📘 আল আযকার > 📄 দৈনন্দিনের আমলের কিতাব ও বক্ষ্যমাণ কিতাবের উৎসসমূহ

📄 দৈনন্দিনের আমলের কিতাব ও বক্ষ্যমাণ কিতাবের উৎসসমূহ


দিবা-রাত্রীর আমল সংক্রান্ত অনেক মূল্যবান কিতাব আমাদের পূর্বসূরীরা লিখে গেছেন। সেগুলোতে তারা মুত্তাসিল (অবিচ্ছিন্ন সূত্রে বর্ণিত) হাদিস বর্ণনা করেছেন। এমনকি একটি হাদিস অনেক সনদে বর্ণনা করেছেন। এর মধ্যে অন্যতম হল ইমাম নাসাঈ রহ. এর عَمَلُ الْيَوْمِ وَاللَّيْلَةِ (আমালুল ইয়াওমি ওয়াল লাইলাতি)।
তবে এর চেয়ে সুন্দর, মূল্যবান ও উপকারী কিতাব হল, ইবনুস সুন্নি রহ. এর عَمَلُ الْيَوْمِ وَاللَّيْلَةِ (আমালুল ইয়াওমি ওয়াল লাইলাতি)।
ইমাম নববি বলেন, আমি ইবনুস সুন্নি রহ. এর পুরো কিতাবটি পড়েছি শায়খ আবুল বাকা' খালেদ রহ. এর কাছে। তিনি পড়েছেন আল্লামা আবুল ইয়ুমন হাসান আল কিন্দি রহ. এর কাছে। তিনি পড়েছেন ইমাম আবুল হাসান সাদ আনসারি রহ. এর কাছে। তিনি পড়েছেন ইমাম আবু মুহাম্মদ আবদুর রহমান দাওনি রহ. এর কাছে। তিনি পড়েছেন কাজি আবু নাছর দিনাওরি রহ. এর কাছে। তিনি পড়েছেন স্বয়ং লেখক শায়খ আবু বকর আহমদ বিন মুহাম্মদ বিন ইসহাক আস সুন্নি রহ. এর কাছে।
আমি এখানে এই সনদটি উল্লেখ করেছি। কারণ, আমি ইবনুস সুন্নির কিতাব থেকে অনেক কিছুই নকল করব। তাই আমি কিতাবের শুরুতেই সনদটি উল্লেখ করেছি। এ পদ্ধতিটি মুহাদ্দিসিনে কেরামের নিকট স্বীকৃত। এখানে বিশেষভাবে এ কিতাবের সনদ উল্লেখ করার কারণ হল, ইবনুস সুন্নির কিতাবটি উক্ত বিষয়ে সবচেয়ে সন্নিবেশিত। অন্যথায় এ কিতাবে যা কিছুই আমি উল্লেখ করব সবকিছুই সহিহ সনদের মধ্যমে ধারাবাহিকভাবে আমি শুনেছি, আলহামদুলিল্লাহ। তবে কিছু বিরল ও দুর্লভ বিষয় আছে যেগুলো আমি ধারাবাহিক সনদে শুনিনি।
এই কিতাবে আমি ইসলামের মৌলিক পাঁচ কিতাব- সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম, সুনানে আবু দাউদ, সুনানে তিরমিজি এবং সুনানে নাসাঈ থেকে নকল করব।
এছাড়াও মুসনাদ ও সুনানের কিতাবাদি থেকে হাদিস বর্ণনা করব, যেমন- মুয়াত্তা মালিক, মুসনাদে ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বাল ও মুসনাদে আবু আওয়ানা, সুনানে ইবনে মাজাহ, দারাকুতনি, বায়হাকি ইত্যাদি প্রসিদ্ধ কিতাবসমূহ। তা ছাড়া জুয (হাদিসের বিষয়ভিত্তিক গ্রন্থ) থেকেও হাদিস বর্ণনা করব যা পাঠক অচিরেই দেখতে পাবেন। আর এখানে যা কিছু উল্লেখ করব, তা লেখক পর্যন্ত মুত্তাসিল সনদেই বর্ণনা করব। ইনশাআল্লাহ।

📘 আল আযকার > 📄 হাদিস গ্রন্থের উদ্ধৃতি প্রদান করা হয়েছে

📄 হাদিস গ্রন্থের উদ্ধৃতি প্রদান করা হয়েছে


আমি এই কিতাবে যেসব হাদিস উল্লেখ করব সেসব হাদিসের গ্রন্থের উদ্ধৃতি দেবো। যেসব হাদিস বুখারি, মুসলিমের উভয়টি বা যে কোন একটিতে আছে আমি সেগুলোকে কিতাবদ্বয়ের সাথে শুধু সম্পৃক্ত করব, হুকুম বয়ান করব না। কারণ, কিতাবদ্বয়ের সাথে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমেই উদ্দেশ্য হাসিল হয়ে যাবে। কারণ, সহিহ বুখারি ও মুসলিমে বর্ণিত সকল হাদিসই সহিহ। অন্যান্য কিতাবের হাদিসের ক্ষেত্রে সেগুলোকে আমি সুনান, মুসনাদ ইত্যাদি কিতাবের সম্পৃক্ত করব; সাথে সাথে বেশিরভাগ স্থানে হাদিসটির সহিহ, হাসান ও যাঈফ হওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট করে দেবো, যদি সেটি যাঈফ হয়ে থাকে। তবে কখনো কখনো সহিহ, হাসান ও যাঈফ কোনটিই উল্লেখ করব না।
আমি সুনানে আবু দাউদের অনেক হাদিস নকল করব। ইমাম আবু দাউদ রহ. বলেন- 'আমি এই কিতাবে যা উল্লেখ করেছি, তা সহিহ অথবা এর কাছাকাছি। আর কোন হাদিস বেশি দুর্বল হলে সে বিষয়টি আমি স্পষ্ট করে দিয়েছি। আর যেসব হাদিসের ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি, সেগুলো আমলযোগ্য। এবং কিছু হাদিস কিছু হাদিসের তুলনায় বেশি সহিহ।
আবু দাউদ রহ.-এর এই কথায় বিরাট ফায়দা আছে। তা হল, ইমাম আবু দাউদ রহ. তার সুনানে যেসব হাদিস বর্ণনা করেছেন এবং যেসব হাদিসের দুর্বলতার ব্যাপারে তিনি কিছু বলেননি, সেসব হাদিস তার মতে সহিহ অথবা হাসান। উভয় প্রকার হাদিস দ্বারা আহকামের ক্ষেত্রেই দলিল দেয়া যায়। অতএব, ফাযায়েলের ক্ষেত্রে তো অবশ্যই দলিল দেয়া যাবে।
অতএব, যখন এই কিতাবে আবু দাউদ রহ. থেকে বর্ণিত কোন হাদিস দেখা যাবে, আর সে হাদিসের দুর্বলতার ব্যাপারে কোন কথা নেই, তাহলে বুঝতে হবে এই হাদিস তার মতে যাঈফ বা দুর্বল নয়। আল্লাহ পাক ভালো জানেন।
এরপর জিকিরের ফযিলত প্রসঙ্গে হাদিস দিয়ে কিতাব শুরু করাকে আমার কাছে ভালো মনে হয়েছে। এতে আমি এমন কিছু বিষয় উপস্থাপন করব, যা সামনের আলোচনার ভূমিকা হবে। এরপর কিতাবের মূল অধ্যায়গুলো উল্লেখ করব। আর ইস্তিগফারের অধ্যায় দিয়ে কিতাবটি শেষ করব। যেন আমাদের মৃত্যু ইস্তিগফারের মাধ্যমে হয়। আল্লাহই একমাত্র তাওফিকদাতা, তাঁর ওপরই ভরসা করি, তাঁর কাছেই সবকিছু অর্পণ করছি।

লিঙ্ক শেয়ার করুন
close

লিঙ্ক কপি করুন