📄 আত্মার খোরাক
একবার হজরত জাকারিয়া রহ. ইশকের সংজ্ঞা এভাবে ব্যক্ত করেন যে, যখন সবকিছু বের হয়ে কোনো একটির মধ্যে সব ভালোবাসা একত্রিত হয়ে যায়, তখন তাকে ইশক বলে। দীনের ব্যাপারে হজরতের ইশক এ রকমই ছিল। এ বিষয়ে তাঁর রুহের সাথে একটি আত্মিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল, যা তাঁর বাহ্যিক অনুভূতি ও স্বাভাবিক পছন্দকে ছাড়িয়ে গিয়েছিল। এর দ্বারা তাঁর মাঝে ওই শক্তি, অনুপ্রেরণা সৃষ্টি হয়েছিল, যা মানুষের খাদ্য দ্বারা অর্জিত হয়।
📄 অল্প হাসি বেশি কান্না
একবার হজরত আবু বকর কাতানি রহ. বললেন, আমি একজন সুদর্শন যুবককে স্বপ্নে দেখে জিজ্ঞেস করলাম, 'তুমি কে?' সে বলল, 'আমি পরহেজগারি।' আমি বললাম, 'তুমি কোথায় থাকো?' সে বলল, 'চিন্তিত লোকদের অন্তরে।' কিছুক্ষণ পরে আমি ভয়ংকর আকৃতির একটি মেয়েকে দেখতে পেলাম। তাকে জিজ্ঞেস করলাম, 'তুমি কে?' সে বলল, 'আমি গোনাহ ও নাফরমানি অর্থাৎ, হাসি-তামাশা।' আমি বললাম, 'তুমি কোথায় থাকো?' সে বলল, 'আমোদ-প্রমোদকারীদের অন্তরে।' আমি জাগ্রত হয়ে প্রতিজ্ঞা করলাম, হাসির প্রবল কারণ না হলে আমি আর কখনো হাসব না।
📄 আল্লামা জালালুদ্দিন রুমি রহ.-এর নামাজ
নামাজের সময় হলেই আল্লামা জালালুদ্দিন রুমি রহ. কিবলার দিকে ফিরে যেতেন। তখন তাঁর চেহারার রং পরিবর্তন হয়ে যেত। নামাজ পড়া শুরু করলে সম্পূর্ণরূপে নামাজের মধ্যে নিমগ্ন হয়ে যেতেন। তাঁর খাদেম বলেন, 'অনেকবার আমি স্বচক্ষে দেখতে পেয়েছি যে, তিনি ইশার নামাজ প্রথম ওয়াক্তেই পড়ে ফেলতেন। অতঃপর ইশার প্রথম ওয়াক্ত অবশিষ্ট থাকতেই নফল নামাজের নিয়ত বেঁধে নামাজে এমনভাবে মগ্ন হতেন যে, দু-রাকাত নামাজ শেষ করতেই ভোর হয়ে যেত।'
📄 চিরুনি আনতেও নিয়ত!
আমাদের আকাবিররা প্রতিটি কাজের শুরুতেই নিয়ত করতেন। বর্ণিত আছে, জনৈক ব্যক্তি ঘরের ছাদে বসে মাথা ম্যাসেজ করছিলেন। হঠাৎ স্ত্রীকে ডেকে তার চিরুনি এনে দেওয়ার জন্য বললেন। স্ত্রী বলল, 'আয়নাও কি নিয়ে আসব?' তিনি কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললেন, 'ঠিক আছে নিয়ে আসো।' স্ত্রী তাকে জিজ্ঞেস করল, 'আপনি কিছুক্ষণ চুপ রইলেন কেন? আর আয়নার ব্যাপারেও এত ভাবলেন কেন?' তিনি বললেন, 'আমি একটি নিয়ত করে তোমাকে চিরুনি আনতে বলেছিলাম, যখন তুমি আয়নার কথা বললে, তখন আমার কোনো নিয়ত ছিল না, আমি এ জন্যই কিছু সময় চুপ ছিলাম যাতে এটার জন্য আমি কোনো একটা ভালো নিয়ত করতে পারি।'৬
টিকাঃ
৬. আওয়ারিফুল মায়ারিফ: ৪৯৭।