📘 আল আযকার > 📄 ভয়, দুশ্চিন্তা ও পেরেশানির দুআ

📄 ভয়, দুশ্চিন্তা ও পেরেশানির দুআ


ভয় পেলে যে দুআ পড়বে (৩১৫) হজরত সাওবান রাদি. এর সূত্রে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কোন কিছু দেখে ভয় পেতেন, তখন এ দুআ পড়তেন- هُوَ اللَّهُ، اللَّهُ رَبِّي لَا شَرِيكَ لَهُ.
উচ্চারণ: হুয়াল্লাহু, আল্লাহু রাব্বি লা-শারিকালাহ।
অর্থ: তিনিই আল্লাহ, তিনি আমার প্রভু, তাঁর কোন শরিক নেই। ৪৫০
(৩১৬) হজরত আমর বিন শুআইব রাদি. এর সূত্রে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবায়ে কেরامকে ভয়ের সময় পড়তে এই কালিমাগুলো শিখিয়েছেন- أَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ، اَلتَّامَّةِ، مِنْ غَضَبِهِ وَشَرِّ عِبَادِهِ، وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ وَأَنْ يَحْضُرُوْنِ.
উচ্চারণ: আউজু বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন গাজাবিহি ওয়া শাররি ইবাদিহ। ওয়া মিন হামাজাতিশ শাইয়াতিনি ওয়া আন ইয়াহদুরুন।
অর্থ: আমি আল্লাহর পূর্ণ-দৃঢ় উক্তিসমূহের আশ্রয় নিচ্ছি তার ক্রোধ থেকে, তার সৃষ্টির অনিষ্ট থেকে এবং শয়তানের কুস্পর্শ ও উপস্থিতি থেকে। -আবদুল্লাহ বিন আমর রাদি. তাঁর বুঝমান সন্তানদেরকে এ দুআ মুখস্ত করাতেন। আর অবুঝ বাচ্চাদের গলায় কাগজে লেখে ঝুলিয়ে দিতেন। ৪৫১
দুঃশ্চিন্তা ও পেরেশান হলে যে দুআ পড়বে (৩১৭) হজরত আবু মুসা আশআরি রাদি. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- যে ব্যক্তি দুঃশ্চিন্তা ও পেরেশানিতে পড়ে যায়, সে যেন এই দুআগুলো পড়ে। তখন উপস্থিত এক সাহাবি বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ, এই বাক্যগুলো পড়া থেকে যে উদাসীনতা প্রদর্শন করল সে বাস্তবেই ক্ষতিগ্রস্থ। তখন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ। অতএব, তোমার এই বাক্যগুলো পড় এবং অন্যদেরকে শিক্ষা দাও। যে ব্যক্তি বিশ্বাসের সাথে এই বাক্যগুলো বলবে, আল্লাহ তাআলা তার সকল টেনশন দূর করে দিবেন এবং তাকে সুখী করবেন।
اللَّهُمَّ أَنَا عَبْدُكَ، ابْنُ عَبْدِكَ، ابْنُ أَمَتِكَ، فِي قَبْضَتِكَ، نَاصِيَتِي بِيَدِكَ، مَاضٍ فِي حُكْمُكَ، عَدْلٌ فِي قَضَاؤُكَ، أَسْأَلُكَ بِكُلِّ اسْمٍ هُوَ لَكَ، سَمَّيْتَ بِهِ نَفْسَكَ، أَوْ أَنْزَلْتَهُ فِي كِتَابِكَ، أَوْ عَلَّمْتَهُ أَحَداً مِنْ خَلْقِكَ، أَوِ اسْتَأْثَرْتَ بِهِ فِي عِلْمِ الْغَيْبِ عِنْدَكَ أَنْ تَجْعَلَ الْقُرْآنَ نُورَ صَدْرِي، وَرَبِيْعَ قَلْبِي، وَجْلَاءَ حُزْنِي، وَذَهَابَ هَتِي.
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা আনা আবদুকা, ইবনু আবদিকা, ইবনু আমাতিকা, ফি কাবজাতিকা, নাসিয়াতি বিয়াদিকা, মাজিন ফিয়্যা হুকমুকা, আদলুন ফিয়্যা কাজাউকা। আসআলুকা বিকুল্লি ইসমিন হুয়া লাকা, সাম্মাইতা বিহি নাফসাকা, আও আনজালতাহু فی کتابک, আও আল্লামতাহু আহাদান মিন খালকিকা, আও ইসতা'সারতা বিহি ফি ইলমিল গাইবি ইনদাকা আন তাজআলাল কুরআনা নুরা সাদরি, ওয়া রাবিআ কালবি, ওয়া যালাআ হুজনি, ওয়া জাহাবা হাম্মি।
অর্থ: হে আল্লাহ, আমি আপনার গোলাম, আপনার গোলামের বেটা গোলাম, আপনার বান্দীর সন্তান গোলাম। আমি আপনার নিয়ন্ত্রণে, আমার নিয়ন্ত্রণ আপনার হাতে। আমার মাঝে চলে আপনার বিধান, আমার বিষয়ে আপনার সিদ্ধান্ত ইনসাফপূর্ণ। আপনার সেসব নামের উসিলায় প্রার্থনা করি, যে নামসমূহ আপনি নিজে নিজের জন্য রেখেছেন। অথবা নিজের কিতাবে নাজিল করেছেন, অথবা অন্য কোন সৃষ্টিকে শিখিয়েছেন। অথবা নিজের অদৃশ্যের ভাণ্ডারে তুলে রেখেছেন। কুরআন মাজিদকে আমার আত্মার সালো, হৃদয়ের বসন্ত, দুঃখ নিবরাক ও দুশ্চিন্তা বিদূরক বানিয়ে দিন। ৪৫২
সর্বনাশায় নিপতিত হলে যে দুআ পড়বে (৩১৮) হজরত আলি রাদি. এর সূত্রে বর্ণিত আছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
يَا عَلِيُّ أَلَا أُعَلِّمُكَ كَلِمَاتٍ إِذَا وَقَعْتَ فِي وَرْطَةٍ قُلْتَهَا؟ قُلْتُ: بَلَى، جَعَلَنِي اللهُ فَدَاكَ، قَالَ: إِذَا وَقَعْتَ فِي وَرْطَةٍ فَقُلْ : بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ، وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللهِ الْعَلِيِّ الْعَظِيمِ. فَإِنَّ اللهَ تَعَالَى يَصْرِفُ بِهَا مَا شَاءَ مِنْ أَنْوَاعِ الْبَلَاءِ.
অর্থ: হে আলি, তোমাকে কি এমন কথা শিক্ষা দেব যা তুমি সর্বনাশায় নিপতিত হলে পড়বে? আমি বললাম, জি, অবশ্যই শিখিয়ে দিন। আল্লাহ আমাকে আপনার তরে উৎসর্গীত করুন। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি যখন সর্বনাশায় নিপতিত হবে, তখন এ দুআ পড়বে। এই দুআ পড়লে আল্লাহ তাআলা সর্বপ্রকার বিপদাপদ দূর করে দিবেন। দুআটি হল-
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ، وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ الْعَلِيِّ الْعَظِيمِ.
উচ্চারণ: বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম, ওয়া লা হাউলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লাবিল্লাহিল আলিয়ি‍্যল আজিম।
অর্থ: আল্লাহর নামে শুরু করছি যিনি অত্যন্ত দয়াপরবশ, বড় করুণাময়। মহান মর্যাদাবান আল্লাহ ছাড়া আর কারো কোন ক্ষমতা ও শক্তি নেই। ৪৫৩

টিকাঃ
৪৫০. আমাল: ৩৩৫, ইবনুস সুন্নি: আমাল: ৫৭, নাসাঈ।
৪৫১. সুনানে আবু দাউদ: ৩৮৯৩, সুনানে তিরমিজি: ৩৫১৯। হাদিসটি হাসান।
৪৫২. ইবনুস সুন্নি: ৩৩৯। হাদিসটি হাসান।
৪৫৩. ইবনুস সুন্নি: ৩৩৬। এটি বানোয়াট।

ভয় পেলে যে দুআ পড়বে (৩১৫) হজরত সাওবান রাদি. এর সূত্রে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কোন কিছু দেখে ভয় পেতেন, তখন এ দুআ পড়তেন- هُوَ اللَّهُ، اللَّهُ رَبِّي لَا شَرِيكَ لَهُ.
উচ্চারণ: হুয়াল্লাহু, আল্লাহু রাব্বি লা-শারিকালাহ।
অর্থ: তিনিই আল্লাহ, তিনি আমার প্রভু, তাঁর কোন শরিক নেই। ৪৫০
(৩১৬) হজরত আমর বিন শুআইব রাদি. এর সূত্রে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবায়ে কেরامকে ভয়ের সময় পড়তে এই কালিমাগুলো শিখিয়েছেন- أَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ، اَلتَّامَّةِ، مِنْ غَضَبِهِ وَشَرِّ عِبَادِهِ، وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ وَأَنْ يَحْضُرُوْنِ.
উচ্চারণ: আউজু বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন গাজাবিহি ওয়া শাররি ইবাদিহ। ওয়া মিন হামাজাতিশ শাইয়াতিনি ওয়া আন ইয়াহদুরুন।
অর্থ: আমি আল্লাহর পূর্ণ-দৃঢ় উক্তিসমূহের আশ্রয় নিচ্ছি তার ক্রোধ থেকে, তার সৃষ্টির অনিষ্ট থেকে এবং শয়তানের কুস্পর্শ ও উপস্থিতি থেকে। -আবদুল্লাহ বিন আমর রাদি. তাঁর বুঝমান সন্তানদেরকে এ দুআ মুখস্ত করাতেন। আর অবুঝ বাচ্চাদের গলায় কাগজে লেখে ঝুলিয়ে দিতেন। ৪৫১
দুঃশ্চিন্তা ও পেরেশান হলে যে দুআ পড়বে (৩১৭) হজরত আবু মুসা আশআরি রাদি. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- যে ব্যক্তি দুঃশ্চিন্তা ও পেরেশানিতে পড়ে যায়, সে যেন এই দুআগুলো পড়ে। তখন উপস্থিত এক সাহাবি বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ, এই বাক্যগুলো পড়া থেকে যে উদাসীনতা প্রদর্শন করল সে বাস্তবেই ক্ষতিগ্রস্থ। তখন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ। অতএব, তোমার এই বাক্যগুলো পড় এবং অন্যদেরকে শিক্ষা দাও। যে ব্যক্তি বিশ্বাসের সাথে এই বাক্যগুলো বলবে, আল্লাহ তাআলা তার সকল টেনশন দূর করে দিবেন এবং তাকে সুখী করবেন।
اللَّهُمَّ أَنَا عَبْدُكَ، ابْنُ عَبْدِكَ، ابْنُ أَمَتِكَ، فِي قَبْضَتِكَ، نَاصِيَتِي بِيَدِكَ، مَاضٍ فِي حُكْمُكَ، عَدْلٌ فِي قَضَاؤُكَ، أَسْأَلُكَ بِكُلِّ اسْمٍ هُوَ لَكَ، سَمَّيْتَ بِهِ نَفْسَكَ، أَوْ أَنْزَلْتَهُ فِي كِتَابِكَ، أَوْ عَلَّمْتَهُ أَحَداً مِنْ خَلْقِكَ، أَوِ اسْتَأْثَرْتَ بِهِ فِي عِلْمِ الْغَيْبِ عِنْدَكَ أَنْ تَجْعَلَ الْقُرْآنَ نُورَ صَدْرِي، وَرَبِيْعَ قَلْبِي، وَجْلَاءَ حُزْنِي، وَذَهَابَ هَتِي.
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা আনা আবদুকা, ইবনু আবদিকা, ইবনু আমাতিকা, ফি কাবজাতিকা, নাসিয়াতি বিয়াদিকা, মাজিন ফিয়্যা হুকমুকা, আদলুন ফিয়্যা কাজাউকা। আসআলুকা বিকুল্লি ইসমিন হুয়া লাকা, সাম্মাইতা বিহি নাফসাকা, আও আনজালতাহু فی کتابک, আও আল্লামতাহু আহাদান মিন খালকিকা, আও ইসতা'সারতা বিহি ফি ইলমিল গাইবি ইনদাকা আন তাজআলাল কুরআনা নুরা সাদরি, ওয়া রাবিআ কালবি, ওয়া যালাআ হুজনি, ওয়া জাহাবা হাম্মি।
অর্থ: হে আল্লাহ, আমি আপনার গোলাম, আপনার গোলামের বেটা গোলাম, আপনার বান্দীর সন্তান গোলাম। আমি আপনার নিয়ন্ত্রণে, আমার নিয়ন্ত্রণ আপনার হাতে। আমার মাঝে চলে আপনার বিধান, আমার বিষয়ে আপনার সিদ্ধান্ত ইনসাফপূর্ণ। আপনার সেসব নামের উসিলায় প্রার্থনা করি, যে নামসমূহ আপনি নিজে নিজের জন্য রেখেছেন। অথবা নিজের কিতাবে নাজিল করেছেন, অথবা অন্য কোন সৃষ্টিকে শিখিয়েছেন। অথবা নিজের অদৃশ্যের ভাণ্ডারে তুলে রেখেছেন। কুরআন মাজিদকে আমার আত্মার সালো, হৃদয়ের বসন্ত, দুঃখ নিবরাক ও দুশ্চিন্তা বিদূরক বানিয়ে দিন। ৪৫২
সর্বনাশায় নিপতিত হলে যে দুআ পড়বে (৩১৮) হজরত আলি রাদি. এর সূত্রে বর্ণিত আছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
يَا عَلِيُّ أَلَا أُعَلِّمُكَ كَلِمَاتٍ إِذَا وَقَعْتَ فِي وَرْطَةٍ قُلْتَهَا؟ قُلْتُ: بَلَى، جَعَلَنِي اللهُ فَدَاكَ، قَالَ: إِذَا وَقَعْتَ فِي وَرْطَةٍ فَقُلْ : بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ، وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللهِ الْعَلِيِّ الْعَظِيمِ. فَإِنَّ اللهَ تَعَالَى يَصْرِفُ بِهَا مَا شَاءَ مِنْ أَنْوَاعِ الْبَلَاءِ.
অর্থ: হে আলি, তোমাকে কি এমন কথা শিক্ষা দেব যা তুমি সর্বনাশায় নিপতিত হলে পড়বে? আমি বললাম, জি, অবশ্যই শিখিয়ে দিন। আল্লাহ আমাকে আপনার তরে উৎসর্গীত করুন। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি যখন সর্বনাশায় নিপতিত হবে, তখন এ দুআ পড়বে। এই দুআ পড়লে আল্লাহ তাআলা সর্বপ্রকার বিপদাপদ দূর করে দিবেন। দুআটি হল-
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ، وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ الْعَلِيِّ الْعَظِيمِ.
উচ্চারণ: বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম, ওয়া লা হাউলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লাবিল্লাহিল আলিয়ি‍্যল আজিম।
অর্থ: আল্লাহর নামে শুরু করছি যিনি অত্যন্ত দয়াপরবশ, বড় করুণাময়। মহান মর্যাদাবান আল্লাহ ছাড়া আর কারো কোন ক্ষমতা ও শক্তি নেই। ৪৫৩

টিকাঃ
৪৫০. আমাল: ৩৩৫, ইবনুস সুন্নি: আমাল: ৫৭, নাসাঈ।
৪৫১. সুনানে আবু দাউদ: ৩৮৯৩, সুনানে তিরমিজি: ৩৫১৯। হাদিসটি হাসান।
৪৫২. ইবনুস সুন্নি: ৩৩৯। হাদিসটি হাসান।
৪৫৩. ইবনুস সুন্নি: ৩৩৬। এটি বানোয়াট।

📘 আল আযকার > 📄 শত্রু ও বাদশাহকে ভয় পেলে যে দুআ পড়বে

📄 শত্রু ও বাদশাহকে ভয় পেলে যে দুআ পড়বে


কোন সমপ্রদায়কে ভয় পেলে যে দুআ পড়বে (৩১৯) হজরত আবু মুসা আশআরি রাদি. থেকে বর্ণিত, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন সমপ্রদায়কে ভয় পেলে এই দুআ পড়তেন-
اللَّهُمَّ إِنَّا نَجْعَلُكَ فِي نُحُوْرِهِمْ، وَنَعُوْذُ بِكَ مِنْ شُرُوْرِهِمْ.
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্না নাজআলুকা ফি নুহুরিহিম, ওয়া নাউজুবিকা মিন শুরুরিহিম।
অর্থ: হে আল্লাহ, আমি দুশমনের দুশমনির মোকাবেলায় আপনাকে স্থাপন করেছি এবং তাদের অনিষ্ট থেকে আপনার আশ্রয় কামনা করছি। ৪৫৪
বাদশাহকে ভয় পেলে যে দুআ পড়বে (৩২০) হজরত আবদুল্লাহ বিন উমর রাদি. এর সূত্রে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, বাদশাহ বা অন্য কাউকে ভয় করলে এ দুআ পড়বে-
لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ الْحَلِيمُ الْكَرِيمُ، سُبْحَانَ اللهِ رَبِّ السَّمَوَاتِ السَّبْعِ وَرَبِّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ، لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ، عَزَّ جَارُكَ، وَجَلَّ ثَنَاؤُكَ.
উচ্চারণ: লাইলাহা ইল্লাল্লাহুল হালিমুল কারিম, সুবহানাল্লাহি রাব্বাস সামাওয়াতি ওয়া রাব্বাল আরদি ওয়া রাব্বাল আরশিল আজিম। লা ইলাহা ইল্লা আনতা, আজ্জা যারুকা ওয়া জাল্লা সানাউকা।
অর্থ: আল্লাহ তাআলা ব্যতীত কোন সত্য মাবুদ নেই, যিনি অতি মহান অত্যন্ত সহনশীল। আসমান-জমিনের প্রতিপালক, মহান আরশের অধিপতির পবিত্রতা ঘোষণা করছি। আপনি ব্যতীত কোন মাবুদ নেই। আপনার আশ্রয় গ্রহণকারীর জয় হোক এবং আপনার মহিমা সমুচ্চ হোক। ৪৫৫-পূর্বে হজরত আবু মুসা আশআরি রাদি. থেকে বর্ণিত হাদিসও পড়া যেতে পারে।
শত্রুর দিকে তাকালে যে দুআ পড়বে (৩২১) হজরত আনাস রাদি. এর সূত্রে বর্ণিত, এক যুদ্ধে আমরা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে ছিলাম। শত্রুদের মুখোমুখি হলে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এই দুআ পড়তে শুনেছি। এরপর আমি শত্রুদেরকে ধরাশায়ী হতে দেখেছি। তাদের সামনে-পেছনে ফেরেশতারা আঘাত করছিলেন। দুআটি হল-
يَا مَالِكَ يَوْمِ الدِّيْنِ إِيَّاكَ أَعْبُدُ وَإِيَّاكَ أَسْتَعِينُ.
উচ্চারণ: ইয়া মালিকি ইয়াউমিদ্দিন, ইয়্যাকা আ'বুদু ওয়া ইয়্যাকা আসতায়িন।
অর্থ: হে বিচার দিবসের মালিক, আমি আপনারই ইবাদত করি এবং আপনারই কাছে সাহায্য চাই। ৪৫৬ -পূর্বের অধ্যায়ের হজরত আবু মুসা আশআরি রাদি. এর বর্ণিত দুআটিও পড়া যায়।
শয়তানকে সামনে দেখলে বা শয়তানকে ভয় পেলে যে দুআ পড়বে
আল্লাহ তাআলা বলেন- وَإِمَّا يَنْزَغَنَّكَ مِنَ الشَّيْطَنِ نَزْغٌ فَاسْتَعِذْ بِاللَّهِ إِنَّهُ هُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ.
অর্থ: যদি শয়তানের কুমন্ত্রণা তোমাকে প্ররোচিত করে, তাহলে আল্লাহর কাছে পানাহ চাইবে। তিনি সবকিছু শুনেন, জানেন। ৪৫৭ -আল্লাহ তাআলা আরো বলেন-
وَإِذَا قَرَأْتَ الْقُرْآنَ جَعَلْنَا بَيْنَكَ وَ بَيْنَ الَّذِينَ لَا يُؤْمِنُوْنَ بِالْآخِرَةِ حِجَابًا مَّسْتُورًا.
অর্থ: তুমি যখন কুরআন তিলাওয়াত করো, তখন তোমার ও যারা আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস করে না তাদের মাঝে এক প্রচ্ছন্ন পর্দা ঢেলে দিই। ৪৫৮-তাই আল্লাহ তাআলার কাছে আশ্রয় চেয়ে কুরআনে কারিমের যতটুকু অংশ পড়া যায়, ততটুকু পড়া।
(৩২২) হজরত আবু দারদা রাদি. থেকে বর্ণিত আছে-
قَامَ رَسُوْلُ اللهِ، صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَسَمِعْنَاهُ يَقُوْلُ: أَعُوْذُ بِاللَّهِ، مِنْكَ، ثُمَّ قَالَ: أَلْعَنُكَ بِلَعْنَةِ اللهِ، ثَلَاثًا، وَبَسَطَ يَدَهُ كَأَنَّهُ يَتَنَاوَلُ شَيْئًا، فَلَمَّا فَرَغَ مِنَ الصَّلَاةِ. قُلْنَا : يَا رَسُوْلَ اللهِ ، قَدْ سَمِعْنَاكَ تَقُوْلُ فِي الصَّلَاةِ شَيْئًا لَمْ نَسْمَعْكَ تَقُوْلُهُ قَبْلَ ذَالِكَ، وَرَأَيْنَاكَ بَسَطْتَ يَدَكَ. قَالَ: إِنَّ عَدُوَّ اللَّهِ، إِبْلِيْسَ جَاءَ بِشِهَابٍ مِنْ نَارٍ؛ لِيَجْعَلَهُ فِي وَجْهِي، فَقُلْتُ: أَعُوْذُ بِاللَّهِ، مِنْكَ، ثَلَاثَ مَرَّاتٍ. ثُمَّ قُلْتُ : أَلْعَنُكَ بِلَعْنَةِ اللهِ التَّامَّةِ فَلَمْ يَسْتَأْخِرْ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ ثُمَّ أَرَدْتُ أَخْذَهُ، وَاللهِ، لَوْلَا دَعْوَةُ أَخِيْنَا سُلَيْمَانَ لَأَصْبَحَ مُوْثَقًا يَلْعَبُ بِهِ وِلْدَانُ أَهْلِ الْمَدِينَةِ.
অর্থ: তিনি বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার নামাজের জন্য দাঁড়ালেন। তখন তাকে তিনবার বলতে শুনলাম- أَعُوْذُ بِاللهِ، مِنْكَ (আউজুবিল্লাহি মিনকা: আমি তুমি শয়তান থেকে আল্লাহর পানাহ চাই) এরপর তিনি তিনবার বললেন, أَلْعَنُكَ بِلَعْنَةِ اللهِ (আলআনুকা বি-লানাতিল্লাহ: আমি তোমাকে (শয়তানকে) আল্লাহর নামে অভিশম্পাত করছি)। অতঃপর তিনি দুই হাত প্রসারিত করলেন, যেন তিনি কিছু ধরতে চাচ্ছেন। নামাজ থেকে ফারেগ হলে আমরা বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ, আমরা আজ নামাজে আপনাকে এমন কিছু বলতে শুনেছি, যা ইতিপূর্বে শুনিনি। তখন তিনি বললেন, আল্লাহর শত্রু ইবলিশ সে উল্কাপিণ্ড নিয়ে আমার মুখে মারার জন্য এসেছিল। তখন আমি أَعُوْذُ بِاللهِ، مِنْكَ (আউজুবিল্লাহি মিনকা) তিনবার পড়লাম। এরপর أَلْعَنُكَ بِلَعْنَةِ اللهِ (আলআনুকা বি-লানাতিল্লাহ) তিন বার পড়লাম, এরপর আমি তাকে ধরার মনস্থ করলাম। আল্লাহর কসম! যদি আমার ভাই সুলাইমানের দুআ না থাকত, তাহলে তাকে বেঁধে রাখতাম, আর মদিনার ছেলেরা তাকে নিয়ে খেলা করত। ৪৫৯
(৩২৩) হজরত সুহাইল বিন আবু সালেহ রহ. বলেন-
أَرْسَلَنِي أَبِي إِلَى بَنِي حَارِثَةَ، قَالَ : وَمَعِي غُلَامُ لَنَا - أَوْ صَاحِبٌ لَنَا - فَنَادَاهُ مُنَادٍ مِنْ حَائِطٍ بِاسْمِهِ، وَأَشْرَفَ الَّذِي مَعِي عَلَى الْحَائِطِ، فَلَمْ يَرَ شَيْئًا، فَذَكَرْتُ ذلِكَ لِأَبِي، فَقَالَ: لَوْ شَعَرْتُ أَنَّكَ تَلْقَ هَذَا لَمْ أُرْسِلْكَ، وَلَكِنْ إِذَا سَمِعْتَ صَوْتًا فَنَادِ بِالصَّلَاةِ، فَإِنِّي سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ يُحَدِّثُ عَنْ رَسُوْلِ اللَّهِ، أَنَّهُ قَالَ: إِنَّ الشَّيْطَانَ إِذَا نُوْدِيَ بِالصَّلَاةِ أَدْبَرَ.
অর্থ: আমার পিতা আমাকে বনু হারেসায় পাঠালেন। আমার সঙ্গে গোলাম বা সঙ্গি ছিলো। তখন দেয়ালের ওপর থেকে তার নাম ধরে কে যেন ডাক দিল। আমার সঙ্গিটি দেয়ালের ওপর গিয়ে দেখল, সেখানে কিছুই নেই। বাড়িতে এসে আমরা এ ঘটনাটি পিতাকে বললাম। তিনি বললেন, আমি যদি বুঝতে পারতাম, তুমি এরূপ ঘটনার সম্মুখীন হবে, তাহলে আমি তোমাকে পাঠাতাম না। কিন্তু তুমি যখন এরূপ আওয়াজ শুনবে তখন নামাজের আজান দিবে। আমি আবু হুরায়রা রাদি. এর কাছ থেকে শুনেছি। তিনি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যখন নামাজের আজান দেয়া হয়, তখন শয়তান পালায়ন করে। ৪৬০

টিকাঃ
৪৫৪. সুনানে আবু দাউদ: ১৫৩৭, আমাল: ৬০১, নাসাঈ, আমাল: ৩৩৩, ইবনুস সুন্নি, সহিহ ইবনে হিব্বান: ২৩৪৩।
৪৫৫. ইবনুস সুন্নি: ৩৪৫।
৪৫৬. ইবনুস সুন্নি: ৩৩৪।
৪৫৭. হা, মিম আসসাজদাহ: ৩৬।
৪৫৮. সুরা ইসরা: ৪৫।
৪৫৯. সহিহ মুসলিম: ৫৪২, সুনানে নাসাঈ ৩/১৩।
৪৬০. সহিহ মুসলিম: ৩৮৯।

কোন সমপ্রদায়কে ভয় পেলে যে দুআ পড়বে (৩১৯) হজরত আবু মুসা আশআরি রাদি. থেকে বর্ণিত, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন সমপ্রদায়কে ভয় পেলে এই দুআ পড়তেন-
اللَّهُمَّ إِنَّا نَجْعَلُكَ فِي نُحُوْرِهِمْ، وَنَعُوْذُ بِكَ مِنْ شُرُوْرِهِمْ.
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্না নাজআলুকা ফি নুহুরিহিম, ওয়া নাউজুবিকা মিন শুরুরিহিম।
অর্থ: হে আল্লাহ, আমি দুশমনের দুশমনির মোকাবেলায় আপনাকে স্থাপন করেছি এবং তাদের অনিষ্ট থেকে আপনার আশ্রয় কামনা করছি। ৪৫৪
বাদশাহকে ভয় পেলে যে দুআ পড়বে (৩২০) হজরত আবদুল্লাহ বিন উমর রাদি. এর সূত্রে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, বাদশাহ বা অন্য কাউকে ভয় করলে এ দুআ পড়বে-
لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ الْحَلِيمُ الْكَرِيمُ، سُبْحَانَ اللهِ رَبِّ السَّمَوَاتِ السَّبْعِ وَرَبِّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ، لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ، عَزَّ جَارُكَ، وَجَلَّ ثَنَاؤُكَ.
উচ্চারণ: লাইলাহা ইল্লাল্লাহুল হালিমুল কারিম, সুবহানাল্লাহি রাব্বাস সামাওয়াতি ওয়া রাব্বাল আরদি ওয়া রাব্বাল আরশিল আজিম। লা ইলাহা ইল্লা আনতা, আজ্জা যারুকা ওয়া জাল্লা সানাউকা।
অর্থ: আল্লাহ তাআলা ব্যতীত কোন সত্য মাবুদ নেই, যিনি অতি মহান অত্যন্ত সহনশীল। আসমান-জমিনের প্রতিপালক, মহান আরশের অধিপতির পবিত্রতা ঘোষণা করছি। আপনি ব্যতীত কোন মাবুদ নেই। আপনার আশ্রয় গ্রহণকারীর জয় হোক এবং আপনার মহিমা সমুচ্চ হোক। ৪৫৫-পূর্বে হজরত আবু মুসা আশআরি রাদি. থেকে বর্ণিত হাদিসও পড়া যেতে পারে।
শত্রুর দিকে তাকালে যে দুআ পড়বে (৩২১) হজরত আনাস রাদি. এর সূত্রে বর্ণিত, এক যুদ্ধে আমরা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে ছিলাম। শত্রুদের মুখোমুখি হলে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এই দুআ পড়তে শুনেছি। এরপর আমি শত্রুদেরকে ধরাশায়ী হতে দেখেছি। তাদের সামনে-পেছনে ফেরেশতারা আঘাত করছিলেন। দুআটি হল-
يَا مَالِكَ يَوْمِ الدِّيْنِ إِيَّاكَ أَعْبُدُ وَإِيَّاكَ أَسْتَعِينُ.
উচ্চারণ: ইয়া মালিকি ইয়াউমিদ্দিন, ইয়্যাকা আ'বুদু ওয়া ইয়্যাকা আসতায়িন।
অর্থ: হে বিচার দিবসের মালিক, আমি আপনারই ইবাদত করি এবং আপনারই কাছে সাহায্য চাই। ৪৫৬ -পূর্বের অধ্যায়ের হজরত আবু মুসা আশআরি রাদি. এর বর্ণিত দুআটিও পড়া যায়।
শয়তানকে সামনে দেখলে বা শয়তানকে ভয় পেলে যে দুআ পড়বে
আল্লাহ তাআলা বলেন- وَإِمَّا يَنْزَغَنَّكَ مِنَ الشَّيْطَنِ نَزْغٌ فَاسْتَعِذْ بِاللَّهِ إِنَّهُ هُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ.
অর্থ: যদি শয়তানের কুমন্ত্রণা তোমাকে প্ররোচিত করে, তাহলে আল্লাহর কাছে পানাহ চাইবে। তিনি সবকিছু শুনেন, জানেন। ৪৫৭ -আল্লাহ তাআলা আরো বলেন-
وَإِذَا قَرَأْتَ الْقُرْآنَ جَعَلْنَا بَيْنَكَ وَ بَيْنَ الَّذِينَ لَا يُؤْمِنُوْنَ بِالْآخِرَةِ حِجَابًا مَّسْتُورًا.
অর্থ: তুমি যখন কুরআন তিলাওয়াত করো, তখন তোমার ও যারা আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস করে না তাদের মাঝে এক প্রচ্ছন্ন পর্দা ঢেলে দিই। ৪৫৮-তাই আল্লাহ তাআলার কাছে আশ্রয় চেয়ে কুরআনে কারিমের যতটুকু অংশ পড়া যায়, ততটুকু পড়া।
(৩২২) হজরত আবু দারদা রাদি. থেকে বর্ণিত আছে-
قَامَ رَسُوْلُ اللهِ، صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَسَمِعْنَاهُ يَقُوْلُ: أَعُوْذُ بِاللَّهِ، مِنْكَ، ثُمَّ قَالَ: أَلْعَنُكَ بِلَعْنَةِ اللهِ، ثَلَاثًا، وَبَسَطَ يَدَهُ كَأَنَّهُ يَتَنَاوَلُ شَيْئًا، فَلَمَّا فَرَغَ مِنَ الصَّلَاةِ. قُلْنَا : يَا رَسُوْلَ اللهِ ، قَدْ سَمِعْنَاكَ تَقُوْلُ فِي الصَّلَاةِ شَيْئًا لَمْ نَسْمَعْكَ تَقُوْلُهُ قَبْلَ ذَالِكَ، وَرَأَيْنَاكَ بَسَطْتَ يَدَكَ. قَالَ: إِنَّ عَدُوَّ اللَّهِ، إِبْلِيْسَ جَاءَ بِشِهَابٍ مِنْ نَارٍ؛ لِيَجْعَلَهُ فِي وَجْهِي، فَقُلْتُ: أَعُوْذُ بِاللَّهِ، مِنْكَ، ثَلَاثَ مَرَّاتٍ. ثُمَّ قُلْتُ : أَلْعَنُكَ بِلَعْنَةِ اللهِ التَّامَّةِ فَلَمْ يَسْتَأْخِرْ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ ثُمَّ أَرَدْتُ أَخْذَهُ، وَاللهِ، لَوْلَا دَعْوَةُ أَخِيْنَا سُلَيْمَانَ لَأَصْبَحَ مُوْثَقًا يَلْعَبُ بِهِ وِلْدَانُ أَهْلِ الْمَدِينَةِ.
অর্থ: তিনি বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার নামাজের জন্য দাঁড়ালেন। তখন তাকে তিনবার বলতে শুনলাম- أَعُوْذُ بِاللهِ، مِنْكَ (আউজুবিল্লাহি মিনকা: আমি তুমি শয়তান থেকে আল্লাহর পানাহ চাই) এরপর তিনি তিনবার বললেন, أَلْعَنُكَ بِلَعْنَةِ اللهِ (আলআনুকা বি-লানাতিল্লাহ: আমি তোমাকে (শয়তানকে) আল্লাহর নামে অভিশম্পাত করছি)। অতঃপর তিনি দুই হাত প্রসারিত করলেন, যেন তিনি কিছু ধরতে চাচ্ছেন। নামাজ থেকে ফারেগ হলে আমরা বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ, আমরা আজ নামাজে আপনাকে এমন কিছু বলতে শুনেছি, যা ইতিপূর্বে শুনিনি। তখন তিনি বললেন, আল্লাহর শত্রু ইবলিশ সে উল্কাপিণ্ড নিয়ে আমার মুখে মারার জন্য এসেছিল। তখন আমি أَعُوْذُ بِاللهِ، مِنْكَ (আউজুবিল্লাহি মিনকা) তিনবার পড়লাম। এরপর أَلْعَنُكَ بِلَعْنَةِ اللهِ (আলআনুকা বি-লানাতিল্লাহ) তিন বার পড়লাম, এরপর আমি তাকে ধরার মনস্থ করলাম। আল্লাহর কসম! যদি আমার ভাই সুলাইমানের দুআ না থাকত, তাহলে তাকে বেঁধে রাখতাম, আর মদিনার ছেলেরা তাকে নিয়ে খেলা করত। ৪৫৯
(৩২৩) হজরত সুহাইল বিন আবু সালেহ রহ. বলেন-
أَرْسَلَنِي أَبِي إِلَى بَنِي حَارِثَةَ، قَالَ : وَمَعِي غُلَامُ لَنَا - أَوْ صَاحِبٌ لَنَا - فَنَادَاهُ مُنَادٍ مِنْ حَائِطٍ بِاسْمِهِ، وَأَشْرَفَ الَّذِي مَعِي عَلَى الْحَائِطِ، فَلَمْ يَرَ شَيْئًا، فَذَكَرْتُ ذلِكَ لِأَبِي، فَقَالَ: لَوْ شَعَرْتُ أَنَّكَ تَلْقَ هَذَا لَمْ أُرْسِلْكَ، وَلَكِنْ إِذَا سَمِعْتَ صَوْتًا فَنَادِ بِالصَّلَاةِ، فَإِنِّي سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ يُحَدِّثُ عَنْ رَسُوْلِ اللَّهِ، أَنَّهُ قَالَ: إِنَّ الشَّيْطَانَ إِذَا نُوْدِيَ بِالصَّلَاةِ أَدْبَرَ.
অর্থ: আমার পিতা আমাকে বনু হারেসায় পাঠালেন। আমার সঙ্গে গোলাম বা সঙ্গি ছিলো। তখন দেয়ালের ওপর থেকে তার নাম ধরে কে যেন ডাক দিল। আমার সঙ্গিটি দেয়ালের ওপর গিয়ে দেখল, সেখানে কিছুই নেই। বাড়িতে এসে আমরা এ ঘটনাটি পিতাকে বললাম। তিনি বললেন, আমি যদি বুঝতে পারতাম, তুমি এরূপ ঘটনার সম্মুখীন হবে, তাহলে আমি তোমাকে পাঠাতাম না। কিন্তু তুমি যখন এরূপ আওয়াজ শুনবে তখন নামাজের আজান দিবে। আমি আবু হুরায়রা রাদি. এর কাছ থেকে শুনেছি। তিনি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যখন নামাজের আজান দেয়া হয়, তখন শয়তান পালায়ন করে। ৪৬০

টিকাঃ
৪৫৪. সুনানে আবু দাউদ: ১৫৩৭, আমাল: ৬০১, নাসাঈ, আমাল: ৩৩৩, ইবনুস সুন্নি, সহিহ ইবনে হিব্বান: ২৩৪৩।
৪৫৫. ইবনুস সুন্নি: ৩৪৫।
৪৫৬. ইবনুস সুন্নি: ৩৩৪।
৪৫৭. হা, মিম আসসাজদাহ: ৩৬।
৪৫৮. সুরা ইসরা: ৪৫।
৪৫৯. সহিহ মুসলিম: ৫৪২, সুনানে নাসাঈ ৩/১৩।
৪৬০. সহিহ মুসলিম: ৩৮৯।

📘 আল আযকার > 📄 জীবিকা ও ঋণ সংক্রান্ত দুআ

📄 জীবিকা ও ঋণ সংক্রান্ত দুআ


কোন বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তায় কাবু হয়ে গেলে যে দুআ পড়বে (৩২৪) হজরত আবু হুরায়রা রাদি. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
الْمُؤْمِنُ الْقَوِيُّ خَيْرٌ وَأَحَبُّ إِلَى اللهِ مِنَ الْمُؤْمِنِ الضَّعِيْفِ، وَفِي كُلِّ خَيْرٌ، أَحْرِصْ عَلَى مَا يَنْفَعُكَ، وَاسْتَعِنْ بِاللهِ، وَلَا تَعْجِزْ، وَإِنْ أَصَابَكَ شَيْءٌ فَلَا تَقُلْ: لَوْ أَنِّي فَعَلْتُ كَانَ كَذَا وَكَذَا وَلَكِنْ قُلْ قَدَرُ اللهِ، وَمَا شَاءَ فَعَلَ. فَإِنَّ لَوْ تَفْتَحُ عَمَلَ الشَّيْطَانِ.
অর্থ: দুর্বল মুমিন থেকে (পরকালের ব্যাপারে) শক্তিশালী মুমিন শ্রেষ্ঠ ও আল্লাহর কাছে প্রিয়। প্রত্যেকের মাঝেই কল্যাণ রয়েছে। তোমার উপকারী বস্তু অর্জন করতে সামনে চলো। আল্লাহর কাছে সাহায্য চাও। অক্ষমতা প্রকাশ করো না। কোন বিপদের সম্মুখীন হলে এ কথা বলো না- যদি আমি এরূপ করতাম, তাহলে এরূপ হতো। বরং বলো, আল্লাহ তাআলা সবকিছু চূড়ান্ত করে রেখেছেন। তিনি যা ইচ্ছা তাই করেন। কারণ, 'যদি' শব্দটি শয়তানের প্রতারণার দরজা খুলে দেয়। ৪৬১
(৩২৫) হজরত আউফ বিন মালেক রাদি. থেকে বর্ণিত-
أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَضَى بَيْنَ رَجُلَيْنِ، فَقَالَ الْمَقْضِيُّ عَلَيْهِ لَمَّا أَدْبَرَ: حَسْبِيَ اللَّهُ وَنِعْمَ الْوَكِيلُ. فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ اللَّهَ يَلُوْمُ عَلَى الْعَجْزِ، وَلَكِنْ عَلَيْكَ بِالْكَيْسِ، فَإِذَا غَلَبَكَ امْرُؤٌ فَقُلْ: حَسْبِيَ اللَّهُ وَنِعْمَ الْوَكِيلُ.
অর্থ: নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুই ব্যক্তির মাঝে কোন ব্যাপারে সমাধান করে দিলেন। যার বিপক্ষে রায় হয়েছে তিনি ফিরে যাওয়ার সময় বললেন - حَسْبِيَ اللَّهُ وَنِعْمَ الْوَكِيْلُ (হাসবিয়াল্লাহু ওয়া নিমাল ওয়াকিল: আল্লাহই আমার জন্য যথেষ্ট ও তিনি আমার উত্তম অভিভাবক) নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা অপারগতাকে ভর্ৎসনা করেন। তবে তুমি বুদ্ধিমত্ত্বার সাথে চলো। কোন ব্যাপারে পরাজিত হলে বলো - حَسْبِيَ اللَّهُ وَنِعْمَ الْوَكِيْلُ (হাসবিয়াল্লাহু ওয়া নিমাল ওয়াকিল: আল্লাহই আমার জন্য যথেষ্ট ও তিনি আমার উত্তম অভিভাবক)। ৪৬২
কোন বিষয় কঠিন হলে যে দুআ পড়বে (৩২৬) হজরত আনাস রাদি. এর সূত্রে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন-
اللَّهُمَّ لَا سَهْلَ إِلَّا مَا جَعَلْتَهُ سَهْلاً ، وأَنْتَ تَجْعَلُ الْحُزْنَ إِذَا شِئْتَ سَهْلًا.
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা লা সাহলা ইল্লা মা যাআলতাহু সাহলা, ওয়া আনতা তাজআলুল হাজানা ইযা শি'তা সাহলা।
অর্থ: হে আল্লাহ! আপনি সহজ না করলে কোন কিছুই সহজ নয়। আর আপনি চাইলে দুঃচিন্তার বিষয়ও সহজ করে দিতে পারেন। ৪৬৩
জীবিকা নির্বাহ কঠিন হলে কী বলবে (৩২৭) হজরত আবদুল্লাহ বিন উমর রাদি. এর সূত্রে বর্ণিত, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের কারো যদি জীবিকা নির্বাহ কঠিন হয়ে যায়, তাহলে সে যেন ঘর থেকে বের হওয়ার সময় এ দুআটি পড়ে বের হয়-
بِسْمِ اللَّهِ عَلَى نَفْسِي وَمَالِي وَدِينِي، اَللَّهُمَّ رَضِنِي بِقَضَائِكَ، وَبَارِكْ لِي فِيْمَا قُدَّرَ لِي حَتَّى لَا أُحِبَّ تَعْجِيْلَ مَا أُخَرْتَ وَلَا تَأْخِيرَ مَا عَجِّلْتَ.
উচ্চারণ: বিসমিল্লাহি আলা নাফসি ওয়া মালি ওয়া দীনি, আল্লাহুম্মা রাদ্দিনি বি কাজায়িকা, ওয়া বারিক লি ফিমা কুদ্দিরা লি হাত্তা লা উহিব্বা তাজিলা মা আখখারতা ওয়া তাখিরা মা আজ্জালতা।
অর্থ: নিজের আত্মার ওপর, সম্পদের ওপর এবং ধর্মের ওপর আল্লাহর নাম নিলাম। হে আল্লাহ, আপনার ফয়সালার ওপর আমাকে তুষ্ট করুন এবং ভাগ্যে নির্ধারিত বস্তুতে বরকত দান করুন। যাতে বিলম্বিত বিষয়ে তাড়াহুড়া পছন্দ না করি এবং ত্বরান্বিত বিষয়ে বিলম্বিতকরণ পছন্দ না করি। ৪৬৪
বিপদাপদ দূর করতে যে দুআ পড়বে (৩২৮) হজরত আনাস রাদি. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
مَا أَنْعَمَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ عَلَى عَبْدٍ نِعْمَةً فِي أَهْلٍ وَمَالٍ وَوَلَدٍ فَقَالَ: مَا شَاءَ اللَّهُ لَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللهِ، فَيَرَى فِيْهَا آفَةً دُوْنَ الْمَوْتِ.
অর্থ: আল্লাহ তাআলা বান্দার পরিবারে, মালে, সন্তানাদিতে যে বরকত দিবেন, এর প্রেক্ষিতে যদি বান্দা এই দুআ পড়ে, তাহলে এগুলোতে মৃত্যু ছাড়া আর কোন বিপদাপদ দেখতে পাবে না। দুআটি হল-
মَا شَاءُ اللَّهُ لَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ.
উচ্চারণ: মা শা আল্লাহু লা-কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ।
অর্থ: আল্লাহ পাক যা ইচ্ছা করেন তা হয়, আল্লাহ ছাড়া কোন শক্তি নেই। ৪৬৫
ছোট-বড় দুর্ঘটনায় যে দুআ পড়বে আল্লাহ তাআলা বলেন-
وَبَشِّرِ الصُّبِرِينَ الَّذِينَ إِذَا أَصَابَتْهُمْ مُّصِيبَةٌ قَالُوا إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ أُولَئِكَ عَلَيْهِمْ صَلَاتٌ مِّنْ رَّبِّهِمْ وَرَحْمَةٌ، وَأُولَئِكَ هُمُ الْمُهْتَدُونَ.
অর্থ: সুসংবাদ দাও সবুরকারীদেরকে। তারা ঐ সব লোক, যারা বিপদে পতিত হলে বলে: নিশ্চয় আমরা আল্লাহর মালিকানাধীন এবং নিশ্চয় আমরা তারই দিকে প্রত্যাবর্তনকারী। এ সমস্ত লোকদের প্রতিই রয়েছে তাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে অফুরন্ত অনুগ্রহ ও বিশেষ রহমত। আর এ সব লোকই হেদায়াত প্রাপ্ত। ৪৬৬
(৩২৯) হজরত আবু হুরায়রা রাদি. এর সূত্রে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
لِيَسْتَرْجِعْ أَحَدُكُمْ فِي كُلِّ شَيْءٍ حَتَّى فِي شِسْع نَعْلِهِ، فَإِنَّهَا مِنَ الْمَصَائِبِ.
অর্থ: তোমরা সকল দুর্ঘটনায় ইন্নালিল্লাহ বলবে। এমনকি জুতার ফিতা ছিড়ে গেলেও। কেননা এটাও একটি মুসিবত ও দুর্ঘটনা। ৪৬৭
ঋণের বোঝা বেড়ে গেলে যে দুআ পড়বে (৩৩০) হজরত আলি রাদি. এর সূত্রে বর্ণিত- এক চুক্তিকৃত গোলাম তার কাছে এসে বললো, আমি চুক্তির টাকা পরিশোধ করতে পারছি না। আমাকে সাহায্য করুন। তিনি বললেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে এমন কিছু বাক্য শিখিয়েছেন, সেগুলো আমি তোমাকে শিখিয়ে দেব, পাহাড় পরিমাণ ঋণ হলেও তা আদায় হয়ে যাবে। তুমি এ দুআ পড়বে-
اللَّهُمَّ اكْفِنِي بِحَلَالِكَ عَنْ حَرَامِكَ، وَأَغْنِي بِفَضْلِكَ عَمَّنْ سِوَاكَ.
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাক ফিনি বি হালালিকা আন হারামিক, ওয়া আগনিনি বিফাদলিকা আন মান সিওয়াক।
অর্থ: হে আল্লাহ, হালাল বস্তু দ্বারা আমার প্রয়োজন পূরা করে দিন, হারাম থেকে বাঁচিয়ে রাখুন। নিজ অনুগ্রহে আমাকে আপনি ছাড়া সবকিছু থেকে অমুখাপেক্ষি করে দিন। -তিরমিজি রহ. বলেন, হাদিসটি হাসান। ৪৬৮

টিকাঃ
৪৬১. সহিহ মুসলিম: ২৬৬৪, আমাল: ৬২১, নাসাঈ, আমল: ৩৪৮, ইবনুস সুন্নি, সুনানে ইবনে মাজাহঃ ৭৯, মুসনাদে আহমাদ ২/৩৬৬।
৪৬২. সুনানে আবু দাউদঃ ৩৬২৭, আমাল: ৬২৬, নাসাঈ, আমাল: ৩৪৯, ইবনুস সুন্নি।
৪৬৩. ইবনুস সুন্নি: ৩৫১, মাওয়ারিদ: ২৪২৭। হাদিসটি খুবই দুর্বল।
৪৬৪. ইবনুস সুন্নি: ৩৫০।
৪৬৫. ইবনুস সুন্নি: ৩৫৭।
৪৬৬. তাফসিরে হেদায়াতুল কুরআন।
৪৬৭. আমাল: ৩৫২, ইবনুস সুন্নি।
৪৬৮. সুনানে তিরমিজিঃ ৩৫৫৮, মুসনাদে আহমাদ ১/১৫৩, মুসতাদরাকে হাকেম ১/৫৩৮।

কোন বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তায় কাবু হয়ে গেলে যে দুআ পড়বে (৩২৪) হজরত আবু হুরায়রা রাদি. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
الْمُؤْمِنُ الْقَوِيُّ خَيْرٌ وَأَحَبُّ إِلَى اللهِ مِنَ الْمُؤْمِنِ الضَّعِيْفِ، وَفِي كُلِّ خَيْرٌ، أَحْرِصْ عَلَى مَا يَنْفَعُكَ، وَاسْتَعِنْ بِاللهِ، وَلَا تَعْجِزْ، وَإِنْ أَصَابَكَ شَيْءٌ فَلَا تَقُلْ: لَوْ أَنِّي فَعَلْتُ كَانَ كَذَا وَكَذَا وَلَكِنْ قُلْ قَدَرُ اللهِ، وَمَا شَاءَ فَعَلَ. فَإِنَّ لَوْ تَفْتَحُ عَمَلَ الشَّيْطَانِ.
অর্থ: দুর্বল মুমিন থেকে (পরকালের ব্যাপারে) শক্তিশালী মুমিন শ্রেষ্ঠ ও আল্লাহর কাছে প্রিয়। প্রত্যেকের মাঝেই কল্যাণ রয়েছে। তোমার উপকারী বস্তু অর্জন করতে সামনে চলো। আল্লাহর কাছে সাহায্য চাও। অক্ষমতা প্রকাশ করো না। কোন বিপদের সম্মুখীন হলে এ কথা বলো না- যদি আমি এরূপ করতাম, তাহলে এরূপ হতো। বরং বলো, আল্লাহ তাআলা সবকিছু চূড়ান্ত করে রেখেছেন। তিনি যা ইচ্ছা তাই করেন। কারণ, 'যদি' শব্দটি শয়তানের প্রতারণার দরজা খুলে দেয়। ৪৬১
(৩২৫) হজরত আউফ বিন মালেক রাদি. থেকে বর্ণিত-
أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَضَى بَيْنَ رَجُلَيْنِ، فَقَالَ الْمَقْضِيُّ عَلَيْهِ لَمَّا أَدْبَرَ: حَسْبِيَ اللَّهُ وَنِعْمَ الْوَكِيلُ. فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ اللَّهَ يَلُوْمُ عَلَى الْعَجْزِ، وَلَكِنْ عَلَيْكَ بِالْكَيْسِ، فَإِذَا غَلَبَكَ امْرُؤٌ فَقُلْ: حَسْبِيَ اللَّهُ وَنِعْمَ الْوَكِيلُ.
অর্থ: নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুই ব্যক্তির মাঝে কোন ব্যাপারে সমাধান করে দিলেন। যার বিপক্ষে রায় হয়েছে তিনি ফিরে যাওয়ার সময় বললেন - حَسْبِيَ اللَّهُ وَنِعْمَ الْوَكِيْلُ (হাসবিয়াল্লাহু ওয়া নিমাল ওয়াকিল: আল্লাহই আমার জন্য যথেষ্ট ও তিনি আমার উত্তম অভিভাবক) নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা অপারগতাকে ভর্ৎসনা করেন। তবে তুমি বুদ্ধিমত্ত্বার সাথে চলো। কোন ব্যাপারে পরাজিত হলে বলো - حَسْبِيَ اللَّهُ وَنِعْمَ الْوَكِيْلُ (হাসবিয়াল্লাহু ওয়া নিমাল ওয়াকিল: আল্লাহই আমার জন্য যথেষ্ট ও তিনি আমার উত্তম অভিভাবক)। ৪৬২
কোন বিষয় কঠিন হলে যে দুআ পড়বে (৩২৬) হজরত আনাস রাদি. এর সূত্রে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন-
اللَّهُمَّ لَا سَهْلَ إِلَّا مَا جَعَلْتَهُ سَهْلاً ، وأَنْتَ تَجْعَلُ الْحُزْنَ إِذَا شِئْتَ سَهْلًا.
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা লা সাহলা ইল্লা মা যাআলতাহু সাহলা, ওয়া আনতা তাজআলুল হাজানা ইযা শি'তা সাহলা।
অর্থ: হে আল্লাহ! আপনি সহজ না করলে কোন কিছুই সহজ নয়। আর আপনি চাইলে দুঃচিন্তার বিষয়ও সহজ করে দিতে পারেন। ৪৬৩
জীবিকা নির্বাহ কঠিন হলে কী বলবে (৩২৭) হজরত আবদুল্লাহ বিন উমর রাদি. এর সূত্রে বর্ণিত, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের কারো যদি জীবিকা নির্বাহ কঠিন হয়ে যায়, তাহলে সে যেন ঘর থেকে বের হওয়ার সময় এ দুআটি পড়ে বের হয়-
بِسْمِ اللَّهِ عَلَى نَفْسِي وَمَالِي وَدِينِي، اَللَّهُمَّ رَضِنِي بِقَضَائِكَ، وَبَارِكْ لِي فِيْمَا قُدَّرَ لِي حَتَّى لَا أُحِبَّ تَعْجِيْلَ مَا أُخَرْتَ وَلَا تَأْخِيرَ مَا عَجِّلْتَ.
উচ্চারণ: বিসমিল্লাহি আলা নাফসি ওয়া মালি ওয়া দীনি, আল্লাহুম্মা রাদ্দিনি বি কাজায়িকা, ওয়া বারিক লি ফিমা কুদ্দিরা লি হাত্তা লা উহিব্বা তাজিলা মা আখখারতা ওয়া তাখিরা মা আজ্জালতা।
অর্থ: নিজের আত্মার ওপর, সম্পদের ওপর এবং ধর্মের ওপর আল্লাহর নাম নিলাম। হে আল্লাহ, আপনার ফয়সালার ওপর আমাকে তুষ্ট করুন এবং ভাগ্যে নির্ধারিত বস্তুতে বরকত দান করুন। যাতে বিলম্বিত বিষয়ে তাড়াহুড়া পছন্দ না করি এবং ত্বরান্বিত বিষয়ে বিলম্বিতকরণ পছন্দ না করি। ৪৬৪
বিপদাপদ দূর করতে যে দুআ পড়বে (৩২৮) হজরত আনাস রাদি. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
مَا أَنْعَمَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ عَلَى عَبْدٍ نِعْمَةً فِي أَهْلٍ وَمَالٍ وَوَلَدٍ فَقَالَ: مَا شَاءَ اللَّهُ لَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللهِ، فَيَرَى فِيْهَا آفَةً دُوْنَ الْمَوْتِ.
অর্থ: আল্লাহ তাআলা বান্দার পরিবারে, মালে, সন্তানাদিতে যে বরকত দিবেন, এর প্রেক্ষিতে যদি বান্দা এই দুআ পড়ে, তাহলে এগুলোতে মৃত্যু ছাড়া আর কোন বিপদাপদ দেখতে পাবে না। দুআটি হল-
মَا شَاءُ اللَّهُ لَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ.
উচ্চারণ: মা শা আল্লাহু লা-কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ।
অর্থ: আল্লাহ পাক যা ইচ্ছা করেন তা হয়, আল্লাহ ছাড়া কোন শক্তি নেই। ৪৬৫
ছোট-বড় দুর্ঘটনায় যে দুআ পড়বে আল্লাহ তাআলা বলেন-
وَبَشِّرِ الصُّبِرِينَ الَّذِينَ إِذَا أَصَابَتْهُمْ مُّصِيبَةٌ قَالُوا إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ أُولَئِكَ عَلَيْهِمْ صَلَاتٌ مِّنْ رَّبِّهِمْ وَرَحْمَةٌ، وَأُولَئِكَ هُمُ الْمُهْتَدُونَ.
অর্থ: সুসংবাদ দাও সবুরকারীদেরকে। তারা ঐ সব লোক, যারা বিপদে পতিত হলে বলে: নিশ্চয় আমরা আল্লাহর মালিকানাধীন এবং নিশ্চয় আমরা তারই দিকে প্রত্যাবর্তনকারী। এ সমস্ত লোকদের প্রতিই রয়েছে তাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে অফুরন্ত অনুগ্রহ ও বিশেষ রহমত। আর এ সব লোকই হেদায়াত প্রাপ্ত। ৪৬৬
(৩২৯) হজরত আবু হুরায়রা রাদি. এর সূত্রে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
لِيَسْتَرْجِعْ أَحَدُكُمْ فِي كُلِّ شَيْءٍ حَتَّى فِي شِسْع نَعْلِهِ، فَإِنَّهَا مِنَ الْمَصَائِبِ.
অর্থ: তোমরা সকল দুর্ঘটনায় ইন্নালিল্লাহ বলবে। এমনকি জুতার ফিতা ছিড়ে গেলেও। কেননা এটাও একটি মুসিবত ও দুর্ঘটনা। ৪৬৭
ঋণের বোঝা বেড়ে গেলে যে দুআ পড়বে (৩৩০) হজরত আলি রাদি. এর সূত্রে বর্ণিত- এক চুক্তিকৃত গোলাম তার কাছে এসে বললো, আমি চুক্তির টাকা পরিশোধ করতে পারছি না। আমাকে সাহায্য করুন। তিনি বললেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে এমন কিছু বাক্য শিখিয়েছেন, সেগুলো আমি তোমাকে শিখিয়ে দেব, পাহাড় পরিমাণ ঋণ হলেও তা আদায় হয়ে যাবে। তুমি এ দুআ পড়বে-
اللَّهُمَّ اكْفِنِي بِحَلَالِكَ عَنْ حَرَامِكَ، وَأَغْنِي بِفَضْلِكَ عَمَّنْ سِوَاكَ.
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাক ফিনি বি হালালিকা আন হারামিক, ওয়া আগনিনি বিফাদলিকা আন মান সিওয়াক।
অর্থ: হে আল্লাহ, হালাল বস্তু দ্বারা আমার প্রয়োজন পূরা করে দিন, হারাম থেকে বাঁচিয়ে রাখুন। নিজ অনুগ্রহে আমাকে আপনি ছাড়া সবকিছু থেকে অমুখাপেক্ষি করে দিন। -তিরমিজি রহ. বলেন, হাদিসটি হাসান। ৪৬৮

টিকাঃ
৪৬১. সহিহ মুসলিম: ২৬৬৪, আমাল: ৬২১, নাসাঈ, আমল: ৩৪৮, ইবনুস সুন্নি, সুনানে ইবনে মাজাহঃ ৭৯, মুসনাদে আহমাদ ২/৩৬৬।
৪৬২. সুনানে আবু দাউদঃ ৩৬২৭, আমাল: ৬২৬, নাসাঈ, আমাল: ৩৪৯, ইবনুস সুন্নি।
৪৬৩. ইবনুস সুন্নি: ৩৫১, মাওয়ারিদ: ২৪২৭। হাদিসটি খুবই দুর্বল।
৪৬৪. ইবনুস সুন্নি: ৩৫০।
৪৬৫. ইবনুস সুন্নি: ৩৫৭।
৪৬৬. তাফসিরে হেদায়াতুল কুরআন।
৪৬৭. আমাল: ৩৫২, ইবনুস সুন্নি।
৪৬৮. সুনানে তিরমিজিঃ ৩৫৫৮, মুসনাদে আহমাদ ১/১৫৩, মুসতাদরাকে হাকেম ১/৫৩৮।

📘 আল আযকার > 📄 ওয়াসওয়াসা হলে যে দুআ পড়বে

📄 ওয়াসওয়াসা হলে যে দুআ পড়বে


আল্লাহ পাক বলেন-
وَإِمَّا يَنْزَغَنَّكَ مِنَ الشَّيْطَنِ نَزْغٌ فَاسْتَعِذْ بِاللَّهِ إِنَّهُ هُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ.
অর্থ: শয়তান তোমাকে প্ররোচিত করলে, আল্লাহর কাছে অভিশপ্ত শয়তান থেকে পানাহ চাও। তিনি শুনেন, জানেন। ৪৭১ -আল্লাহ তাআলা এখানে আমাদেরকে যে দুআ শিখিয়েছেন যে দুআ পড়তে বলেছেন, সেটি বলাই সবচেয়ে উত্তম।
(৩৩৩) হজরত আবু হুরায়রা রাদি. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-
يَأْتِي الشَّيْطَانُ أَحَدَكُمْ فَيَقُولُ: مَنْ خَلَقَ كَذَا؟ مَنْ خَلَقَ كَذَا؟ حَتَّى يَقُوْلَ: مَنْ خَلَقَ رَبَّكَ ؟ فَإِذَا بَلَغَهُ فَلْيَسْتَعِذْ بِاللَّهِ، وَلْيَنْتَهِ.
অর্থ: শয়তান তোমাদের কাছে এসে এই বলে ওয়াসওয়াসা দিতে থাকে যে, অমুক বস্তুটি কে সৃষ্টি করেছে? অমুক বস্তুটি কে সৃষ্টি করেছে? এমনকি শেষে সে বলে, তোমার রবকে কে সৃষ্টি করেছে? এ পর্যায়ে পৌঁছলে তোমরা আল্লাহর কাছে পানাহ চাও এবং এ কল্পনা থেকে বিরত থাকো। -অন্য বর্ণনায় আছে-
لَا يَزَالُ النَّاسُ يَتَسَاءَلُوْنَ حَتَّى يُقَالَ: هَذَا خَلَقَ اللهُ الْخَلْقَ، فَمَنْ خَلَقَ اللَّهَ؟ فَمَنْ وَجَدَ مِنْ ذَلِكَ شَيْئًا، فَلْيَقُلْ : آمَنْتُ بِاللَّهِ، وَرُسُلِهِ
অর্থ: মানুষ পরস্পর জিজ্ঞাসা করতে করতে শেষে বলে- এগুলো তো আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন, তাহলে আল্লাহকে কে সৃষ্টি করেছে? এমনটি কেউ অনুভব করলে সে যেন বলে, (آمَنْتُ بِاللَّهِ وَبِرُسُلِهِ) আমানতু বিল্লাহ ওয়া রাসুলিহ: আমি আল্লাহ ও রাসুলের প্রতি ঈমান এনেছি)। ৪৭২
(৩৩৪) হজরত আয়েশা রাদি. এর সূত্রে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
مَنْ وَجَدَ مِنْ هَذَا الْوَسْوَاسِ شَيْئًا فَلْيَقُلْ : آمَنَّا بِاللَّهِ وَبِرُسُلِهِ ثَلاثاً. فَإِنَّ ذَلِكَ يَذْهَبُ عَنْهُ.
অর্থ: যে ব্যক্তির এই ধরনের ওয়াসওয়াসা হবে, সে যেন তিনবার (آمَنَّا بِاللَّهِ وَبِرُسُلِهِ) আমান্না বিল্লাহি ওয়া রাসুলিহ: আমরা আল্লাহ ও রাসুলের প্রতি ঈমান এনেছি) বলে। তাহলে তার এই ওয়াসওয়াসা দূর হয়ে যাবে। ৪৭৩
(৩৩৫) হজরত উসমান বিন আবুল আস রাদি. থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন-
قُلْتُ : يَا رَسُولَ اللهِ ، إِنَّ الشَّيْطَانَ قَدْ حَالَ بَيْنِي وَبَيْنَ صَلَاتِي وَقِرَاءَتِي، يَلْبِسُهَا عَلَيَّ. فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ، صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ذَاكَ شَيْطَانٌ يُقَالُ لَهُ : خِنْزَبُ، فَإِذَا أَحْسَسْتَهُ فَتَعَوَّذْ بِاللهِ، مِنْهُ، وَانْفِلْ عَلَى يَسَارِكَ ثَلَاثًا. فَفَعَلْتُ ذَلِكَ، فَأَذْهَبَهُ اللَّهُ عَنِّي.
অর্থ: আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! নামাজে কুরআন তিলাওয়াতের সময় শয়তান এসে সমস্যা সৃষ্টি করে। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এটি খিনজাব নামক শয়তান। এমন অনুভব করলে আল্লাহর কাছে পানাহ চাইবে (আউজুবিল্লাহ পড়বে) এবং বাম দিকে তিনবার থুথু ফেলবে। এর পর আমি এরূপ করেছি। তখন আল্লাহ তাআলা আমার থেকে তা দূর করে দিয়েছেন। ৪৭৪
(৩৩৬) হজরত আবু জুমাইল রহ. থেকে নির্ভরযোগ্য সনদে বর্ণিত, তিনি বলেন-
قُلْتُ لِابْنِ عَبَّاسٍ: مَا شَيْءٌ أَجِدُهُ فِي صَدْرِي؟ قَالَ: مَا هُوَ؟ قُلْتُ: وَاللَّهِ، مَا أَتَكَلَّمُ بِهِ. قَالَ: فَقَالَ لِي: أَشَيْءٌ مِنْ شَكٍّ؟ قَالَ : وَضَحِكَ. قَالَ: مَا نَجَا مِنْ ذَلِكَ أَحَدٌ. قَالَ: حَتَّى أَنْزَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ: { فَإِنْ كُنْتَ فِي شَكٍّ مِّمَّا أَنزَلْنَا إِلَيْكَ فَاسْأَلِ الَّذِينَ يَقْرَءُوْنَ الْكِتَابَ مِنْ قَبْلِكَ . { الْآيَةَ. قَالَ: فَقَالَ لِي: إِذَا وَجَدْتَ فِي نَفْسِكَ شَيْئًا فَقُلْ: هُوَ الْأَوَّلُ وَالْآخِرُ وَالظَّاهِرُ وَالْبَاطِنُ وَهُوَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ .
অর্থ: আমি আবদুল্লাহ বিন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমাকে জিজ্ঞাসা করলাম, আমি মনের ভিতর এসব কী অনুভব করি? ইবনে আব্বাস বললেন, কী অনুভব করো? আমি বললাম, আল্লাহর কসম! আমি তা বলতে পারবো না। তিনি হেসে হেসে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার মনে কি কোন সন্দেহ জাগে? এরপর বললেন, সবার মনেই এরূপ সন্দেহ জেগে থাকে। তাই তো আল্লাহ তাআলা বলেন- “সুতরাং তুমি যদি সে বিষয়ে কোন সন্দেহের সম্মুকীন হও, যা তোমার প্রতি নাজিল করেছি, তবে তাদেরকে জিজ্ঞাসা করো, যারা তোমার পূর্ব থেকে কিতাব পাঠ করছে।" এরপর তিনি আমাকে বললেন, তুমি যখন মনে এরূপ কিছু অনুভব করবে, তখন বলবে-
هُوَ الْأَوَّلُ وَالْآخِرُ وَالظَّاهِرُ وَالْبَاطِنُ وَهُوَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ .
উচ্চারণ: হুয়াল আউয়ালু ওয়াল আখিরু ওয়াজ্জাহিরু ওয়াল বাতিনু, ওয়া হুয়া বিকুল্লি শাইয়ন আলিম।
অর্থ: তিনি আদি, তিনি অনন্ত, তিনি প্রকাশ্য, তিনি অপ্রকাশ্য। তিনি সবকিছু জানেন। ৪৭৫
ইমাম আবুল কাসেম কুশাইরি রাহিমাহুল্লাহুর "রিসালা”য় আছে- আহমাদ বিন আতা রুজবারি রহ. বলেন, আমি পবিত্রতার বিষয়ে খুব ওয়াসওয়াসা করতাম। একরাতে আমি খুবই ভেঙ্গে পড়লাম। কারণ, অনেক পানি ঢালছিলাম, কিন্তু আমার মন প্রশান্ত হচ্ছিলো না। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি, আমি আপনার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। তখন শুনতে পেলাম, অদৃশ্য থেকে কে যেন বলছে, ইলমের ব্যাপারে ক্ষমা। এরপর আমার থেকে সে ওয়াসাওয়াসা দূর হয়ে যায়।
কোন কোন উলামায়ে কেরাম বলেন, যার অজু বা নামাজে বা এজাতীয় কোন আমলে ওয়াসওয়াসা হয় সে যেন “লা-ইলাহা ইল্লাহ” পড়ে। কারণ, শয়তান জিকির শুনলে দূরে সরে যায়। আর লা-ইলাহা ইল্লাহ হল সবচেয়ে সেরা জিকির। এ কারনেই সুফিয়ানে কেরাম মুরিদদের এই জিকির দিয়ে থাকেন এবং সর্বদা তা পড়তে আদেশ দিয়ে থাকেন। তারা বলেন, এটিই ওয়াসওয়াস দূর করার সবচেয়ে কার্যকরী জিকির।
আহমাদ বিন আবুল হাওয়ারি রহ. বলেন, আমি আবু সুলাইমান দারানি রহ. এর কাছে ওয়াসওয়াসার ব্যাপারে অভিযোগ করলাম। তিনি বললেন, তুমি এটি দূর করতে চাইলে যখনই ওয়াসওসা হবে তখন আনন্দিত হয়ে যাবে, কারণ, তুমি আনন্দিত হলে তা দূর হয়ে যাবে। কারণ, মুমিনের আনন্দ শয়তানকে ক্ষেপিয়ে দেয়। আর যদি তুমি দুশ্চিন্তা কর তাহলে তা আরো বেড়ে যাবে।
এ কারনেই কোন কোন উলামায়ে কেরام বলেন, ওয়াসওসা রোগে সেই ব্যক্তি আক্রান্ত হয় যার ঈমান পরিপূর্ণ। কারণ, চোর বিরান ঘরে চুরি করতে যায় না।

টিকাঃ
৪৭১. সুরা ফুসসিলাত: ৩৬।
৪৭২. সহিহ বুখারি: ৩২৭৬, সহিহ মুসলিম: ১৩৫, সুনানে আবু দাউদ: ৪৭২১, আমাল: ৬৬২-৬৬৩, নাসাঈ, আমাল: ৬২৫, ইবনুস সুন্নি।
৪৭৩. আমাল: ৬২৪, ইবনুস সুন্নি।
৪৭৪. সহিহ মুসলিম: ২২০৩, মুসনাদে আহমাদ ৪/২১৬।
৪৭৫. সুনানে আবু দাউদ: ৫১১।

আল্লাহ পাক বলেন-
وَإِمَّا يَنْزَغَنَّكَ مِنَ الشَّيْطَنِ نَزْغٌ فَاسْتَعِذْ بِاللَّهِ إِنَّهُ هُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ.
অর্থ: শয়তান তোমাকে প্ররোচিত করলে, আল্লাহর কাছে অভিশপ্ত শয়তান থেকে পানাহ চাও। তিনি শুনেন, জানেন। ৪৭১ -আল্লাহ তাআলা এখানে আমাদেরকে যে দুআ শিখিয়েছেন যে দুআ পড়তে বলেছেন, সেটি বলাই সবচেয়ে উত্তম।
(৩৩৩) হজরত আবু হুরায়রা রাদি. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-
يَأْتِي الشَّيْطَانُ أَحَدَكُمْ فَيَقُولُ: مَنْ خَلَقَ كَذَا؟ مَنْ خَلَقَ كَذَا؟ حَتَّى يَقُوْلَ: مَنْ خَلَقَ رَبَّكَ ؟ فَإِذَا بَلَغَهُ فَلْيَسْتَعِذْ بِاللَّهِ، وَلْيَنْتَهِ.
অর্থ: শয়তান তোমাদের কাছে এসে এই বলে ওয়াসওয়াসা দিতে থাকে যে, অমুক বস্তুটি কে সৃষ্টি করেছে? অমুক বস্তুটি কে সৃষ্টি করেছে? এমনকি শেষে সে বলে, তোমার রবকে কে সৃষ্টি করেছে? এ পর্যায়ে পৌঁছলে তোমরা আল্লাহর কাছে পানাহ চাও এবং এ কল্পনা থেকে বিরত থাকো। -অন্য বর্ণনায় আছে-
لَا يَزَالُ النَّاسُ يَتَسَاءَلُوْنَ حَتَّى يُقَالَ: هَذَا خَلَقَ اللهُ الْخَلْقَ، فَمَنْ خَلَقَ اللَّهَ؟ فَمَنْ وَجَدَ مِنْ ذَلِكَ شَيْئًا، فَلْيَقُلْ : آمَنْتُ بِاللَّهِ، وَرُسُلِهِ
অর্থ: মানুষ পরস্পর জিজ্ঞাসা করতে করতে শেষে বলে- এগুলো তো আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন, তাহলে আল্লাহকে কে সৃষ্টি করেছে? এমনটি কেউ অনুভব করলে সে যেন বলে, (آمَنْتُ بِاللَّهِ وَبِرُسُلِهِ) আমানতু বিল্লাহ ওয়া রাসুলিহ: আমি আল্লাহ ও রাসুলের প্রতি ঈমান এনেছি)। ৪৭২
(৩৩৪) হজরত আয়েশা রাদি. এর সূত্রে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
مَنْ وَجَدَ مِنْ هَذَا الْوَسْوَاسِ شَيْئًا فَلْيَقُلْ : آمَنَّا بِاللَّهِ وَبِرُسُلِهِ ثَلاثاً. فَإِنَّ ذَلِكَ يَذْهَبُ عَنْهُ.
অর্থ: যে ব্যক্তির এই ধরনের ওয়াসওয়াসা হবে, সে যেন তিনবার (آمَنَّا بِاللَّهِ وَبِرُسُلِهِ) আমান্না বিল্লাহি ওয়া রাসুলিহ: আমরা আল্লাহ ও রাসুলের প্রতি ঈমান এনেছি) বলে। তাহলে তার এই ওয়াসওয়াসা দূর হয়ে যাবে। ৪৭৩
(৩৩৫) হজরত উসমান বিন আবুল আস রাদি. থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন-
قُلْتُ : يَا رَسُولَ اللهِ ، إِنَّ الشَّيْطَانَ قَدْ حَالَ بَيْنِي وَبَيْنَ صَلَاتِي وَقِرَاءَتِي، يَلْبِسُهَا عَلَيَّ. فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ، صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ذَاكَ شَيْطَانٌ يُقَالُ لَهُ : خِنْزَبُ، فَإِذَا أَحْسَسْتَهُ فَتَعَوَّذْ بِاللهِ، مِنْهُ، وَانْفِلْ عَلَى يَسَارِكَ ثَلَاثًا. فَفَعَلْتُ ذَلِكَ، فَأَذْهَبَهُ اللَّهُ عَنِّي.
অর্থ: আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! নামাজে কুরআন তিলাওয়াতের সময় শয়তান এসে সমস্যা সৃষ্টি করে। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এটি খিনজাব নামক শয়তান। এমন অনুভব করলে আল্লাহর কাছে পানাহ চাইবে (আউজুবিল্লাহ পড়বে) এবং বাম দিকে তিনবার থুথু ফেলবে। এর পর আমি এরূপ করেছি। তখন আল্লাহ তাআলা আমার থেকে তা দূর করে দিয়েছেন। ৪৭৪
(৩৩৬) হজরত আবু জুমাইল রহ. থেকে নির্ভরযোগ্য সনদে বর্ণিত, তিনি বলেন-
قُلْتُ لِابْنِ عَبَّاسٍ: مَا شَيْءٌ أَجِدُهُ فِي صَدْرِي؟ قَالَ: مَا هُوَ؟ قُلْتُ: وَاللَّهِ، مَا أَتَكَلَّمُ بِهِ. قَالَ: فَقَالَ لِي: أَشَيْءٌ مِنْ شَكٍّ؟ قَالَ : وَضَحِكَ. قَالَ: مَا نَجَا مِنْ ذَلِكَ أَحَدٌ. قَالَ: حَتَّى أَنْزَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ: { فَإِنْ كُنْتَ فِي شَكٍّ مِّمَّا أَنزَلْنَا إِلَيْكَ فَاسْأَلِ الَّذِينَ يَقْرَءُوْنَ الْكِتَابَ مِنْ قَبْلِكَ . { الْآيَةَ. قَالَ: فَقَالَ لِي: إِذَا وَجَدْتَ فِي نَفْسِكَ شَيْئًا فَقُلْ: هُوَ الْأَوَّلُ وَالْآخِرُ وَالظَّاهِرُ وَالْبَاطِنُ وَهُوَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ .
অর্থ: আমি আবদুল্লাহ বিন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমাকে জিজ্ঞাসা করলাম, আমি মনের ভিতর এসব কী অনুভব করি? ইবনে আব্বাস বললেন, কী অনুভব করো? আমি বললাম, আল্লাহর কসম! আমি তা বলতে পারবো না। তিনি হেসে হেসে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার মনে কি কোন সন্দেহ জাগে? এরপর বললেন, সবার মনেই এরূপ সন্দেহ জেগে থাকে। তাই তো আল্লাহ তাআলা বলেন- “সুতরাং তুমি যদি সে বিষয়ে কোন সন্দেহের সম্মুকীন হও, যা তোমার প্রতি নাজিল করেছি, তবে তাদেরকে জিজ্ঞাসা করো, যারা তোমার পূর্ব থেকে কিতাব পাঠ করছে।" এরপর তিনি আমাকে বললেন, তুমি যখন মনে এরূপ কিছু অনুভব করবে, তখন বলবে-
هُوَ الْأَوَّلُ وَالْآخِرُ وَالظَّاهِرُ وَالْبَاطِنُ وَهُوَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ .
উচ্চারণ: হুয়াল আউয়ালু ওয়াল আখিরু ওয়াজ্জাহিরু ওয়াল বাতিনু, ওয়া হুয়া বিকুল্লি শাইয়ন আলিম।
অর্থ: তিনি আদি, তিনি অনন্ত, তিনি প্রকাশ্য, তিনি অপ্রকাশ্য। তিনি সবকিছু জানেন। ৪৭৫
ইমাম আবুল কাসেম কুশাইরি রাহিমাহুল্লাহুর "রিসালা”য় আছে- আহমাদ বিন আতা রুজবারি রহ. বলেন, আমি পবিত্রতার বিষয়ে খুব ওয়াসওয়াসা করতাম। একরাতে আমি খুবই ভেঙ্গে পড়লাম। কারণ, অনেক পানি ঢালছিলাম, কিন্তু আমার মন প্রশান্ত হচ্ছিলো না। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি, আমি আপনার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। তখন শুনতে পেলাম, অদৃশ্য থেকে কে যেন বলছে, ইলমের ব্যাপারে ক্ষমা। এরপর আমার থেকে সে ওয়াসাওয়াসা দূর হয়ে যায়।
কোন কোন উলামায়ে কেরাম বলেন, যার অজু বা নামাজে বা এজাতীয় কোন আমলে ওয়াসওয়াসা হয় সে যেন “লা-ইলাহা ইল্লাহ” পড়ে। কারণ, শয়তান জিকির শুনলে দূরে সরে যায়। আর লা-ইলাহা ইল্লাহ হল সবচেয়ে সেরা জিকির। এ কারনেই সুফিয়ানে কেরাম মুরিদদের এই জিকির দিয়ে থাকেন এবং সর্বদা তা পড়তে আদেশ দিয়ে থাকেন। তারা বলেন, এটিই ওয়াসওয়াস দূর করার সবচেয়ে কার্যকরী জিকির।
আহমাদ বিন আবুল হাওয়ারি রহ. বলেন, আমি আবু সুলাইমান দারানি রহ. এর কাছে ওয়াসওয়াসার ব্যাপারে অভিযোগ করলাম। তিনি বললেন, তুমি এটি দূর করতে চাইলে যখনই ওয়াসওসা হবে তখন আনন্দিত হয়ে যাবে, কারণ, তুমি আনন্দিত হলে তা দূর হয়ে যাবে। কারণ, মুমিনের আনন্দ শয়তানকে ক্ষেপিয়ে দেয়। আর যদি তুমি দুশ্চিন্তা কর তাহলে তা আরো বেড়ে যাবে।
এ কারনেই কোন কোন উলামায়ে কেরام বলেন, ওয়াসওসা রোগে সেই ব্যক্তি আক্রান্ত হয় যার ঈমান পরিপূর্ণ। কারণ, চোর বিরান ঘরে চুরি করতে যায় না।

টিকাঃ
৪৭১. সুরা ফুসসিলাত: ৩৬।
৪৭২. সহিহ বুখারি: ৩২৭৬, সহিহ মুসলিম: ১৩৫, সুনানে আবু দাউদ: ৪৭২১, আমাল: ৬৬২-৬৬৩, নাসাঈ, আমাল: ৬২৫, ইবনুস সুন্নি।
৪৭৩. আমাল: ৬২৪, ইবনুস সুন্নি।
৪৭৪. সহিহ মুসলিম: ২২০৩, মুসনাদে আহমাদ ৪/২১৬।
৪৭৫. সুনানে আবু দাউদ: ৫১১।

লিঙ্ক শেয়ার করুন
close

লিঙ্ক কপি করুন