📄 দুনিয়াবিমুখতা
হজরত জাকারিয়া রহ.-কে চট্টগ্রাম অথবা ঢাকার মাদরাসা আলিয়াতে শায়খুল হাদিস পদে যোগদান করার জন্য আহ্বান করা হয়েছিল। শুধু তিরমিজি ও বুখারি পড়ানোর কথা ছিল। মাসিক বেতন ছিল বারোশ রুপি। প্রথমে চিঠি পাঠানো হয়। তারপর জরুরি তারবার্তা পাঠানো হয়। তিনি বলেন, 'তারবার্তার জবাবে আমি শুধু লিখেছি, যেসব বন্ধুগণ আপনাদের কাছে আমার নাম প্রস্তাব করেছে, তারা শুধু ভালো ধারণার ওপর ভিত্তি করে এ কাজ করেছে। অধম এর উপযুক্ত নয়।'
📄 অভাব ও দীনতা
হজরত জাকারিয়া রহ. বলেন, 'আমাদের আকাবির ও পূর্বসূরিরা যে রকম অভাব-অনটন এবং ধৈর্য ও শুকরিয়ার সাথে দিন কাটাতেন, এর কোনো দৃষ্টান্ত নেই। তিনি স্বীয় চাচা মাওলানা ইলিয়াস রহ.-এর ঘটনা বর্ণনা করেন যে, 'একবার তিনি আমাকে লিখলেন, কয়েকদিন যাবৎ তোমার কাছে একটি চিঠি লেখার প্রয়োজন ছিল, কিন্তু আমার কাছে কোনো পয়সা ছিল না। কারও কাছ থেকে ধার নিতেও মন চাচ্ছিল না। আজ আল্লাহ পয়সার ব্যবস্থা করলেন। তাই তোমাকে চিঠি লিখছি।'
📄 সম্পদের প্রতি অনীহা
একবার হজরত খায়ের নাসসাজ রহ. বলেন, আমি এক মসজিদে প্রবেশ করলে জনৈক দরবেশ এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল, 'হে শেখ! আমার প্রতি মেহেরবানি করুন। আমার জন্য দোয়া করুন। আমার সম্মুখে একটি বড়ো বিপদ উপস্থিত। অর্থাৎ, বালা-মুসিবত আমার ওপর পতিত হয়েছে। আমি তাকে আল্লাহর নিয়ামতরূপেই বরণ করে নিয়েছিলাম, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সে নিয়ামত আমার বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। হজরত খায়ের নাসসাজ রহ. বলেন, 'আমি তার অবস্থা সম্বন্ধে চিন্তা করে বুঝতে পারলাম, অপ্রত্যাশিতভাবে সে একটি দিনার পেয়েছে। এতেই সে অস্থির হয়ে পড়েছে।'
📄 আত্মার খোরাক
একবার হজরত জাকারিয়া রহ. ইশকের সংজ্ঞা এভাবে ব্যক্ত করেন যে, যখন সবকিছু বের হয়ে কোনো একটির মধ্যে সব ভালোবাসা একত্রিত হয়ে যায়, তখন তাকে ইশক বলে। দীনের ব্যাপারে হজরতের ইশক এ রকমই ছিল। এ বিষয়ে তাঁর রুহের সাথে একটি আত্মিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল, যা তাঁর বাহ্যিক অনুভূতি ও স্বাভাবিক পছন্দকে ছাড়িয়ে গিয়েছিল। এর দ্বারা তাঁর মাঝে ওই শক্তি, অনুপ্রেরণা সৃষ্টি হয়েছিল, যা মানুষের খাদ্য দ্বারা অর্জিত হয়।