📄 টয়লেটে প্রবেশের দুআ
(৫৪) হজরত আনাস রাদি. থেকে বর্ণিত যে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন বাথরুমে প্রবেশের ইচ্ছা করতেন তখন এ দুআটি পড়তেন-
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوْذُ بِكَ مِنَ الْخُبُثِ وَالْخَبَائِثِ.
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিনাল খুবুসি ওয়াল খাবাইস।
অর্থ: হে আল্লাহ, আমি আপনার নিকট অনিষ্টকর নারী ও পুরুষ শয়তান থেকে আশ্রয় কামনা করি। ৯০
(৫৫) সহিহ বুখারি ও সহিহ মুসলিম ব্যতীত অন্যান্য কিতাবে আছে-
بِسْمِ اللهِ ، اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوْذُ بِكَ مِنَ الْخُبُثِ وَالْخَبَائِثِ.
উচ্চারণ: বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিনাল খুবুসি ওয়াল খাবাইস। ৯১
অর্থ: আল্লাহর নামে শুরু করলাম। হে আল্লাহ, আমি আপনার নিকট অনিষ্টকর নারী ও পুরুষ শয়তান থেকে আশ্রয় কামনা করি।
(৫৬) হজরত আলি রাদি. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
سَتْرُ مَا بَيْنَ أَعْيُنِ الْجِنِّ وَعَوْرَاتِ بَنِي آدَمَ : إِذَا دَخَلَ أَحَدُهُمُ الْخَلَاءَ، أَنْ يَقُولَ: بسْمِ الله .
অর্থ: মানুষের সতর ও জিনদের চোখের মধ্যকার পর্দা হল টয়লেটে প্রবেশের সময় 'বিসমিল্লাহ' বলা। ৯২
ইমাম তিরমিজি রহ. হাদিসটি বর্ণনা করে বলেন, এর সনদ বেশি শক্তিশালী নয়। তবে আগেই বর্ণনা করা হয়েছে যে, ফযিলত প্রসঙ্গ হলে দুর্বল হাদিসের ওপর আমল করা যাবে। আর খালি মাঠে বা দেয়াল ঘেরা ঘরে হোক এই দুআটি পড়া যাবে। তবে মুস্তাহাব হল প্রথমে বিসমিল্লাহ পড়া এরপর উল্লিখিত দুআটি পড়া।
(৫৭) হজরত ইবনে উমর রাদি. থেকে বর্ণিত-
أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ إِذَا دَخَلَ الْخَلَاءَ قَالَ: اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوْذُ بِكَ مِنَ الرِّجْسِ النَّجِسِ الخَبِيثِ الْمُخْبِثِ الشَّيْطَانِ الرَّحِيمِ.
অর্থ: নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন বাথরুমে যেতেন তখন এই দুআ পড়তেন-
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوْذُ بِكَ مِنَ الرَّجْسِ النَّجِسِ الْخَبِيْثِ الْمُخْبِثِ: الشَّيْطَانِ الرَّحِيمِ.
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিনার রিজসিন নাজিসিল খাবিসিল মুখবিসিশ শাইতানির রাজিম। ৯৩
অর্থ: হে আল্লাহ, আমি আপনার নিকট পঙ্কিল, অপবিত্র, দুষ্ট এবং অন্যকে দুষ্টকারী অভিশপ্ত শয়তান থেকে আশ্রয় কামনা করি।
টিকাঃ
৯০. সহিহ বুখারি: ১৪২; সহিহ মুসলিম: ৩৭৫।
৯১. সুনানে তিরমিজি: ০৫, সুনানে আবু দাউদ: ০৪, কিতাবুদ দুআঃ ২৮৬৪; তবারানি, আলমুসান্নাফ ১/১১, ইবনে আবি শাইবাহ।
৯২. সুনানে তিরমিজি: ৬০৬।
৯৩. আমালুল ইয়াউমি ওয়াল্লাইলাহ: ২৫, ইবনুস সুন্নি, কিতাবুদ দুআঃ ৩৬৭, তবারানি।
📄 বাথরূমে জিকির বা কথা বলা নিষেধ
টয়লেট করা অবস্থায় জিকির করা ও কথা বলা মাকরুহ। চাই দেয়াল ঘেরা বাথরুম হোক বা খোলা হোক। সকল দুআ ও জিকির এবং সবধরনের কথা নিষিদ্ধ। তবে একান্ত প্রয়োজনীয় কথার বিষয়টি ভিন্ন। এমনকি, হাঁচি দিয়ে আলহামদুলিল্লাহ বলা, হাঁচির জবাব, সালামের উত্তর, মুআজ্জিনের আযানের জবাব দেয়া যাবে না। সালামকারী উত্তর কামনা করতে পারবে না। এগুলো সব মাকরূহে তানযিহি। হারাম নয়। কেউ যদি হাঁচি দেয় এবং মনে মনে জিহ্বা না নাড়িয়ে আলহামদুলিল্লাহ বলে, তাহলে কোন সমস্যা নেই। অনুরূপভাবে সহবাস অবস্থায় জিকির-আজকারের হুকুম এটিই।
(৫৮) আবদুল্লাহ বিন উমর রাদি. থেকে বর্ণিত-
أَنَّ رَجُلًا مَرَّ وَرَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَبُوْلُ، فَسَلَّمَ، فَلَمْ يَرُدَّ عَلَيْهِ.
অর্থ: এক ব্যক্তি প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন তখন তিনি পেশাব করছিলেন, লোকটি নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সালাম দিলেন; তবে তিনি সালামের উত্তর দেননি। ৯৪
(৫৯) মুহাজির বিন কুনফুয রাদি. থেকে বর্ণিত-
أَنَّهُ أَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ يَبُوْلُ فَسَلَّمَ عَلَيْهِ، فَلَمْ يَرُدَّ عَلَيْهِ حَتَّى تَوَضَّأَ ، ثُمَّ اعْتَذَرَ إِلَيْهِ فَقَالَ: إِنِّي كَرِهْتُ أَنْ أَذْكُرَ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ إِلَّا عَلَى طُهْرٍ أَوْ قَالَ: عَلَى طَهَارَةِ.
অর্থ: তিনি নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এলেন, তখন তিনি পেশাব করছিলেন। তিনি সালাম দিলেন; কিন্তু নবিজি কোন উত্তর দিলেন না। এমনকি, অজু করলেন। অতঃপর ওজর পেশ করে তিনি বললেন, আমি পবিত্র অবস্থা ছাড়া আল্লাহর জিকির করতে অপছন্দ করছিলাম। ৯৫
টিকাঃ
৯৪. সহিহ মুসলিম: ৩৭০।
৯৫. সুনানে আবু দাউদ: ১৭, সুনানে নাসাঈ: ১/৩৭, সুনানে ইবনে মাজাহঃ ৩৫০।
📄 পায়খানা-পেশাবকারী ব্যক্তিকে সালাম দেয়া নিষেধ
পূর্বোল্লেখিত হাদিসসমূহের বিবেচনায় পায়খানা-পেশাবকারী ব্যক্তিকে সালাম দেয়া মাকরুহ। যদি কেউ সালাম দেয়, তাহলে তার জবাব দেয়া হবে না।
📄 বাথরূম থেকে বের হওয়ার দুআ
বাথরুম থেকে বের হয়ে বলবে:
غُفْرَانَكَ، الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَذْهَبَ عَنِّي الْأَذُى، وَعَافَانِي.
উচ্চারণ: গুফরনাক, আলহামদু লিল্লাহিল্লাযি আযহাবা আন্নিল আযা ওয়া আফানি।
অর্থ: হে আল্লাহ, আপনার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করি। সকল প্রশংসা সেই মহান আল্লাহ তাআলার জন্য, যিনি আমার থেকে কষ্টদায়ক বস্তু দূর করেছেন এবং আমাকে নিরাপদ করেছেন। ৯৬
সুনানে আবু দাউদ ও সুনানে তিরমিজিতে সহিহ সনদে বর্ণিত আছে-
أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ إِذَا خَرَجَ مِنَ الْغَائِطِ قَالَ: غُفْرَانَكَ.
অর্থ: রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন টয়লেট থেকে বের হতেন তখন এ দুআটি পড়তেন-
غُفْرَانَكَ (গুফরানাক): আমি আপনার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। ৯৭
(৬০) হজরত ইবনে উমর রাদি. থেকে বর্ণিত-
كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا خَرَجَ مِنَ الْخَلَاءِ قَالَ: الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَذَاقَنِي لَذَّتَهُ، وَأَبْقَى فِي قُوَّتَهُ، وَأَذْهَبَ عَنِّي أَذَاهُ.
অর্থ: রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন টয়লেট থেকে বের হতেন তখন বলতেন-
الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَذَاقَنِي لَذَّتَهُ، وَأَبْقَى فِي قُوَّتَهُ، وَأَذْهَبَ عَنِّي أَذَاهُ.
উচ্চারণ: আলহামদুলিল্লা হিল্লাযি আযাকানি লাযযাতাহু, ওয়া আবকা ফিয়্যা কুওয়াতাহু, ওয়া আযহাবা আন্নিল আযাহু। ৯৮
অর্থ: সমুদয় প্রশংসা ঐ আল্লাহর জন্য, যিনি আমাকে এই খাদ্যের স্বাদ আস্বাদন করিয়েছেন, এর শক্তি আমার ভিতরে রেখে দিয়েছেন এবং আমার থেকে এর কষ্টদায়ক বস্তু দূর করে দিয়েছেন।
টিকাঃ
৯৬. সুনানে আবু দাউদ: ৩০, সুনানে তিরমিজি: ০৭।
৯৭. সুনানে আবু দাউদ: ৩০, সুনানে তিরমিজি: ০৭, সুনানে নাসাঈ: ৯৮২৫, সুনানে ইবনে মাজাহ: ৩০১।
৯৮. আমালুল ইয়াউমি ওয়াল্লাইলাহ: ২৫, ইবনুস সুন্নি, কিতাবুদ দুআঃ ৩৭০, তবারানি।