📘 আল আযকার > 📄 জামা-জুতা পরিধান ও খোলার পদ্ধতি

📄 জামা-জুতা পরিধান ও খোলার পদ্ধতি


কাপড়, জুতা, পাজামা ইত্যাদি পরিধান করার মুস্তাহাব পদ্ধতি হল, জামায় ডান হাত আর পাজামা ডান পা দিয়ে পরিধান করা। খোলার সময় প্রথমে বাম এরপরে ডানদিক খোলা। অনুরূপভাবে সুরমা, মিসওয়াক, নখ কাটা, বগলের চুল ছাঁটা, মাথা মুণ্ডানো, মসজিদে প্রবেশ করা, বাথরুম থেকে বের হওয়া, অজু, গোসল, পানাহার, মুসাফাহা, হাজরে আসওয়াদ স্পর্শ করা, কুলুখ ব্যবহার করা ইত্যাদি কাজ ডান দিক দিয়ে শুরু করবে। আর শেষ করবে, বের হবে বা খুলবে বামদিক দিয়ে।
(৩৯) হজরত আয়েশা রাদি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-
كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُحِبُّ التَّيَمُّنَ مَا اسْتَطَاعَ فِي شَأْنِهِ كُلِّهِ، فِي طُهُوْرِهِ وَتَرَجُلِهِ وَتَنَعُلِهِ.
অর্থ: রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সব কাজে ডান দিককে প্রাধান্য দেয়াকে পছন্দ করতেন। এমনকি পবিত্রতা অর্জন, সিঁথি কাটা, ও জুতা পরিধান করার সময়ও ডানদিককে প্রাধান্য দিতেন। ৭২
(৪০) হজরত আয়েশা রাদি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-
كَانَتْ يَدُ رَسُوْلِ اللهِ ، صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْيُمْنَى لِطُهُوْرِهِ وَطَعَامِهِ، وَكَانَتْ يَدُهُ الْيُسْرَى لِخَلَائِهِ، وَمَا كَانَ مِنْ أَذًى.
অর্থ: রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পবিত্রতা ও আহারের ক্ষেত্রে ডান হাত ব্যবহার করতেন। আর শৌচকার্য ও প্রত্যেক কষ্টদায়ক কাজের ক্ষেত্রে বামহাত ব্যবহার করতেন। ৭৩
(৪১) সুনানে আবু দাউদ ও সুনানে বায়হাকিতে হজরত হাফসা রাদি. থেকে বর্ণিত-
أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَجْعَلُ يَمِينَهُ لِطَعَامِهِ وَشَرَابِهِ وَثِيَابِهِ، وَيَجْعَلُ شِمَالَهُ لِمَا سِوَى ذَلِكَ.
অর্থ: রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পানাহার ও পরিধান করার ক্ষেত্রে তাঁর ডানহাত ব্যবহার করতেন। আর অন্যান্য কাজে বামহাত ব্যবহার করতেন। ৭৪
(৪২) হজরত আবু হুরায়রা রাদি. থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
إِذَا لَبِسْتُمْ وَإِذَا تَوَضَّأْتُمْ فَابْدَءُوا بِأَيَامِنِكُمْ.
অর্থ: যখন তোমরা পোশাক পরিধান করো ও অজু করো তখন তোমরা ডান দিক থেকে শুরু করো। ৭৫
এ অধ্যায়ে এ ছাড়াও আরো অনেক হাদিস আছে। আল্লাহ তাআলা ভালো জানেন।

টিকাঃ
৭২. সহিহ বুখারি: ৪২৬; সহিহ মুসলিম: ২৬৮।
৭৩. সুনানে আবু দাউদ: ৩২; সুনানে বায়হাকি ১/১১৩।
৭৪. সুনানে আবু দাউদ: ৪১৪১; সুনানে তিরমিজি: ১৭৬৬; সুনানে বায়হাকি ১/৮৬।
৭৫. সুনানে আবু দাউদ: ৩৩।

📘 আল আযকার > 📄 গোসল, ঘুম ইত্যাদির জন্য কাপড় খোলার সময় যে দুআ পড়বে

📄 গোসল, ঘুম ইত্যাদির জন্য কাপড় খোলার সময় যে দুআ পড়বে


আমালুল ইয়াউমি ওয়াল্লাইলাহ গ্রন্থে হজরত আনাস রাদি. থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-
سَتْرُ مَا بَيْنَ أَعْيُنِ الْجِنِّ وَعَوْرَاتِ بَنِي آدَمَ أَنْ يَقُوْلَ الرَّجُلُ الْمُسْلِمُ إِذَا أَرَادَ أَنْ يَطْرَحَ ثِيَابَهُ: بِسْمِ اللَّهِ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ.
অর্থ: বনি আদমের সতর ও জিনদের দৃষ্টি মাঝে অন্তরায় হল যখন মুসলমান ব্যক্তি কাপড় খোলার ইচ্ছা করবে তখন এ দুআটি পড়বে-
بِسْمِ اللَّهِ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ.
উচ্চারণ: বিসমিল্লাহিল্লাযি লা ইলাহা ইল্লা হু। ৭৬
অর্থ: ঐ সত্ত্বার নামে শুরু করছি, যিনি ছাড়া আর কোন মাবুদ নেই।

টিকাঃ
৭৬. আমালুল ইয়াউমি ওয়াল্লাইলাহ: ২৭৪।

📘 আল আযকার > 📄 ঘর থেকে বের হওয়ার দুআ

📄 ঘর থেকে বের হওয়ার দুআ


(৪৪) হজরত উম্মে সালামা রাদি. থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন-
مَا خَرَجَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ بَيْتِي قَطُّ إِلَّا رَفَعَ طَرْفَهُ إِلَى السَّمَاءِ فَقَالَ: اللَّهُمَّ أَعُوْذُ بِكَ أَنْ أَضِلَّ، أَوْ أُضَلَّ ، أَوْ أَزِلَّ، أَوْ أُزَلَّ، أَوْ أَظْلِمَ، أَوْ أُظْلَمَ، أَوْ أَجْهَلَ، أَوْ يُجْهَلَ عَلَيَّ.
অর্থ: রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখনই আমার ঘর থেকে বের হতেন, তখন আকাশের দিকে তাকিয়ে এই দুআ পড়তেন-
اللَّهُمَّ أَعُوْذُ بِكَ أَنْ أَضِلَّ، أَوْ أُضَلَّ، أَوْ أَزِلَّ، أَوْ أُزَلَّ، أَوْ أَظْلِمَ، أَوْ أُظْلَمَ، أَوْ أَجْهَلَ، أَوْ يُجْهَلَ عَلَيَّ.
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযুবিকা আন আদিল্লা আউ উদাল্লা আউ আযিল্লা আউ উযাল্লা আউ আযলিমা আউ উযলামা আউ আজহালা আউ ইয়ুজহালা আলাইয়্যা।
অর্থ: হে আল্লাহ, আমি আপনার নিকট পথভ্রষ্ট হওয়া বা পথভ্রষ্ট করা, গুনাহ করা বা গুনাহের দিকে ধাবিত করা, যুলুম করা বা যুলুমের শিকার হওয়া, অজ্ঞতা প্রকাশ করা বা অজ্ঞত প্রকাশের পাত্র হওয়া থেকে আশ্রয় চাইছি।- ইমাম তিরমিজি রহ. হাদিসটিকে 'হাসান সহিহ' বলেছেন। সুনানে তিরমিজির আরেক বর্ণনায় বহুবচনের শব্দ যোগে আছে। ৭৭
نَعُوْذُ بِكَ مِنْ أَنْ نَزِلَّ، أَوْ نَضِلَّ، أَوْ نَظْلِمَ، أَوْ نُظْلَمَ، أَوْ نَجْهَلَ، أَوْ يُجْهَلَ عَلَيْنَا.
(৪৫) হজরত আনাস রাদি. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-
إِذَا خَرَجَ الرَّجُلُ مِنْ بَيْتِهِ، فَقَالَ: بِاسْمِ اللهِ، تَوَكَّلْتُ عَلَى اللَّهِ، لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللهِ قَالَ: يُقَالُ حِينَئِذٍ : هُدِيْتَ وَكُفِيْتَ وَوُقِيْتَ، فَتَتَنَكَّى لَهُ الشَّيَاطِينُ.
অর্থ: যে ব্যক্তি ঘর থেকে বের হওয়ার সময় এ দুআটি পড়ে-
بِاسْمِ اللهِ، تَوَكَّلْتُ عَلَى اللَّهِ، لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ .
উচ্চারণ: বিসমিল্লাহি তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহ, লা হাউলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।
অর্থ: আল্লাহর নামে শুরু করছি, আল্লাহর ওপর ভরসা করছি। আল্লাহ ছাড়া আর কারো কোন ক্ষমতা ও শক্তি নেই।
প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তখন তাকে বলা হয়, 'তোমাকে হেদায়েত দেয়া হয়েছে, যথেষ্ট করা হয়েছে এবং হেফাজত করা হয়েছে।' এ ঘোষণা শোনে শয়তান তার থেকে দূরে সরে যায়।
ইমাম তিরমিজি রহ. বলেন, হাদিসটি হাসান। সুনানে আবু দাউদের বর্ণনায় আছে-
فَيَقُولُ: يَعْنِي الشَّيْطَانُ لِشَيْطَانٍ آخَرَ : كَيْفَ لَكَ بِرَجُلٍ قَدْ هُدِيَ وكُفِيَ وَوَقِي؟
অর্থ: এক শয়তান আরেক শয়তানকে বলে, যাকে হেদায়েত দেয়া হয়েছে, নিরাপত্তা দান করা হয়েছে ও হেফাজত করা হয়েছে, তার ওপর তুমি কিভাবে আধিপত্য বিস্তার করবে? ৭৮
(৪৬) হজরত আবু হুরায়রা রাদি. থেকে বর্ণিত আছে-
أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ إِذَا خَرَجَ مِنْ بَيْتِهِ قَالَ: بِسْمِ اللَّهِ، ، التَّكْلَانُ على الله، ، لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللهِ .
অর্থ: প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ঘর হতে বের হতেন তখন এ দুআটি পড়তেন-
بِسْمِ اللهِ ، التَّكْلَانُ عَلَى اللهِ ، لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللهِ .
উচ্চারণ: বিসমিল্লাহ, আত্মকলানু আলাল্লাহ, লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।
অর্থ: আল্লাহর নামে শুরু করছি, ভরসা আল্লাহর ওপর। আল্লাহ ছাড়া আর কারো কোন ক্ষমতা ও শক্তি নেই। ৭৯

টিকাঃ
৭৭. সুনানে আবু দাউদ: ৫০৯৪; সুনানে তিরমিজি: ৩৪২৭; সুনানে নাসাঈ: ২৬৮; সুনানে ইবনে মাজাহ: ৩৮৮, আমালুল ইয়াউমি ওয়াল্লাইলাহ: ৮৫, নাসাঈ।
৭৮. সুনানে আবু দাউদ: ৫০৯৫; সুনানে তিরমিজি: ৩৪২৬; সুনানে নাসাঈ: ৯৮৩৭।
৭৯. সুনানে ইবনে মাজাহঃ ৩৮৮৫; আমালুল ইয়াউমি ওয়াল্লাইলাহ: ১৭৬, ইবনুস সুন্নি।

📘 আল আযকার > 📄 ঘরে প্রবেশের দুআ

📄 ঘরে প্রবেশের দুআ


ঘরে প্রবেশের সময় বিসমিল্লাহ বলা, বেশি বেশি জিকির করা, ঘরে কোন মানুষ থাকুক বা না থাকুক সর্বাবস্থায় সালাম দেয়া মুস্তাহাব। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-
فَإِذَا دَخَلْتُمْ بُيُوتًا فَسَلِّمُوا عَلَى أَنْفُسِكُمْ تَحِيَّةً مِنْ عِنْدِ اللَّهِ، مُبَارَكَةً طَيِّبَةً.
অর্থ: যখন তোমরা ঘরে প্রবেশ করতে চাও তখন তোমরা আপন লোকদের দুআ স্বরূপ সালাম করো, আল্লাহর পক্ষ থেকে এটা কল্যাণময় ও বরকত।৮০
(৪৭) হজরত আনাস রাদি. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলেছেন-
يَا بُنَيَّ إِذَا دَخَلْتَ عَلَى أَهْلِكَ فَسَلَّمْ يَكُوْنُ بَرَكَةً عَلَيْكَ وَعَلَى أَهْلِ بَيْتِكَ.
অর্থ: হে বৎস, যখন তুমি তোমার পরিবার পরিজনের কাছে প্রবেশ করবে, তখন তাদের সালাম দেবে। এটা তোমার ও তোমার পরিবার পরিজনের জন্য বরকত হবে।৮১ ইমাম তিরমিজি রহ. হাদিসটিকে হাসান সহিহ বলেছেন।
(৪৮) হজরত আবু মালেক আশআরি রাদি. (তাঁর নাম হারিস, কারো মতে- উবাইদ, কেউ বলেন, কাব, কেউ বলেছেন- আমর) থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-
إِذَا وَلَجَ الرَّجُلُ بَيْتَهُ، فَلْيَقُلْ : اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ خَيْرَ الْمَوْلَجِ، وَخَيْرَ الْمَخْرَجِ، بِسْمِ اللهِ، وَلَجْنَا، وَبِسْمِ اللهِ، خَرَجْنَا، وَعَلَى اللهِ رَبِّنَا تَوَكَّلْنَا، ثُمَّ لِيُسَلِّمْ عَلَى أَهْلِهِ.
অর্থ: যখন তোমাদের মধ্যে কেউ ঘরে প্রবেশ করবে তখন সে যেন এ দুআ পড়ে-
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ خَيْرَ الْمَوْلَجِ، وَخَيْرَ الْمَخْرَجِ، بِسْمِ اللهِ، وَلَجْنَا، وَبِسْمِ اللهِ، خَرَجْنَا، وَعَلَى اللهِ، رَبِّنَا تَوَكَّلْنَا.
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা খায়রাল মাউলাজি ওয়া খায়রাল মাখরাজি, ওয়া আলাল্লাহি রাব্বানা তাওয়াক্কালনা।
অর্থ: হে আল্লাহ, আমি আপনার নিকট প্রবেশস্থলের কল্যাণ এবং বের হওয়ার স্থানের মঙ্গল কামনা করছি। আমরা আল্লাহ তাআলার নামে প্রবেশ করলাম, আল্লাহ তাআলার নামে বের হলাম এবং আমরা আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ তাআলার ওপর ভরসা করলাম। অতঃপর পরিবারের লোকদের সালাম দিবে। ৮২-ইমাম আবু দাউদ রহ. এ হাদিসটির সনদকে দুর্বল বলেননি। সুতরাং এটি সহিহ বলে বিবেচিত।
(৪৯) হজরত আবু উমামা বাহেলি রাদি. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-
ثَلَاثَةُ كُلُّهُمْ ضَامِنٌ عَلَى اللهِ عَزَّ وَجَلَّ: رَجُلٌ خَرَجَ غَازِيًا فِي سَبِيلِ اللَّهِ، فَهُوَ ضَامِنٌ عَلَى اللهِ، حَتَّى يَتَوَفَّاهُ فَيُدْخِلَهُ الْجَنَّةَ، أَوْ يَرُدَّهُ بِمَا نَالَ مِنْ أَجْرٍ وَغَنِيمَةٍ، وَرَجُلٌ رَاحَ إِلَى الْمَسْجِدِ، فَهُوَ ضَامِنٌ عَلَى اللهِ، حَتَّى يَتَوَفَّاهُ فَيُدْخِلَهُ الْجَنَّةَ، أَوْ يَرُدَّهُ بِمَا نَالَ مِنْ أَجْرٍ وَغَنِيمَةٍ، وَرَجُلٌ دَخَلَ بَيْتَهُ بِسَلَامٍ فَهُوَ ضَامِنٌ عَلَى اللَّهِ، عَزَّ وَجَلَّ.
অর্থ: তিন ব্যক্তির প্রত্যেকেই আল্লাহর নিরাপত্তার মধ্যে থাকে-
১. ঐ ব্যক্তি যে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদে বের হয়। শহিদ হয়ে জান্নাতে প্রবেশ করা অথবা কাঙ্ক্ষিত সওয়াব ও গনিমত নিয়ে ফিরে আসা পর্যন্ত তিনি আল্লাহর নিরাপত্তার মধ্যে থাকেন।
২. ঐ ব্যক্তি যিনি মসজিদে গমন করেন। মৃত্যুবরণ করে জান্নাতে প্রবেশ করা অথবা কাঙ্ক্ষিত সওয়াব ও উপহার নিয়ে ফিরে আসা পর্যন্ত তিনি আল্লাহর নিরাপত্তার মধ্যে থাকেন।
৩. ঐ ব্যক্তি যিনি সালাম দিয়ে ঘরে প্রবেশ করেন, তিনিও আল্লাহ তাআলার নিরাপত্তা বেষ্টনীতে থাকেন।
ইমাম আবু দাউদ রহ. সহ অন্যান্যরা এ হাদিসটি হাসান সনদে বর্ণনা করেছেন। এখানে 'নিরাপত্তার মধ্যে থাকা'র অর্থ হল, আল্লাহ তাআলা তার নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়ে নেন।৮০
(৫০) হজরত জাবের বিন আবদুল্লাহ রাদি. থেকে বর্ণিত, আমি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছি-
إِذَا دَخَلَ الرَّجُلُ بَيْتَهُ، فَذَكَرَ اللهَ عِنْدَ دُخُولِهِ وَعِنْدَ طَعَامِهِ، قَالَ الشَّيْطَانُ: لَا مَبِيتَ لَكُمْ، وَلَا عَشَاءَ، وَإِذَا دَخَلَ، فَلَمْ يَذْكُرِ اللَّهَ عِنْدَ دُخُولِهِ، قَالَ الشَّيْطَانُ: أَدْرَكْتُمُ الْمَبِيْتَ، وَإِذَا لَمْ يَذْكُرِ اللَّهَ عِنْدَ طَعَامِهِ، قَالَ: أَدْرَكْتُمُ الْمَبِيْتَ وَالْعَشَاءَ.
অর্থ: যখন কোন ব্যক্তি ঘরে প্রবেশের সময় জিকির করে (তথা সালাম দেয়) এবং খাবারের সময় জিকির করে (তথা বিসমিল্লাহ বলে,) তখন শয়তান বলে, তোমাদের ঘরে রাত্রিযাপন ও রাতের খাবারে অংশগ্রহণের সুযোগ নেই। আর যখন ঘরে প্রবেশের সময় জিকির করে না, তখন শয়তান বলে তোমাদের এখানে রাত্রিযাপনের সুযোগ হয়ে গেল। আর খাবারের সময় জিকির না করলে শয়তান বলে, তোমাদের এখানে রাত্রিযাপন ও খাবারে অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি হল। ৮৪
(৫১) হজরত আবদুল্লাহ বিন আমর ইবনুল আস রাদি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-
كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا رَجَعَ مِنَ النَّهَارِ إِلَى بَيْتِهِ يَقُوْلُ: اَلْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي كَفَانِي وَآوَانِي، اَلْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَطْعَمَنِي وَسَقَانِي، اَلْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي مَنَّ عَلَيَّ فَأَفْضَلَ، أَسْأَلُكَ أَنْ تُجِيرَنِي مِنَ النَّارِ.
অর্থ: যখন দিনের বেলায় রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘরে ফিরতেন তখন এ দুআ পড়তেন-
اَلْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي كَفَانِي وَآوَانِي، اَلْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَطْعَمَنِي وَسَقَانِي، اَلْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي مَنَّ عَلَيَّ فَأَفْضَلَ، أَسْأَلُكَ أَنْ تُجِيرَنِي مِنَ النَّارِ.
উচ্চারণ: আলহামদু লিল্লাহিল্লাযি কাফানি ওয়া আওয়ানি আলহামদু লিল্লাহিল্লাযি আত'আমানি ওয়া সাকানি আলহামদু লিল্লাহিল্লাযি মান্না আলাইয়া ফাআফযালা আসআলুকা আন তুজিরানি মিনান-নার। ৮৫
অর্থ: সকল প্রশংসা আল্লাহ পাকের, যিনি আমার জন্য যতেষ্ট এবং আমাকে বাসস্থান দিয়েছেন। সকল প্রশংসা আল্লাহ পাকের, যিনি আমাকে খাদ্য খেতে দিয়েছেন এবং পান করতে দিয়েছেন। সকল প্রশংসা আল্লাহ পাকের, যিনি আমার ওপর অনেক অনুগ্রহ করেছেন। আমি আপনার কাছ মিনতি করছি যেন, আমাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন।
মুয়াত্তা মালেক কিতাবে বর্ণিত আছে যে, কোনো বিরাণ ঘরে ঢুকলেও এভাবে বলা মুস্তাহাব-
السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ.
উচ্চারণ: আসসালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস সালিহিন।
অর্থ: আমাদের ওপর এবং আল্লাহর নেক বান্দাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। ৮৬

টিকাঃ
৮০. সুরা নূর: ৬১।
৮১ জামে তিরমিজি: ২৬৯৯।
৮২. সুনানে আবু দাউদ: ৫০৯৬।
৮৩. সুনানে আবু দাউদ: ২৪৯৪, আল আদাবুল মুফরাদ: ১০৯৪, সহিহ ইবনে হিব্বান: ৪১৬, মুসতাদরাকে হাকেম ২/৭৩।
৮৪. সহিহ মুসলিম: ২৪৯৪, সহিহ আবু দাউদ: ৩৭৬৫, আমালুল ইয়াউমি ওয়াল্লাইলাহ: ১৫৭, ইবনুস সুন্নি, আমালুল ইয়াউমি ওয়াল্লাইলাহ: ১৭৮, নাসাঈ।
৮৫. আমালুল ইয়াউমি ওয়াল্লাইলাহ: ১৫৮, ইবনুস সুন্নি।
৮৬. মুয়াত্তা মালেক: ২/৯৬২। দুআর অনুবাদ: উবায়দুল্লাহ

লিঙ্ক শেয়ার করুন
close

লিঙ্ক কপি করুন