📘 আল আযকার > 📄 সালাতুল হাজত ও সালাতুত তাসবিহের দুআ

📄 সালাতুল হাজত ও সালাতুত তাসবিহের দুআ


সালাতুল হাজতের দুআ
(৪৬৯) হজরত আবদুল্লাহ বিন আবু আউফা রাদি. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- যদি আল্লাহর কাছে বা কোন বান্দার কাছে কারো কোন প্রয়োজন দেখা দেয়, তাহলে সে যেন ভালো ভাবে অজু করে দুই রাকাত নামাজ পড়ে। আল্লাহর প্রশংসা, গুণকীর্তন করে। নবির ওপর দরুদ পড়ে, এরপর এ দুআ পড়ে-
لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ الحَلِيمُ الْكَرِيمُ ، سُبْحَانَ اللهِ، رَبِّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ، أَسْأَلُكَ مُوجِبَاتِ رَحْمَتِكَ، وَعَزَائِمَ مَغْفِرَتِكَ، وَالْغَنِيمَةَ مِنْ كُلَّ بِرَّ، وَالسَّلَامَةَ مِنْ كُلِّ إِثْمٍ، لَا تَدَعْ لِي ذَنْبًا إِلَّا غَفَرْتَهُ، وَلَا هَمَّا إِلَّا فَرَّجْتَهُ، وَلَا حَاجَةً هِيَ لَكَ رِضًا إِلَّا قَضَيْتَهَا، يَا أَرْحَمَ الرَّاحِمِينَ.
উচ্চারণ: লাইলাহা ইল্লাল্লাহুল হালিমুল কারিম, সুবহানাল্লাহি রাব্বিল আরশিল আজিম। লা ইলাহা ইল্লা আনতা, আজ্জা যারুকা ওয়া জাল্লা সানাউকা। আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন। আসআলুকা মুযিবাতি রাহমাতিক, ওয়া আজায়িমি মাগফিরাতিক, ওয়াল গানিমাতা মিন কুল্লি বিররিন, ওয়াস সালামাতা মিন কুল্লি ইসমিন। লা তাদা লি জাম্বান ইল্লা গাফারতাহু ওয়ালা হাম্মান ইল্লা ফাররাজতাহু ওয়া হাজাতান হিয়া লাকা রিদান ইল্লা কাদাইতাহা ইয়া আরহামার রাহিমিন।
অর্থ: আল্লাহ তাআলা ব্যতীত কোন সত্য মাবুদ নেই, যিনি অতি মহান অত্যন্ত সহনশীল। মহান আরশের অধিপতির পবিত্রতা ঘোষণা করছি। সমস্ত প্রশংসা বিশ্বপালক আল্লাহর নিমিত্ত। হে আল্লাহ, আপনার রহমতের হেতুসমূহ, আপনার ক্ষমার সঙ্কল্প, সকল পুণ্যের সুযোগ, সবধরনের পাপ থেকে মুক্তি কামনা করি। আমার সকল অপরাধ মাফ করে দিন, সকল দুশ্চিন্তা লাঘব করে দিন এবং সে সকল প্রয়োজন, যাতে আপনার সন্তুষ্টি নিহিত, আপনি তা পূরণ করে দিন হে সর্বোচ্চ দয়ালু। -ইমাম হাকেম বলেন, হাদিসটি সহিহ মুসলিমের শর্ত-মাফিক সহিহ। ইমাম তিরমিজি রহ. বলেন, হাদিসের সনদে সমস্যা আছে। ৬৫১
ইমাম নববি রহ. বলেন, বিপদাপদের দুআটিও পড়বে-
اللَّهُمَّ آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ.
উচ্চারণ: রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনয়া হাসানাতান, ওয়াফিল আখিরাতি হাসানাতান, ওয়া কিনা আজাবান্নার।
অর্থ: হে আল্লাহ, আমাদেরকে দুনিয়া ও আখেরাতে কল্যাণ দান করুন। আমাদেরকে জাহান্নামের শাস্তি থেকে রক্ষা করুন। ৬৫২
(৪৭০) হজরত উসমান বিন হুনাইফ রাদি. এর সূত্রে বর্ণিত আছে, এক অন্ধ ব্যক্তি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বললেন, আমার জন্য আল্লাহর কাছে দুআ করেন, তিনি যেন আমাকে সুস্থ করে দেন। নবিজি বললেন, তুমি চাইলে আমি দুআ করব। আর চাইলে তুমি ধৈর্যধারণ কর, তা তোমার জন্য অনেক উত্তম হবে। লোকটি বললেন, আপনি দুআ করুন। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি ভালোভাবে অজু করে এ দুআ করবে-
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ، وَأَتَوَجَّهُ إِلَيْكَ بِنَبِيِّكَ مُحَمَّدٍ نَبِيَّ الرَّحْمَةِ، إِنِّي تَوَجَّهْتُ بِكَ إِلَى رَبِّي فِي حَاجَتِي هَذِهِ لِتُقْضَى لِيَ اللَّهُمَّ فَشَفَعْهُ فِي.
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা ওয়া আতাওয়াজ্জাহু ইলাইকা বি- নাবিয়্যিকা মুহাম্মাদিন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামা নাবিয়্যির রাহমাহ। ইয়া মুহাম্মাদ, ইন্নি তাওয়াজ্জাহতু বিকা ইলা রাব্বি ফি হাজাতি হাজিহি লিতুকদা লিয়া, আল্লাহুম্মা ফা-শাফফিহু ফিয়্যা।
অর্থ: হে আল্লাহ, আপনার কাছে প্রার্থনা করি। আপনার রহমতের নবি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওসিলায় দুআ করছি। হে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, আমি আপনার ওসিলায় আমার রবের অভিমুখী হয়েছি আমার এই প্রয়োজন পূরণের জন্য। হে আল্লাহ, অতএব আমার ব্যাপারে তার শাফাআত কবুল কর। -ইমাম তিরমিজি রহ. বলেন, এই হাদিস হাসান সহিহ। ৬৫৩
সালাতুত তাসবিহের দুআ: সুনানে তিরমিজিতে আছে- রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের থেকে কিছু হাদিস সালাতুত তাসবিহ সম্পর্কে এসেছে। সেগুলোর বেশির ভাগই সহিহ নয়। ইমাম তিরমিজি বলেন, আবদুল্লাহ বিন মুবারক ও অনেক উলামায়ে কেরাম সালাতুত তাসবিহের কথা বলেন। তারা এ নামাজের অনেক ফজিলতের কথাও বলেন। ৬৫৪ ইমাম তিরমিজি রহ. আবু ওয়াহবের সূত্রে আবদুল্লাহ বিন মুবারক থেকে বর্ণনা করেন যে, তাকে এই নামাজ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন-
يُكَبِّرُ ثُمَّ يَقُوْلُ : سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ، وَتَبَارَكَ اسْمُكَ، وَتَعَالَى جَدُّكَ، وَلَا إلَهَ غَيْرُكَ، ثُمَّ يَقُوْلُ - خَمْسَ عَشْرَةَ مَرَّةً - : سُبْحَانَ اللهِ، ، وَالْحَمْدُ لِلَّهِ، وَلَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ، وَاللهُ أَكْبَرُ، ثُمَّ يَتَعَوَّذُ وَيَقْرَأُ : بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ وَفَاتِحَة الْكِتَابِ، وَسُورَةً، ثُمَّ يَقُوْلُ - عَشْرَ مَرَّاتٍ - : sُبْحَانَ اللهِ، ، وَالْحَمْدُ لِلَّهِ، وَلَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ، وَاللهُ أَكْبَرُ، ثُمَّ يَرْكَعُ فَيَقُوْلُهَا عَشْرًا، ثُمَّ يَرْفَعُ رَأْسَهُ فَيَقُوْلُهَا عَشْرًا، ثُمَّ يَسْجُدُ فَيَقُولُهَا عَشْرًا، ثُمَّ يَرْفَعُ رَأْسَهُ فَيَقُولُهَا عَشْرًا، ثُمَّ يَسْجُدُ الثَّانِيَةَ فَيَقُوْلُهَا عَشْرًا، يُصَلِّي أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ عَلَى هَذَا، فَذَلِكَ خَمْسٌ وَسَبْعُوْنَ تَسْبِيحَةً في كُلِّ رَكْعَةٍ يَبْدَأُ فِي كُلِّ رَكْعَةٍ بِخَمْسَ عَشْرَةَ تَسْبِيحَةً، ثُمَّ يَقْرَأُ، ثُمَّ يُسَبِّحُ عَشْرًا، فَإِنْ صَلَّى لَيْلًا فَأَحَبُّ إِلَيَّ أَنْ يُسَلَّمَ فِي الرَّكْعَتَيْنِ، وَإِنْ صَلَّى نَهَارًا فَإِنْ شَاءَ سَلَّمَ وَإِنْ شَاءَ لَمْ يُسَلَّمْ .
অর্থ: তাকবিরে তাহরিমা বলার পর পড়বে- سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ، وَتَبَارَكَ اسْمُكَ، وَتَعَالَى جَدُّكَ، وَلَا إِلَهَ غَيْرُكَ.
উচ্চারণ: সুবহানাকাল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবারাকাসমুকা ওয়া তাআলা জাদ্দুকা, ওয়া লা ইলাহা গাইরুক।
অর্থ: হে আল্লাহ! আপনার পবিত্রতার গুণগান করি, আপনার নাম বরকতময় এবং আপনার বড়ত্ব সুউচ্চ। আর আপনি ব্যতীত কোন মাবুদ নেই। -এরপর পনেরো বার এই তাসবিহটি পড়বে-
سُبْحَانَ اللهِ ، وَالْحَمْدُ لِلَّهِ، وَلَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ، وَاللَّهُ أَكْبَرُ.
উচ্চারণ: সুবহানাল্লাহ ওয়াল হামদুলিল্লাহ, ওয়ালা ইলাহা ইল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার।
অর্থ: আল্লাহ তাআলা পবিত্র সত্তা। যাবতীয় প্রশংসা তাঁরই। তিনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই। তিনি মহান। -এরপর আউজুবিল্লাহ ও বিসমিল্লাহ বলে সুরা ফাতিহা পড়বে ও অন্য সুরা মিলাবে। তারপর উক্ত তাসবিহ দশবার পড়বে। রুকুতে গিয়ে সে তাসবিহ দশবার পড়বে। রুকু থেকে মাথা উঠিয়ে দাঁড়িয়ে দশবার পড়বে। এরপর সিজদায় দশবার পড়বে। দুই সিজদার মাঝে দশবার পড়বে। দ্বিতীয় সিজদায় দশবার পড়বে। এভাবে চার রাকাত নামাজ পড়বে। ফলে প্রতি রাকাতে ৭৫ বার তাসবিহ পড়া হবে। ১৫ তাসবিহের মাধ্যমে শুরু করবে, কিরাতের পর আবার দশবার পড়বে। রাতে নামাজ পড়লে দুই রাকাতের পর সালাম ফেরানো আমি উত্তম মনে করি। আর দিনে পড়লে সালাম ফেরাতেও পারে আবার নাও ফিরাতে পারে। ৬৫৫
আবদুল্লাহ বিন মুবারক থেকে অপর বর্ণনায় আছে- রুকুতে গিয়ে প্রথমে রুকুর তাসবিহ পড়বে এবং সিজদাতেও প্রথমে সিজদার তাসবিহ পড়বে। এরপর উক্ত তাসবিহ পড়বে। আবদুল্লাহ বিন মুবারককে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল- যদি এই নামাজে ভুল হয়, তবে কি সিজদায়ে সাহুতে দশ দশবার করে তাসবিহ পড়বে? তিনি বলেন, না। বরং এই নামাজটি হল, ৩০০ তাসবিহের।
(৪৭১) হজরত আবু রাফে রাদি. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আব্বাসকে বলেছেন-
يَا عَمَّ، أَلَا أَصِلُكَ، أَلَا أَحْبُوكَ ، أَلَا أَنْفَعُكَ؟ قَالَ: بَلَى يَا رَسُولَ اللَّهِ . قَالَ: يَا عَمِّ، صَلِّ أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ تَقْرَأُ فِي كُلِّ رَكْعَةٍ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ وَسُوْرَةٍ، فَإِذَا انْقَضَتِ الْقِرَاءَةُ فَقُلِ: اللهُ أَكْبَرُ ، وَالْحَمْدُ لِلهِ ، وَسُبْحَانَ اللَّهِ، خَمْسَ عَشْرَةَ مَرَّةً قَبْلَ أَنْ تَرْكَعَ، ثُمَّ ارْكَعْ فَقُلْهَا عَشْرًا، ثُمَّ ارْفَعْ رَأْسَكَ فَقُلْهَا عَشْرًا، ثُمَّ اسْجُدْ فَقُلْهَا عَشْرًا، ثُمَّ ارْفَعْ رَأْسَكَ فَقُلْهَا عَشْرًا، ثُمَّ اسْجُدْ فَقُلْهَا عَشْرًا، ثُمَّ ارْفَعْ رَأْسَكَ فَقُلْهَا عَشْرًا قَبْلَ أَنْ تَقُوْمَ، فَذَلِكَ خَمْسُ وَسَبْعُوْنَ فِي كُلِّ رَكْعَةٍ، وَهِيَ ثَلَاثُ مِائَةٍ فِي أَرْبَعِ رَكَعَاتٍ، وَلَوْ كَانَتْ ذُنُوبُكَ مِثْلَ رَمْلِ عَالِجٍ غَفَرَهَا اللَّهُ لَكَ. قَالَ : يَا رَسُولَ اللهِ ، وَمَنْ يَسْتَطِيعُ أَنْ يَقُوْلَهَا فِي يَوْمٍ؟ قَالَ: إِنْ لَمْ تَسْتَطِعْ أَنْ تَقُوْلَهَا فِي يَوْمٍ فَقُلْهَا فِي جُمْعَةٍ، فَإِنْ لَمْ تَسْتَطِعْ أَنْ تَقُوْلَهَا فِي جُمُعَةٍ فَقُلْهَا فِي شَهْرٍ. فَلَمْ يَزَلْ يَقُوْلُ لَهُ حَتَّى قَالَ: قُلْهَا فِي سَنَةٍ .
অর্থ: হে চাচা, আমি কি আপনার সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করব না, আপনাকে উপহার দেব না, আপনার উপকার করব না? তিনি বললেন, অবশ্যই। তখন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে চাচা, আপনি চার রাকাত নামাজ পড়ুন। প্রত্যেক রাকাতে সুরা ফাতেহা ও অন্য আরেকটি সুরা পড়বেন। কিরাত শেষে রুকুর আগে এ দুআটি ১৫ বার পড়বেন-
اللهُ أَكْبَرُ، وَالْحَمْدُ لِلَّهِ، وَسُبْحَانَ اللهِ،
উচ্চারণ: আল্লাহু আকবার, ওয়াল হামদুলিল্লাহ, ওয়া সুবহানাল্লাহ। অর্থ: আল্লাহ তাআলা মহান, যাবতীয় প্রশংসা তাঁরই। আমি তাঁরই পবিত্রতা বর্ণনা করছি। – এরপর রুকুতে দশবার। রুকু থেকে মাথা উঠিয়ে দশবার। সিজদায় দশবার। সিজদা থেকে মাথা উঠিয়ে দশবার। দ্বিতীয় সিজদায় দশবার। দ্বিতীয় সিজদা থেকে মাথা উঠিয়ে দশবার। প্রতি রাকাতে মোট ৭৫ বার। চার রাকাতে মোট ৩০০ তিনশত বার হবে।
যদি আপনার পাপরাশি মরুভূমির বালুকারাশির সমানও হয়, তবুও আল্লাহ তাআলা মাফ করে দিবেন। চাচা বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ, প্রতিদিন কে এই নামাজ পড়তে সক্ষম? রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যদি প্রতিদিন এই আমল করতে না পারেন তাহলে প্রতি জুমুআর দিন এই আমল করবেন। যদি প্রতি জুমুআয়ও আমল করতে না পারেন, তাহলে প্রতি মাসে একবার আমল করবেন। তিনি এভাবে তাকে বলতে বলতে শেষে বললেন, যদি তাও সম্ভব না হয়, তাহলে প্রতিবছর একবার আমল করবেন। ইমাম তিরমিজি রহ. বলেন, হাদিসটি গারিব। ৬৫৬
ইমাম নববি রহ. বলেন- ইমাম আবু বকর বিন আরাবি রহ. সুনানে তিরমিজির ব্যাখ্যাগ্রন্থ “তুহফাতুল আহওয়াজি” কিতাবে উল্লেখ করেছেন, আবু রাফের উক্ত হাদিসটি দুর্বল। হাসানও নয় সহিহও নয়। ইমাম তিরমিজি রহ. মানুষকে সতর্ক করার জন্য এটি উল্লেখ করেছেন। হজরত উকাইলি রহ. বলেন, সালাতুত তাসবিহ বিষয়ে কোন প্রমাণযোগ্য হাদিস নেই।
নববি রহ. বলেন- ইমাম দারাকুতনি রহ. বলেন, সুরাসমূহের ফজিলতের বিষয়ে সবচেয়ে সহিহ হাদিস এসেছে সুরা ইখলাসের ফজিলতের বিষয়ে। আর নামাজের ফজিলাতের বিষয়ে সবচেয়ে সহিহ হাদিস এসেছে সালাতুত তাসবিহের নামাজের বিষয়ে। তবে ইমাম দারাকুতনির বক্তব্য দ্বারা এটি বোঝা যায় না যে, সালাতুত তাসবিহের হাদিস সহিহ। বরং এ কথা বলার দ্বারা তাদের উদ্দেশ্য থাকে প্রাধান্য দেয়া। যদিও সেই হাদিসটি দুর্বল হয়।
ইমাম নববি রহ. আরো বলেন, আমাদের একদল উলামায়ে কেরাম, সালাতুত তাসবিহের নামাজকে মুস্তাহাব বলেছেন। তাদের মাঝে রয়েছেন, আবু মুহাম্মাদ বাগাবি রহ. ও আবুল মাহাসিন রুয়ানি রহ.।
ইমাম রুয়ানি রহ. বলেন, সালাতুত তাসবিহ পড়া চাই। সর্বদায় এটা পড়ার অভ্যাস করা চাই। এতে উদাসীনতা না করা। অনুরূপভাবে আবদুল্লাহ বিন মুবারকসহ অনেকেই এমন অভিমত ব্যক্ত করেছেন। ৬৫৭

টিকাঃ
৬৫১. সুনানে তিরমিজি: ৪৭৯, সুনানে ইবনে মাজাহ: ১৩৮৪, মুসতাদরাকে হাকেম ১/৩২০, আলফুতুহাত ৪/২৯৮।
৬৫২. উ.
৬৫৩. সুনানে তিরমিজি: ৩৫৭৩, সুনানে ইবনে মাজাহ: ১৩৮৫, আমাল: ৬৫৮, নাসাঈ, মুসতাদরাকে হাকেম ১/৩১৩।
৬৫৪. সুনানে তিরমিজি ২/২০৫।
৬৫৫. সুনানে তিরমিজি: ২০৫২।
৬৫৬. সুনানে তিরমিজি: ৪৮২, সুনানে আবু দাউদ: ১২৯৭, সুনানে ইবনে মাজাহ: ১৩৮৬, মুসতাদরাকে হাকেম ১/৩১৭।
৬৫৭. ইমাম আবদুল হাই লাকনাভি রহ. "জাফারুল আমানি" বইয়ে এই হাদিসের সনদের ওপর বিশ্লেষণ করে বলেছেন, হাদিসটি হাসান স্তরের। অতএব, এর ওপর নিঃসঙ্কোচে আমল করা উচিত।

লিঙ্ক শেয়ার করুন
close

লিঙ্ক কপি করুন