📄 বিয়ের প্রস্তাব ও আকদের সময় করণীয়
অধ্যায়- ১৬
বিবাহ ও সংযুক্ত আজকার নিজের জন্য কিংবা অন্যের জন্য মেয়ে দেখতে গিয়ে বিয়ের প্রস্তাবকারী ব্যক্তি কী বলবে
বিয়ের প্রস্তাবকারীর জন্য মুস্তাহাব এই যে, সে আল্লাহ তাআলার প্রশংসা ও গুণগান এবং রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর দরুদ বর্ষণের মাধ্যমে শুরু করবে এবং বলবে-
أَشْهَدُ أَنْ لَّا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُوْلُهُ.
উচ্চারণ: আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু, ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহ।
অর্থ: আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, একমাত্র আল্লাহ তাআলা ছাড়া আর কোনো সত্য মাবুদ নেই, তাঁর কোনো অংশীদার নেই। আর এও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, হজরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বিশেষ বান্দা ও শেষ রাসুল। -অতঃপর বলবে, আমি তোমাদের অমুক মেয়ে দেখতে এসেছি
আল-আযকার
অথবা তোমাদের কন্যা অমুকের মেয়ে অমুককে দেখতে এসেছি। অথবা এ জাতীয় কিছু বলবে।
(৭০১) হজরত আবু হুরায়রা রাদি.-এর সূত্রে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত আছে-
অর্থ: যে, যে বস্তুর সূচনা আল্লাহর প্রশংসা ব্যতিরেকে হয়, তা হয় (অধিকতর) বরকতহীন।
(৭০২) হজরত আবু হুরায়রা রাদি. এর সূত্রে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত আছে-
كُلُّ كَلَامٍ " وَفِي بَعْضِ الرِّوَايَاتِ: كُلُّ أَمْرٍ لَا يُبْدَأُ فِيْهِ بِالْحَمْدِ لِلَّهِ فَهُوَ أَجْذَمُ.
অর্থ: যে খুতবায় তাশাহুদ থাকে না তা আঙ্গুলকাটা হাতের ন্যায় (অর্থাৎ অধিকতর বরকতহীন)
নিজের কিংবা অভিভাবকত্বে থাকা মেয়েদেরকে বিয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ ও মর্যাদাবান ব্যক্তিদের সামনে পেশ করা মুস্তাহাব
(৭০৩) সহিহ বুখারিতে আছে-
أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَابِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ لَمَّا تُوَفَّى زَوْجُ بِنْتِهِ حَفْصَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ: لَقِيْتُ، فَعَرَضْتُ عَلَيْهِ حَفْصَةَ، فَقُلْتُ: إِنْ شِئْتَ زَوَّجْتُكَ حَفْصَةَ بِنْتَ عُمَرَ، فَقَالَ: سَأَنْظُرُ فِي أَمْرِي فَلَبِثْتُ لَيَالِي، ثُمَّ لَقِيَنِي فَقَالَ: قَدْ بَدَا لِي أَنْ لَا أَتَزَوَّجَ يَوْمِي هَذَا. قَالَ عُمَرُ: فَلَقِيْتُ أَبَا بَكْرٍ الصِّدِّيقَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، فَقُلْتُ: إِنْ شِئْتَ زَوَّجْتُكَ حَفْصَةَ بِنْتَ عُمَرَ، فَصَمَتَ أَبُو بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ.
অর্থ: হাফসা রাদি. এর স্বামীর মৃত্যুর পরে হজরত উমর বিন খাত্তাব রাদি. বললেন, আমি হজরত উসমানের সাথে সাক্ষাৎ করি এবং তাঁর সামনে মেয়ে হাফসাকে উপস্থাপন করতঃ বলি, আপনি চাইলে আপনার সাথে মেয়ে
আল-আবকার
হাফসাকে বিয়ে দিয়ে দেব। তিনি ভেবেচিন্তে জানাবেন বললেন। অতঃপর কিছুদিন অপেক্ষার পর সাক্ষাতে জানালেন, আমার কাছে এ অবস্থায় বিয়ে করা অনুচিত মনে হচ্ছে। হজরত বলেন, আমি পরে আবু বকর সিদ্দিক রাদি. এর সাথেও সাক্ষাৎ করতঃ বলি, আপনি চাইলে আপনার সাথে মেয়ে হাফসাকে বিয়ে দিয়ে দেব। হজরত আবু বকর চুপ রইলেন...। অতঃপর সম্পূর্ণ হাদিস বর্ণনা করলেন।
বিয়ের আকদের সময় করণীয়
আকদের পূর্বে একটি খুতবা প্রদান করা মুস্তাহাব, যাতে পূর্বোল্লিখিত (তাশাহুদ) থাকবে এবং সেটার চেয়েও দীর্ঘ হবে। আকদ সম্পন্নকারী ব্যক্তি খুতবা প্রদান করুক বা অন্য কেউ। সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ খুতবা হচ্ছে-
(৭০৪) সহিহ সনদে হজরত আবদুল্লাহ বিন মাসউদ রাদি. থেকে বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে 'খুতবাতুল হাজাহ' এভাবে শিক্ষা দিয়েছেন-
الْحَمْدُ لِلَّهِ نَسْتَعِينُهُ وَنَسْتَغْفِرُهُ، وَنَعُوذُ بِهِ مِنْ شُرُورِ أَنْفُسِنَا، مَنْ يَهْدِهِ اللَّهُ فَلَا مُضِلَّ لَهُ، وَمَنْ يُضْلِلْ فَلَا هَادِيَ لَهُ، وَأَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ ، يَأَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُوا رَبَّكُمُ الَّذِي خَلَقَكُمْ مِّنْ نَّفْسٍ وَاحِدَةٍ وَخَلَقَ مِنْهَا زَوْجَهَا وَبَثَّ مِنْهُمَا رِجَالًا كَثِيرًا وَنِسَاءً وَاتَّقُوا اللَّهَ الَّذِي تَسَاءَلُونَ بِهِ وَالْأَرْحَامَ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلَيْكُمْ رَقِيبًا ، يَأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ حَقَّ تُقْتِهِ وَلَا تَمُوتُنَّ إِلَّا وَأَنْتُمْ مُسْلِمُونَ، يَأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَقُولُوا قَوْلًا سَدِيدًا * يُصْلِحْ لَكُمْ أَعْمَالَكُمْ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَمَنْ يُطِعِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَقَدْ فَازَ فَوْزًا عَظِيمًا.
উচ্চারণ: আলহামদুল্লিাহি নাসতায়িনুহু ওয়া নাসতাগফিরুহু, ওয়া নাউজুবিহি মিন শুরুরি আনফুসিনা, মান ইয়াহদিহিল্লাহু ফালা মুদিল্লালাহু, ওয়া মান যুদলিলহু ফালা হাদিয়ালাহ। ওয়া আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া
আল-আযকার
আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহ... (পরে কুরআনের তিনটি আয়াত)
অর্থ: সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, আমরা তারই কাছে সাহায্য কামনা করি, তারই কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি এবং তারই কাছে অন্তরের অনিষ্ট থেকে আশ্রয় কামনা করি। যাকে আল্লাহ হেদায়েত দেন তাকে কেউ ভ্রষ্ট করতে পারে না এবং যাকে ভ্রষ্ট করেন কেউ তাকে পথপ্রদর্শন করতে পারে না। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, একমাত্র আল্লাহ তাআলা ছাড়া আর কোনো সত্য মাবুদ নেই, তার কোনো অংশীদার নেই। আর এও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, হজরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার বিশেষ বান্দা ও শেষ রাসুল।
(আল্লাহ তাআলা বলেন,) হে মানবসমাজ! তোমরা তোমাদের পালনকর্তাকে ভয় কর, যিনি তোমাদেরকে এক সত্তা থেকে সৃষ্টি করেছেন। তিনি তার থেকে তার জোড়াকে সৃষ্টি করেছেন এবং বিস্তার করেছেন তাদের দুজন থেকে অগণিত পুরুষ এবং নারীকে। আর আল্লাহকে ভয় কর, যার নামে তোমরা একে অপরের নিকট যাচনা করে থেকো। আর আত্মীয়তা থেকেও সতর্কতা অবলম্বন কর। নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা তোমাদের নেগরান! হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে ভয় কর, যেমন করে তাকে ভয় করা উচিত এবং মৃত্যু অবধি ইসলামের ওপর কায়েম থাকো। হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্য-সঠিক কথা বল। তাহলে আল্লাহ তোমাদের কার্যাবলী শুধরে দিবেন এবং তোমাদের পাপরাশি ক্ষমা করবেন। যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তার রাসুলের আনুগত্য করে সে মহা সাফল্য অর্জন করল。
-এ হল সুনানে আবু দাউদের এক বর্ণনার শব্দ। আরেক বর্ণনায় وَرَسُولَهُ এর পরে অতিরিক্ত এসেছে-
أَرْسَلَهُ بِالْحَقِّ بَشِيرًا وَنَذِيرًا بَيْنَ يَدَيِ السَّاعَةِ، مَنْ يُطِعِ اللَّهَ وَرَسُوْلَهُ فَقَدْ رَشَدَ، وَمَنْ يَعْصِهِمَا فَإِنَّهُ لَا يَضُرُّ إِلَّا نَفْسَهُ، وَلَا يَضُرُّ اللَّهُ شَيْئًا.
আল-আযকার
উচ্চারণ: আরসালাহু বিলহাক্কি বাশিরান ওয়া নাজিরা, বাইনা ইয়াদায়িস সাআহ। মান যুতিয়িল্লাহা ওয়া রাসুলাহু ফাকাদ রাশাদা, ওয়া মান ইয়াসিহিমা ফা ইন্নাহু লা ইয়াদুররু নাফসাহ। ওয়ালা ইয়াদুররুল্লাহা শাইআ।
অর্থ: আল্লাহ যাকে কেয়ামতপূর্বে সত্য ধর্মসহ সুসংবাদদাতা ও ভীতিপ্রদর্শনকারী হিসাবে প্রেরণ করেছেন। যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তার রাসুলের আনুগত্য করল, নিশ্চয় সে সুপথপ্রাপ্ত হল। আর যে তাদের অবাধ্য হল, সে নিজেরই ক্ষতিসাধন করল; আল্লাহর কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। -ইমাম তিরমিজি বলেন, হাদিসটি হাসান।
আমাদের উলামায়ে কেরাম বলেন, সাথে সাথে এও বলা মুস্তাহাব-
أُزَوِّجُكَ عَلَى مَا أَمَرَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ بِهِ، مِنْ إِمْسَاكِ بِمَعْرُوفٍ أَوْ يَسْرِيحٍ بِإِحْسَانٍ.
অর্থ: আমি আল্লাহর নির্দেশ মাফিক তোমাকে বিয়ে দিচ্ছি; হয়ত সদ্ববহারের সাথে রাখবে অথবা উত্তমরূপে মুক্তি দিবে।
খুতবার সর্বনিম্ন পরিমাণ হচ্ছে-
الْحَمْدُ لِلَّهِ، وَالصَّلَاةُ عَلَى رَسُولِ اللهِ، صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، أُوْصِيَ بِتَقْوَى اللهِ .
উচ্চারণ: আলহামদুলিল্লাহ, ওয়াস সালালাতু আলা রাসুলিল্লাহি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামা, উসি বি-তাকওয়াল্লাহ।
অর্থ: সমস্ত আল্লাহর জন্য এবং দরুদ বর্ষিত হোক রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর। আমি আল্লাহকে ভয় করার ওসিয়ত করছি।
জেনে রাখুন, এই খুতবা প্রদান করা সুন্নাত। এর কোনোটিই না পড়লে উলামায়ে কেরামের ঐক্যমতে বিয়ে সহিহ হয়ে যাবে। তবে দাউদ জাহেরি থেকে সহিহ না হওয়ার কথা বর্ণিত হয়েছে, কিন্তু মুহাক্কিক উলামায়ে কেরামরা তার মতানৈক্যকে নির্ভরযোগ্য মনে করেন না এবং তার বিরোধিতায় ঐক্যমতও বিচ্ছিন্ন হয় না। আল্লাহ তাআলাই সর্বজ্ঞ।
বিশুদ্ধ মত অনুসারে স্বামী খুতবা প্রদান করবে না, বরং যখন অভিভাবক তাকে বলবে, আমি তোমাকে অমুক মেয়ের সাথে বিবাহ দিচ্ছি, তখন ত্বরিত
আল-আযকার
সে বলবে- قَبِلْتُ تَزْوِيُجَهَا )কাবিলতু তাজবিযাহা: আমি তাকে বিয়ে করা কবুল করলাম)। চাইলে এও বলতে পারবে- قَبِلْتُ نِكَاحَهَا )কাবিলতু নিকাহাহা: আমি তার নিকাহ গ্রহণ করলাম)। যদি বলে- الْحَمْدُ لِلَّهِ وَالصَّلَاةُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ، صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ )আলহামদুলিল্লাহ, ওয়াস সালালাতু আলা রাসুলিল্লাহি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামা: সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য। দরুদ বর্ষিত হোক তার রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামরে ওপর) তবুও বিয়ে সহিহ হয়ে যাবে। এটি প্রস্তাব-গ্রহণের মাঝখানে কোনো ব্যাঘাত সৃষ্টি করবে না। কেননা, এটি ক্ষুদ্র বিচ্ছদ। আকদের সাথে এর সম্পর্কও রয়েছে। আমাদের কেউ কেউ বিয়ে ফাসেদ হওয়ার কথা বলেছেন। আবার কেউ বলেন, ফাসেদ হবে না, তবে নবায়ন করা মুস্তাহাব। ইমাম নববি বলেন, পূর্বোল্লিখিত কথাই বিশুদ্ধ যে, নবায়ন করবে না। আর যদি নবায়ন করে ফেলে তাহলে বিয়ে ফাসেদ হবে না। আল্লাহ তাআলাই সর্বজ্ঞ।
আকদ সম্পন্নের পরে বিবাহিতকে কী বলা উচিত
তাকে এই দুআ করা সুন্নাহ- بَارَكَ اللهُ لَكَ وَبَارَكَ عَلَيْكَ وَجَمَعَ بَيْنَكُمَا فِي خَيْرٍ.
উচ্চারণ: বারাকাল্লাহু লাকা ওয়া বারাকা আলাইকা ওয়া যামাআ বাইনাকুমা ফি খাইর।
অর্থ: আল্লাহ পাক তোমাকে বরকত সমৃদ্ধ করুক, তোমার মাঝে বরকত দান করুক এবং তোমাদেরকে সুখময় জীবন-যাপনের তাওফিক দান করুক। -দম্পতিকে একত্রে এভাবে বলা মুস্তাহাব- بَارَكَ اللهُ لِكُلِّ وَاحِدٍ مِنْكُمَا فِي صَاحِبْهِ، وَجَمَعَ بَيْنَكُمَا فِي خَيْرٍ.
উচ্চারণ: বারাকাল্লাহু লিকুল্লি ওয়াহিদিন মিনকুমা ফি সাহিবিহি, ওয়া যামাআ বাইনাকুমা ফি খাইর।
অর্থ: আল্লাহ তোমাদের পরস্পর চলার পথে বরকত দান করুক এবং তোমাদেরকে সুখময় জীবন যাপনের তাওফিক দান করুক।
আল-আযকার
(৭০৫) হজরত আনাস রাদি. থেকে বর্ণিত আছে, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হজরত আবদুর রহমান বিন আউফ রাদিয়াল্লাহু আনহুকে বলেছিলেন, যখন তিনি তাকে বিয়ের সংবাদ দিয়েছিলেন-
উচ্চারণ: বারাকাল্লাহু লাক। অর্থ: আল্লাহ পাক তোমাকে বরকত সমৃদ্ধ করুক।
بَارَكَ اللهُ لَكَ.
(৭০৬) সহিহ হাদিসে রয়েছে যে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হজরত জাবির রাদিয়াল্লাহু আনহুকে বলেছিলেন, যখন তিনি তাকে বিয়ের সংবাদ দিয়েছিলেন-
উচ্চারণ: বারাকাল্লাহু আলাইক। অর্থ: আল্লাহ পাক তোমাকে বরকত সমৃদ্ধ করুক।
بَارَكَ اللهُ عَلَيْكَ.
(৭০৭) সহিহ সনদে হজরত আবু হুরায়রা রাদি. থেকে বর্ণিত আছে, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নবদম্পতিকে উদ্দেশ্য করে এই দুআ করতেন-
بَارَكَ اللهُ لَكَ وَبَارَكَ عَلَيْكَ وَجَمَعَ بَيْنَكُمَا فِي خَيْرٍ.
উচ্চারণ: বারাকাল্লাহু লাকা ওয়া বারাকা আলাইকা ওয়া যামাআ বাইনাকুমা ফি খাইর।
অর্থ: আল্লাহ পাক তোমাকে বরকত সমৃদ্ধ করুক, তোমার মাঝে বরকত দান করুক এবং তোমাদেরকে সুখময় জীবন-যাপনের তাওফিক দান করুক。
যা বলা মাকরুহ
আল-আবকার
তাকে (بِالرَّفَاءِ وَالْبَنِينَ )বিররিফা ওয়াল বানিন: মিল-মহব্বত ও সন্তানাদি হোক) বলা মাকরুহ। এটি মাকরুহ হওয়ার কারণ কিতাবের শেষদিকে 'যবানের হেফাজত' অধ্যায়ে আসছে, ইনশাআল্লাহ।
টিকাঃ
১০০৬. সুনানে আবু দাউদ: ৪৮৪০, সুনানে ইবনে মাজাহ: ১৮৯৪।
১০০৭. সুনানে আবু দাউদ: ৪৮৪১, সুনানে তিরমিজি: ১১০৬, সহিহ ইবনে হিব্বান: ৫৭৯, মুসনাদে আহমাদ ২/৩০৩।
১০০৮. সহিহ বুখারি: ৪০০৫, সুনানে নাসাঈ ৬/৮৩।
১০০৯. সুরা নিসা: ১। তরজমা: তাফসিরে হেদায়াতুল কুরআন থেকে।
১০১০. সুরা আলে ইমরান: ১০২।
১০১১. সুরা আহজাব: ৭০, ৭১।
১০১২. সুনানে আবু দাউদ: ২১১৮, সুনানে তিরমিজি: ১১০৫, সুনানে নাসাঈ ৩/১০৪, সুনানে ইবনে মাজাহ: ১৮৯২, আমাল: ৪৮৮, নাসাঈ, আমাল: ৫৯৯, ই., মু. হাকেম ২/১৮২।
১০১৩. সুনানে তিরমিজি: ২১১৯।
১০১৪. সহিহ বুখারি: ৫১৫৫, সহিহ মুসলিম: ১৪২৭, মুয়াত্তা মালেক ২/৫৪৫, সুনানে আবু দাউদ: ২১০৯, সুনানে তিরমিজি: ১০৯৪, সুনানে নাসাঈ ৬/১৩৭, আমাল: ২৬০, নাসাঈ, আমাল: ৬০১, ই.।
১০১৫. সহিহ বুখারি: ৫৩৬৭, সহিহ মুসলিম: ৭১৫।
১০১৬. সুনানে আবু দাউদ: ২১৩০, সুনানে তিরমিজি: ১০৯১, সুনানে ইবনে মাজাহ: ১৯০৫, মু. আহমাদ ২/৩৮১, আমাল: ২৫৯, না., আমাল: ৬০৪, ই., সহিহ ইবনে হিব্বان: ১২৮৪, মু. হাকেম ২/১৮৩।
📄 বাসর রাতে ও সহবাসের দুআ
বাসর রাতে স্ত্রীকে ভিতরে দেয়ার পরে স্বামী কী বলবে
মুস্তাহাব হল, বিসমিল্লাহ বলে স্ত্রীর ললাটে ধরে বলবে-
بَارَكَ اللهُ لِكُلِّ وَاحِدٍ مِنَّا فِي صَاحِبْهِ.
উচ্চারণ: বারাকাল্লাহু লিকুল্লি ওয়াহিদিন মিন্না ফি সাহিবিহি।
অর্থ: আল্লাহ পাক আমাদের উভয়ের পরস্পর বরকত দান করুক। -পাশাপাশি এও বলবে-
(৭০৮) আমর বিন শুআইব, তিনি তার পিতা থেকে, তিনি তার দাদার সূত্রে সহিহ সনদে নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন- যখন তোমাদের কেউ কোনো নারীকে বিয়ে করে অথবা কোনো গোলাম ক্রয় করে, তখন যেন এই দুআ পাঠ করে-
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ خَيْرَهَا وَخَيْرَ مَا جَبَلْتَهَا عَلَيْهِ، وَأَعُوْذُبِكَ مِنْ شَرِّهَا وَشَرِّ مَا جَبَلْتَهَا عَلَيْهِ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা খাইরাহা ওয়া খাইরা মা যাবালতাহা আলাইহ। ওয়া আউজবিকা মিন শাররিহা ওয়া শাররি মা যাবালতাহা আলাইহ।
অর্থ: হে আল্লাহ, আমি তার মঙ্গল ও যে মঙ্গলের ওপর তাকে সৃষ্টি করেছেন তা কামনা করি। তার অমঙ্গল থেকে এবং যে অমঙ্গলের ওপর তাকে সৃষ্টি করেছেন তা থেকে আপনার আশ্রয় কামনা করি। যদি উট ক্রয় করে তাহলে যেন কুঁজের উপরিভাগে ধরে এরকম বলে।
বাসরের পরে স্বামীকে যা বলতে হয়
(৭০৯) হজরত আনাস রাদি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-
بَنِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِزَيْنَبَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، فَأَوْلَمْ بِخُبْرٍ وَلَحْمٍ.. وَذُكْرِ الْحَدِيثُ فِي صِفَةِ الْوَلِيمَةِ وَكَثْرَةٍ مَّنْ دُعِيَ إِلَيْهَا، ثُمَّ قَالَ: فَخَرَجَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَانْطَلَقَ إِلَى حُجْرَةِ عَائِشَةَ، فَقَالَ: السَّلَامُ عَلَيْكُمْ أَهْلَ الْبَيْتِ وَرَحْمَةُ اللهِ . فَقَالَتْ: وَعَلَيْكَ السَّلَامُ وَرَحْمَةُ اللهِ ، كَيْفَ وَجَدْتَ أَهْلَكَ بَارَكَ اللهُ لَكَ؟ فَتَقَرَّى حُجَرَ نِسَائِهِ كُلِّهِنَّ يَقُوْلُ لَهُنَّ كَمَا يَقُوْلُ لِعَائِشَةَ، وَيَقُلْنَ لَهُ كَمَا قَالَتْ عَائِشَةُ.
অর্থ: রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হজরত যয়নাব রাদিয়াল্লাহু আনহার সাথে বাসর যাপন করেন এবং রুটি-বুটি দিয়ে ভোজের (ওলিমা) আয়োজন করেন। অতঃপর ওলিমার বৈশিষ্টাবলী ও নিমন্ত্রিতদের আধিক্যতার বিবরণ দেন। অতঃপর বলেন, তারপর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেরিয়ে হজরত আয়েশার কামরায় প্রবেশ করলেন এবং বললেন-
السَّلَامُ عَلَيْكُمْ أَهْلَ الْبَيْتِ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ.
উচ্চারণ: আসসালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস সালিহিন। আসসালামু আলাইকুম আহলাল বাইতি ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ।
অর্থ: শান্তি বর্ষিত হোক ঘরবাসীর প্রতি এবং নাজিল হোক আল্লাহর রহমত ও বরকত। -জবাবে আয়েশা রাদি. বললেন-
وَعَلَيْكَ السَّلَامُ وَرَحْمَةُ اللهِ.
উচ্চারণ: ওয়া আলাইকাস সালামু ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
অর্থ: আপনার ওপরও শান্তি বর্ষিত হোক এবং নাজিল হোক আল্লাহর রহমত। -নববধূকে কেমন পেয়েছেন? আল্লাহ পাক আপনার জন্য বরকত দান করুক। অতঃপর তিনি একে একে সমস্ত স্ত্রীদের কামরায় গমণ করলেন। তাদের সবাইকেও সালাম দিয়েছেন, যেমনটা হজরত আয়েশাকে দিয়েছেন। তারাও তাকে আয়েশার মতো জবাব দিয়েছেন。
আল-আযকার
সহবাসের দুআ
(৭১০) হজরত ইবনে আব্বাস রাদি. থেকে বর্ণিত, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- যদি তোমাদের কেউ স্ত্রী সঙ্গমের সময় এই দুআ পড়ে, অতঃপর তাদের জন্য কোনো সন্তানের ফয়সালা হয়, তাহলে শয়তান কখনো তার কোনো ক্ষতিসাধন করতে পারবে না। দুআটি হল-
بِاسْمِ اللهِ اللَّهُمَّ جَنَّبْنَا الشَّيْطَانَ، وَجَنَّبِ الشَّيْطَانَ مَا رَزَقْتَنَا.
উচ্চারণ: বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা যান্নিবনাশ শাইতানা, ওয়া যান্নিবিশ শাইতানা মা রাজাকতানা।
অর্থ: আল্লাহর নামে শুরু করলাম। হে আল্লাহ, শয়তানকে আমাদের থেকে সরিয়ে রাখুন এবং শয়তানকে আমাদের ভাগ্য থেকেও দূরে রাখুন。
স্ত্রীর সাথে কৌতুক করা, রসিকতা করা এবং স্নেহপরায়ণ আচরণ করা উচিত
(৭১১) হজরত জাবের রাদি. থেকে বর্ণিত, আমাকে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করেছেন-
تَزَوَّجْتَ بِكْرًا أَمْ ثَيْبًا ؟ قُلْتُ: تَزَوَّجْتُ ثَيِّبًا. قَالَ: هَلَّا تَزَوَّجْتَ بِكْرًا تُلَاعِبُهَا وَتُلَاعِبُكَ ؟
অর্থ: তুমি কুমারী বিয়ে করেছ না অকুমারী? অকুমারী বিয়ে করেছি। তিনি বললেন, কুমারী বিয়ে করলে তো তুমি তার সাথে রসিকতা করতে এবং সেও তোমাদের সাথে করত。
(৭১২) হজরত আয়েশা রাদি. থেকে বর্ণিত, সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
أَكْمَلُ الْمُؤْمِنِينَ إِيْمَانًا أَحْسَنُهُمْ خُلُقًا، وَأَلْطَفُهُمْ لَأَهْلِهِ.
অর্থ: পূর্ণাঙ্গ ঈমানদার সে ব্যক্তি, যে তার পরিবারের সাথে উত্তম চরিত্রবান এবং সদয় ব্যবহারকারী。
আল-আযকার
বৈবাহিকসূত্রে আত্মীয়দের সাথে স্বামীর আদব
স্বামীর জন্য মুস্তহাব এই যে, স্ত্রীর আত্মীয়ের কারো সাথে কথাবার্তায় এমন শব্দ ব্যবহার করবে না, যাতে থাকবে নারী-সহবাস, চুমো, আলিঙ্গন অথবা নারী-সম্ভোগ জাতীয় কোনো শব্দ অথবা এগুলো বুঝায় এমন পরোক্ষ কোনো শব্দ, কিংবা এগুলোর ওপর নির্দেশ করে এমন কোনো শব্দ অথবা বোধগম্য শব্দ।
(৭১৩) হজরত আলি রাদি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-
كُنْتُ رَجُلًا مَذَّاءً ، فَاسْتَحْيَيْتُ أَنْ أَسْأَلَ رَسُوْلَ اللهِ، صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَأَمَرْتُ الْمِقْدَادَ بْنَ الْأَسْوَدِ فَسَأَلَهُ.
অর্থ: আমি অধিক মজির অধিকারী ছিলাম, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে জিজ্ঞাসা করতে লজ্জাবোধ করতাম। কারণ, তার মেয়ে আমার বিবাহে আবদ্ধ। অতঃপর আমি হজরত মিকদাদকে জিজ্ঞাসা করতে বলি, তিনিই তাকে জিজ্ঞাসা করেন。
টিকাঃ
১০১৭. সুনানে আবু দাউদ: ২১৬০, সুনানে ইবনে মাজাহ: ১৯১৮, আমালুল ইয়াউমি ওয়াল্লাইলাহ: ৬০০, ই., আমাল: ২৪০, না., মু. হাকেম ২/১৮৫।
১০১৮. সহিহ বুখারি: ৪৭৯১, সহিহ মুসলিম: ১৪২৮, আমাল: ২৭১, না., আমাল: ৬১৭।
১০১৯. সহিহ বুখারি: ১৪১, সহিহ মুসলিম: ৫১৬৫, সুনানে আবু দাউদ: ২১৬১, সুনানে তিরমিজি: ১৬৯২, সুনানে ইবনে মাজাহ: ১৯১৯, মুসনাদে আহমাদ ১/২১৭, আমাল: ২৬৬, না., আমাল: ৬০৮।
১০২০. সহিহ বুখারি: ২০৯৭, সহিহ মুসলিম: ৭১৫।
১০২১. সুনানে তিরমিজি: ২৬১৫, সুনানে নাসাঈ: ৯১০৯, মুসনাদে আহমাদ ৬/৪৭, মু. হাকেম ১/৫৩।
১০২২. সহিহ বুখারি: ১৩২, সহিহ মুসলিম: ৩০৩, মুয়াত্তা ১/৪০, সুনানে আবু দাউদ: ২০৬, সুনানে তিরমিজি: ১১৪, সুনানে নাসাঈ ১/৯৬-৯৭।
📄 প্রসববেদনায় করণীয়
প্রসববেদনায় করণীয়
এমতাবস্থায় বিপদাপদের দুআসমূহ বেশি বেশি পাঠ করা উচিত, যা আমরা পূর্বে আলোচনা করেছি।
(৭১৪) হজরত ফাতেমা রাদি. থেকে বর্ণিত-
أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمَّا دَنَا وِلَادَهَا أَمَرَ أُمَّ سَلْمَةً وَزَيْنَبَ بِنْتَ جَحْشٍ أَنْ يَأْتِيَا فَيَقْرَا عِنْدَهَا آيَةَ الْكُرْسِيِّ، وَ (إِنَّ رَبَّكُمُ اللهُ..) إِلى آخر الآية [الاعراف: ٥٤] وَيَعُوْذَاهَا بِالْمُعَوَّذَتَيْنِ.
অর্থ: তার বাচ্চা প্রসবের সময় নিকটবর্তী হলে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মে সালামা ও যয়নাব বিনতে জাহাশকে নির্দেশ দেন, যেন তারা আমার কাছে এসে আয়াতুল কুরসি ও ( إِنَّ رَبَّكُمُ اللَّهُ )সুরা আরাফ:
আল-আযকার
৫৪) শেষ পর্যন্ত পাঠ করেন এবং সুরা নাস ও ফালাক দ্বারা আল্লাহর কাছে আশ্রয় কামনা করেন。
টিকাঃ
১০২৩. আমালুল ইয়াউমি ওয়াল্লাইলাহ: ৬২০।
📄 নবজাতকের কানে আজান ও তাহনিকের দুআ
নবজাতকের কানে আজান দেয়া মুস্তাহাব
(৭১৫) নবিজির মুক্ত দাস হজরত আবু রাফে রাদি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-
رَأَيْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَذَّنَ فِي أُذُنِ الْحَسَنِ بْنِ عَلِيَّ حِيْنَ وَلَدَتْهُ فَاطِمَةُ بِالصَّلَاةِ.
অর্থ: আমি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হাসান বিন আলির কানে নামাজের আজান দিতে দেখেছি, যখন হজরত ফাতেমা তাকে জন্মদান করেন। -ইমাম তিরমিজি বলেন, হাদিসটি হাসান সহিহ。
আমাদের একদল উলামায়ে কেরাম বলেন, ডান কানে আজান দেয়া এবং বা কানে ইকামত দেয়া মুস্তাহাব।
(৭১৬) হজরত হুসাইন বিন আলি রাদি. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
مَنْ وُلِدَ لَهُ مَوْلُودٌ فَأَذَّنَ فِي أُذُنِهِ الْيُمْنى، وَأَقَامَ فِي أُذُنِهِ الْيُسْرَى لَمْ تَضُرُّهُ أُمُّ الصَّبْيَانِ.
অর্থ: যার কোনো শিশু জন্ম নিল এবং সে তার ডান কানে আজান দিল এবং বাম কানে ইকামত দিল, উম্মে সিবয়ান (নারী শয়তান) তার কোনো অনিষ্ট করতে পারবে না。
তাহনিকের সময়ের দুআ
(৭১৮) সহিহ সনদে হজরত আয়েশা রাদি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-
كَانَ رَسُولُ اللهِ، صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُؤْتَى بِالصَّبْيَانِ فَيَدْعُوْ لَهُمْ بِالْبَرَكَةِ.
আল-আযকার
অর্থ: রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে শিশুদের নিয়ে আসা হত। তিনি তাদের জন্য দুআ করতেন এবং তাদেরকে তাহনিক করে দিতেন। অন্য বর্ণনায় আছে- তাদের জন্য বরকতের দুআ করতেন。
(৭১৮) হজরত আসমা বিনতে আবু বকর রাদি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-
حَمَلَتْ بِعَبْدِ اللهِ بْنِ الزُّبَيْرِ بِمَكَّةِ، فَأَتَيْتُ الْمَدِينَةَ، فَنَزَلْتُ بِقُبَاءٍ، فَوَلَدْتُهُ بِقُبَاءٍ، ثُمَّ أَتَيْتُ بِهِ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَوَضَعْتُهُ فِي حَجْرِهِ، ثُمَّ دَعَا بِتَمْرَةٍ فَمَضَغَهَا، ثُمَّ تَفَلَ فِي فِيْهِ ، فَكَانَ أَوَّلَ شَيْءٍ دَخَلَ جَوْفَهُ رِيْقُ رَسُوْلِ اللَّهِ، صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، ثُمَّ حَنَّكَهُ بِتَمْرَةٍ، ثُمَّ دَعَا لَهُ، وَبَرَّكَ عَلَيْهِ.
অর্থ: মক্কায় থাকাবস্থায় আবদুল্লাহ বিন যুবায়েরের গর্ভধারণ হয়। অতঃপর মদিনায় হিজরতকালে কুবায় অবতরণ করি। সেখানে তার জন্ম হয়। আমি তাকে নিয়ে নবিজির খেদমতে উপস্থিত হই, তিনি তাকে কোলে নিলেন। তারপর খেজুর তলব করে চর্বণ করলেন, অতঃপর তার মুখে থুথু দিলেন। ফলে তার পেটে প্রথম যে বস্তু প্রবেশ করে, তা হল রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের থুথু। তারপর তাকে খেজুর দ্বারা তাহনিক করেন এবং তার জন্য বরকতের দুআ করেন。
(৭১৯) হজরত আবু মুসা রাদি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-
وُلِدَ لِي غُلَامُ، فَأَتَيْتُ بِهِ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَسَمَّاهُ إِبْرَاهِيمَ، فَحَنَّكَهُ بِتَمْرَةٍ، وَدَعَا لَهُ بِالْبَرَكَةِ.
অর্থ: আমার এক পুত্র সন্তানের জন্ম হলে তাকে নিয়ে নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে উপস্থিত হই। তিনি তার নাম রাখেন ইবরাহিম। তাকে খজুর দ্বারা তাহনিক করেন এবং তার জন্য বরকতের দুআও করেন。
টিকাঃ
১০২৪. সুনানে আবু দাউদ: ৫১০৫, সুনানে তিরমিজি: ১৫১৪, মু. আহমাদ ৬/৯, মু. হাকেম ৩/১৭৯।
১০২৫. আমালুল ইয়াউমি ওয়াল্লাইলাহ: ৬২৩।
১০২৬. জন্মের পরে দুধপান করানোর আগে কোনো নেককার বুজুর্গ দ্বারা খেজুর ইত্যাদি ভালো করে চিবিয়ে শিশুর টাকরায় ঘষানো。
১০২৭. সুনানে আবু দাউদ: ৫১০৬।
১০২৮. সহিহ বুখারি: ৩৯০৯, সহিহ মুসলিম ২১৪৬/২৫।
১০২৯. সহিহ বুখারি: ৫৪৬৭, সহিহ মুসলিম: ২১৪৫।