📘 আল আযকার > 📄 অনুতপ্ত হওয়া ছাড়া ইস্তিগফার করা

📄 অনুতপ্ত হওয়া ছাড়া ইস্তিগফার করা


অনুতপ্ত হওয়া ছাড়া বলা যে, 'আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি ও তাওবা করছি'
ইস্তিগফারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি বিষয় হল, যা হজরত রবি বিন খুসাইম রাদি. থেকে যা বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, তোমাদের কেউ যেন এভাবে না বলে: أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ وَأَتُوْبُ إِلَيْهِ : আসতাগফিরুল্লাহ ওয়া আতুবু ইলাইহি: আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তাওবা করছি। -কেননা, এমনটি না করলে সে গুনাগার হবে এবং মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত হবে। বরং সে বলবে:-
(اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي وَتُبْ عَلَى ) আল্লাহুম্মাগফিরলি ওয়াতুব আলাইয়্যা: হে আল্লাহ! আপনি আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমার তাওবা কবুল করুন। -তিনি যে বললেন এভাবে বলা উচিত- হে আল্লাহ! আপনি আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমার তাওবা কবুল করুন: ঠিক আছে। তবে 'আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি' কথাটাকে অপছন্দনীয় বলা ও একে মিথ্যা সাব্যস্ত করা: সঙ্গত মনে হচ্ছে না। কেননা, 'আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি' অর্থ: আমি আল্লাহর মাগফেরাত কামনা করছি। এতে মিথ্যার কিছু নেই। তাছাড়া তার এই কথার উত্তর ইতিপূর্বে বর্ণিত হজরত আবদুল্লাহ বিন মাসউদ রাদি. এর হাদিসেও পাওয়া যায়।
হজরত ফুজাইল রাদি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- গুনাহ পরিত্যাগ করা ছাড়া শুধু ক্ষমা প্রার্থনা করা মিথ্যাবাদীদের তাওবা। ঠিক অনুরূপ বক্তব্য হজরত রাবিআ আদাবিয়্যাহ রাদি. থেকে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন, আমাদের ইস্তিগফারের জন্যও আরো ইস্তিগফারের প্রয়োজন। এক আরব বেদুঈন সম্পর্কে কথিত আছে, সে কাবার গিলাফ ধরে বলছিল-
اللَّهُمَّ إِنَّ اسْتِغْفَارِي مَعَ إِصْرَارِيْ لَوْمٌ، وَإِنَّ تَرْكِي الاسْتِغْفَارَ مَعَ عِلْمِي بِسَعَةِ عَفْوِكَ لَعَجْزُ، فَكَمْ تَتَحَبَّبُ إِلَيَّ بِالنَّعَمِ مَعَ غِنَاكَ عَنِّي، وَأَتَبَغَضُ إِلَيْكَ بِالمَعَاصِي مَعَ فَقْرِي إِلَيْكَ، يَا مَنْ إِذَا وَعَدَ وَفَى، وَإِذَا تَوَعَدَ تَجَاوَزَ وَعَفَا، أَدْخِلْ عَظِيمَ جُرْمِي فِي عَظِيمٍ عَفْوِكَ يَا أَرْحَمَ الرَّاحِمِينَ.
অর্থ: হে আল্লাহ! বারবার আপনার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা ছোটলোকি। তবে আপনার ক্ষমার বিস্তৃতি দেখে ক্ষমা প্রার্থনা ছেড়ে দেয়া অক্ষমতা। আমার প্রতি আপনার অমুখাপেক্ষীতা থাকা সত্ত্বেও কতকাল আপনি ভালোবেসে নেয়ামত দিয়ে যাচ্ছেন। অন্যদিকে আপনার প্রতি আমি পূর্ণ মুখাপেক্ষী থাকা সত্ত্বেও কতকাল ধরে আপনার নাফরমানি করে যাচ্ছি। হে ঐ সত্তা, যিনি ওয়াদা করলে পূরণ করেন! হে সকল দয়াবানদের দয়াবান! আপনি আমার মহা অপরাধগুলিকে আপনার মহা ক্ষমার মধ্যে শামিল করে নিন।

📘 আল আযকার > 📄 পূর্ণ একদিন চুপ থাকা নিষিদ্ধ

📄 পূর্ণ একদিন চুপ থাকা নিষিদ্ধ


পূর্ণ একদিন চুপ থাকা নিষিদ্ধ
(১০৬০) হজরত আলি রাদি. থেকে বর্ণিত, আমি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এ কথাগুলো মুখস্থ রেখেছি-
لَا يُتْمَ بَعْدَ احْتِلَامٍ، وَلَا صُمَاتَ يَوْمٍ إِلَى اللَّيْلِ.
অর্থ: সাবালক হওয়ার পর আর এতিম থাকে না। পূর্ণ একদিন চুপ থাকতেও নেই।-ইমাম আবু সুলাইমান খাত্তাবি মাআলিমুস সুনানে এই হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেন- জাহেলি যুগে মানুষে চুপ থাকা ইবাদতের অংশ ছিল। তারা দিবারাত্রের ইতিকাফ করত এবং চুপ থাকত; কারো সাথে কথাবার্তা বলত না। অতঃপর ইসলামে এ থেকে নিষেধ করা হয়েছে এবং তাদেরকে জিকির ও উত্তম কথা বলতে আদেশ দেয়া হয়েছে。
(১০৬১) হজরত কায়েস বিন আবু হাজিম রহ. থেকে বর্ণিত-
دَخَلَ أَبُو بَكْرٍ عَلَى امْرَأَةٍ مِنْ أَحْمَسَ يُقَالُ لَهَا : زَيْنَبُ، فَرَآهَا لَا تَكَلَّمُ، فَقَالَ : مَا لَهَا لَا تَكَلَّمُ ؟ قَالُوا : حَجَّتْ مُصْمِتَةً . قَالَ لَهَا : تَكَلَّمِي ؛ فَإِنَّ هَذَا لَا يَحِلُّ، هَذَا مِنْ عَمَلِ الْجَاهِلِيَّةِ. فَتَكَلَّمَتْ.
অর্থ: একবার হজরত আবু বকর রাদি. আহমাস গোত্রের যয়নব নামক মহিলার কাছে গমন করলেন। গিয়ে দেখেন, সে কথাবার্তা বলছে না। লোকদের জিজ্ঞাসা করলেন, সে কথা বলছে না কেন? তারা বলল, সে চুপ থাকার নিয়ত করেছে। তিনি তাকে বললেন, তুমি কথা বল। কেননা, এ ধরনের চুপ থাকা জায়েজ নয়। এটি জাহেলি যুগের প্রথা। অতঃপর সে কথা বলল。

টিকাঃ
১৫৮০. সুনানে আবু দাউদ: ২৮৭৩।
১৫৮১. মাআলিমুস সুনান ৩/২৯৪।
১৫৮২. সহিহ বুখারি: ৩৮৩৪।

লিঙ্ক শেয়ার করুন
close

লিঙ্ক কপি করুন