📘 আল আযকার > 📄 নিজের সৎকর্মের ওসিলায় আল্লাহর কাছে দুআ করা

📄 নিজের সৎকর্মের ওসিলায় আল্লাহর কাছে দুআ করা


নিজের সৎকর্মের ওসিলায় আল্লাহর কাছে দুআ করা
(১০৩৭) হজরত ইবনে উমর রাদি. থেকে গুহাবাসীর হাদিস বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি-
انْطَلَقَ ثَلَاثَةُ نَفَرٍ مِمَّنْ كَانَ قَبْلَكُمْ حَتَّى أَوَاهُمُ الْمَبِيْتُ إِلَى غَارٍ فَدَخَلُوهُ، فَالْحَدَرَتْ صَخْرَةُ مِنَ الْجِبَلِ فَسَدَّتْ عَلَيْهِمُ النَّارُ، فَقَالُوا: إِنَّهُ لَا يُنْجِيْكُمْ مِنْ هَذِهِ الصَّخْرَةِ إِلَّا أَنْ تَدْعُوا اللَّهَ تَعَالَى بِصَالِحٍ أَعْمَالِكُمْ. قالَ رَجُلٌ مِنْهُمْ: اَللَّهُمَّ إِنَّهُ كَانَ لِي أَبَوَانِ شَيْخَانِ كَبِيرَانِ وَكُنْتُ لَا أُغْبِقُ قَبْلَهُمَا أَهْلاً وَلَا مَالاً وَذُكِرَ تَمَامُ الْحَدِيثِ الطَّوِيلِ فِيْهِمْ، وَأَنَّ كُلَّ وَاحِدٍ مِّنْهُمْ قَالَ فِي صَالِحٍ عَمَلِهِ : اَللَّهُمَّ إِنْ كُنْتُ قَدْ فَعَلْتُ ذَلِكَ ابْتِغَاءَ وَجْهِكَ فَفَرِّجْ عَنَّا مَا نَحْنُ فِيْهِ، فَانْفَرِجَ فِي دَعْوَةِ كُلِّ وَاحِدٍ شَيْءٍ مِّنْهَا، وَانْفَرَجَتْ كُلُّهَا عَقْبَ دَعْوَةٍ الثَّالِثِ، فَخَرَجُوا يَمْشُوْنَ.
অর্থ: তোমাদের পূর্বে (বনি ইসরাঈলের যুগে) তিন ব্যক্তি সফরে বের হল। একপর্যায়ে তারা রাত কাটাতে একটি গুহার আশ্রয় নিয়ে তাতে প্রবেশ করল। হঠাৎ করে একটি বড় পাথরখণ্ড পাহাড় থেকে গড়িয়ে পড়ে গুহার মুখ বন্ধ করে দিল। তারা তখন বলল, এমন বিপদ থেকে বাঁচার একমাত্র পথ হচ্ছে, তোমরা তোমাদের নেক আমলসমূহকে ওসিলা বানিয়ে আল্লাহর কাছে দুআ কর। এক ব্যক্তি দুআ করে বলল, হেআল্লাহ! আমার বৃদ্ধ পিতা-মাতা ছিল। আমি তাদের পূর্বে আমার পরিবার ও অধিনস্তদের কাউকে দুধ পান করাতাম না। তারপর তিনি দীর্ঘ হাদিসটি উল্লেখ করেছেন। তিন ব্যক্তির প্রত্যেকেই তাদের নেক আমলকে ওসিলা বানিয়ে আল্লাহর দরবারে এই বলে দুআ করেছে: হে আল্লাহ! আমি যদি এ কাজ কেবল আপনার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে করে থাকি, তবে আপনি আমাদের থেকে পাথরটি সরিয়ে দিন। তাদের প্রত্যেকের দুআর বদৌলতে পাথরটি একটু একটু করে সরে গেল। তৃতীয়জনের দুআ শেষে পুরো পাথরটি সরে গেল। তখন তারা গুহা থেকে বের হয়ে চলতে লাগল।
আমাদের কাজি হুসাইনসহ আরো অনেকেই সালাতুল ইসতিসকার আলোচনায় একটি বিষয়ে আলোচনা করেছেন। আলোচনার সারকথা হল, যে ব্যক্তিই কোনোও বিপদ অথবা সঙ্কটে পতিত হবে, সে তার নেক আমলের ওসিলায় আল্লাহ তাআলার কাছে দুআ করবে। তারা দলিল হিসাবে উপরে বর্ণিত হাদিসটিই উপস্থাপন করেন। তবে এ ব্যাপারে একটি আপত্তি করে বলা হয়েছে, এই বিষয়ে কিছু অসঙ্গতি রয়েছে। কেননা এখানে সামান্য হলেও আল্লাহ তাআলার প্রতি নিঃশর্ত মুখাপেক্ষিতা প্রদর্শন তরক করা হচ্ছে। অথচ দুআর মূল কাঙ্ক্ষিত বিষয়ই হল মুখাপেক্ষিতা প্রদর্শন। এই প্রশ্নের তেমন কোনোও গুরুত্ব নেই। কেননা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই হাদিস উক্ত তিন ব্যক্তির প্রশংসাকল্পে বর্ণনা করেছেন। আর এই বিষয়টিই রাসুল-কর্তৃক তাদের কাজকে সমর্থন ও সঠিক হিসাবে আখ্যায়িত করার প্রমাণ বহন করে।
দুআর ব্যাপারে পূর্ববর্তীদের অসাধারণ কিছু কাহিনী
দুআ নিয়ে পূর্ববর্তী বুজুর্গদের অনেক কাহিনীই বর্ণিত হয়েছে। তার মধ্যে অসাধারণ একটি কাহিনী হল, যা ইমাম আওজায়ি রহ. থেকে বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, লোকেরা ইসতিসকার নামাজের উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হল। তাদের মাঝে বিলাল বিন সাদ দাঁড়িয়ে আল্লাহ তাআলার প্রশংসা ও গুণগান জ্ঞাপন করলেন। এরপর বললেন, হে উপস্থিতবৃন্দ! তোমরা কি তোমাদের গুনাহকে স্বীকার করছ না? তারা বলল, অবশ্যই স্বীকার করছি।
তিনি বললেন, হে আল্লাহ! আমি আপনাকে বলতে শুনেছি, আপনি বলেছেন-
مَا عَلَى الْمُحْسِنِينَ مِنْ سَبِيلٍ.
অর্থ: সৎকর্মশীলদের ওপর শাস্তির কোনোও বিষয় নেই।
হে আল্লাহ! আমরা আমাদের গুনাহ ও অপরাধ স্বীকার করে নিয়েছি। সুতরাং আমরা ছাড়া আপনার মাগফেরাত আর কার জন্য হবে? হে আল্লাহ! আপনি আমাদেরকে ক্ষমা করুন। আমাদের ওপর রহম করুন। আমাদেরকে পানি দান করুন। এই বলে তিনি হাত উঠালেন। লোকেরাও তার সঙ্গে হাত উঠাল। একটু পরই মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হল।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতেই কবি বলেন: (আংশিক)
أَنَا الْمُذْنِبُ الْخَطَّاءُ وَالْعَفْوُ وَاسِعٌ ، وَلَوْ لَمْ يَكُنْ ذَنْبُ لَمَا وَقَعَ الْعَفْوُ.
অর্থ: আমি পাপী, আমি গুনাহগার। তবে আপনার ক্ষমা তো ব্যাপক। যদি কোনোও গুনাহই না থাকত, তবে তো ক্ষমার কোনোও বিষয়ই থাকত না।

টিকাঃ
১৫৩৬. সহিহ বুখারি: ২২৭২, সহিহ মুসলিম: ২৭৪৩।

📘 আল আযকার > 📄 দুআর সময় দুই হাত উঠানো

📄 দুআর সময় দুই হাত উঠানো


দুআর সময় দুই হাত উঠানো অতঃপর চেহারায় মোছা
(১০৩৮) হজরত উমর বিন খাত্তাব রাদি. থেকে বর্ণিত-
كَانَ رَسُوْلُ اللهِ، صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا رَفَعَ يَدَيْهِ فِي الدُّعَاءِ لَمْ يَحُطَّهُمَا حَتَّى يَمْسَحَ بِهِمَا وَجْهَهُ .
অর্থ: রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুআয় যখন হাত উঠাতেন, তখন হাত দ্বারা চেহারা মাসেহ না করে হাত নামাতেন না。
(১০৩৯) সুনানে আবু দাউদে হজরত আবদুল্লাহ বিন আব্বাস রাদি. এর সূত্রে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। তবে উভয় হাদিসের সনদই দুর্বল।
দুআর পুনরাবৃত্তি মুস্তাহাব হওয়া
(১০৪০) হজরত ইবনে আব্বাস রাদি. থেকে বর্ণিত-
أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُعْجِبُهُ أَنْ يَدْعُوَ ثَلَاثًا وَيَسْتَغْفِرَ ثَلَاثًا.
অর্থ: রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনবার করে দুআ ও ইস্তিগফার করা পছন্দ করতেন。
দু'আয় অন্তরের উপস্থিতি রাখার ব্যাপারে উদ্বুদ্ধকরণ
দুআর মূল উদ্দেশ্য হল, অন্তরের উপস্থিতি যেমনটি পূর্বে আলোচনা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে অসংখ্য-অগণিত প্রমাণ রয়েছে এবং এ ব্যাপারে জ্ঞান উল্লেখের চেয়েও স্পষ্ট। তবে আমরা বরকতস্বরূপ কেবল একটি হাদিস উল্লেখ করছি।
(১০৪১) হজরত আবু হুরায়রা রাদি. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
ادْعُوا اللَّهَ وَأَنْتُمْ مُوْقِنُوْنَ بِالْإِجَابَةِ، وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ لَا يَسْتَجِيْبُ دُعَاءً مِنْ قَلْبٍ غَافِلٍ لَاهٍ.
অর্থ: তোমরা দুআ কবুলের ব্যাপারে দৃঢ় বিশ্বাস রেখে আল্লাহর কাছে দুআ কর। জেনে রাখ, আল্লাহ তাআলা কোনোও উদাসীন ও অমনোযোগী অন্তরের দুআ কবুল করেন না। -হাদিসের সনদ দুর্বল。

টিকাঃ
১৫৩৭. জামে তিরমিজি: ৩৩৮৬।
১৫৩৮. আবু দাউদ: ১৪৮৫, সুনানে ইবনে মাজাহ: ৩৮৬৬, সুনানে বাইহাকি ২/২১২।
১৫৩৯. আবু দাউদ: ১৫২৪, আমাল: ৪৫৭, নাসাঈ, মু. আহমাদ ১/৩৯৪।
১৫৪০. জামে তিরমিজি: ৩৪৭৪, মু. ঘাকেম ১/৪৯৩।

📘 আল আযকার > 📄 অনুপস্থিতের জন্য দুআ করার মর্যাদা

📄 অনুপস্থিতের জন্য দুআ করার মর্যাদা


অনুপস্থিতদের জন্য দুআ করার মর্যাদা
আল্লাহ তাআলা বলেন-
وَالَّذِينَ جَاءُوا مِنْ بَعْدِهِمْ يَقُوْلُوْنَ رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا وَلِإِخْوَانِنَا الَّذِينَ سَبَقُونَا بِالْإِيْمَانِ.
অর্থ: তাদের পরবর্তী যারা এসেছে তারা বলে, হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি আমাদেরকে এবং আমাদের ঐ সকল ভাইদেরকে ক্ষমা করুন, যারা ঈমান আনয়নে আমাদের অগ্রবর্তী হয়েছে。
অপর আয়াতে বলেন-
وَاسْتَغْفِرْ لِذَنْبِكَ وَلِلْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ .
অর্থ: আপনি আপনার জন্য ও মুমিন নর-নারীর জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করুন。
আল্লাহ তাআলা ইবরাহিম আ. সম্পর্কে সংবাদ দিয়ে বলেন-
رَبَّنَا اغْفِرْ لِي وَلِوَالِدَيَّ وَلِلْمُؤْمِنِينَ يَوْمَ يَقُوْمُ الْحِسَابُ.
অর্থ: হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে এবং মুমিনদেরকে হিসাব কায়েম হওয়ার দিন ক্ষমা করুন。
হজরত নূহ আ. সম্পর্কে সংবাদ দিয়ে বলেন-
رَبِّ اغْفِرْ لِي وَلِوَالِدَيَّ وَلِمَنْ دَخَلَ بَيْتِيَ مُؤْمِنًا وَلِلْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ .
অর্থ: হে আমার প্রতিপালক! আপনি আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে, মুমিন হয়ে যে আমার ঘরে প্রবেশ করেছে তাকে এবং সকল মুমিন নর-নারীকে ক্ষমা করুন。
(১০৪২) হজরত আবু দারদা রাদি. থেকে বর্ণিত, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন-
مَا مِنْ عَبْدٍ مُسْلِمٍ يَدْعُوْ لِأَخِيهِ بِظَهْرِ الْغَيْبِ إِلَّا قَالَ الْمَلَكُ : وَلَكَ بِمِثْلٍ. وَفِي رِوَايَةٍ: دَعْوَةُ الْمَرْءِ الْمُسْلِمِ لِأَخِيهِ بِظَهْرِ الْغَيْبِ مُسْتَجَابَةُ، عِنْدَ رَأْسِهِ مَلَكُ مُوَكَّلُ، كُلَّمَا دَعَا لِأَخِيهِ بِخَيْرٍ قَالَ الْمَلَكُ الْمُوَكَّلُ بِهِ : آمِيْنَ، وَلَكَ بِمِثْلٍ.
অর্থ: যে ব্যক্তি অপর মুসলমান ভাইয়ের অনুপস্থিতে তার জন্য দুআ করে, তখন ফেরেশতা তার সঙ্গে বলেন, তোমার জন্যও অনুরূপ বিষয় হোক। মুসলিম শরিফেই আবু দারদা রাদি. থেকে আরেকটি বর্ণনায় এসেছে- রাসুল রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, এক মুসলমান-কর্তৃক অপর অনুপস্থিত মুসলমান ভাইয়ের জন্য করা দুআ কবুল করা হয়। তার ওপর অর্পিত একজন ফেরেশতা রয়েছেন, যখনই সে তার ভাইয়ের জন্য কল্যাণের দুআ করে, তার ওপর অর্পিত ফেরেশতা বলেন, আমিন। তোমার জন্যও অনুরূপ বিষয় হোক。
(১০৪৩) হজরত ইবনে উমর রাদি. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
إِنَّ أَسْرَعَ الدُّعَاءِ إِجَابَةً دَعْوَةُ غَائِبٍ لِغَائِبِ.
অর্থ: এক অপরিচিত ব্যক্তির জন্য অন্য অপরিচিত ব্যক্তির দুআ সবচেয়ে দ্রুত কবুল হয়। -ইমাম তিরমিজি রহ. হাদিসটিকে দুর্বল সাব্যস্ত করেছেন。

টিকাঃ
১৫৪১. সুরা হাশর: ১০।
১৫৪২. সুরা মুহাম্মাদ: ১৯।
১৫৪৩. সুরা ইবরাহিম: ৪১।
১৫৪৪. সুরা নুহ: ২৮।
১৫৪৫. সহিহ মুসলিম: ২৭৩২।
১৫৪৬. সহিহ মুসলিম: ২৭৩৩, সুনানে আবু দাউদ: ১৫৩৪।
১৫৪৭. সুনানে আবু দাউদ: ১৫৩৫, সুনানে তিরমিজি: ১৯৮০।

📘 আল আযকার > 📄 বড়দের থেকে দুআ নেয়া

📄 বড়দের থেকে দুআ নেয়া


অনুগ্রহকারীর জন্য দুআ এবং দুআর ধরন
এই অধ্যায়ে অনেক বিষয়ই রয়েছে, ইতিপূর্বে যথাস্থানে যার আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম বিষয় এটি:
(১০৪৪) হজরত উসামা বিন জায়েদ রাদি. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
مَنْ صُنِعَ إِلَيْهِ مَعْرُوْفٌ، فَقَالَ لِفَاعِلِهِ : جَزَاكَ اللَّهُ خَيْرًا ، فَقَدْ أَبْلَغَ فِي الثَّنَاءِ.
অর্থ: কারো জন্য কোনো উপকার করা হল এবং সে উপকারকারীকে “জাজাকাল্লাহু খায়রান” (আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিন) বলে দুআ দিল, সে যেন (উপকারকারীর) পূর্ণাঙ্গরূপে প্রশংসা করল। -ইমাম তিরমিজি রহ. বলেন, হাদিসটি হাসান সহিহ。
সামান্য পূর্বেই (অর্থাৎ জিহ্বা সংবরণ অধ্যায়ে) সহিহ হাদিসে আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিস বর্ণনা করেছি, তিনি বলেছেন-
وَمَنْ صَنَعَ إِلَيْكُمْ مَعْرُوفًا فَكَافِرُوهُ، فَإِنْ لَمْ تَجِدُوا مَا تُكَافِيُونَه فَادْعُوْا لَهُ حَتَّى تَرَوْا أَنَّكُمْ قَدْ كَافَأْتُمُوهُ.
অর্থ: কেউ যদি তোমাদের কোনোও উপকার করে, তবে তোমরাও তার অনুরূপ উপকার কর। যদি তোমরা অনুরূপ উপকার করার সামর্থ্য না রাখ, তবে তোমরা তার জন্য দুআ করে দাও, যাতে করে তোমাদের মনে হয় যে, তোমরাও তার সঙ্গে অনুরূপ আচরণ করেছ。
বড়দের থেকে দুআ নেয়া, যদিও দুআপ্রার্থী প্রার্থিত ব্যক্তির চেয়ে উত্তম হয়। ফজিলতপূর্ণ স্থানসমূহে দুআ করা
এ বিষয়েও অগণিত হাদিস রয়েছে। এটি একটি সর্বসম্মত বিষয়। তবে এ বিষয়ে সর্বাধিক নির্ভরযোগ্য দলিল এটি-
(১০৪৫) হজরত উমর বিন খাত্তাব রাদি. থেকে বর্ণিত-
اسْتَأْذَنْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْعُمْرَةِ فَأَذِنَ لِي وَقَالَ : لَا تَنْسَنَا يَا أُخَيَّ مِنْ دُعَائِكَ. فَقَالَ كَلِمَةً مَا يَسُرُّنِي أَنَّ لِي بِهَا الدُّنْيَا وَفِي رِوَايَةٍ : أَشْرِكْنَا يَا أُخَيَّ فِي دُعَائِكَ.
অর্থ: আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে উমরার অনুমতি চাইলাম। তিনি আমাকে অনুমতি দিয়ে বললেন, ভাই আমার! আমাদের জন্য দুআ করতে ভুলবেন না। পরবর্তীতে হজরত উমর রাদি. বলেন, রাসূলের এই একটি শব্দ আমাকে এতেঠটা আনন্দ দিয়েছে যে, এর বিনিময়ে সমগ্র দুনিয়ার সম্পদও আমাকে এতটা আনন্দিত করতে পারত না। অপর এক রেওয়ায়েতে বর্ণিত হয়েছে- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ওহে ভাই আমার! তোমার দুআয় আমাদেরকেও শরিক রাখবেন। -ইমাম তিরমিজি রহ. বলেন, এই হাদিসটি হাসান সহিহ। হাদিসটি আমরা 'আজকারুল মুসাফির' অধ্যায়ে বর্ণনা করেছি。

টিকাঃ
১৫৪৮. সুনানে তিরমিজি: ২০৩৫।
১৫৪৯. সুনানে আবু দাউদ: ১৬৭২।
১৫৫০. সুনানে আবু দাউদ: ১৪৯৮, সুনানে তিরমিজি: ৩৫৬২।

লিঙ্ক শেয়ার করুন
close

লিঙ্ক কপি করুন