📘 আকাবিরদের জ্ঞান সাধনার গল্প > 📄 হজরত আবু হুরায়রা রাদি. মুখস্থশক্তি কোথায় পেলেন?

📄 হজরত আবু হুরায়রা রাদি. মুখস্থশক্তি কোথায় পেলেন?


হজরত আবু হুরায়রা রাদি, মুসলমান হওয়ার পর তার বৃদ্ধকাল শুরু হয়েছিল। অধিকাংশ সময় তিনি ভুলে যেতেন। কিছু মনে রাখতে পারতেন না।

একদিন তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খেদমতে উপস্থিত হয়ে বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার কিছু মনে থাকে না। আমি আপনার বাণী যা শুনি ভুলে যাই। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমার চাদরখানা মেলে ধরো। তিনি যখন চাদর মেলে ধরলেন, তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমনভাবে হাতের ইশারা করলেন, যেন তিনি হাত ভরে চাদরে কিছু রাখছেন। এরপর বললেন, আবু হুরায়রা! চাদর বেঁধে নাও। এরপর থেকে আল্লাহ তাআলা তাকে এমন ধী-শক্তিসম্পন্ন করলেন যে, তিনি আর কিছুই ভুলতেন না।

সুবহানাল্লাহ! তিনি ইলম অর্জনের জন্য অগ্রসর হয়েছেন। আর উস্তাদ দোয়া করে দিয়েছেন। অপরদিকে আল্লাহ তাআলা বরকত দান করলেন। ফলে তিনি এমন গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছেন যে, তার ব্যাপারে মুফতি শফি রহ.১২ বলেন যে, আবু হুরায়রা রাদি. 'মৌলবি' ধরনের সাহাবি ছিলেন। কারণ, তিনি অধিকাংশ সময় হাদিস সংকলনের চিন্তায় গভীরভাবে নিমগ্ন থাকতেন। এ জন্যই তিনি সকল সাহাবির চেয়ে অধিক হাদিস বর্ণনা করতে সক্ষম হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!

টিকাঃ
১২. তিনি ১৩১৪ হিজরিতে দেওবন্দে জন্মগ্রহণ করেন। নয় বছর বয়সে পিতার সাথে তিনি হজরত থানবি রহ.-এর খেদমতে হাজির হন। ১৩৪৯ হিজরিতে তিনি খেলাফতপ্রাপ্ত হন। ১৩৯২ হিজরির শাওয়াল মাসে ৮৩ বছর বয়সে করাচিতে ইন্তেকাল করেন।بزم اشرف چراغ

📘 আকাবিরদের জ্ঞান সাধনার গল্প > 📄 মুখস্থ তো এমনই হওয়া চাই

📄 মুখস্থ তো এমনই হওয়া চাই


একবার খলিফা আবদুল মালেক রহ. চিন্তা করলেন, হজরত আবু হুরায়রা রাদি. তো অধিক হাদিস বর্ণনাকারী। কিন্তু তিনি কি আসলে হুবহু হাদিসই বর্ণনা করছেন, নাকি রিওয়ায়াত বিল মানা তথা মর্ম ঠিক রেখে অন্য শব্দের মাধ্যমে বর্ণনা করছেন?

এ সন্দেহ দূর করার জন্য তিনি একটি মাহফিলের আয়োজন করেন। মাহফিলে হজরত আবু হুরায়রা রাদি.-কে দাওয়াত দেন। এদিকে খলিফা মজলিসের একপাশে পর্দার আড়ালে দুজন কাতেব নিয়োজিত করলেন। যাদেরকে আদেশ করলেন, হজরত আবু হুরায়রা রাদি. যা বলবেন, আপনারা তা সুন্দরভাবে হুবহু লিপিবদ্ধ করবেন। মাহফিল শুরু হলে খলিফা হজরত আবদুল মালেক রহ. বললেন, হজরত! আপনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনেক হাদিস শুনেছেন। সেখান থেকে কিছু হাদিস শুনিয়ে আমাদেরকেও ধন্য করুন।

খলিফার অনুরোধে হজরত আবু হুরায়রা রাদি. একশ হাদিস শুনিয়ে দিলেন। কাতেবদ্বয় একশ হাদিসই লিপিবদ্ধ করে রাখলেন।

এরপর এক বছর পর খলিফা পুনরায় একটি মাহফিলের আয়োজন করলেন। গত বছরের মতো এবারও হজরত আবু হুরায়রা রাদি.-কে দাওয়াত করলেন। আর সেই কাতেবদ্বয়কে বললেন, আপনারা গত বছরের নোটটা বের করে রাখবেন। আবু হুরায়রা রাদি. যা বলবেন, তার সাথে এ নোট মেলাবেন। এরপর খলিফা হজরত আবু হুরায়রা রাদি.-কে বললেন, হজরত! আপনি গত বছর যে হাদিসগুলো আমাদের শুনিয়েছিলেন, তা আমাদের বেশ ভালো লেগেছিল। আমরা উপকৃত হয়েছি। এবারও যদি সেই হাদিসগুলো আমাদের শুনাতেন, তাহলে আমাদের উপকার হতো। খলিফার অনুরোধে হজরত আবু হুরায়রা রাদি. সেই হাদিসগুলো শোনালেন। কাতেবদ্বয় অত্যন্ত বিস্মিত হলেন। একশ হাদিসের মধ্যে কোথাও একটি অক্ষরের মধ্যেও পরিবর্তন হয়নি। আল্লাহ তাআলা তাকে এমন মুখস্থশক্তি দান করেছিলেন।

📘 আকাবিরদের জ্ঞান সাধনার গল্প > 📄 হাদিসের হাফেজ এমনও ছিলেন

📄 হাদিসের হাফেজ এমনও ছিলেন


মুখস্থ-শক্তির নিয়ামত মুহাদ্দেসিনে কেরামের নসিব হয়েছিল। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আবু দাউদ রহ. একবার ইস্পাহান গেলেন। সেখানকার ওলামায়ে কেরাম জগদ্বিখ্যাত মুহাদ্দিসের ছেলে হিসেবে তাকে অভ্যর্থনা জানালেন। তিনি আগমন করার পর সবাই অনুরোধ করলেন, আমাদেরকে কিছু হাদিস শোনান। হাদিস শোনার আগ্রহে সকলেই একত্রিত হলো। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে দাউদ রহ. সে মজলিসে ৩৫ হাজার হাদিস শুনিয়ে দিলেন।

📘 আকাবিরদের জ্ঞান সাধনার গল্প > 📄 ফকিরগণের তীক্ষ্ণ মেধা

📄 ফকিরগণের তীক্ষ্ণ মেধা


সুলাইমান ইবনে মেহরান১৩ ছিলেন বুখারির রিজালদের একজন। তিনি একবার হজরত আবু ইউসুফ রহ.-কে একটি মাসআলা জিজ্ঞাসা করলেন। তিনি মাসআলাটির সমাধান বলে দিলেন। তখন তিনি আবু ইউসুফ রহ.-কে বললেন, আপনি এটা কোত্থেকে শুনেছেন। তিনি বললেন, হজরত! আমি এ হাদিস আপনার থেকেই শুনেছি।

তখন সুলাইমান ইবনে মেহরান বললেন, তোমার জন্মের পূর্ব থেকেই এ হাদিস আমার মুখস্থ। কিন্তু তুমি বলার দ্বারা এর সারমর্ম আমি ভালোভাবে বুঝতে সক্ষম হয়েছি। আসলে আমরা তো হলাম ফার্মেসির ন্যায় আর তোমরা হলে ডাক্তারের ন্যায়। তিনি আরও বলেন, আমরা হাদিসগুলো সঞ্চিত করে রাখি। আর কোন হাদিস থেকে কী মাসআলা বের হবে এটা তো তোমরাই ভালো জানো।

টিকাঃ
১৩. তিনি ৬১ হিজরিতে জন্মগ্রহণ করেন। ইলমে হাদিসে তার বিশেষ যোগ্যতা থাকার কারণে তাকে শায়খুল ইসলাম বলা হতো। তিনি ১৪৮ হিজরিতে ইন্তেকাল করেন।۲۰۱ :سیر التابعین

লিঙ্ক শেয়ার করুন
close

লিঙ্ক কপি করুন