📄 যেসব অবস্থায় জিকির মাকরুহ
শরিয়ত কর্তৃক মাকরুহ সময় ছাড়া অন্য সবসময় জিকির করা খুবই উত্তম কাজ। সামনের আলোচনা ছাড়া এখানে কিছু মুহূর্তের কথা বলা হল। যেমন জিকির করা মাকরুহ:
* পেশাব-পায়খানা করার সময়।
* সহবাস করার সময়।
* খতিব সাহেবের খুতবা শ্রবণকারীর জন্য খুতবা চলার সময়।
* নামাজে দাঁড়ানো অবস্থায়; বরং এসময় তিলাওয়াতে মশগুল থাকবে।
* তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থায়।
তবে রাস্তায় চলমান অবস্থায় এবং গোসলখানায় থাকাকালে জিকির করা মাকরুহ হবে না।
📄 জিকিরের হাকিকত
জিকিরের মূল উদ্দেশ্য হল, মনের উপস্থিতি। তাই এ উদ্দেশ্য অর্জনে সচেষ্ট থাকা চাই। যা জিকির করছে সে বিষয়ে পূর্ণ মনোযোগী হওয়া। অর্থ অনুধাবনের চেষ্টা করা। যিকিরে চিন্তা করা উদ্দিষ্ট যেমন কেরাতে চিন্তা করা উদ্দিষ্ট। কারণ, উভয়টির উদ্দেশ্য এক। এজন্য প্রণীধানযোগ্য মাজহাব হল, لَا إِلهَ إِلَّا اللهُ (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) এর মধ্যকার ১ (লা) কে টেনে পড়া, কারণ, এতে চিন্তা করার বেশি সময় পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে সালাফে সালেহিন ও পরবর্তী ইমামগণের বক্তব্য প্রসিদ্ধ আছে।
📄 নির্দিষ্ট সময়ে জিকির ছুটে গেলে করণীয়
যার রাতদিনের কোন সময়ে অযিফা পাঠের আমল আছে অথবা নামাজের পর, কিংবা অন্যান্য সময় অযিফা পাঠের আমল আছে যদি কোন কারণে তা ছুটে যায়, তাহলে সুযোগ হওয়া মাত্রই তা পাঠ করে নেবে এ ব্যাপারে কোন অলসতা করবে না। কারণ, এব্যাপারে যত্নবান হলে সামনে আর ছুটবে না। আর যদি অলসতা করা হয় তাহলে সামনেও ছুটে যাবে।
সহিহ মুসলিমে হজরত উমর বিন খাত্তাব রাদি. থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
مَنْ نَامَ عَنْ حِزْبِهِ، أَوْ عَنْ شَيْءٍ مِنْهُ، فَقَرَأَهُ فِيمَا بَيْنَ صَلَاةِ الْفَجْرِ، وَصَلَاةِ الظُّهْرِ، كُتِبَ لَهُ كَأَنَّمَا قَرَأَهُ مِنَ اللَّيْلِ.
অর্থ: যে ব্যক্তি তার রাতের অযিফা (তথা কুরআনের নির্দিষ্ট অংশ) অথবা অন্যান্য অযিফা পড়তে ভুলে যায়, এরপর সে এটা ফজর ও যুহরের মাঝামাঝি সময়ে পড়ে নেয়, তাহলে সে যেন তা রাতেই পড়েছে। ২৬
টিকাঃ
২৬. সহিহ মুসলিম: ৭৪৭, সুনানে আবু দাউদ: ১৩১৩, সুনানে তিরমিজি: ৫৮১, মুয়াত্তা মালেক ১/২০০, সুনানে ইবনে মাজাহ: ১৩৪৩।
📄 কোন কারণে জিকির বন্ধ করে পুনরায় শুরু করা যাবে
জিকিরের সময় যেসব অবস্থার সম্মুখীন হলে জিকির বন্ধ করে দেয়া চাই এবং অবস্থা চলে গেলে আবার জিকির শুরু করবে। অবস্থাগুলো নিম্নরূপ:
১. সালাম দিলে সালামের জবাব দিয়ে পরে আবার জিকির করবে।
২. জিকিরকারীর পাশে কেউ হাঁচি দিয়ে আলহামদুলিল্লাহ বললে, তার জবাব দিয়ে পরে আবার জিকির করবে।
৩. খতিব সাহেবের খুতবা শুনলে জিকির বন্ধ করবে, পরে আবার জিকির করবে।
৪. মুআজ্জিনের আজান শুনলে তার সাথে সাথে আজান ইকামতের জবাব দিবে।
৫. কোন নিষিদ্ধ কাজ হতে দেখলে, তা দূর করতে জিকির বন্ধ করবে। অনুরূপভাবে ভালো কাজের সুযোগ এলে। কাউকে উপদেশ দেয়ার সুযোগ এলে। কারো নসিহত কোনার ব্যবস্থা হলে তা করবে। এরপর যিকিরে মাশগুল হবে।
৬. তন্দ্রাভাব বা এজাতীয় কিছু হলে জিকির বন্ধ করে দিবে ইত্যাদি।