃচক্ষু ছিল। পবিত্র আত্মা ছিল। শুদ্ধ হৃদয় আর নিষ্কলুষ মন ছিল।
ইবরাহিম তার আল্লাহভীতি ও তাকওয়ার ফলাফল পেয়েছেন। দুর্ভাগ্যবান নমরূদের সাথে সুদৃঢ় বিশ্বাসে অটল থেকে বিতর্ক করেছিলেন। তাই তিনি দুনিয়াতে মুক্তি পেয়েছেন। আখেরাতেও সফল হয়েছেন। কিন্তু এই দুর্ভাগ্যবান নমরূদ, আল্লাহ তাকে দুনিয়াতে লাঞ্চিত করেছেন। আখেরাতেও অপদস্থ করবেন। কারণ, সে হেদায়াত গ্রহণ করেনি। সে আল্লাহর নূরের আবহে নিজেকে আনতে পারেনি।
উপরোক্ত ঘটনা থেকে প্রতীয়মান হয়, রুটি-পানি, খাদ্যাহার না থাকলে আমাদের কোন ক্ষতি হবে না। আমাদের ক্ষতি হবে হেদায়াত না থাকলে। আল্লাহ -র তাওফিক আমাদের সহায় না হলে। এজন্য আমাদের প্রয়োজন একদল দাঈ, যারা রাস্তাঘাটে ঘুরবেন, মানুষকে আল্লাহ -র পথে এবং রাসূলের সুন্নতে আহ্বান করবেন।
ইমাম শাফেঈ বলেন- 'মেষের গোশত খেয়ে বেড়ায় কুকুরে, অজগর ঐ মরছে ক্ষুদায় বাঁদাড়ে।'
এমনই আমরা কাউকে ক্ষুদার তাড়নায় মরতে শুনি না, কিন্তু অন্তরগুলো ক্ষুদার তাড়নায় মরে যায়। যেন দুর্ভিক্ষের কবলে হীন দরিদ্র দুর্বল হয়ে মরে যায়।
এই মৃতপ্রায় অন্তরের কোন সঞ্জীবনী আছে কি?
হ্যাঁ, আছে। কোরআন আর সুন্নাহ হল এই মৃতপ্রায় অন্তরের সঞ্জীবনী।

লিঙ্ক শেয়ার করুন
close

লিঙ্ক কপি করুন