📘 আল আযকার > 📄 ঘুম ও স্বপ্ন সংক্রান্ত দুআ

📄 ঘুম ও স্বপ্ন সংক্রান্ত দুআ


ঘুমের সময় বিছানায় শুয়ে যে দুআ পড়বে
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-
إِنَّ فِي خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَاخْتِلَافِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ لَآيَاتٍ لِّأُولِي الْأَلْبَابِ الَّذِينَ يَذْكُرُوْنَ اللَّهَ قِيَامًا وَقُعُودًا وَعَلَى جُنُوبِهِمْ وَيَتَفَكَّرُوْنَ فِي خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ.
অর্থ: নিশ্চয় আসমান-জমিনের সৃষ্টি ও রাত-দিনের আবর্তনের মাঝে বুদ্ধিমানদের জন্য রয়েছে নিদর্শন। যারা আল্লাহকে স্মরণ করে দাঁড়িয়ে, বসে ও শুয়ে। এবং আসমান-জমিনের সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা-ফিকির করে। ৩৩০
(২১৭) হজরত হুজায়ফা ও হজরত আবু জর রাদি. থেকে বর্ণিত। তারা বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন বিছানায় যেতেন, তখন এ দুআ পড়তেন-
اللَّهُمَّ بِاسْمِكَ أَحْيَا وَأَمُوْتُ.
উচ্চারণ: বিনসমিকা আল্লাহুম্মা আহইয়া ওয়া আমুতু। ৩৩৪
অর্থ: হে আল্লাহ, তোমার নামে জাগ্রত এবং তোমার নামে ঘুমাই হই。
(২১৮) হজরত আলি রাদি. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে ও হজরত ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু আনহুমাকে লক্ষ্য করে বলেছিলেন-
إِذَا أَوَيْتُمَا إِلَى فِرَاشِكُمَا أَوْ أَخَذْتُمَا مَضَاجِعَكُمَا، فَكَبِّرًا ثَلَاثًا وَثَلَاثِينَ، وَسَبِّحَا ثَلَاثًا وَثَلَاثِينَ، وَاحْمَدًا ثَلَاثًا وَثَلَاثِينَ.
অর্থ: তোমরা যখন ঘুমানোর জন্য বিছানায় যাবে, তখন ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ এবং ৩৩ বার আল্লাহু আকবার বলবে। -কোন কোন বর্ণনায় ৩৪ বার সুবহানাল্লাহ বলার কথা আছে। আবার কোন বর্ণনায় ৩৪ বার আল্লাহু আকবার বলার কথা আছে।- আলি রাদি. বলেন-
مَا تَرَكْتُهُ مُنْذُ سَمِعْتُهُ مِنْ رَسُولِ اللهِ، صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قِيلَ لَهُ: وَلَا لَيْلَةَ صِفَيْنَ؟ قَالَ: وَلَا لَيْلَةَ صِفَيْنَ.
অর্থ: রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে একথা শুনার পর একদিনও এ আমল ছুটেনি। হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহুকে বলা হল, সিফফিন যুদ্ধের রাতেও কি পড়েছেন? তিনি উত্তর দিলেন: সিফফিন যুদ্ধের রাতেও পড়েছি। ৩৩৫
(২১৯) হজরত আবু হুরায়রা রাদি. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- তোমরা ঘুমানোর পূর্বে তোমরা বিছানার চাদরের ভিতরের পরিষ্কার করে নিবে। কারণ, জানা নেই এর নীচে কোন ক্ষতিকর বস্তু আছে কিনা? এরপর এ দুআ পড়বে-
بِاسْمِكَ رَبِّ وَضَعْتُ جَنْبِي وَبِكَ أَرْفَعُهُ، إِنْ أَمْسَكْتَ نَفْسِي فَارْحَمْهَا، وَإِنْ أَرْسَلْتَهَا فَاحْفَظْهَا بِمَا تَحْفَظُ بِهِ عِبَادَكَ الصَّالِحِينَ.
উচ্চারণ: বিসমিকা রাব্বি ওয়া দা'তু যাম্বি ওয়াবিকা আরফাউহু, ইন আমসাকতা নাফসি ফারহামহা, ওয়া ইন আরসালতাহা ফাহফাজহা বিমা তাহফাজু বিহি ইবাদাকাস সালিহিন।
অর্থ: আপনার নামে হে পালনকর্তা! আমি আমার পার্শ এলিয়ে দিলাম, আপনার নামেই তা উঠাবো। আমার রুহ আটকে দিলে রহম করো এবং ছেড়ে দিলে হেফাজত করো, যেভাবে আপনার নেক বান্দাদের হেফাজত করে থাকেন। ৩৩৬
(২২০) হজরত আয়েশা রাদি. থেকে বর্ণিত-
أَنَّ رَسُولَ اللهِ ، صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ إِذَا أَخَذَ مَضْجَعَهُ نَفَثَ فِي يَدَيْهِ وَقَرَأَ بِالْمُعَوَّذَاتِ، وَمَسَحَ بِهِمَا جَسَدَهُ.
অর্থ: রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুমানোর পূর্বে তিনকুল পড়ে হাতে ফু দিয়ে পুরো শরীরে মুছতেন। ৩৩৭
(২২১) অন্য বর্ণনায় আছে-
أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ إِذَا أَوَى إِلَى فِرَاشِهِ كُلَّ لَيْلَةٍ جَمَعَ كَفَّيْهِ، ثُمَّ نَفَثَ فِيهِمَا، فَقَرَأَ فِيهِمَا : { قُلْ هُوَ اللهُ أَحَدٌ } ، وَ { قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ } ، وَ قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ ) ، ثُمَّ يَمْسَحُ بِهِمَا مَا اسْتَطَاعَ مِنْ جَسَدِهِ يَبْدَأُ بِهِمَا عَلَى رَأْسِهِ وَوَجْهِهِ، وَمَا أَقْبَلَ مِنْ جَسَدِهِ، يَفْعَلُ ذَلِكَ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ.
অর্থ: ঘুমানোর আগে প্রতি রাতে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুই হাত একসাথে করে তিনকুল (সুরা এখলাস, সুরা ফালাক ও সুরা নাস) পড়ে উভয় হাতে ফু দিয়ে যথাসম্ভব পুরো শরীরে মুছে দিতেন। মাথা থেকে শুরু করে চোহারা ও শরীরের সামনের অংশ এভাবে তিনবার করতেন। ৩৩৮
(২২২) হজরত আবু মাসউদ আনসারি বদরি সাহাবি থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
الْآيَتَانِ مِنْ آخِرِ سُورَةِ الْبَقَرَةِ مَنْ قَرَأَهُمَا فِي لَيْلَةٍ كَفَتَاهُ.
অর্থ: সুরা বাকারার শেষে এমন দুটি আয়াত রয়েছে, যে ব্যক্তি রাতে উক্ত দুই আয়াত পাঠ করবে, উক্ত দুই আয়াত তার জন্য যথেষ্ট হয়ে যাবে। অর্থাৎ যাবতীয় বিপদাপদ থেকে নিরাপদে থাকবে। ৩৩৯
(২২৩) হজরত বারা বিন আজেব থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলেছেন, যখন তুমি ঘুমানোর জন্য বিছানায় যাবে তখন নামাজের অজুর মত অজু করবে। ডান পাশে শয়ন করবে। এরপর এই দুআটি পড়বে। যদি তুমি উক্ত রাতে মৃত্যুবরণ করো, তাহলে তুমি মুসলিম অবস্থায় মৃত্যুবরণ করবে। দুহাটি হল-
اللَّهُمَّ أَسْلَمْتُ نَفْسِي إِلَيْكَ، وَفَوَّضْتُ أَمْرِي إِلَيْكَ، وَأَلْجَأْتُ ظَهْرِي إِلَيْكَ؛ رَغْبَةً وَرَهْبَةً إِلَيْكَ، لَا مَلْجَأَ وَلَا مَنْجَيْ مِنْكَ إِلَّا إِلَيْكَ، آمَنْتُ بِكِتَابِكَ الَّذِي أَنْزَلْتَ، وَبِنَبِيِّكَ الَّذِي أَرْسَلْتَ.
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা আসলামতু নাফসি ইলাইকা, ওয়া ফাওয়্যাজতু আমরি ইলাইকা, ওয়া আলযা'তু জাহরি ইলাইকা; রাগবাতান ওয়া রাহবাতান ইলাইকা, লা মালযাআ ওয়া লা মানযা মিনকা ইল্লা ইলাইক। আমানতু বিকিতাবিকাল্লাজি আনজালতা ওয়া নাবিয়্যিকাল্লাজি আরসালতা।
অর্থ: হে আমি আমাকে আপনার নিকট সঁপে দিলাম, আমার যাবতীয় বিষয়াদি আপনার জিম্মায় সোপর্দ করলাম, আমার দেহ-পিঠ আপনার আশ্রয়ে রেখেদিলাম। আপনার কাছে এই সমর্পণ আপনার সন্তুষ্টির আশায় এবং বিচ্যুতি ঘটে যাওয়ার আশঙ্কায়। আপনার পাকড়াও থেকে বাঁচার জন্য আপনার কাছে ফিরে আসা ব্যতীত আর কোন আশ্রয় কিংবা গত্যন্তর নেই। ঈমান আনলাম আপনার নাজিলকৃত কিতাবের ওপর এবং প্রেরিত নবির ওপর। ৩৪০
(২২৪) হজরত আবু হুরায়রা রাদি. থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন-
وَكَلَنِي رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِحِفْظِ زَكَاةِ رَمَضَانَ، فَأَتَانِي آتٍ، فَجَعَلَ يَحْثُوْ مِنَ الطَّعَامِ... وذَكَرَ الحَدِيثَ، وَقَالَ فِي آخِرَهُ: إِذَا أَوَيْتَ إِلَى فِرَاشِكَ فَاقْرَأْ آيَاتُ الْكُرْسِي؛ لَنْ يَزَالَ عَلَيْكَ مِنَ اللهِ ، حَافِظٌ، وَلَا يَقْرَبُكَ شَيْطَانٌ حَتَّى تُصْبِحَ. فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: صَدَقَكَ وَهُوَ كَذُوبٌ، ذَاكَ شَيْطَانٌ.
অর্থ: রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে রমজানের যাকাতের মাল হেফাজতের দায়িত্ব দিলেন। রাতে কেউ একজন এসে যাকাতের মাল জমা করতে লাগল। এই হাদিসের শেষাংশে আছে- নবিজি বলেছেন, যখন তুমি ঘুমানোর জন্য বিছানায় যাবে তখন আয়াতুল কুরসি পড়বে। এটা পড়লে আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমার জন্য একজন রক্ষক থাকবে। সকাল পর্যন্ত শয়তান তোমার কাছে আসতে পারবে না। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ঐ আগন্তুক তোমার সঙ্গে সত্য বলেছে, যদিও সে মিথ্যুক। সে হল, শয়তান। ৩৪১
(২২৫) উম্মুল মুমিনিন হজরত হাফসা রাদি. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ডান হাত গালের নীচে দিয়ে শয়ন করতেন। এরপর এ দুআ তিনবার পড়তেন-
اللَّهُمَّ قِنِي عَذَابَكَ يَوْمَ تَبْعَثُ عِبَادَكَ.
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা কিনি আজাবাকা ইয়াওমা তাবআসু ইবাদাক।
অর্থ: হে আল্লাহ, আপনার শাস্তি থেকে আমাকে হেফাজত করুন, যে দিন আপনি আপনার বান্দাদের পুনরুত্থান ঘটাবেন। -ইমাম তিরমিজি রহ. বলেন, হাদিসটি হাসান সহিহ। ৩৪২
(২২৬) হজরত আবু হুরায়রা রাদি. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুমানোর পূর্বে এ দুআ পড়তেন-
اللَّهُمَّ رَبَّ السَّمَاوَاتِ وَرَبَّ الْأَرْضِ وَرَبَّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ، رَبَّنَا وَرَبَّ كُلَّ شَيْءٍ، فَالِقَ الحَبِّ وَالنَّوَى، وَمُنْزِلَ التَّوْرَاةِ وَالْإِنْجِيلِ وَالْفُرْقَانِ، أَعُوْذُ بِكَ مِنْ شَرِّ كُلَّ شَيْءٍ أَنْتَ آخِذُ بِنَاصِيَتِهِ، اللهُمَّ أَنْتَ الْأَوَّلُ فَلَيْسَ قَبْلَكَ شَيْءٌ، وَأَنْتَ الْآخِرُ فَلَيْسَ بَعْدَكَ شَيْءٌ، وَأَنْتَ الظَّاهِرُ فَلَيْسَ فَوْقَكَ شَيْءٌ، وَأَنْتَ الْبَاطِنُ فَلَيْسَ دُوْنَكَ شَيْءٌ، اقْضِ عَنَّا الدَّيْنَ وَأَغْنِنَا مِنَ الْفَقْرِ.
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা রাব্বাস সামাওয়াতি ওয়া রাব্বাল আরদি ওয়া রাব্বাল আরশিল আজিম। রাব্বানা ওয়া রাব্বা কুল্লি শাইয়িন। ফালিকাল হাব্বি ওয়ান্নাওয়া, ওয়া মুনজিলাত তাওরাতি ওয়াল ইঞ্জিলি ওয়াল ফুরকান। আউজুবিকা মিন শাররি কুল্লি শাইয়ิน আনতা আখিজুন বি না সিয়াতিহ। আল্লাহুম্মা আনতাল আউয়্যালু ফা লাইসা কাবলাকা শাইয়ুন, ওয়া আনতাল আখিরু ফা লাইসা বা'দাকা শাইয়ুন। ওয়া আনতাজ্জাহিরু ফা লাইসা ফাওকাকা শাইয়ুন। ওয়া আনতাল বাতিনু ফা লাইসা দুনাকা শাইয়ুন। ইকদি আন্নাদ্দাইনা ওয়া আগনিনা মিনাল ফাকরি।
অর্থ: হে আল্লাহ, আসমান-যমিনের প্রতিপালক, মহান আরশের অধিপতি। হে আমাদের ও সর্বসৃষ্টির পালনকর্তা, বীজ-দানা বিদীর্ণকারী, তওরাত, ইঞ্জিল ও কুরআনের অবতারক। আমি আপনার আশ্রয় কামনা করি আপনার নিয়ন্ত্রিত সকল প্রাণীর অনিষ্ট থেকে। হে আল্লাহ, আপনিই প্রথম, আপনার আগে কিছু নেই। আপনিই শেষ, আপনার পরে কিছু নেই। সকল বস্তুর উপরে আপনিই প্রকাশমান, আপনার উপর কেউ নেই। সবার কাছে আপনি গুপ্ত, আপনার থেকে গুপ্ত কেউ নেই। আমাদের ঋণ শোধের ব্যবস্থা করে দিন এবং দারিদ্র্যের মুখাপেক্ষিতা থেকে হেফাজত করুন।
সুনানে আবু দাউদের অন্য বর্ণনায় (একবচনের শব্দে) এসেছে- আমার ঋণ শোধের ব্যবস্থা করে দিন এবং দারিদ্র্যের মুখাপেক্ষিতা থেকে হেফাজত করুন। ৩৪৩
(২২৭) হজরত আলি রাদি. থেকে সহিহ সনদে বর্ণিত আছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ঘুমানোর জন্য বিছানায় যেতেন, তখন এ দুআ পড়তেন-
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوْذُ بِوَجْهِكَ الْكَرِيمِ، وَكَلِمَاتِكَ التَّامَّةِ، مِنْ شَرِّ مَا أَنْتَ آخِذُ بِنَاصِيَتِهِ، اللهُمَّ أَنْتَ تَكْشِفُ الْمَغْرَمَ وَالْمَأْثَمَ اللَّهُمَّ لَا يُهْزَمُ جُنْدُكَ، وَلَا يُخْلَفُ وَعْدُكَ، وَلَا يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْكَ الْجَدُّ، سُبْحَانَكَ وَبِحَمْدِكَ.
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজু বি ওয়াজহিকাল কারিম, ওয়া কালিমাতিকাত তাম্মাতি মিন শাররি মা আনতা আখিজুন বি নাসিতিহ। আল্লাহুম্মা আনতা তাকশিফুল মাগরামা ওয়াল মাসাম। আল্লাহুম্মা লা যুহজামু জুনদুকা ওয়া লা যুখলাফু ওয়া'দুকা, ওয়া লা য়ানফাউ জাল জাদ্দি মিনকাল জাদ্দু, সুবহানাকা ওয়াবি হামদিক।
অর্থ: হে আল্লাহ, আপনার সম্মানিত সত্তা এবং পূর্ণাঙ্গ গুণাবলীর মাধ্যমে সেসব অনিষ্ট থেকে আশ্রয় চাই, যার চাবিকাঠি আপনার হাতে। হে আল্লাহ, আপনিই অপরাধ ও ঋণ থেকে মুক্তি দেন। হে আল্লাহ, আপনার বাহিনী পরাস্ত হয় না এবং আপনার অঙ্গীকার ভঙ্গ হয় না। আর আমল ছাড়া সামর্থ্যবানের সামর্থ্য কোন কাজে আসবে না। আপনার সপ্রশংস পবিত্রতা ঘোষণা করি। ৩৪৪
(২২৮) হজরত আনাস রাদি. থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন বিছানায় যেতেন, তখন এ দুআ পড়তেন-
الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَطْعَمَنَا وَسَقَانَا، وَكَفَانَا وَآوَانَا، فَكَمْ مِمَّنْ لَا كَافِيَ لَهُ وَلَا مُثْوِيَ.
উচ্চারণ: আলহামদুলিল্লাহিল লাযি আতআমানা ওয়াসাকানা ওয়া কাফানা ওয়া আওয়ানা, ফাকাম মিম্মান লা কাফিয়া লাহু, ওয়া লা মু'বিয়া।
অর্থ: সকল প্রশংসা ঐ সত্তার যিনি আমাদের পানাহার করিয়েছেন। আমাদের বাসস্থান সহ সব কিছুর ব্যবস্থা করেছেন। অনেকেই এমন আছে, যাদের জন্য যথেষ্ট কেউ নেই এবং যাদের কোন আশ্রয়স্থল নেই। -তিরমিজি রহ. বলেন, হাদিসটি হাসান সহিহ। ৩৪৫
(২২৯) হজরত আবুল আযহার রাদি. (যাকে আবু যুহাইর আনমারিও বলা হয়) থেকে হাসান সনদে বর্ণিত আছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ঘুমানোর জন্য বিছানায় যেতেন, তখন এ দুআ পড়তেন-
بِاسْمِ اللهِ، وَضَعْتُ جَنْبِي اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي ذَنْبِي، وَاخْسَأُ شَيْطَانِي، وَفُكَ رِهَانِي، وَاجْعَلْنِي فِي النَّدِي الْأَعْلَى.
উচ্চারণ: বিসমিল্লাহি ওয়াদা'তু যানবি, আল্লাহুম্মাগফিরলি যানবি ওয়াখসা' শাইতানি ওয়া ফুক্কা রিহানি, ওয়ায আলনি ফিন্নাদিয়্যিল আলা।
অর্থ: আল্লাহর নামে শুলাম। হে আল্লাহ, আমার গুনাহ মাফ কর। আমার শয়তানকে লাঞ্চিত কর। আমাকে মুক্তি দাও। আমাকে উঁচু মর্যাদাবান ফেরেশতাদের অন্তর্ভুক্ত কর। ৩৪৬
(২৩০) হজরত নওফেল আশযায়ি রাদি. থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলেছেন-
اقْرَأْ (قُلْ يَا أَيُّهَا الْكَافِرُوْنَ)، ثُمَّ نَمْ عَلَى خَاتِمَتِهَا؛ فَإِنَّهَا بَرَاءَةُ مِنَ الشَّرْكِ.
অর্থ: তুমি সুরা কাফিরুন পড়বে। এটি শেষ করেই ঘুমিয়ে যাবে। এটি শিরক থেকে মুক্তির ঘোষণা।- মুসনাদে আবু ইলাতে হজরত ইবনে আব্বাস রাদি. থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
أَلَا أَدُلُّكُمْ عَلَى كَلِمَةٍ تُنَجِّيْكُمْ مِنَ الْإِشْرَاكِ بِاللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ، تَقْرَؤُوْنَ: قُلْ يَا أَيُّهَا الْكَافِرُوْنَ عِنْدَ مَنَامِكُمْ.
অর্থ: আমি কি তোমাদেরকে এমন কালিমা শিক্ষা দেব না, যা তোমাদেরকে শিরিক থেকে মুক্তি দিবে? তা হচ্ছে, তোমরা ঘুমানোর সময় সুরা কাফিরুন পড়ে ঘুমাবে। ৩৪৭
(২৩১) হজরত ইরবাদ বিন সারিয়া রাদি. থেকে বর্ণিত আছে-
أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَقْرَأُ الْمُسَبِّحَاتِ قَبْلَ أَنْ يَرْقُدَ.
অর্থ: রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুমানোর আগে সেসব সুরার শুরুতে (সাব্বাহা) আছে সেগুলো পড়ে ঘুমাতেন। -ইমাম তিরমিজি রহ. বলেন, হাদিসটি হাসান।
(২৩২) হজরত আয়েশা রাদি. থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন-
كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا يَنَامُ حَتَّى يَقْرَأُ بَنِي إِسْرَائِيلَ وَالزُّمَرَ.
অর্থ: রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুরা বনি ইসরাঈল ও যুমার না পড়ে ঘুমাতেন না। -ইমাম তিরমিজি রহ. হাদিসটিকে হাসান বলেছেন।
(২৩৩) হজরত ইবনে উমর থেকে সহিহ সনদে বর্ণিত আছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন শয়ন করার জন্য বিছানায় যেতেন, তখন এ দুআ পড়তেন-
الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي كَفَانِي وَآوَانِي، وَأَطْعَمَنِي وَسَقَانِي، وَالَّذِي مَنَّ عَلَيَّ فَأَفْضَلَ، وَالَّذِي أَعْطَانِي فَأَجْزَلَ، اَلْحَمْدُ لِلَّهِ عَلَى كُلِّ حَالٍ، اللَّهُمَّ رَبَّ كُلَّ شَيْءٍ وَمَلِيْكَهُ وَإلَهَ كُلَّ شَيْءٍ، أَعُوْذُ بِكَ مِنَ النَّارِ.
উচ্চারণ: আলহামদু লিল্লাহিল্লাযি কাফানি ওয়া আওয়ানি ওয়া আত'আমানি ওয়া সাকানি, ওয়াল্লাযি মান্না আলাইয়া ফাআফযালা ওয়াল্লাযি আ'তানি ফা আযজালা। আলহামদুলিল্লাহি আলা কুল্লি হাল, রাব্বা কুল্লি শাইয়িন ওয়া মালিকাহ, ওয়া ইলাহা কুল্লি শাইয়িন। আউজুবিকা মিনান্নার।
অর্থ: সকল প্রশংসা ঐ আল্লাহর যিনি আমাকে পরিপূর্ণ দিয়েছেন। আমাকে আশ্রয় দিয়েছেন। পানাহার করিয়েছেন। যিনি আমার ওপর অনেক বেশি অনুগ্রহ করেছেন। যিনি আমাকে অনেক কিছু দিয়েছেন। সর্বাবস্থায় তাঁর প্রশংসা করি। হে আল্লাহ, আপনি সকল কিছুর প্রতিপালক ও মালিক। আপনি সবকিছুর ইলাহ। আপনার কাছে জাহান্নাম থেকে পানাহ চাই।৩৫২
(২৩৪) হজরত আবু সাঈদ খুদরি থেকে বর্ণিত, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- যে ব্যক্তি ঘুমানোর জন্য বিছানায় শয়ন করে এই দুআ তিনবার পড়ে, আল্লাহ তাআলা তার গুনাহ মাফ করে দেন যাদিও তা সমুদ্রের ফেনা পরিমান হয়। তার গুনাহ তারকা পরিমাণ; বালুকারাশি পরিমাণ, দুনিয়ার দিবসের পরিমাণ গুনাহ হলেও আল্লাহ মাফ করে দেন। দুআটি হল-
أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ.
উচ্চারণ: আসতাগফিরুল্লাহাল্লাযি লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়াল কাইয়ুমা ওয়া আতুবু ইলাইহ।
অর্থ: আমি ঐ আল্লাহর কাছে মাগফিরাত কামনা করি, যিনি ছাড়া আর কোন মাবুদ নেই। তিনি চিরজীবি শাশ্বত। আমি তার কাছে তাওবা করি। ৩৫৩
(২৩৫) আসলাম গোত্রের এক সাহাবি থেকে সহিহ সনদে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন- আমি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে বসা ছিলাম। তখন একজন সাহাবি এসে বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ, আমাকে গতরাতে দংশন করেছে। ফলে আমি সারা রাত ঘুমাতে পারিনি। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, কীসে তোমাকে দংশন করেছে? সাহাবি বললেন, বিচ্ছু। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি যদি সন্ধ্যাবেলায় এ দুআ পড়তে, তাহলে ইনশাআল্লাহ তোমাকে অনিষ্ট স্পর্শ করতো না। দুআটি হল-
أَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ .
উচ্চারণ: আউযুবিকালিমাতিত তাম্মাতি মিন শাররি মা খালাক।
অর্থ: আল্লাহর পরিপূর্ণ উক্তির মাধ্যমে তার সমস্ত সৃষ্টির অনিষ্ট থেকে আশ্রয় কামনা করি। ৩৫৪
(২৩৬) হজরত আনাস রাদি. থেকে বর্ণিত-
أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَوْصَى رَجُلًا إِذَا أَخَذَ مَضْجَعَهُ أَنْ يَقْرَأُ سُوْرَةُ الْحَشْرِ وَقَالَ: إِنْ مِتَّ مِتَّ شَهِيدًا أو قال: مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ.
অর্থ: রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একজন সাহাবিকে ঘুমানোর সময় সুরা হাশর পড়ে ঘুমানোর জন্য নসিহত করলেন। আর বললেন, তুমি যদি ঐ রাতে মারা যাও, তাহলে শহিদের মর্যাদা পাবে অথবা তিনি বলেছেন, তুমি জান্নাতবাসী হবে। ৩৫৫
(২৩৭) হজরত আবদুল্লাহ বিন উমর থেকে বর্ণিত, তিনি এক ব্যক্তিকে বললেন, যখন তুমি ঘুমাতে যাবে, তখন এ দুআটি পড়বে-
اللَّهُمَّ خَلَقْتَ نَفْسِي، وَأَنْتَ تَوَفَّاهَا، لَكَ مَمَاتُهَا وَمَحْيَاهَا، إِنْ أَحْيَيْتَهَا فَاحْفَظْهَا، وَإِنْ أَمَتَّهَا فَاغْفِرْ لَهَا، اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْعَافِيَةَ.
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা আনতা খালাকতা নাফসি, ওয়া আনতা তাতাওয়াফফাহা, লাকা মামাতুহা ওয়া মাহইয়াহা, ইন আহইয়াইতাহা ফাহফাজহা ওয়া ইন আমাত্তাহা ফাগরিফর লাহা। আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল আফিয়াহ।
অর্থ: হে আল্লাহ আপনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন এবং আপনিই মৃত্যু দান করবেনা। আপনার হাতে জীবন-মরণ। আপনি নিরাপদে জীবিত রাখুন। আপনি ক্ষমাসুন্দর মৃত্যু দিন। আপনার কাছে সবকিছুর নিরাপত্তা চাই।
এরপর আবদুল্লাহ বিন উমর বলেন, এই দুআটি আমি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছি। ৩৫৬
(২৩৮) হজরত আবু হুরায়রা রাযি. থেকে সহিহ সনদে বর্ণিত হয়েছে; যাতে পূর্বের “সকাল-সন্ধ্যার” আমলের অধ্যায়ে হজরত আবু বকর রাদি.-এর ঘটনায় উল্লেখ হয়েছে যে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, এ দুআটি সকাল-সন্ধ্যা ও ঘুমের সময় পড়বে-
اللَّهُمَّ فَاطِرَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ، عَالِمَ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ، رَبَّ كُلِّ شَيْءٍ وَمَلِيْكَهُ، أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ، أَعُوْذُ بِكَ مِنْ شَرِّ نَفْسِي وَشَرِّ الشَّيْطَانِ وَشِرْكِهِ.
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ফাতিরাস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি, আলিমাল গাইবি ওয়াশ শাহাদাহ। রাব্বা কুল্লি শাইয়িন ওয়া মালিকাহ, আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লা আনতা। আউজুবিকা মিন শাররি নাফসি, ওয়া শাররিশ শাইতানি ওয়া শিরকিহ।
অর্থ: হে আল্লাহ, আসমান-যমিনের হে আদিস্রষ্টা, দৃশ্য-অদৃশ্যের হে মহা জ্ঞাতা। সকল বস্তুর মালিক ও প্রতিপালক! আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি ব্যতীত কোন মাবুদ নেই। আমি নিজের কুপ্রবৃত্তির অনিষ্ট থেকে, শয়তানের অনিষ্ট থেকে এবং শিরিক থেকে আপনার আশ্রয় চাই। 357
(২৩৯) হজরত শাদ্দাদ বিন আউস রাদি. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَأْوِي إِلَى فِرَاشِهِ فَيَقْرَأُ سُوْرَةً مِنْ كِتَابِ اللَّهِ تَعَالَى حِيْنَ يَأْخُذُ مَضْجَعَهُ إِلَّا وَكَّلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ بِهِ مَلَكًا، لَا يَدْعُ شَيْئًا يَقْرَبُهُ يُؤْذِيْهِ يَهُبُّ مَتَى هَبَّ.
অর্থ: কোন মুসলমান যখন ঘুমানোর সময় বিছানায় গিয়ে কুরআনের কোন সুরা তিলাওয়াত করে, আল্লাহ তাআলা তাকে হেফাজত করার জন্য একজন ফেরেশতা নিযুক্ত করে দেন। কষ্টদায়ক কোন কিছুই তার নিকটবর্তী হতে দেয় না। সে যখন জাগ্রত হতে চায়, তখন জাগিয়ে দেয়। ৩৫৮
(২৪০) হজরত জাবের রাদি. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
إِنَّ الرَّجُلَ إِذَا أَوَى إِلَى فِرَاشِهِ ابْتَدَرَهُ مَلَكُ وَشَيْطَانُ، فَقَالَ الْمَلَكُ: اللَّهُمَّ اخْتِمْ بِخَيْرٍ، فَقَالَ الشَّيْطَانُ : اخْتِمْ بِشَرِّ ، فَإِنْ ذَكَرَ اللَّهَ تَعَالَى ثُمَّ نَامَ، بَاتَ الْمَلَكُ يَكْلَؤُهُ.
অর্থ: মানুষ যখন ঘুমানোর জন্য বিছানায় যায়, তখন তার কাছে ফেরেশতা ও শয়তান আসে। ফেরেশতা এসে বলেন, 'হে আল্লাহ, তুমি তার শেষ ভালো করো'। আর শয়তান বলে, হে আল্লাহ তুমি তার শেষ পরিণতি মন্দ করো। যদি ঐ ব্যক্তি আল্লাহর জিকির করে ঘুমায়, তাহলে ফেরেশতা তাকে পাহারা দেয়। ৩৬৯
(২৪১) হজরত আবদুল্লাহ বিন আমর বিন আস রাদি. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন শয়ন করতেন, তখন এ দুআ পড়তেন-
اللَّهُمَّ بِاسْمِكَ رَبِّي وَضَعْتُ جَنْبِي فَاغْفِرْ لِي ذَنْبِي.
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা বিসমিকা ওয়াদ্বাতু জাম্বি, ফাগফিরলি যাম্বি।
অর্থ: হে আল্লাহ, আমি তোমার নামে ঘুমাচ্ছি, আমার গুনাহ মাফ করে দিন। ৩৭০
(২৪২) হজরত আবু উমামা রাদি. থেকে বর্ণিত আছে, আমি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি-
مَنْ أَوَى إِلَى فِرَاشِهِ ظَاهِراً، وَذَكَرَ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ حَتَّى يُدْرِكَهُ النُّعَاسُ لَمْ يَتَقَلَّبْ سَاعَةً مِنَ اللَّيْلِ يَسْأَلُ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ فِيْهَا خَيْراً مِنْ خَيْرِ الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ، إِلَّا أَعْطَاهُ إِيَّاهُ.
অর্থ: যে ব্যক্তি পবিত্র হয়ে বিছানায় যায়, তন্দ্রা আসা পর্যন্ত আল্লাহর জিকির করে। রাতের কিছু অংশ অতিবাহিত হওয়ার পর আল্লাহর কাছে দুনিয়া ও আখিরাতের যে কল্যাণ চাইবে, আল্লাহ তাকে তাই দিবেন। ৩৭১
(২৪৩) হজরত আয়েশা রাদি. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিছানায় গিয়ে এ দুআ পড়তেন-
اللَّهُمَّ أَمْتِعْنِي بِسَمْعِي وَبَصَرِي، وَاجْعَلْهُمَا الْوَارِثَ مِنِّي، وَانْصُرْنِي عَلَى عَدُوِّي وَأَرِنِي مِنْهُ تَأْرِي، اَللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوْذُ بِكَ مِنْ غَلَبَةِ الدَّيْنِ وَمِنَ الْجُوعِ فَإِنَّهُ بِئْسَ الضَّجِيعُ.
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা আমতি'নি বি-সাময়ি ওয়া বাসারি, ওয়াযআলহাল ওয়ারিসা মিন্নি, ওয়ান সুরনি আলা আদুউয়ি ওয়া আরিনি সা'রি। আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন গালাবাতিদ্দাইনি ওয়া মিনাল জুয়ি ফা ইন্নাহু বি'সাদ দাযিউ।
অর্থ: হে আল্লাহ! আমাকে কান এবং চোখ দিয়ে উপকৃত করুন। এ দুটিকে আমৃত্য সুস্থ ও নিরাপদ রাখুন। আমাকে আমার ওপর জুলুমকারীর বিরুদ্ধে মদদ করুন এবং তার থেকে আমার বদলা নিন। মুক্তি চাই ঋণগ্রস্থতা থেকে এবং ক্ষুধা থেকে। কেননা তা বড়ই খারাপ নিত্যসঙ্গী। ৩৬২
(২৪৪) হজরত আয়েশা রাদি. থেকে বর্ণিত-
مَا كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُنْذُ صَحْبَتِهِ يُنَامُ حَتَّى فَارَقَ الدُّنْيَا حَتَّى يَتَعَوَّذُ مِنَ الْجُبْنِ وَالْكَسْلِ وَالسَّامَةِ وَالْبُخْلِ وَسُوءِ الْكِبَرِ وَسُوْءِ الْمَنْظَرِ فِي الْأَهْلِ وَالْمَالِ وَعَذَابِ الْقَبْرِ وَمِنَ الشَّيْطَانِ وَشِرْكِهِ.
অর্থ: আমি তার সঙ্গী হওয়ার পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তাঁকে দেখেছি, তিনি ঘুমের আগে- কাপুরুষতা, অলসতা, কৃপণতা, অতিশয় বার্ধক্য, পরিবার ও সম্পদের মন্দ দৃশ্য, কবরের শান্তি, শয়তান এবং তার শিরিকি কর্মকাণ্ড থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইতেন। ৩৬৩
(২৪৫) হজরত আয়েশা রাদি. থেকে বর্ণিত আছে, তিনি ঘুমানোর পূর্বে এই দুআ পড়তেন। এই দুআ পড়ার পর সকাল পর্যন্ত বা ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়া পর্যন্ত আর কারো সাথে কথা বলতেন না। দুআটি হল-
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ رُؤْيَا صَالِحِةٌ صَادِقَةً غَيْرَ كَاذِبَةٌ، نَافِعَةً غَيْرَ ضَارَّةٍ.
অর্থ: হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে বাস্তবসম্মত ও নেক স্বপ্নের আবেদন করছি, যা সত্য হবে; মিথ্যা হবে না। উপকারী হবে; ক্ষতিকারক হবে না। ৩৬৪
(২৪৬) হজরত আলি রাদি. থেকে বর্ণিত-
مَا كُنْتُ أَرَى أَحَدًا يَعْقِلُ يَنَامُ قَبْلَ أَنْ يَقْرَأَ الْآيَاتِ الثَّلَاثَ الْأَوَاخِرَ مِنْ سُوْرَةِ الْبَقَرَةِ.
অর্থ: তিনি বলেন, আমি প্রাপ্তবয়স্ক কাউকে দেখিনি যে সুরা বাকারার শেষ তিন আয়াত না পড়ে ঘুমিয়েছে। ৩৬৫
(২৪৭) হজরত আলি রাদি. থেকে আরো বর্ণিত আছে-
مَا أَرَى أَحَدًا يَعْقِلُ دَخَلَ فِي الْإِسْلَامِ يَنَامُ حَتَّى يَقْرَأُ آيَةَ الْكُرْسِي.
অর্থ: কোন বুদ্ধিমান মুসলিম আয়াতুল কুরসি না পড়ে ঘুমায় না।
(২৪৮) হজরত ইবরাহিম নাখায়ি রহ. বলেন, সাহাবায়ে কেরাম ঘুমানোর সময় সুরা ফালাক ও সুরা নাস পড়তেন। -অন্য বর্ণনায় আছে, সাহাবায়ে কেরাম প্রতিরাতে তিনকুল তিনবার পড়া উত্তম মনে করতেন।
জ্ঞাতব্য যে, এ ব্যাপারে অনেক হাদিস আছে। এখানে যতটুকু উল্লেখ করা হল, তাই আমলকারীর জন্য যথেষ্ট। এরচে বেশি উল্লেখ করিনি। কারণ, পাঠক বিরক্ত হয়ে যেতে পারে। এখানে উল্লিখিত সবগুলোর ওপর আমল করা চাই। যদি তা সম্ভব না হয় তাহলে গুরুত্বপূর্ণ আমলগুলো করবে।
কোনরূপ জিকির-আজকার না করে ঘুমানো মাকরুহ
(২৪৯) হজরত আবু হুরায়রা থেকে নির্ভরযোগ্য সনদে বর্ণিত আছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-
مَنْ قَعَدَ مَقْعَدًا لَمْ يَذْكُرِ اللهَ فِيْهِ كَانَتْ عَلَيْهِ مِنَ اللَّهِ تِرَةٌ وَمَنِ اضْطَجَعَ مَضْجَعًا لَا يَذْكُرُ اللهَ فِيْهِ كَانَتْ عَلَيْهِ مِنَ اللَّهِ تِرَةٌ.
অর্থ: যে ব্যক্তি কোন স্থানে বসে আল্লাহকে স্মরণ করল না, তার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে লাঞ্ছনা। আর যে কোথাও শয়ন করে আল্লাহকে স্মরণ করল না, তার জন্যও লাঞ্ছনা। ৩৬৬
রাতে ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়ার পর পুনরায় ঘুমালে যে দুআ পড়বে
রাতে জাগ্রত হওয়া দুই ধরনের: ১. উঠার পর আর না ঘুমানো। এ প্রসঙ্গে পূর্বের অধ্যায়ে আলোচনা করা হয়েছে। ২. উঠার পর আবার ঘুমানো। এমন ব্যক্তির জন্য জিকির করা মুস্তাহাব। যতক্ষণ না ঘুম চলে আসে। এ প্রসঙ্গে অনেক জিকির-আজকার রয়েছে-
(২৫০) হজরত উবাদা বিন সামেত রাদি. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি রাতে ঘুম থেকে উঠে এ দুআ পড়ে। অতঃপর বলে, হে আল্লাহ, আমাকে ক্ষমা করো অথবা অন্য কোন দুআ করে, তার দুআ কবুল করা হয়। অতঃপর অজু করে নামাজ পড়লে, তার নামাজও কবুল করা হয়। দুআটি হল-
لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرُ، الْحَمْدُ لِلَّهِ، وَسُبْحَانَ اللهِ، وَلَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ، وَاللهُ أَكْبَرُ، وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بالله .
উচ্চারণ: লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির। ওয়াল হামদুলিল্লাহ, ওয়া সুবহানাল্লাহ, ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়াল্লাহু আকবার, ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ।
অর্থ: আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই। তিনি একক, তাঁর কোন শরিক নেই। রাজ্য ও প্রশংসা কেবল তারই। তিনি সবকিছুর ওপর শক্তিমান। যাবতীয় প্রশংসা তাঁরই। তিনি পবিত্র। তিনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই। তিনি বড়। তাঁর সাহায্য ছাড়া গুনাহ হতে বাঁচার ও নেক আমল করার শক্তি-সামর্থ নেই। ৩৬৭
(২৫১) হজরত আয়েশা রাদি. থেকে বর্ণিত, রাসুল যখন রাতে ঘুম থেকে উঠতেন, তখন এ দুআ পড়তেন-
لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ أَسْتَغْفِرُكَ لِذَنْبِي، وَأَسْأَلُكَ رَحْمَتَكَ، اللَّهُمَّ زِدْنِي عِلْمًا، وَلَا تُزِغْ قَلْبِيْ بَعْدَ إِذْ هَدَيْتَنِي، وَهَبْ لِي مِنْ لَدُنْكَ رَحْمَةً إِنَّكَ أَنْتَ الْوَهَّابُ.
উচ্চারণ: লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা, আল্লাহুম্মা আসতাগফিরুকা লিযাম্বি, ওয়া আসআলুকা রহমাতাকা, আল্লাহুম্মা যিদনি ইলমা, ওয়ালা তুযিগ কালবি বা'দা ইয হাদাইতানি, ওয়াহাবলি মিন লাদুনকা রাহমাহ, ইন্নাকা আনতাল ওয়াহহাব।
অর্থ: হে আল্লাহ, আপনি ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই। আপনি পবিত্র, আমার গুনাহের জন্য আমি আপনার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী, আপনার রহমত কামনা করছি, আমার ইলম বৃদ্ধি করে দিন, হেদায়াত দান করার পর আমার মনকে বাঁকা করে দিবেন না। আপনার পক্ষ থেকে আমাকে রহমত দান করুন। আপনিই সবচেয়ে বড় দাতা। ৩৬৮
(২৫২) হজরত আয়েশা রাদি. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন রাতে জাগ্রত হতেন, তখন এ দুআ পড়তেন-
لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ الْوَاحِدُ الْقَهَّارُ ، رَبُّ السَّمَوَاتِ وَالْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا الْعَزِيزُ الْغَفَّارِ
উচ্চারণ: লাইলাহা ইল্লাল্লাহুল ওয়াহিদুল কাহ্যার, রাব্বুস সামাওয়াতি ওয়াল আরজ ওয়া মা বাইনা হুমাল আযিযুল গাফ্ফার।
অর্থ: আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই। তিনি একক ও ক্ষমতাধর। আসমান-যমিন এবং উভয়ের মাঝে যা আছে, সব কিছুর মালিক। তিনি ক্ষমতাধর ও ক্ষমাশীল। ৩৬৯
(২৫৩) হজরত আবু হুরায়রা থেকে দুর্বল সনদে বর্ণিত আছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন-
إِذَا رَدَّ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ إِلَى الْعَبْدِ الْمُسْلِمِ نَفْسَهُ مِنَ اللَّيْلِ فَسَبَّحَهُ وَاسْتَغْفَرَهُ وَدَعَاهُ تَقَبَّلَ مِنْهُ.
অর্থ: যখন মুসলিম বান্দাকে আল্লাহ তাআলা রাতের বেলা তার রূহ ফিরিয়ে দেন, তার উচিত হল তাসবিহ পড়া, ক্ষমা চাওয়া ও আল্লাহর কাছে দুআ করা। আল্লাহ তার দুআ কবুল করবেন। ৩৭০
(২৫৪) হজরত আবু হুরায়রা রাদি. থেকে নির্ভরযোগ্য সনদে বর্ণিত আছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের কেউ তার বিছানা হতে উঠার পর আবার বিছানায় শুতে গেলে সে যেন তার চাদরের কিনারা দিয়ে বিছানা তিনবার পরিষ্কার করে নেয়। কারণ, সে জানে না তার অনুপস্থিতিতে তাতে কী পতিত হয়েছে? আর শুয়ার পর যেন এ দুআটি পড়ে-
بِاسْمِكَ اللَّهُمَّ وَضَعْتُ جَنْبِي، وَبِكَ أَرْفَعُهُ، إِنْ أَمْسَكْتَ نَفْسِي فَارْحَمْهَا، وَإِنْ رَدَدْتَهَا فَاحْفَظْهَا بِمَا تَحْفَظُ بِهِ عِبَادَكَ الصَّالِحِينَ.
উচ্চারণ: বিসমিকা আল্লহুম্মা ওয়া দা'তু যাম্বি ওয়াবিকা আরফাউহু, ইন আমসাকতা নাফসি ফারহামহা, ওয়া ইন রাদাত্তাতাহা ফাহফাজহা বিমা তাহফাজু বিহি ইবাদাকাস সালিহิน।
অর্থ: আপনার নামে হে পালনকর্তা! আমি আমার পার্শ এলিয়ে দিলাম, আপনার নামেই তা উঠাবো। আমার রুহ আটকে দিলে রহম করো এবং ছেড়ে দিলে হেফাজত করো, যেভাবে আপনার নেক বান্দাদের হেফাজত করে থাকেন। ৩৭১
(২৫৫) হজরত আবু দারদা রাদি. থেকে বর্ণিত, তিনি রাতের মধ্যভাগে সজাগ হয়ে বলতেন-
نَامَتِ الْعُيُونُ، وَغَارَتِ النُّجُوْمُ، وَأَنْتَ حَيُّ قَيُّوْمُ.
উচ্চারণ: নামাতিল উয়ুনু ওয়া গারাতินুজুমু ওয়া আনতা হাইয়ুন কাইয়ুম।
অর্থ: সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে এবং তারকারাজি অস্তমিত হয়েছে। আর হে রব, আপনি শাশ্বত চিরঞ্জীব। ৩৭২
রাতে বিছানায় ছটফট করলে বা ঘুম না আসলে যা পড়বে
(২৫৬) হজরত যায়েদ বিন সাবেত রাদি. থেকে বর্ণিত আছে, আমি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে অভিযোগ করলাম, আমাকে অনিদ্রা পেয়ে বসেছে। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, তুমি এই দুআটি পড়বে। যায়েদ বিন সাবেত রাদি. বলেন, উক্ত দুআটি পড়লে আমার অনিদ্রা রোগ দূর হয়ে যায়। দুআটি হল-
اللَّهُمَّ غَارَتِ النُّجُومُ وَهَدَأْتِ الْعُيُونُ وَأَنْتَ حَيُّ قَيُّوْمُ لَا تَأْخُذُكَ سِنَةٌ وَلَا نَوْمٌ، يَا حَيُّ يَا قَيُّوْمُ أَهْدِى لَيْلِي، وَأَنِمْ عَيْنِي.
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা গারাতินুজুমু ওয়া হাদাআতিল উয়ুনু ওয়া আনতা হাইয়ুন কাইয়ুম, লা তা'খুজুহু সিনাতুন ওয়ালা নাউম, ইয়া হাইয়ু ইয়া কাইয়ুম, আহদি লাইলি ওয়া আনিম আইনি।
অর্থ: হে আল্লাহ, তারকারাজি অস্তমিত হয়ে গেছ এবং সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে। আর আপনি শাশ্বত চিরঞ্জীব। আসে না আপনার কোন তন্দ্রা কিংবা ঘুম, হে শাশ্বত চিরঞ্জীব! এই রাতকে শান্ত করে দিন এবং চোখে ঘুম পাড়িয়ে দিন। ৩৭৩
(২৫৭) মুহাম্মাদ বিন হাব্বান থেকে বর্ণিত-
أَنَّ خَالِدَ بْنَ الْوَلِيدِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَصَابَهُ أَرْقُ، فَشَكَا ذَلِكَ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَأَمْرُهُ أَنْ يَتَعَوَّذُ عِنْدَ مَنَامِهِ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّاتِ مِنْ غَضَبِهِ وَمِنْ شَرِّ عِبَادِهِ وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ وَأَنْ يَحْضُرُوْنَ.
অর্থ: হজরত খালেদ বিন ওয়ালিদ রাদি. এর অনিদ্রার রোগ হলে তিনি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে জানালেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি ঘুমের সময় এ দুআ পড়বে-
أَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّاتِ مِنْ غَضَبِهِ وَمِنْ شَرِّ عِبَادِهِ وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ وَأَنْ يَحْضُرُوْنَ.
উচ্চারণ: আউজু বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন গাজাবিহি ওয়া মিন শাররি ইবাদিহ। ওয়া মিন হামাজাতিশ শাইয়াতিনি ওয়া আন ইয়াহদুরুন।
অর্থ: আমি আল্লাহর পূর্ণ-দৃঢ় উক্তিসমূহের আশ্রয় নিচ্ছি তার ক্রোধ থেকে, তার সৃষ্টির অনিষ্ট থেকে এবং শয়তানের কুস্পর্শ ও উপস্থিতি থেকে। 374
(২৫৮) হজরত বুরাইদা রাদি. থেকেদুর্বল সনদে বর্ণিত আছে, হজরত খালেদ বিন ওয়লিদ রাদি. রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ, আমি রাতে ঘুমাতে পারি না। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যখন বিছানায় যাবে তখন এ দুআ পড়বে-
اللَّهُمَّ رَبَّ السَّمَاوَاتِ السَّبْعِ وَمَا أَظَلَّتْ، وَرَبَّ الْأَرَضِينَ وَمَا أَقَلَّتْ، وَرَبَّ الشَّيَاطِينِ وَمَا أَضَلَّتْ، كُنْ لِي جَارًا مِنْ شَرِّ خَلْقِكَ كُلِّهِمْ جَمِيعًا ، أَنْ يَفْرُطَ عَلَيَّ أَحَدٌ مِنْهُمْ، أَوْ أَنْ يَبْغِيَ، عَزَّ جَارُكَ، وَجَلَّ ثَنَاؤُكَ، وَلَا إِلَهَ غَيْرُكَ، وَلَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ.
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা রাব্বাস সামাওয়াতিস সাবয়ি ওয়ামা আজাল্লাত, ওয়া রাব্বাল আরাদিনা ওয়ামা আকাল্লাত, ওয়া রাব্বাশ শাইয়াতিনি ওয়ামা আদাল্লাত, কুন লি যারান মিন শাররি খালকিকা কুল্লিহিম যামিআ; আন ইয়াফরুতা আলাইয়া আহাদুন মিনহুম আও আন ইয়াবগিয়া, আজ্জা যারুকা ওয়া জাল্লা সানাউকা, ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা, ওয়া লা ইলাহা ইল্লা আনতা।
অর্থ: হে আল্লাহ, সাত আসমান ও তার ছায়া প্রাপ্ত সকল বস্তুর হে মালিক! যমিসমূহ ও তার সমুদয় আরোহীর হে প্রতিপালক! শয়তান ও তার দ্বারা ভ্রষ্টদের হে অধিকর্তা! আপনার সমস্ত সৃষ্টির অনিষ্ট থেকে সুরক্ষা লাভে আপনি আমার সাহায্যকারী হন। যেন তাদের কেউ আমার ওপর সীমালঙ্ঘন ও অবচার করতে না পারে। আপনার আশ্রয় গ্রহণকারীর জয় হোক এবং আপনার মহিমা সমুচ্চ হোক। আপনি ছাড়া কোন সত্য মাবুদ নেই।৩৭৫
ঘুমে ভয় পেলে যা পড়বে
(২৫৯) হজরত আমর বিন শুআইবের সনদে বর্ণিত আছে যে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবায়ে কেরামকে ভয়ের সময় এই দুআ পড়তে শিখিয়েছেন-
أَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّةِ، مِنْ غَضَبِهِ وَشَرِّ عِبَادِهِ، وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ وَأَنْ يَحْضُرُوْنِ.
উচ্চারণ: আউজু বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন গাজাবিহি ওয়া শাররি ইবাদিহ। ওয়া মিন হামাজাতিশ শাইয়াতিনি ওয়া আন ইয়াহদুরুন।
অর্থ: আমি আল্লাহর পূর্ণ-দৃঢ় উক্তিসমূহের আশ্রয় নিচ্ছি তার ক্রোধ থেকে, তার সৃষ্টির অনিষ্ট থেকে এবং শয়তানের কুস্পর্শ ও উপস্থিতি থেকে।
আবদুল্লাহ বিন আমর রাদি. তাঁর বুঝমান সন্তানদেরকে এ দুআ মুখস্ত করাতেন। আর অবুঝ বাচ্চাদের গলায় কাগজে লেখে ঝুলিয়ে দিতেন।- ইমাম তিরমিজি বলেন, হাদিসটি হাসান।
অন্য বর্ণনায় আছে- এক ব্যক্তি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে ঘুমে ভয় পাওয়ার অভিযোগ করলো। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, তুমি যখন ঘুমুতে যাবে, এই দুআ পড়বে। উক্ত সাহাবি এ দুআ পড়লে তাঁর ভয় কেটে যায়। দুআটি হল-
أَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّةِ مِنْ غَضَبِهِ وَمِنْ شَرِّ عِبَادِهِ، وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ وَأَنْ يَحْضُرُوْنِ.
উচ্চারণ: আউজু বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন গাজাবিহি ওয়া মিন শাররি ইবাদিহ। ওয়া মিন হামাজাতিশ শাইয়াতিনি ওয়া আন ইয়াহদুরুন।
অর্থ: আমি আল্লাহর পূর্ণ-দৃঢ় উক্তিসমূহের আশ্রয় নিচ্ছি তার ক্রোধ থেকে, তার সৃষ্টির অনিষ্ট থেকে এবং শয়তানের কুস্পর্শ ও উপস্থিতি থেকে। ৩৭৬
স্বপ্নে ভালো-মন্দ দেখলে যা পড়বে
(২৬০) হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদি. থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-
إِذَا رَأَى أَحَدُكُمْ رُؤْيَا يُحِبُّهَا، فَإِنَّمَا هِيَ مِنَ اللَّهِ ، فَلْيَحْمَدِ اللَّهَ عَلَيْهَا، وَلْيُحَدِّثْ بِهَا.
অর্থ: ভালো স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে। তোমাদের মধ্যে যে ভালো স্বপ্ন দেখে সে যেন আল্লাহর প্রশংসা করে এবং তা মানুষের কাছে প্রকাশ করে।
-অন্য বর্ণনায় আছে-
فَلا يُحَدِّثْ بِها إِلَّا مَنْ يُحِبُّ، وَإِذَا رَأَى غَيْرَ ذَلِكَ مِمَّا يَكْرَهُ فَإِنَّمَا هِيَ مِنَ الشَّيْطَانِ فَلْيَسْتَعِذْ مِنْ شَرِّهَا وَلَا يَذْكُرْهَا لِأَحَدٍ فَإِنَّهَا لَا تَضُرُّهُ.
অর্থ: সে যেন এ স্বপ্ন তার প্রিয় ব্যক্তি ছাড়া অন্য কারও কাছে প্রকাশ না করে। আর মন্দ স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে। যে ব্যক্তি মন্দ স্বপ্ন দেখে সে যেন তার অনিষ্ট থেকে পানাহ চায়। এমন স্বপ্ন কারও কাছে যেন প্রকাশ না করে। কারণ, স্বপ্ন তাকে কোন ক্ষতি করতে পারবে না। ৩৭৭
(২৬১) হজরত আবু কাতাদা রাদি. থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
" الرُّؤْيا الصَّالِحَةُ وَفِي رِوَايَةُ الرُّؤْيَا الْحَسَنَةُ مِنَ اللَّهِ، وَالْحُلْمُ مِنَ الشَّيْطَانِ، فَمَنْ رَأَى شَيْئًا يَكْرَهُهُ فَلْيَنْفُتْ عَنْ شِمَالِهِ ثَلَاثًا وَلْيَتَعَوَّذْ مِنَ الشَّيْطَانِ، فَإِنَّهَا لا تَضُرُّه.
অর্থ: নেক স্বপ্ন বা ভালো স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে। কল্পনা প্রসূত স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে। যে ব্যক্তি অপ্রিয় স্বপ্ন দেখে, সে যেন বাম দিকে তিনবার থুথু ফেলার মতো করে ফুঁ দেয় এবং যেন আউজুবিল্লাহ পড়ে। কারণ, স্বপ্ন তাকে কোন ক্ষতি করতে পারবে না। ৩৭৮
(২৬২) হজরত জাবের রাদি. থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-
إِذَا رَأَى أَحَدُكُمُ الرُّؤْيَا يَكْرَهُهَا فَلْيَبْصُقْ عَنْ يَسَارِهِ ثَلَاثًا، وَلْيَسْتَعِذْ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ ثَلَاثًا، وَلْيَتَحَوَّلْ عَنْ جَنْبِهِ الَّذِي كَانَ عَلَيْهِ.
অর্থ: তোমাদের কেউ যখন মন্দ স্বপ্ন দেখে সে যেন বাম দিকে তিনবার থুথু ফেলার ন্যায় ফুঁ দেয়। তিনবার আউজুবিল্লাহ পড়ে। আর সে যে পাশে শুয়ে ছিলো তা পরিবর্তন করে অন্য পাশে শুয়ে যেন (পাশ পরিবর্তন করে)।৩৭৯
(২৬৩) হজরত আবু হুরায়রা রাদি. থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
إِذَا رَأَى أَحَدُكُمْ رُؤْيَا يَكْرَهَهَا فَلَا يُحَدِّثُ بِهَا أَحَدًا وَلْيَقُمْ فَلْيُصَلِّ.
অর্থ: তোমাদের কেউ মন্দ স্বপ্ন দেখলে সে যেন তা কারও কাছে প্রকাশ না করে। বিছানা থেকে উঠে নামাজ পড়ে। ৩৮০
(২৬৪) ইবনুস সুন্নির কিতাবে এই বর্ণনায় আরো আছে-
إِذَا رَأَى أَحَدُكُمْ رُؤْيَا يَكْرَهُهَا فَلْيَتْقُلْ عَن يَسَارِهِ ثَلَاثُ مَرَّاتٍ، ثُمَّ لِيَقُلِ: اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوْذُ بِكَ مِنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ وَسَيِّئَاتِ الْأَحْلَامِ؛ فَإِنَّهَا لَا تَكُوْنُ شَيْئًا.
অর্থ: রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের কেউ মন্দ স্বপ্ন দেখলে সে যেন বাম দিকে তিনবার হালকা থুথু ফেলে এ দুআটি পড়ে-
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوْذُ بِكَ مِنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ وَسَيِّئَاتِ الْأَحْلَامِ.
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন আমালিশ শাইতানি ওয়া সাইয়িআতিল আহলাম।
অর্থ: হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে শয়তের ফাঁদ ও মন্দ স্বপ্ন থেকে আশ্রয় চাই। ৩৮১
স্বপ্নের বিবরণ শুনে যা বলবে
(২৬৫) ইবনুস সুন্নির কিতাবে বর্ণিত আছে-
أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: مَنْ قَالَ لَهُ رَأَيْتُ رُؤْيَا، قَالَ: خَيْرًا رَأَيْتَ وَخَيْرًا يَكُونُ.
অর্থ: এক রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বললো, আমি স্বপ্ন দেখেছি। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি ভালো স্বপ্ন দেখেছো। তোমার স্বপ্ন ভালো হবে। ৩৮২
- অপর বর্ণনায় রয়েছে-
خَيْرًا تَلْقَاهُ، وَشَرًا تَوَفَّاهُ، خَيْرًا لَنَا، وَشَرًا عَلَى أَعْدَائِنَا، وَالْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ.
অর্থ: নবি কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তুমি কল্যাণ লাভ করবে এবং অকল্যাণ থেকে রক্ষা করা হবে। আমাদের কল্যাণ হোক, আর আমাদের শত্রুদের অকল্যাণ হোক। আর সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তাআলার যিনি বিশ্বজগতের পালনকর্তা। ৩৮৩

টিকাঃ
৩৩৩. সুরা আলে ইমরান: ১৯০-৯১।
৩৩৪. সহিহ মুসলিম: ২৭১১, সহিহ বুখারি: ৬৩১২, সুনানে আবু দাউদ: ৫০৩৯।
৩৩৫. সহিহ বুখারি: ৬৩১৮, সহিহ মুসলিম: ২৭২৭, সুনানে আবু দাউদ: ৫০৬২, সুনানে তিরমিজি: ৩৪০৫।
৩৩৬. সহিহ বুখারি: ৬৩২০, সহিহ মুসলিম: ২৭১৪, সুনানে আবু দউদ: ৫০৫০, সুনানে তিরমিজি: ৩৩৯৮।
৩৩৭. সহিহ বুখারি; ৬৩১৯, সহিহ মুসলিম: ২১৯২, সুনানে আবু দাউদ: ৩৯০২, সুনানে তিরমিজি: ৩৩৯৯, মুয়াত্তা মালেক ২/৯৪২-৮৪৩।
৩৩৮. সহিহ বুখারি: ৫০১৭, সহিহ মুসলিম: ২১৯২।
৩৯. সহিহ বুখারি: ৫০০৯, সহিহ মুসলিম: ৮০৮, সুনানে আবু দাউদ: ১৩৯৭।
৩৪১. সহিহ বুখারি: ৬৩১৩, সহিহ মুসলিম: ২৭১০, সুনানে আবু দাউদ: ৫০৪৬, সুনানে তিরমিজি: ৩৩৯১, সুনানে ইবনে মাজাহঃ ৩৮৭৬。
৩৪১. সহিহ বুখারি: ২৩১১, আমাল: ৯৫৯, নাসাঈ।
৩৪২. সুনানে আবু দাউদ: ৫০৪৫, সুনানে তিরমিজি: ৩৩৯৫, সুনানে ইবনে মাজাহঃ ৩৮৭৭, আমাল: ৭৬১-৭৬২, নাসাঈ।
৩৪৩. সহিহ মুসলিম: ২৭১৩, সুনানে আবু দাউদ: ৫০৫১, সুনানে তিরমিজি: ৩৩৯৭, সুনানে ইবনে মাজাহ: ২৮৭৩, আমাল: ৭৯০, নাসাঈ।
৩৪৫. সহিহ মুসলিম: ২৭১৫, সুনানে আবু দাউদ: ৫০৫৩, সুনানে তিরমিজি: ৩৩৯৬, আমাল: ৭৯৯, নাসাঈ, আমাল: ৭১১, ইবনুস সুন্নি।
৩৪৬. সুনানে আবু দাউদ: ৫০৫৪, মুসতাদরাকে হাকেম ১/৫৪০।
৩৪৭. সুনানে আবু দাউদ: ৫০৫৫, সুনানে তিরমিজি: ৩৪০০, সহিহ ইবনে হিব্বান: ২৩৬৩, আমাল: ৮০১-৮১৪, নাসাঈ।
৩৪৮. অথবা ইয়ুসাব্বিহু কিংবা সুবহানা শব্দ আছে। এমন সুরা ৭টি, যথা: সুরা বনি ইসরাঈল, হাদিদ, হাশর, সাফ, জুমুআ, তাগাবুন এবং সুরা আলা。
৩৪৯. সুনানে আবু দাউদ: ৫০৫৭, সুনানে তিরমিজি: ৩৪০২, আমাল: ৭১৩-৭১৪, নাসাঈ, মুসনাদে আহমাদ ৪/১২৮。
৩৫০. সুনানে তিরমিজি: ৩৪০২, মুসনাদে আহমাদ ৬/৬৮, মুসতাদরাকে হাকেম ২/৪৩৪。
৩৫১. আমালুল ইয়াউমি ওয়াল্লাইলাহ: ১৫৮, ইবনুস সুন্নি。
৩৫২. সুনানে আবু দাউদ: ৫০৫৮, আমাল: ৭২৩, ইবনুস সুন্নি, আমাল: ৭৯৮, নাসাঈ。
৩৫৩. সুনানে তিরমিজি: ৩৩৯৪। হাদিসটি আলযোগ্য দুর্বল。
৩৫৪. সুনানে আবু দাউদ: ৩৭৯৮, মুসনাদে আহমাদ ৩/৪৪২, আমাল: ৫৯৩, নাসাঈ。
৩৫৫. ইবনুস সুন্নি: ৭১৮, হাদিসটি খুবই দুর্বল।
৩৫৬. সহিহ মুসলিম: ২৭১২, মুসনাদে আহমাদ ২/৭৯, আমাল: ৭২১, ইবনুস সুন্নি।
৩৫৭. সুনানে তিরমিজি: ৩৩৮৯, সুনানে আবু দাউদ: ৫০৬৭।
৩৫৮. সুনানে তিরমিজি: ৩৪০৭, আমাল: ৭৪৬, ইবনুস সুন্নি, আমাল: ৮১২, নাসাঈ, মুসনাদে আহমাদ ৪/১২৫।
৩৬০. আমাল: ৭১৪, ইবনুস সুন্নি, আমাল: ৭৭O, নাসাঈ।
৩৬১. আমাল: ৭১৯, ইবনুস সুন্নি。
৩৬২. আমাল: ৭৩৪, ইবনুস সুন্নি。
৩৬৩. আমাল: ৭৩৬, ইবনুস সুন্নি। হাদিসটি খুবই দুর্বল।
৩৬৪. ইবনুস সুন্নি: ৭৪৩।
৩৬৫. হাদিসটি ইমাম আবু বকর সুলাইমান বিন আশআস তার "শরিয়াতুল কারি" কিতাবে দুটি সূত্রে উল্লেখ করেছেন। তন্মধ্যে একটি সূত্র সহিহ।- আফুতুহাত ৩/১৭০।
৩৬৬. সুনানে আবু দাউদ: ৫০৫৯, আমাল: ৪০৪, নাসাঈ。
৩৬৭. সহিহ বুখারি: ১১৪৪, সুনানে আবু দাউদ: ৫০৬০, সুনানে তিরমিজি: ৩৪১১, সুনানে ইবনে মাজাহ: ৩৮৭৮।
৩৬৮. সুনানে আবু দাউদ: ৫০৬১, মুসতাদরাকে হাকেম ১/৫৪০।
৩৬৯. ইবনুস সুন্নি: ৭৫৭, আমাল: ৮৬৪, নাসাঈ, মুসতাদরাকে হাকেম ১/৫৪০।
৩৭০. ইবনুস সুন্নি: ৭৫৩। হাদিসটি খুবই দুর্বল।
৩৭১. সুনানে তিরমিজি: ৩৩৯৮, সুনানে ইবনে মাজাহ: ৩৮৭৪, আমাল: ৭৭0, ইবনুস সুন্নি, আমাল: ৭৯০, নাসাঈ।
৩৭২. মুয়াত্তা মালেক ১/২১৯।
৩৭৩. ইবনুস সুন্নি: ৭৪৯।
৩৭৪. ইবনুস সুন্নি: ৭৫০।
৩৭৫. সুনানে তিরমিজি: ৩৫১৮। হাদিসটি খুবই দুর্বল।
৩৭৬. সুনানে আবু দাউদ: ৩৮৯৩, সুনানে তিরমিজি: ৩৫১৯, ইবনুস সুন্নি: ৭৫৩, মুসনাদে আহমাদ ২/১৮১, আমাল: ৭৬৫, নাসাঈ, মুসতাদরাকে হাকেম ১/৫৪৮।
৩৭৭. সহিহ বুখারি: ৬৯৮৫, সুনানে তিরমিজিঃ ৩৪৪৯, মুসনাদে আহমাদ ৩/৮, আমাল: ৭৯৩, নাসাঈ, আমাল: ৭৬৮, ইবনুস সুন্নি।
৩৭৮. সহিহ বুখারি: ৫৭৪৭, সহিহ মুসলিম: ২২৬১।
৩৭৯. সহিহ মুসলিম: ২২৬২, সুনানে আবু দাউদ: ৫০২২, সুনানে ইবনে মাজাহঃ ৩৯০৮, মুসনাদে আহমাদ ৩/৩৫০, আমাল: ৯১১, নাসাঈ।
৩৮০. সুনানে তিরমিজি: ২২৯২।
৩৮১. আমাল: ৭৭০, ইবনুস সুন্নি। হাদিসটি খুবই দুর্বল।
৩৮২. আমাল: ৭৭৩, ইবনুস সুন্নি। হাদিসটি খুবই দুর্বল।
৩৮৩. ইবনুস সুন্নি: ৭৭২। হাদিসটি খুবই দুর্বল。

📘 আল আযকার > 📄 রাতের শেষভাগে ইস্তেগফার ও দুআ

📄 রাতের শেষভাগে ইস্তেগফার ও দুআ


প্রত্যেকে রাতের দ্বিতীয়ভাগে ইস্তেগফার ও দুআর প্রতি অনুপ্রেরণা সৃষ্টি করা
(২৬৬) হজরত আবু হুরায়রা রাদি. থেকে বর্ণিত আছে, নবি কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
يَنْزِلُ رَبُّنَا كُلَّ لَيْلَةٍ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا، حِيْنَ يَبْقَى ثُلُثُ اللَّيْلِ الْآخِرُ، فَيَقُوْلُ: مَنْ يَدْعُوْنِي فَأَسْتَجِيْبَ لَهُ؟ مَنْ يَسْأَلُنِي فَأُعْطِيَهُ؟ مَنْ يَسْتَغْفِرُنِي فَأَغْفِرَ لَهُ؟
অর্থ: যখন শেষ রাতের এক তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকে, তখন আমাদের প্রভু আল্লাহ তাআলা দুনিয়ার নিকটবর্তী আসমানে অবতরণ করে ডাকতে থাকেন, 'কে আছো যে আমাকে ডাকবে, আমি তার ডাকে সাড়া দেবো। কে আছো, যে আমার নিকট চাইবে, আমি তাকে দান করব। কে আছো, যে আমার কাছে ক্ষমা চাইবে, আমি তাকে ক্ষমা করে দেব। ৩৮৪
মুসলিম শরিফের অপর এক বর্ণনায় রয়েছে-
يَنْزِلُ اللهُ سُبْحَانَهُ وَتَعَالَى إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا كُلَّ لَيْلَةٍ حِيْنَ يَمْضِيْ ثُلُثُ اللَّيْلِ الْأَوَّلُ، فَيَقُوْلُ : أَنَا الْمَلِكُ أَنَا الْمَلِكُ؛ مَنْ ذَا الَّذِي يَدْعُوْنِي فَأَسْتَجِيْبَ لَهُ، مَنْ ذَا الَّذِي يَسْأَلُنِي فَأُعْطِيَهُ، مَنْ ذَا الَّذِي يَسْتَغْفِرُنِي فَأَغْفِرَ لَهُ، فَلَا يَزَالُ كَذَلِكَ حَتَّى يُضِيءَ الْفَجْرُ.
অর্থ: যখন রাতের এক তৃতীয়াংশ অতিবাহিত হয়, তখন আল্লাহ তাআলা প্রতি রাতে দুনিয়ার আসমানে অবতরণ করেন এবং বলতে থাকেন, আমি রাজাধিরাজ। এমন কে আছো, যে আমাকে ডাকবে, আমি তার ডাকে সাড়া দেবো। এমন কে আছো, যে আমার কাছে চাইবে, আমি তাকে দান করব। এমন কে আছো, যে আমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করবে, আমি তাকে ক্ষমা করে দেব। আল্লাহ তাআলা এভাবেই ফজর পর্যন্ত ডাকতে থাকেন। ৩৮৫
- অপর এক বর্ণনায় রয়েছে-
إِذَا مَضَى شَطْرُ اللَّيْلِ أَوْ ثُلُثَاهُ.
অর্থ: যখন অর্ধ রজনী অথবা রাতের দুই তৃতীয়াংশ অতিবাহিত হয়...।৩৮৬
(২৬৭) হজরত আমর বিন আবাসা রাদি. থেকে বর্ণিত আছে, তিনি রাসুল কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন-
أَقْرَبُ مَا يَكُونُ الرَّبُّ مِنَ الْعَبْدِ فِي جَوْفِ اللَّيْلِ الْآخِرِ؛ فَإِنِ اسْتَطَعْتَ أَنْ تَكُونَ مِمَّنْ يَذْكُرُ اللَّهَ فِي تِلْكَ السَّاعَةِ فَكُنْ.
অর্থ: আল্লাহ তাআলা শেষ রাতের মধ্যভাগে বান্দার অধিক নিকটবর্তী হন। সুতরাং যদি সম্ভব হয় তোমারা সেসব লোকের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাও, যারা এ সময় আল্লাহ তাআলার জিকির করে। -ইমাম তিরমিজি বলেন, হাদিসের মান হাসান সহিহ। ৩৮৭
দুআ কবুলের মুহূর্তটি পাওয়ার আশায় পুরো সময় দুআ করা
(২৬৮) হজরত জাবের রাদি. থেকে বর্ণিত আছে, আমি নবি কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি-
إِنَّ فِي اللَّيْلِ لَسَاعَةً لَا يُوَافِقُهَا رَجُلٌ مُسْلِمٌ يَسْأَلُ اللَّهَ تَعَالَى خَيْرًا مِنْ أَمْرِ الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ إِلَّا أَعْطَاهُ اللَّهُ إِيَّاهُ ، وَذَلِكَ كُلَّ لَيْلَةٍ.
অর্থ: রাতের বেলা এমন একটা সময়ে রয়েছে যে সময় কোন মুসলমান আল্লাহ তাআলার নিকট দুনিয়া ও আখেরাতের যে কোন কল্যাণ কামনা করে, আল্লাহ তাআলা তাকে তা দান করেন। আর এটা অর্থাৎ ঐ মূহুর্তটি প্রতি রাতেই রয়েছে। ৩৮৮

টিকাঃ
৩৮৪. সহিহ বুখারি: ৭৪৯৪, সহিহ মুসলিম: ৭৫৮।
৩৮৫. সহিহ মুসলিম: ৭৫৮/১৬৯।
৩৮৬. সহিহ মুসলিম: ৭৫৮।
৩৮৭. সুনানে আবু দাউদ: ১২৭৭, সুনানে তিরমিজি: ৩৫৭৯।
৩৮৮. সহিহ মুসলিম: ৭৫৭, মুসনাদে আহমাদ ৩/৩১৩।

📘 আল আযকার > 📄 আল্লাহ তাআলার সুন্দর নামসমূহের বিবরণ

📄 আল্লাহ তাআলার সুন্দর নামসমূহের বিবরণ


আল্লাহ তাআলা বলেন-
وَلِلَّهِ الْأَسْمَاءُ الْحُسْنَى فَادْعُوهُ بِهَا.
অর্থ: আল্লাহ তাআলার রয়েছে সুন্দর সুন্দর নাম। অতএব, তোমরা এগুলোর মাধ্যমে তাকে ডাকো। ৩৮৯
(২৬৯) হজরত আবু হুরায়রা রাদি. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
إِنَّ لِلَّهِ تَعَالَى تِسْعَةً وَتِسْعِيْنَ اسْمًا مِائَةً غَيْرَ وَاحِدَةٍ، مَنْ أَحْصَاهَا دَخَلَ الْجَنَّةَ ؛ هُوَ اللهُ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الرَّحْمَنُ الرَّحِيمُ الْمَلِكُ الْقُدُّوسُ السَّلَامُ الْمُؤْمِنُ الْمُهَيْمِنُ الْعَزِيزُ الْجَبَّارُ الْمُتَكَبِّرُ الْخَالِقُ الْبَارِئُ الْمُصَوِّرُ الْغَفَّارُ الْقَهَّارُ الْوَهَّابُ الرَّزَّاقُ الْفَتَّاحُ الْعَلِيمُ الْقَابِضُ الْبَاسِطُ الْخَافِضُ الرَّافِعُ الْمُعِزُّ الْمُذِلُّ السَّمِيعُ الْبَصِيرُ الْحَكَمُ الْعَدْلُ اللَّطِيفُ الْخَبِيرُ الحَلِيمُ الْعَظِيمُ الْغَفُورُ الشَّكُورُ الْعَلِيُّ الْكَبِيرُ الْحَفِيظُ الْمُقِيْتُ الْحَسِيْبُ الْجَلِيلُ الْكَرِيمُ الرَّقِيبُ الْمُجِيْبُ الْوَاسِعُ الْحَكِيمُ الْوَدُودُ الْمَجِيدُ الْبَاعِثُ الشَّهِيدُ الْحَقُّ الْوَكِيلُ الْقَوِيُّ الْمَتِينُ الْوَلِيُّ الْحَمِيدُ الْمُحْصِي الْمُبْدِئُ الْمُعِيدُ الْمُحْيِي الْمُمِيتُ الْحَيُّ الْقَيُّوْمُ الْوَاجِدُ الْمَاجِدُ الْوَاحِدُ الصَّمَدُ الْقَادِرُ الْمُقْتَدِرُ الْمُقَدِّمُ الْمُؤَخِّرُ الْأَوَّلُ الْآخِرُ الظَّاهِرُ الْبَاطِنُ الْوَالِي الْمُتَعَالِي الْبَرُّ التَّوَّابُ الْمُنْتَقِمُ الْعَفُوٌّ الرَّءُوْفُ مَالِكُ الْمُلْكِ ذُو الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ الْمُقْسِطُ الْجَامِعُ الْغَنِيُّ الْمُغْنِي الْمَانِعُ الضَّارُّ النَّافِعُ النُّوْرُ الْهَادِي الْبَدِيعُ الْبَاقِي الْوَارِثُ الرَّشِيدُ الصَّبُوْرُ.
অর্থ: নিশ্চয় আল্লাহ তাআলার ৯৯টি (এক কম ১০০টি) নাম রয়েছে। যে ব্যক্তি তা মুখস্ত করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। নিশ্চয় তিনি বেজোড়, তিনি বেজোড়কে ভালোবাসেন। তিনি আল্লাহ, যিনি ছাড়া কোন উপাস্য নেই। আর-রহমানু (পরম দয়াময়), আর-রাহিমু (অত্যন্ত দয়ালু), আল- মালিকু (বাদশাহ), আল-কুদ্দুসু (অতি পবিত্র), আস-সালামু (শান্তিদাতা), আল-মুমিনু (নিরাপত্তা দানকারী), আল-মুহাইমিনু (রক্ষণাবেক্ষণকারী), আল-আযিযু (মহাপরাক্রমশালী), আল-জাব্বারু (সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী), আল-মুতাকাব্বিরু (সর্বাপেক্ষা বড় ও মহান), আল-খালিকু (সর্বস্রষ্টা), আল-বারিউ (সৃষ্টিকর্তা), আল-মুসাওয়িরু (আকৃতি দানকারী), আল-গাফফারু (অসীম ক্ষমাকারী), আল-কাহহারু (সর্বশক্তির অধিকারী), আল-ওয়াহহাবু (সীমাহীন দানকারী), আররাজ্জাকু (রিযিকদাতা), আল- ফাত্তাহু (বিজয় দানকারী), আল-আলিমু (সর্বজ্ঞ), আল-কাবেদু (আয়ত্তকারী), আল-বাসিতু (প্রশস্তকারী), আল-খাফিদু (অবনতকারী), আররাফেয় (উন্নতি দানকারী), আল-মুয়িজু (সম্মানদানকারী), আল-মুযিল্লু (অপমানকারী), আসসামীয়ু (সর্বশ্রোতা), আল-বাসিরু (সর্বদ্রষ্টা), আল-হাকামু (বিধানকারী), আল-আদলু (ন্যায়বিচারকারী), আল-লাতিফু (সূক্ষ্ম দয়ালু), আল-খাবিরু (সর্বজ্ঞ), আল-হালিমু (অত্যন্ত ধৈর্যশীল), আল-আযিমু (অতি মহান), আল-গাফুরু (ক্ষমাশীল), আশ-শাকুরু (যথাযথ মূল্যায়নকারী), আল-আলিয়্যু (মহান), আল-কাবিরু (অতি বড়), আল-হাফিজু (রক্ষাকারী), আল-মুকিতু (অন্নদানকারী), আল-হাসিবু (হিসাব গ্রহণকারী), আল-জালিলু (অত্যন্ত মর্যাদাশীল), আল-কারিমু (অত্যন্ত সম্মানী), আররাকিবু (নিরীক্ষণকারী), আল-মুজিবু (প্রার্থনা গ্রহণকারী), আল-ওয়াসেতু (অসিম), আল-হাকিমু (মঙ্গলময়), আল-ওয়াদুদু (অত্যন্ত স্নেহময়), আল-মাজিদু (অত্যন্ত মর্যাদাশীল), আল-বায়িসু (পুনর্জীবনদাতা), আশশাহিদু (সর্বদা বিদ্যমান), আল-হাক্কু (চির সত্য), আল-ওয়াকিলু (সমাধানকারী), আল-কাবিয়্যু (অপরিমেয় শক্তিশালী), আল-মাতিনু (অত্যন্ত মজবুত), আল-ওয়ালিয়্যু (তত্ত্বাবধানকারী), আল-হামিদু (সর্বতোভাবে প্রশংসিত), আল-মুহসি (হিসাব রক্ষাকারী), আল-মুবদিউ (আদি সৃষ্টিকারী), আল-মুয়িদু (পুনরায় সৃষ্টিকারী), আল-মুহয়ি (জীবন দানকারী), আল-মুমিতু (মৃত্যু দানকারী), আল-হাইয়ু (চিরঞ্জীব), আল-কাইয়্যুমু (চির প্রতিষ্ঠিত), আল-ওয়াজিদু (সর্বপ্রাপক), আল-মাজিদু (মর্যাদাবান), আল-ওয়াহিদু (অদ্বিতীয়), আল-আহাদু (একক), আসসামাদু (অমুখাপেক্ষী), আল-কাদিরু (সর্বশক্তিমান), আল-মুকতাদিরু (সর্বময় ক্ষমতাবান), আল-মুকাদ্দিমু (পূর্বের হিসাব গ্রহণকারী), আল-আউওয়ালু (আদি), আল-আখিরু (অন্ত), আযযাহিরু (প্রকাশ্য), আল-বাতিনু (গুপ্ত), আল-ওয়ালি (মহাশাসক), আল-মুতায়ালি (উচ্চ থেকে উচ্চ), আল-বাররু (পরম উপকারী), আততাওয়াবু (তাওবা গ্রহণকারী), আল-মুনতাকিমু (প্রতিশোধ গ্রহণকারী), আল-আফুয়্যু (ক্ষমাকারী), আর রাউফু (স্নেহময়), মালিকুল মুলকি (সমগ্র পৃথিবীর মালিক), যুল জালালি ওয়াল ইকরাম (সম্মান ও প্রতিপত্তিশালী), আল-মুকসিতু (ন্যায় বিচারকারী), আল-জামেয়ু (একত্রকারী), আল-গানিয়্যু (ধনী), আল-মুগনি (ধন-সম্পদ দানকারী), আল-মানিয়ু (নির্ধানকারী), আদদাররু (লোকসানে পতিতকারী), আন-নাফেযু (লাভবান করার মালিক), আন-নুরু (আলো দানকারী), আল-হাদি (হেদায়াত দানকারী), আল-বাদিয়ু (বিনা নমুনাতে সৃষ্টিকারী), আল-বাকি (চিরস্থায়ী), আল-ওয়ারেসু (উত্তরাধিকারী), আর রাশিদু (পথপ্রদর্শক), আসসাবুরু (ধৈর্যধারণকারী)।
হাদিসটি ইমাম বুখারি ও ইমাম মুসলিম যৌথভাবে يُحِبُّ الوِثر পর্যন্ত বর্ণনা করেছেন। পরবর্তী অংশ ইমাম তিরমিজি ও অন্যান্যরা হাসান সূত্রে বর্ণনা করেছেন।
উক্ত হাদিসের শুরুর অংশে مَنْ أَحْصَاهَا (যে তা সংরক্ষণ করে) এর অর্থ হল, 'যে মুখস্থ করে', এই ব্যাখ্যাটি করেছেন ইমাম বুখারি ও অধিকাংশ মুহাদ্দিসিনে কেরাম। সমর্থন করে সহিহ বর্ণনায় আছে- যে ব্যক্তি তা মুখস্ত করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আবার কেউ কেউ বলেন, مَنْ أَحْصَاهَا এর অর্থ হল- 'যে ব্যক্তি তার অর্থ জেনেছে এবং তার প্রতি ঈমান এনেছে। আবার কেহ বলেন, مَنْ أَحْصَاهَا অর্থ হল- যে ব্যক্তি যত্নসহকারে এগুলো আয়ত্ত করে এবং এর অর্থ অনুযায়ী যথাসম্ভব আমল করে। ৩৯০

টিকাঃ
৩৮৯. সুরা আরাফ: ১৮০।
৩৯০. সহিহ বুখারি: ৬৪১০, সহিহ মুসলিম: ২৬৭৭।

লিঙ্ক শেয়ার করুন
close

লিঙ্ক কপি করুন