📄 রাদিয়াল্লাহু আনহু ও রাহিমাহুল্লাহ পড়ার বিধান
সাহাবি, তাবেয়ি ও তাদের পরবর্তী উলামা, আবেদ ও সকল নেক লোকদের ক্ষেত্রে রাদিয়াল্লাহু আনহু ও রাহিমাহুল্লাহু বলা মুস্তাহাব। কোন কোন উলামায়ে কেরام বলেন, রাদিয়াল্লাহু আনহু এটা সাহাবায়ে কেরামের সাথে বিশেষিত। অন্যদের ক্ষেত্রে শুধু রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলা যাবে- এ বক্তব্য সঠিক নয়। বরং পূর্বের কথাটিই সঠিক। সবার ব্যাপারেই উভয়টি বলা যাবে। এ ব্যাপারে অসংখ্য দলিল রয়েছে।
আর যদি উল্লিখিত ব্যক্তি সাহাবি ও সাহাবির ছেলে হন, তাহলে رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا (রাদিয়াল্লাহু আনহুমা: উভয়ের ওপর আল্লাহ সন্তুষ্ট হোন) বলবে। যেমন- যদি বর্ণনাকারী বলেন, ইবনে উমর, ইবনে ইব্বাস অথবা ইবনে যুবায়ের বলেছেন তাহলে রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলবে, যাতে পিতা-পুত্র উভয়ে শামিল হয়ে যান।
হজরত মরিয়ম ও হজরত লুকমানের ক্ষেত্রে কী বলবে?
হজরত মরিয়ম ও হজরত লুকমানের ক্ষেত্রেও কী নবিদের মতো দরুদ পড়া হবে নাকি সাহাবিদের মতো রাদিয়াল্লাহু আনহু পড়া হবে? এর উত্তর হল, অধিকাংশ উলামায়ে কেরামের মতে তাঁরা নবি নন। যারা তাদেরকে নবি বলেন, তাদের কথা অগ্রহণযোগ্য। তাদের কথার পরোয়া করা হবে না এ বিষয়টি আমি “তাহজিবুল আসামা ওয়াল্লুগাত” কিতাবে সবিস্তারে আলোচনা করেছি।
কোন কোন উলামায়ে কেরাম বলেছেন, তাদের ক্ষেত্রে "আলাইহিস সালাম” বা "আলাইহাস সালাম" বলা যাবে। তবে নবিদের প্রতি দরুদ পাঠের সাথে যুক্ত করে তাদের ওপর দরুদ পড়া যাবে। যেমন এভাবে বলা যাবে-
لُقْمَانُ صَلَّى اللَّهُ عَلَى الْأَنْبِيَاءِ وَعَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
উচ্চারণ: লুকমানু সাল্লাল্লাহু আলাল আম্বিয়ায়ি ওয়া আলাইহি ওয়াসাল্লাম। অর্থ: হজরত লুকমান (আল্লাহ পাক নবিদের প্রতি অনুগ্রহ ও শান্তি বর্ষণ করুন এবং তার প্রতি।- অথবা
مَرْيَمُ صَلَّى اللَّهُ عَلَى الْأَنْبِيَاءِ وَعَلَيْهَا وَسَلَّمَ.
উচ্চারণ: মরিয়ম সাল্লাল্লাহু আলাল আম্বিয়ায়ি ওয়া আলাইহা ওয়াসাল্লাম। অর্থ: হজরত মরিয়ম (আল্লাহ পাক নবিদের প্রতি অনুগ্রহ ও শান্তি বর্ষণ করুন এবং তার প্রতি। -কেননা যাদের ক্ষেত্রে "রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু" বলা হয় তারা তাদের ওপরের স্তরের। এটা কুরআনের বর্ণনাভঙ্গী দ্বারাই বোধগম্য।
আমার কাছে মনে হয়, এমন শব্দ প্রয়োগ করলে কোন সমস্যা নেই। তবে প্রণিধানযোগ্য কথা হল, তাদের ক্ষেত্রে "রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু” বা "রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহা" বলা। কেননা এই শব্দ নবি ছাড়া অন্যদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আর তাদের নবি হওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত নয়।
ইমামুল হারামাইন অধিকাংশ উলামায়ে কেরামের ইজমা নকল করেন যে, মরিয়ম নবি নন। যদি লুকমানের ক্ষেত্রে আলাইহিস সালাম বা মরিয়মের ক্ষেত্রে আলাইহাস সালাম বলে তাতে কোন সমস্যা নেই।